‘দ্রুত নগদ অর্থ প্রয়োজন? অনলাইনে আবেদন করুন এবং ৫০ হাযার থেকে শুরু করে ১০ লাখ টাকার মধ্যে ধার বা ঋণ নিতে পারেন। এই ঋণের টাকা ৬০ মাস পর্যন্ত পরিশোধ করতে পারবেন। লোনটি পেতে নীচের লিংকে ক্লিক করুন’। এমন চটকদার বার্তা এখন অনেকের ই-মেইল ও ম্যাসেঞ্জারে যাচ্ছে প্রতিনিয়তই। এছাড়া ফেসবুকের বিভিন্ন পেইজে দেখা যাচ্ছে সহজেই ঋণ পাওয়ার পোস্ট। এসব প্রলোভনে পড়ে অনেকেই হারাচ্ছেন সর্বস্ব। অনলাইনে ঋণ দেওয়ার এমন ভয়ঙ্কর ফাঁদ এখন দেশজুড়ে বিস্তৃত।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, এসব প্রতারকের পাঠানো ওয়েবলিংকে সাইন আপ বা অ্যাপ্লাই বাটনে ক্লিক করলেই একটি অ্যাপ ডাউনলোড করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। অনলাইনে একটা ফরম পূরণ করার পর আগ্রহী ঋণগ্রহীতাকে দেওয়া হয় একটি হোয়াটসঅ্যাপ লিঙ্ক। ঐ লিঙ্কে ক্লিক করলেই চলে যায় একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরের চ্যাট বক্সে।

সেখানে ভুক্তভোগীদের নিবন্ধন ফী, প্রসেসিং চার্জ এবং সরকারী করের মতো পাঁচ হাযার থেকে ৩০ হাযার টাকা পর্যন্ত পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। বিকাশের মাধ্যমে এই অর্থ দেওয়া সম্পন্ন করলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ঋণ অনুমোদনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য তাদের বানানো বিভিন্ন ব্যাংকের নকল আবেদনপত্র, স্যাংশন লেটার দিয়ে থাকে। চাহিদামতো টাকা পেলেই তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না। আবার এই সর্বনাশা অ্যাপের মাধ্যমে অনেকের মোবাইল থেকে ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে করা হয় ব্লাকমেইল।

এরূপ নানা অভিনব কায়দায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র। লোনের বাইরেও এই চক্রটি বিদেশে লোক পাঠানোর নামে প্রতারণা, ট্যাক্স ফাইল, ট্রেড লাইসেন্স করে দেওয়া, কোম্পানী নিবন্ধন করে দেওয়ার নামে প্রচুর পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সিক্যাফের সমীক্ষা অনুযায়ী ২০২৩ সালের জরিপে ভুক্তভোগীদের ৭৫ শতাংশের বয়সই ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।

[এদের চালাকী ধরার জন্য এবং অন্যান্য প্রতারক চক্রের ফাঁদ থেকে নিরীহ লোকদের উদ্ধার করার জন্য পুলিশের একটি বিশেষ সেল প্রয়োজন। যারা দক্ষতার সাথে দ্রুত এরূপ প্রতারকদের চিহ্নিত করতে পারে। এছাড়া প্রয়োজন বিচার বিভাগে একদল পৃথক বিচারক দল সৃষ্টি করা। যারা এগুলি বিচার করবেন এবং এদের জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করবেন। প্রয়োজনে এদের জন্য যামিন অযোগ্য পৃথক আইন রচনা করা আবশ্যক। যেন প্রচলিত আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে এরা দ্রুত যামিন পেয়ে বেরিয়ে না যায় (স. স.)]







আরও
আরও
.