মুসলিম উম্মাহ এ বিষয়ে একমত যে, রাসূল (ছাঃ)-এর কথা, কর্ম ও সম্মতি হ’ল ইসলামী শরী‘আতের সকল হুকুম-আহকামের অন্যতম উৎস। বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত হাদীছকে ইসলামী শরী‘আতের মৌলিক উৎস হিসাবে অনুসরণ করা একজন মুসলিমের জন্য অপরিহার্য।[1] কেননা পবিত্র কুরআনের মত হাদীছও আল্লাহ্র অহী।[2] ইসলামী শরী‘আতে কুরআনের পরই হাদীছের স্থান। অর্থাৎ শরীআ‘তের বিধান বাস্তবায়নে সর্বপ্রথম দলীল হ’ল ‘কুরআন’ এবং তৎপরবর্তী দলীল হচ্ছে ‘হাদীছ’। এজন্য কোন বিষয়ে হুকুম অনুসন্ধানের জন্য মুজতাহিদগণ প্রথমে কুরআনের প্রতি নযর দেন, অতঃপর হাদীছের দিকে।[3] তবে উভয়ের মধ্যকার এই বিভাজনটি স্তরভিত্তিক নয়; বরং গণনাভিত্তিক। এজন্য মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল-উছায়মীন (১৯২৫-২০০১ খ্রি.) বলেন,المصدر الثاني: يعني: في العدد، وليس في الترتيب؛ فإن منزلتها إذا صحت عن النبي صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كمنزلة القرآن হাদীছ বা সুন্নাহ হ’ল ইসলামী শরী‘আতের দ্বিতীয় উৎস। এর অর্থ তা ক্রমিক গণনায় দ্বিতীয়; তারতীব বা ধারাবাহিকতায় নয়। কেননা হাদীছ যদি ছহীহ সূত্রে বর্ণিত হয় তবে তা কুরআনেরই সমমর্যাদাসম্পন্ন।[4]

সুতরাং কুরআনের মত হাদীছও আল্লাহ্র অহী। পার্থক্য হ’ল কুরআন প্রকাশ্য ‘অহী’ ও হাদীছ অপ্রকাশ্য ‘অহী’। কুরআন ‘অহীয়ে মাতলু’ যা তেলাওয়াত করা হয়। কিন্তু হাদীছ ‘গায়ের মাতলু’, যা তেলাওয়াত করা হয় না। এজন্য অহী দুই প্রকার। (১) অহী মাতলু : যা রাসূল (ছাঃ) শব্দগতভাবে সংরক্ষণ করা এবং তেলাওয়াত করার নির্দেশ দিয়েছেন। (২) অহী গায়ের মাতলু : যা রাসূল (ছাঃ) শব্দগতভাবে সংরক্ষণের নির্দেশ দেননি এবং যা তেলাওয়াত করা হয় না।[5] সুতরাং ছহীহ সূত্রে প্রমাণিত হাদীছ পবিত্র কুরআনের মতই ইসলামী শরী‘আতের অকাট্য দলীল হিসাবে সমান মর্যাদা ও গুরুত্বের অধিকারী। ইসলামী শরী‘আতকে সংরক্ষণ করার জন্য আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনকে যেমন শব্দগতভাবে সংরক্ষণ করেছেন, তেমনি কুরআনের ব্যাখ্যা হিসাবে হাদীছকে অর্থগতভাবে সংরক্ষণ করেছেন। নিম্নে এ সংক্রান্ত দলীল ও উদাহরণসমূহ পেশ করা হ’ল।

দলীলসমূহ :

(১) আল্লাহ বলেন,وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوَى، إِنْ هُوَ إِلاَّ وَحْيٌ يُوحَى ‘(রাসূল) ইচ্ছামত কিছু বলেন না। কেবলমাত্র ততটুকু বলেন, যতটুকু তাঁর নিকটে ‘অহী’ করা হয়’।[6] এই আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনু কাছীর (মৃ. ৭৭৪ হি.) বলেন, ما يقول قولا عن هوى وغرض إنما يقول ما أمر به، يبلغه إلى الناس كاملا موفَّرًا من غير زيادة ولا نقصان، ‘রাসূল (ছাঃ) স্বগত এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে যা কিছুই বলেন না কেন, তা কেবল আল্লাহ্র নির্দেশেই বলেন এবং মানুষের কাছে তা কোন প্রকার হ্রাস-বৃদ্ধি ছাড়াই পূর্ণাঙ্গভাবে পৌঁছে দেন’।[7]

