পৃথিবীতে যে ম্যাগনেটিক ফিল্ড রয়েছে, তা এই গ্রহকে নানাভাবে রক্ষা করে। সূর্য থেকে যে বিপজ্জনক কসমিক বিকিরণ বেরিয়ে আসে বা তার প্লাজমা বিস্ফোরণের ফলে প্রকৃতিতে যে ক্ষতিকর বিকিরণ ছড়িয়ে পড়ে তার ক্ষতি প্রতিরোধ করার প্রধান অস্ত্রই এই ভূচুম্বকত্ব। এ পর্যন্ত জানাই ছিল। কিন্তু যেটা জানা ছিল না, তা হ’ল, অনেক প্রাণী এই ভূচুম্বকত্বকে দারুণ সৃষ্টিশীলতার সাথে কাজে লাগাতে সক্ষম। তাদের এই কৌশলটার সঙ্গে জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) প্রযুক্তির মিল রয়েছে। এই প্রযুক্তিটি নিজের মতো করে কাজে লাগায় তারা।

বিশেষ করে পরিযায়ী পাখিদের মধ্যে রয়েছে এই আশ্চর্য ক্ষমতা। তারা এই ভূচুম্বকত্বকে ব্যবহার করতে পারে একেবারে নিজেদের ইচ্ছেমতো। অন্য কিছু কিছু প্রাণীর মধ্যেও এই গুণ দেখা যায়। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাউলিং গ্রিন স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং কানাডার ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্টার্ন অন্টারিওর গবেষকেরা পরিযায়ী পাখিদের মধ্যে এই গুণাগুণের সন্ধান পেয়েছেন।

এই গবেষণা বলছে, পরিযায়ী পাখিরা যখন পরিযানে ব্যস্ত থাকে একমাত্র তখনই তাদের মস্তিষ্কের ঐ অংশ ভূচুম্বকত্বে সাড়া দেয়, বা বলা ভালো, ভূচুম্বকত্বকে নিজেদের মতো করে ব্যবহার করে। সেই হিসাবে পরিযায়ী পাখিদের মস্তিষ্কের এই ‘ক্লাস্টার এন’ রাতেই সক্রিয় থাকে, যেহেতু সেই সময়েই তারা দূরপাল্লার উড়ানগুলি সম্পন্ন করে। আর দিনের বেলা তারা যখন বিশ্রাম নেয়, তখন সেটি নিষ্ক্রিয় থাকে।

আমরা সবাই জানি, পৃথিবীর ভূত্বকের নীচে, ভূ-অভ্যন্তের যে গলিত লোহার স্রোত আছে সেটা থেকেই তৈরি হয় এই ভূচুম্বকত্ব এবং সেটাই পৃথিবীর চারিদিকে ক্রিয়াশীল থাকে। কিন্তু প্রাণী হিসাবে মানুষ সে বিষয়ে উদাসীন থাকে। কেননা বিষয়টি মানুষের কাছে অদৃশ্য। এটা উপলব্ধি করার মতো কোন বডি মেকানিজম'ও নেই মানুষের। কিন্তু কোন কোন প্রাণীর শরীরে এই মেকানিজম ‘ইন-বিল্ট’। এর বলেই তারা পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে চলে যেতে পারে।







আরও
আরও
.