যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারে নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। গত ৬ই মে শনিবার ৭০ বছর ধরে ব্রিটেনের রাজমুকুটের উত্তরাধিকারী হিসাবে জীবন কাটিয়ে অবশেষে ৪০তম রাজা হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে সিংহাসনে আরোহণ করেছেন তৃতীয় চার্লস। খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ বাইবেলে হাত রেখে শপথ গ্রহণের পর তাঁকে মুকুট পরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তিনি সিংহাসনে বসেন।
ব্রিটেনের প্রধান খ্রিষ্টান ধর্মগুরু ক্যান্টারবুরি ও ইয়র্কের আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবি রাজার মাথায় সেইন্ট এডওয়ার্ড মুকুট পরিয়ে দেন। এ সময় তিনি বলেন, God save the king ‘ঈশ্বর রাজাকে রক্ষা করুন’। উপস্থিত সকলে একই প্রার্থনা করেন।
মুকুট পরিয়ে দেওয়ার পর শুরু হয় সিংহাসনে আরোহণের পর্ব। আর্চবিশপ ও তাঁদের সহকারীরা রাজাকে সিংহাসনে বসান। অতঃপর তাঁর হাতে ধর্মীয় ও নৈতিক কর্তৃত্বের প্রতিনিধিত্বকারী সার্বভৌম রাজদন্ড ও গোলক প্রদান করা হয়। এসময় রাজাকে আর্চবিশপ বলেন, নতুন রাজা যেন তাঁর শাসনকালে আইনের শাসন ও চার্চ অব ইংল্যান্ডের মর্যাদা সমুন্নত রাখেন।
অতঃপর চার্লস পবিত্র গসপেলে হাত রেখে শপথ নেন। এ সময় তিনি আইনের শাসন ও চার্চ অব ইংল্যান্ডের মর্যাদা সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এছাড়া একজন ‘একনিষ্ঠ প্রোটেস্ট্যান্ট’ হিসাবে দ্বিতীয় শপথও নেন রাজা তৃতীয় চার্লস। শপথের পর ক্যান্টারবুরির আর্চবিশপ রাজার শরীরে পবিত্র তেল লেপন করেন।
অভিষেক শেষে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে ছেড়ে বাকিংহাম প্যালেসে ফিরে যান রাজা চার্লস ও রাণী ক্যামিলা। এসময় তারা এক মাইল শোভাযাত্রায় অংশ নেন। যাতে ৩৯টি দেশের মোট ৪ হাযার সেনা সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
রাজা চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে বিশ্বের প্রায় ১০০ দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও ২০৩টি রাষ্ট্রের প্রতিনিধি সহ দেশ-বিদেশের প্রায় আড়াই হাযার গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া এবারই প্রথম প্রটেস্ট্যান্ট নন এমন খৃস্টানদের রাজ্যাভিষেকের অনুষ্ঠানে ভূমিকা রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর তাঁর বড় ছেলে চার্লস যুক্তরাজ্য এবং আরও ১৫টি দেশের রাজা হলেন।
[গণতন্ত্রের লালনভূমি বলে পরিচিত ইংল্যান্ড ও তার অধীনস্ত কমনওয়েল্থ দেশগুলির এই ‘রাজা’ পোষণ বেমানান নয় কি? তবুও ধন্যবাদ। এর মাধ্যমে জাতীয় ঐক্য নিশ্চিত থাকে। যেভাবে ইসলামী খেলাফতে নিশ্চিত থাকে। আরেকটি বিষয় শিক্ষণীয় যে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হলেও তাদের রাজা তাদের ধর্মগ্রন্থ ছুঁয়ে শপথ নিচ্ছেন এবং সবাই তার জন্য দো‘আ করছেন। বাংলাদেশের কথিত গণতন্ত্রীরা এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবেন কি? (স.স.)]