অর্থাৎ দ্বীনের ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ) যা বলেন তা কেবলমাত্র অহী মারফতই বলেন, নিজের পক্ষ থেকে নয়। আল্লাহ অন্যত্র কঠোর ভাষায় তা উল্লেখ করেছেন,وَلَوْ تَقَوَّلَ عَلَيْنَا بَعْضَ الْأَقَاوِيلِ، لَأَخَذْنَا مِنْهُ بِالْيَمِينِ، ثُمَّ لَقَطَعْنَا مِنْهُ الْوَتِينَ، فَمَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ عَنْهُ حَاجِزِينَ- ‘সে (মুহাম্মাদ) যদি আমার নামে কোন কথা রচনা করত, তবে আমি তার দক্ষিণ হস্ত ধরে ফেলতাম, অতঃপর কেটে দিতাম তার গ্রীবা। তোমাদের কেউ তাকে রক্ষা করতে পারতে না’ (হাক্কাহ ৬৯/৪৪-৪৭)

এ প্রসঙ্গে ইবনু মাস‘উদ (রাঃ)-এর একটি ঘটনা প্রণিধানযোগ্য। ঘটনাটি হচ্ছে- একদা (বনূ আসাদ গোত্রের উম্মে ইয়া‘কূব নামে) এক মহিলা তাঁর নিকট এসে বলল, আপনি নাকি যেসব নারী অপরের অঙ্গে উল্কি অংকন করে এবং নিজের অঙ্গেও করায়, যারা ভ্রূ উপড়িয়ে ফেলে এবং যেসব নারী দাঁত সরু করে দাঁতের মাঝে ফাঁক করে, যা আল্লাহ্র সৃষ্টিকে বদলে দেয়; তাদের প্রতি লা‘নত করেছেন। জবাবে তিনি বললেন, রাসূল (ছাঃ) যাদের প্রতি লা‘নত করেছেন আমি তাদের প্রতি কেন লা‘নত করব না? এমতাবস্থায় যে, তা কুরআনে বিদ্যমান আছে। মহিলা বলল, لَقَدْ قَرَأْتُ مَا بَيْنَ لَوْحَي الْمُصْحَفِ فَمَا وَجَدْتُهُ. ‘আমি সমগ্র কুরআন পড়েছি। (কিন্তু তুমি যা বলছ) আমি তা পাইনি। তখন ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) মহিলাকে বললেন,لَئِنْ كُنْتِ قَرَأْتِيْهِ لَقَدْ وَجَدْتِيْهِ. قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ : وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوْا، ‘যদি আপনি কুরআন পড়তেন, তাহ’লে অবশ্যই তা পেতেন। মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘রাসূল তোমাদেরকে যা প্রদান করেন, তা গ্রহণ কর এবং যাত্থেকে নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক’। আর আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, لَعَنَ اللهُ الْوَاشِمَاتِ وَالْمُسْتَوْشِمَاتِ، وَالْمُتَنَمِّصَاتِ وَالْمُتَفَلِّجَاتِ لِلْحُسْنِ الْمُغَيِّرَاتِ خَلْقَ اللهِ. ‘উল্কি অঙ্কনকারী ও উল্কি গ্রহণকারী, ভ্রূ উত্তোলনকারী নারী এবং দাঁত সরু করে মাঝে ফাঁক সৃষ্টিকারী নারী, যা আল্লাহ্র সৃষ্টিকে বদলে দেয়, তাদের উপর আললাহ্র অভিশাপ বর্ষিত হোক’।[8]

এতে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, কুরআন হোক বা হাদীছ হোক সবকিছুই আল্লাহ্র পক্ষ থেকে রাসূল (ছাঃ)-এর উপর নাযিল হয়েছে। দুটিরই উৎস এক। একটিকে অপরটি থেকে পৃথক করার কোন সুযোগ নেই। ড. মুছত্বফা আল-আ‘যামী (২০১৭খ্রি.) যথার্থই বলেছেন, أنه لا يمكن فصل الكتاب عن حامل الكتاب إلا بإنكار الكتاب نفسه، ‘আল্লাহ্র কিতাবকে সেই কিতাবের ধারক (রাসূল) থেকে বিচ্ছিন্ন করার কোন সুযোগ নেই, যতক্ষণ না সেই কিতাবটিকে অস্বীকার করা হয়’।[9]

(২) আল্লাহ বলেন,وَأَنْزَلَ اللهُ عَلَيْكَ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَعَلَّمَكَ مَا لَمْ تَكُنْ تَعْلَمُ وَكَانَ فَضْلُ اللهِ عَلَيْكَ عَظِيمًا- ‘আল্লাহ আপনার উপরে নাযিল করেছেন কিতাব ও হিকমত (সুন্নাহ) এবং আপনাকে শিখিয়েছেন, যা আপনি জানতেন না। আপনার উপরে আল্লাহ্র অনুগ্রহ অপরিসীম’ (নিসা ৪/১১৩)

