কথিত সীমানা পিলার ও প্রাচীন কয়েন কেনাবেচায় প্রলুব্ধ করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা অনেকদিন যাবতই চলছে। তবে সম্প্রতি পুলিশ একটি প্রতারক চক্রের কিছু সদস্যকে গ্রেফতার করেছে, যাদের মূল টার্গেট হচ্ছে শিল্পপতি ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। তাদের কথিত প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সীমানা পিলার ও প্রাচীন কয়েন কেনাবেচার লোভে ফেলে কোটি টাকা হাতিয়ে নিত চক্রটি।
এ ব্যাপারে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারূনুর রশীদ জানান, ভুক্তভোগীর সঙ্গে গ্রেফতার তাহেরুল ইসলামের একটি অনুষ্ঠানে পরিচয় হয়। তিনি নিজেকে আমেরিকার হেরিটেজ অকশন নামে একটি কোম্পানীর বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসাবে পরিচয় দেন। তাহেরুলের শারীরিক গঠন, পোশাক, দামি গাড়ি ও স্মার্টনেস দেখে ভুক্তভোগী তাকে বিশ্বাস করেন এবং তাদের মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই পরিচয়ের সুবাদে তাহেরুল ভুক্তভোগীকে বলে তার গ্রামের একজন কৃষক মীযানুর বাড়ির পাশে কৃষিজমি খনন করার সময় একটি সীমানা পিলার পেয়েছে। তাহেরুল ভুক্তভোগীকে বলে, তিনি যেহেতু আমেরিকার একটি কোম্পানীর কান্ট্রি ডিরেক্টর এ পিলারটি দুইশত কোটি টাকার বিনিময়ে বিক্রি করতে পারবেন।
তাহেরুল ভুক্তভোগীকে শেয়ারে থাকার জন্য অফার দেয়। তার প্রস্তাবে ভুক্তভোগী রাযী হয় এবং তাহেরুলের সঙ্গে সেই কৃষকের বাড়ি পিলারটি দেখতে যায়। এদিকে তাহেরুল তার সহকারী জসীমকে কেমিস্ট সাজিয়ে নিয়ে যায় এবং তাকে দিয়ে পিলারটির রাসায়নিক পরীক্ষা করায়। জসীম সবকিছু দেখে পিলারটি খাঁটি বলে জানায়। এর ফলে তাহেরুলের কথা ভুক্তভোগীর বিশ্বাস দৃঢ় হয়।
হারূনুর রশীদ বলেন, ভুক্তভোগী তখন মীযানুর রহমানের সঙ্গে সীমানা পিলারটি ৩৫ কোটি টাকার বিনিময়ে কেনার চুক্তি করেন। চুক্তি মোতাবেক নগদ ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং ৩১ কোটি ৫০ লাখ টাকার চেক দেন। কিন্তু প্রতারকদের পূর্বপরিকলম্পনা অনুযায়ী কথিত সীমানা পিলারটি ভুক্তভোগীর কাছে হস্তান্তর করার কিছুক্ষণ পরেই তাদের লোকজন ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে জোরপূর্বক পিলারটি কেড়ে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, এ চক্রে ২০ থেকে ২৫ জন লোক কাজ করে। প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা রয়েছে। এদের ৪ জন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্যদের গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
[কয়েক বছর থেকে এই প্রতারক চক্রের অপতৎপরতার খবর পত্রিকায় আসছে। সে সঙ্গে হাযার হাযার অর্থলোভী নিঃস্ব ব্যক্তিদের খবরও আসছে। কিন্তু এদের বিরুদ্ধে পুলিশী তৎপরতার খবর পত্রিকায় দেখা যায়না। তাই এদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী রইল (স.স.)]