এখানে ‘হিকমত’ শব্দের অর্থ জুমহূর ওলামায়ে কেরামের মতে, হাদীছ বা সুন্নাহ। কেননা ইসলামী শরী‘আতে কেবলমাত্র সুন্নাহই হ’ল কুরআনের সমমানসম্পন্ন উৎস। তাই প্রতিটি প্রমাণিত সুন্নাহকে অনুসরণ করা মুসলিম ব্যক্তির উপর অপরিহার্য। কেননা তা মূলতঃ রাসূল (ছাঃ)-এর যবানীতে প্রাপ্ত আল্লাহ্রই নির্দেশ বা অহী।

(৩) আল্লাহ বলেন,وَيُحِلُّ لَهُمُ الطَّيِّبَاتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيْهِمُ الْخَبَائِثَ، ‘তাদের জন্য পবিত্র বস্ত্ত হালাল করেন আর অপবিত্র বস্ত্ত হারাম করেন’ (আ‘রাফ ৭/১৫৭)

অত্র আয়াতে আল্লাহ ‘হালাল’ এবং ‘হারাম’ শব্দদ্বয়কে রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে সম্পর্কিত করেছেন। এতে প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ কর্তৃক হালাল-হারামকৃত বিষয় এবং রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক হালাল-হারামকৃত বিষয়ের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। তাই কুরআন ও হাদীছ এ দু’টি মৌলিক উৎস থেকে হালাল-হারামের বিধানগুলো একই পর্যায়ভুক্ত অহী এবং উভয়টিই সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্যভাবে অনুসরণীয়।[10] ইবনু হাযম (৪৫৬হি.) বলেন,أن كل ما فعله صلى الله عليه وسلم من أمور الديانة أو قاله منها فهو وحي من عند الله عز وجل ‘দ্বীনের বিষয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর যা কিছু করেছেন এবং বলেছেন সবই হ’ল আল্লাহ্র পক্ষ থেকে অহী’।[11]

(৪) আল্লাহ বলেন, إِنَّا أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ كَمَا أَوْحَيْنَا إِلَى نُوحٍ وَالنَّبِيِّينَ مِنْ بَعْدِهِ وَأَوْحَيْنَا إِلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ وَالْأَسْبَاطِ وَعِيسَى وَأَيُّوبَ وَيُونُسَ وَهَارُونَ وَسُلَيْمَانَ وَآتَيْنَا دَاوُودَ زَبُورًا ‘নিশ্চয়ই আমি তোমার নিকট অহী পাঠিয়েছি, যেমন অহী পাঠিয়েছি নূহ ও তার পরে নবীগণের নিকট এবং আমি অহী পাঠিয়েছি ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব, তার বংশধরগণ, ঈসা, আইয়ূব, ইউনুস, হারূণ ও সুলায়মানের নিকটে এবং দাঊদকে প্রদান করেছি যাবূর’ (নিসা ৪/১৬৩)

অত্র আয়াত বিশ্লেষণে দেখা যায়, অহী নাযিলের ধারাবাহিকতায় নূহ (আঃ)-এর পর মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে উল্লেখ করে তাঁকে অন্যান্য সকল নবীদের সাথে সাদৃশ্য প্রদান করা হয়েছে। কুরআনের ভাষায় উল্লিখিত নবীগণের সকলেই অহীপ্রাপ্ত হয়েছিলেন, কিন্তু ইবরাহীম (আঃ), ঈসা (আঃ) এবং দাঊদ (আঃ) ব্যতীত তাঁদের কারোর কিতাবের কথা কুরআনে উল্লেখ করা হয়নি। এতে প্রতীয়মান হয় যে, তাঁদের কাছে যে প্রকার অহী প্রেরিত হয়েছিল তা ছিল সুন্নাহ। অত্র আয়াতে রাসূল (ছাঃ)-কে উভয় প্রকার অহীপ্রাপ্তদের সাথে সমভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বোঝা যায়, রাসূল (ছাঃ)-এর প্রতি দুই প্রকার অহীই নাযিল করা হয়েছিল। একটি হ’ল কুরআন, যা শব্দগতভাবে নাযিল হয়েছিল এবং অপরটি হাদীছ, যা অর্থগতভাবে নাযিল হয়েছিল।[12]

(৫) আল্লাহ বলেন, إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ ‘নিশ্চয়ই আমি ‘যিকর’ নাযিল করেছি, আর আমিই তার হিফাযতকারী’ (হিজর ১৫/৯)। এই আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনু হাযম আন্দালুসী (৪৫৬হি.) বলেন,أن كلام رسول الله (ص) كله في الدين وحي من عند الله عز وجل، لا شك في ذلك ولا خلاف بين أحد من أهل اللغة والشريعة في أن كل وحي نزل من عند الله تعالى فهو ذكر منزل، فالوحي كله محفوظ بحفظ الله تعالى له بيقين، وكل ما تكفل الله بحفظه فمضمون ألا يضيع منه وألا يحرف منه شئ أبدا تحريفا ‘দ্বীনের ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ)-এর প্রতিটি কথাই আল্লাহ্র প্রেরিত অহী। অভিধানবিদ ও শরী‘আত বিশেষজ্ঞদের নিকট এ বিষয়ে কোন প্রকার মতভেদ বা সংশয় নেই যে, আল্লাহ্র পক্ষ থেকে যা কিছু অহী হিসাবে নাযিল হয়েছে তা-ই হ’ল ‘যিকরে মুনাযযাল’ বা ‘প্রেরিত উপদেশবাণী’। সুতরাং সকল প্রকার অহীই সুনিশ্চিতভাবে আল্লাহ্র দায়িত্বে সংরক্ষিত। আর আল্লাহ যার সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন তা কখনো বিনষ্ট হবার নয় এবং তাতে কোন প্রকার বিকৃতি ঘটার কোনই সম্ভাবনা নেই’।[13]

তাক্বী ওছমানী (জন্ম : ১৯৪৩খ্রি.) ‘যিকর’ শব্দটির ব্যাখ্যায় বলেন, ‘আয়াতে (নাহল ১৬/৪৪)[14] এই কথা স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে যে, মানুষ কেবল তখনই কুরআনের উপদেশমালা থেকে উপকৃত হবে যখন সে রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক কুরআনের ব্যাখ্যা তথা হাদীছ অনুসরণ করবে। সুতরাং যদি শুধু কুরআনকেই আল্লাহ হেফাযত করেন এবং এর ব্যাখ্যা তথা রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছকে পরিত্যাগ করেন তাহ’লে কুরআন নিশ্চিতভাবে অপব্যাখ্যাকারীদের হাতে বিকৃত ও পরিবর্তিত হয়ে পড়বে। সুতরাং কুরআনের সাথে আল্লাহ কুরআনের ব্যাখ্যা হাদীছকেও হেফাযত করেছেন’।[15] 

(৬) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,أَلاَ إِنِّى أُوتِيتُ الْكِتَابَ وَمِثْلَهُ مَعَهُ، أَلاَ يُوشِكُ رَجُلٌ شَبْعَانُ عَلَى أَرِيكَتِهِ يَقُولُ عَلَيْكُمْ بِهَذَا الْقُرْآنِ فَمَا وَجَدْتُمْ فِيهِ مِنْ حَلاَلٍ فَأَحِلُّوهُ وَمَا وَجَدْتُمْ فِيهِ مِنْ حَرَامٍ فَحَرِّمُوهُ- وَإِنَّ مَا حَرَّمَ رَسُوْلُ اللهِ كَمَا حَرَّمَ اللهُ ‘জেনে রাখো! আমি কুরআন প্রাপ্ত হয়েছি ও তার ন্যায় আরেকটি বস্ত্ত (হাদীছ)। সাবধান! এমন একটি সময় আসছে যখন বিলাসী মানুষ তার গদিতে বসে বলবে, তোমাদের জন্য এ কুরআনই যথেষ্ট। সেখানে যা হালাল পাবে, তাকেই হালাল জানবে এবং সেখানে যা হারাম পাবে, তাকেই হারাম জানবে। অথচ আল্লাহ্র রাসূল যা হারাম করেছেন তা আল্লাহ কর্তৃক হারাম করার অনুরূপ।’[16]

এই হাদীছের ব্যাখ্যায় আল-খাত্ত্বাবী (৩৮৮হি.) বলেন, ‘হাদীছটি দুইভাবে ব্যাখ্যা করা যায়, প্রথমত, তাঁকে গোপন অহী তথা ‘অহী গায়ের মাতলু’ (হাদীছ) প্রদান করা হয়েছিল, যেমনভাবে প্রকাশ্য অহী তথা ‘অহী মাতলু’ (কুরআন) প্রদান করা হয়েছিল। দ্বিতীয়ত, তাকে অহী হিসাবে কুরআন প্রদান করা হয়েছিল, যা পঠিতব্য অহী। আর সেই সাথে প্রদান করা হয়েছিল কুরআনের অনুরূপ ব্যাখ্যা। অর্থাৎ তাকে অনুমতি দেয়া হয়েছিল কুরআনে যা কিছু রয়েছে তার ব্যাখ্যা করার। অতএব তিনি কুরআনের সাধারণ বিষয়কে নির্দিষ্ট করা, নির্দিষ্ট বিষয়কে সাধারণ করা, কুরআনের হুকুমের উপর পরিবর্ধিত হুকুম জারী করা এবং কুরআনে বর্ণিত শরী‘আতের বিধান বাস্তবায়ন করার জন্য অনুমতিপ্রাপ্ত। অতএব পঠিতব্য প্রকাশ্য অহী তথা কুরআনের মত তার উপরও আমল করা ওয়াজিব এবং তা গ্রহণ করা অপরিহার্য’।[17]

(ছ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আরো বলেন, لاَ أُلْفِيَنَّ أَحَدَكُمْ مُتَّكِئًا عَلَى أَرِيْكَتِهِ، يَأْتِيْهِ الْأَمْرُ مِنْ أَمْرِىْ مِمَّا أَمَرْتُ بِهِ، أَوْ نَهَيْتُ عَنْهُ، فَيَقُوْلُ: لاَ أَدْرِىْ! مَا وَجَدْنَا فِىْ كِتَابِ اللهِ اتَّبَعْنَاهُ ‘আমি যেন তোমাদের কাউকে এরূপ না দেখি যে, সে তার গদিতে ঠেস দিয়ে বসে থাকবে, আর তার কাছে আমার কোন আদেশ বা নিষেধ আসলে সে বলবে যে, আমি এসব কিছু জানি না। যা আল্লাহ্র কিতাবে পাব, তারই আমরা অনুসরণ করব’।[18]

(৭) ছাহাবায়ে কেরাম হাদীছকে আল্লাহ প্রেরিত ‘অহী’ হিসাবেই বিশ্বাস করতেন। যেমন আবূ উমামা বলেন, ইহুদীদের জনৈক আলেম একদা রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করল, পৃথিবীর কোন ভূখন্ড সর্বাপেক্ষা উত্তম? রাসূল (ছাঃ) চুপ থাকলেন। কিছুক্ষণ পর জিবরাঈল এসে বললেন, আজ আমি আল্লাহ্র এত নিকটে পৌঁছেছিলাম, যেখানে ইতিপূর্বে কখনো পৌঁছতে পারিনি। সেটি হ’ল আমি তাঁর নূরের ৭০ হাযার পর্দার নিকটবর্তী হয়েছিলাম। তিনি বলেছেন,أَنَّ خَيْرَ الْبِقَاعِ الْمَسَاجِدُ وَأَنَّ شَرَّ الْبِقَاعِ الأَسْوَاقُ ‘সর্বনিকৃষ্ট স্থান হ’ল বাজার ও সর্বোৎকৃষ্ট স্থান হ’ল মসজিদ’।[19]

অনুরূপভাবে আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) একদিন মিম্বরের উপর বসে ছিলেন এবং আমরাও তাঁকে ঘিরে বসেছিলাম। তিনি বললেন, ‘আমি আমার পরে তোমাদের জন্য সর্বাধিক যে ব্যাপারে ভয় করি তা হ’ল দুনিয়ার চাকচিক্য ও তার সৌন্দর্য, যা তোমাদের উপর উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। তখন একজন ছাহাবী বললেন, কল্যাণ কি মন্দের কারণ হবে? তখন তিনি কিছুক্ষণ চুপ রইলেন। রাবী বলেন, আমরা ধারণা করলাম, তাঁর উপর অহী নাযিল হচ্ছে। অতঃপর তিনি ঘাম মুছে বললেন, সেই প্রশ্নকারী কোথায়? রাবী বলেন, যেন তিনি প্রশ্নকারীর কথাকে প্রশংসারযোগ্য মনে করেছিলেন। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, কল্যাণ কখনও মন্দ আনে না....’।[20] 

অপর বর্ণনায় আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন যে, একদা জনৈকা মহিলা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকটে এসে বললেন, ‘হে আল্লাহ্র রাসূল! পুরুষেরা আপনার সব হাদীছ নিয়ে গেল। এক্ষণে আমাদেরকে আপনি নিজের থেকে একটা দিন নির্দিষ্ট করে দিন, যেদিন আমরা আপনার নিকটে আসব এবং আপনি আমাদেরকে শিখাবেন, যা আল্লাহ আপনাকে শিক্ষা দিয়েছেন’। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদের জন্য একটা দিন ও স্থান নির্দিষ্ট করে দেন ও সেখানে আগমন করেন। অতঃপর তাদেরকে শিক্ষা দেন যা আল্লাহ তাঁকে শিক্ষা দিয়েছেন’।[21]

শেষোক্ত হাদীছ থেকে তিনটি বিষয় সাব্যস্ত হয়- (১) রাসূলের যামানায় পুরুষ ও নারী সকলে হাদীছ শিক্ষাকে প্রধান কর্তব্য বলে মনে করতেন, (২) পুরুষের ন্যায় মহিলাগণও রাসূলের নিকটে হাদীছ শিখতে আসতেন এবং (৩) হাদীছকে তাঁরা সবাই আল্লাহ্র ‘অহী’ হিসাবে বিশ্বাস করতেন।[22]

(৮) হাদীছ যে আল্লাহ্র অহী তা বস্ত্তবিজ্ঞান দ্বারাও প্রমাণিত। যেমন আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বর্ণনা করেন, إنه خلق كل إنسان من بني آدم على ستين وثلاثمائة مفصل ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রত্যেক বনু আদমকে ৩৬০টি জোড়ার উপর সৃষ্টি করেছেন’।[23] আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, মানুষের শরীরের ৩৬০টি জোড়া রয়েছে। কোনও কম-বেশী দেখা যায়নি।[24] অতীতকালে যখন শরীরবিজ্ঞান নিয়ে মানুষের কাছে কোন তথ্যই ছিল না, সেই সময়ে রাসূল (ছাঃ) কীভাবে এই সূক্ষ্ম বৈজ্ঞানিক তথ্য জানলেন? এটি প্রমাণ করে যে, হাদীছ আল্লাহ্র পক্ষ থেকে অহী ব্যতীত কিছুই নয়। অনুরূপভাবে আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন,إذا وقع الذباب في إناء أحدكم فليغمسه كله، ثم ليطرحه، فإن في أحد جناحيه شفاء، وفي الآخر داء، ‘যখন তোমাদের কারও কোন খাবার পাত্রে মাছি পড়ে, তখন তাকে পুরোপুরি ডুবিয়ে দিবে, তারপর ফেলে দিবে। কারণ তার এক ডানায় থাকে আরোগ্য, আরেক ডানায় থাকে রোগ’।[25] এই হাদীছটি বিবেকবিরুদ্ধ এবং অযৌক্তিক মনে করে অনেক গবেষক সমালোচনা করেছিলেন। কিন্তু আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে, এই তথ্য সম্পূর্ণ সঠিক এবং বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।[26] এভাবে মহাকাশ তত্ত্ব, ভূতত্ত্ব, মানব সৃষ্টিতত্ত্ব, জিনতত্ত্ব, চিকিৎসা প্রভৃতি বিষয়ে বহু বৈজ্ঞানিক তথ্য হাদীছ থেকে দেয়া যায়, যা ১৪০০ বছর পূর্বে কারও পক্ষে জানা সম্ভব ছিল না। বরং অতি সম্প্রতি বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারসমূহের মাধ্যমে জানা গেছে।[27] সুতরাং এটি সম্ভব হ’তে পারে একমাত্র এই কারণে যে, মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহ্র সত্য নবী এবং হাদীছ আল্লাহ্র পক্ষ থেকেই তাঁর নিকটে অহী হিসাবে প্রেরিত হয়েছিল।

শেষকথা :

সুতরাং উপরোক্ত দলীলসমূহ থেকে সুস্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, হাদীছ প্রাচ্যবিদ ও হাদীছ অস্বীকারকারীদের ধারণা মোতাবেক তথাকথিত ঐতিহাসিক বিবরণ নয়, বরং তা কুরআনের মতই আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত অহী। মুহাম্মাদ ইবনু ছালেহ আল-উছায়মীন (২০০১খ্রি.) বলেন, ‘যদি রাসূল (ছাঃ) থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে কোন হাদীছ পাওয়া যায় তবে তা আইনগতভাবে কুরআনেরই সম মর্যাদাসম্পন্ন। পার্থক্য এতটুকুই যে, কুরআনের ক্ষেত্রে শুধু প্রয়োজন এটা নিশ্চিত করা যে, আয়াতটি কোন হুকুমের জন্য যথার্থ দলীল কিনা। আর হাদীছের ক্ষেত্রে প্রয়োজন দু’টি বিষয়ে লক্ষ্য রাখা-(১) হাদীছটি রাসূল (ছাঃ)-এর দিকে বিশুদ্ধরূপে নিসবতযুক্ত হওয়া তথা হাদীছটি ছহীহ হওয়া এবং (২) তা সঠিক দলীল হিসাবে সাব্যস্ত হওয়া। অতএব এতে কোনই সন্দেহের অবকাশ নেই যে, কোন সংবাদের সত্যায়ন কিংবা কোন হুকুম সাব্যস্ত করার জন্য বিশুদ্ধসূত্রে প্রাপ্ত হাদীছ পবিত্র কুরআনের মতই বিশ্বস্ততম অহী, যা অবশ্য অনুসরণীয়।’[28] আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন- আমীন!


[1]. وأولى أن لا يشك عالم في لزومها وأن يعلم أن أحكام الله ثم أحكام رسوله لا تختلف وأنها تجري على مثال واحد -মুহাম্মাদ বিন ইদরীস আশ-শাফেঈ, আর-রিসালাহ, তাহকীক : আহমাদ মুহাম্মাদ শাকির (বৈরূত : দারুল কুতুব আল-ইলমিয়াহ, তাবি), পৃ. ১৭৩; ড. ফাতহী আব্দুল করীম, আস-সুন্নাহ তাশরীঊ লাযিমুন দায়িমুন (কায়রো : মাকতাবা ওয়াহাবাহ, ১৯৮৫খ্রি.), পৃ. ৫২।

[2]. সূরা আন-নাজম, আয়াত : ৩-৪; ড. খলীল ইবরাহীম মোল্লা খাত্বের আল-আযযামী, মুখতাছারুস সুন্নাহ আন-নাবাবিইয়াহ ওয়াহইউন (মক্কা : দারুল ক্বিবলাহ, ২য় প্রকাশ : ২০০৫খ্রি.), পৃ. ৪১।

[3]. আশ-শাত্বিবী, আল-মুওয়াফাক্বাত, ৪/৩৯২-৩৯৩।

[4]. মুহাম্মাদ বিন ছালিহ আল-উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল, সংকলন : ফাহাদ ইবনু নাছির আস-সুলায়মান (রিয়াদ : দারুছ ছারিয়া, ১৯৯৬ খ্রি.), ৮/৩৯২।

[5]. মুহাম্মাদ আমীন আশ-শানক্বীতী, আযওয়াউল বায়ান (বৈরূত : দারুল ফিকর, ১৯৯৫খ্রি.), ৮/৩৭; জালালুদ্দীন আস-সুয়ূত্বী, মিফতাহুল জান্নাহ ফিল ইহতিজাজি বিস সুন্নাহ (মদীনা : মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস, ১৪০৯হি.), পৃ. ২৭-২৮। অনুরূপভাবে কামাল ইবনুল হুমাম বলেন, والسنة مبلغة ووحي غير متلو باطن لا من عند نفسه صلى الله عليه وسلم‘সুন্নাহ হ’ল প্রচারক এবং অহী, যা অপঠিত এবং অপ্রকাশ্য, যা তাঁর (রাসূল ছাঃ)-এর নিজের পক্ষ থেকে ছিল না (বরং আল্লাহ্র পক্ষ থেকেই ছিল)। দ্র. ইবনু আমীরিল হাজ্জ, আত-তাক্বরীর ওয়াত তাহবীর আলা তাহরীরীল কামাল ইবনুল হুমাম (বৈরূত : দারুল কুতুবিল-ইলমিয়াহ, ১৯৮৩খ্রি.), ৩/৬৫।

[6]. সূরা নাজম, আয়াত নং ৩-৪।

[7]. ইবনু কাছীর, তাফসীরুল কুরআনিল আযীম (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ইলমিয়াহ, ১৪১৯হি.), ৭/৪৪৩।

[8]. বুখারী, হা/৪৮৮৬, ৫৯৩৯, ৫৯৪৩, মুসলিম, হা/২১২৫।

[9]. মুছত্বফা আল-আ‘যমী, দিরাসাতুন ফিল হাদীছীন নববী, পৃ. ১৪।

[10]. মুছত্বফা আল-আ‘যমী, দিরাসাতুন ফিল হাদীছীন নববী, পৃ. ১৪।

[11]. ইবনু হাযম, আল-ইহকাম ফী উছূলিল আহকাম, ৪/১১৪।

[12]. মুহাম্মাদ ইসমাঈল সালাফী, হুজ্জিয়াতে হাদীছ (লাহোর : মাকতাবা ইসলামিয়া, তাবি), পৃ. ১৭।

[13]. আবূ মুহাম্মাদ আলী ইবনু হাযম আল-আন্দালুসী, আল-ইহকাম ফী উছূলিল আহকাম (বৈরূত : দারুল আফাক আল-জাদীদাহ, তাবি), ১/১২১।

[14]. وَأَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الذِّكْرَ لِتُبَيِّنَ لِلنَّاسِ مَا نُزِّلَ إِلَيْهِمْ وَلَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَআর আমরা তোমার নিকটে নাযিল করেছি ‘যিকর’ (কুরআন), যাতে তুমি মানুষকে বিশদভাবে ব্যাখ্যা করে দাও যা তাদের প্রতি নাযিল করা হয়েছে এবং তারা চিন্তা-গবেষণা করে’।

[15]. Muhammad Taqi Usmani, The Authority of Sunnah (New Delhi : Kitab Bhaban, 4th ed : 1998), p. 77.

[16]. আহমাদ, হা/১৭১৭৪, আবূদাউদ, হা/৪৬০৪; সনদ ছহীহ।

[17]. আবূ সুলাইমান আল-খাত্তাবী, মা‘আলিমুস সুনান, ৪/২৯৮।

[18]. তিরমিযী, হা/২৬৬৩, আবূদাঊদ, হা/৪৬০৫, সনদ ছহীহ।

[19]. ইবনু হিববান, হা/১৫৯৯; হাকেম হা/৩০৬, ২১৪৯; সনদ হাসান।

[20]. বুখারী, হা/১৪৬৫, ২৮৪২, ৬৪২৭; মুসলিম, হা/১০৫২।

[21]. বুখারী, হা/৭৩১০; মুসলিম, হা/২৬৩৩।

[22]. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, হাদীছের প্রামাণিকতা (রাজশাহী : হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ; ২য় সংস্করণ : ২০১২খ্রি.), পৃ. ১০-১১।

[23]. মুসলিম, হা/১০০৭।

[24]. ড. খলীল আল-আয্যামী, মুখতাছারুস সুন্নাহ আন-নাবাবিইয়াহ ওয়াহইয়ুন (জেদ্দা : দারুল ক্বিবলাহ, ২য় প্রকাশ : ২০০৫খ্রি.), পৃ. ১৮৬-১৮৭।

[25]. বুখারী, হা/৩৩২০, ৫৭৮২।

[26]. মুখতাছারুস সুন্নাহ আন-নাবাবিইয়াহ ওয়াহইয়ুন, পৃ. ১৯৯-২০১।

[27]. ড. খলীল আয্যামী তাঁর ‘মুখতাছারুস সুন্নাহ আন-নাবাবিইয়াহ

ওয়াহইয়ুন’ গ্রন্থে এমন ১৫টি উদাহরণ দিয়েছেন। এছাড়া ড. ছালিহ ইবনু আহমাদ রিযা এই বিষয়ে الاعجاز العلمي في السنة النبويةশিরোনামে ২ খন্ডে ১৫৬৮ পৃষ্ঠার একটি বৃহদাকার গ্রন্থ লিখেছেন (বৈরূত : মাকতাবাতুল ওবায়কান, ১ম প্রকাশ : ২০০১খ্রি.)। উর্দূতেও এ বিষয়ে ডা. তারিক মাহমূদ চুগতাই ‘সুন্নাতে নববী আওর জাদীদ সাইন্স’ শিরোনামে ২ খন্ডে একটি মূল্যবান গ্রন্থ প্রকাশ পেয়েছে (লাহোর : দারুল কুতুব, ২০০৩খ্রি.)।

[28]. মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল-উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া, ৮/৩৯২।






হজ্জ সম্পর্কিত ভুল-ত্রুটি ও বিদ‘আত সমূহ - মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম মাদানী
হাদীছ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ পরিক্রমা (শেষ কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব
জামা‘আতবদ্ধ জীবন যাপনের আবশ্যকতা (৪র্থ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ - রফীক আহমাদ - বিরামপুর, দিনাজপুর
ঈছালে ছওয়াব : একটি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ (১ম কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
নববী চিকিৎসা পদ্ধতি - কামারুযযামান বিন আব্দুল বারী
হেদায়াতের পথে প্রতিবন্ধকতা - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
মুসলিম সমাজে মসজিদের গুরুত্ব (৫ম কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
নবী করীম (ছাঃ)-এর প্রতি আদব সমূহ - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
ইসলামের আলোকে জ্ঞান চর্চা (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - ড. মুহাম্মাদ আজিবার রহমান
মানব জাতির সাফল্য লাভের উপায় (৪র্থ কিস্তি) - হাফেয আব্দুল মতীন - পিএইচ.ডি গবেষক, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মালয়েশিয়া
প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণের শিষ্টাচার - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
আরও
আরও
.