খুলনার পাইকগাছা উপযেলার গদাইপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের বৃদ্ধ মেছের আলী গাযী (৯৫) ও তার স্ত্রী সোনাভান বিবি (৮৬) ইতিপূর্বে তারা চার ছেলের মধ্যে সব সম্পত্তি সমানভাবে লিখে দিয়েছেন। অথচ এখন ছেলেরা কেউ তাদের দায়িত্ব নিতে চায় না। সামাজিক চাপে পড়ে চার ছেলের বাড়ীতে পালাক্রমে বাপ-মা থাকতেন। কিন্তু তিনদিন আগে বড় ছেলে না করে দিলে এবং অন্য ছেলেরাও আশ্রয় না দিলে এই বৃদ্ধ পিতা-মাতা গত ৩১শে জুলাই ও ১লা আগষ্ট শনি ও রবিবার প্রচন্ড বর্ষার মধ্যে নিকটবর্তী বাযারের এক দোকান ঘরের বাইরে চালের নীচে কোনরকমে মাথা গুঁজে দু’দিন কাটান।  

লোকমুখে অভিযোগ পেয়ে পাইকগাছা উপযেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালেদ এবং ওসি এজায শফী সোমবার রাত সাড়ে ১০-টার দিকে সেখানে যান ও বৃদ্ধ দম্পতিকে উদ্ধার করে উপযেলায় নিয়ে আসেন। পরে চার ছেলেকে ডেকে এনে তাদেরকে দায়িত্ব নিতে বললে তারা নিজেরাই ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। কেউই তাদের পিতা-মাতার দায়িত্ব নিতে চায় না। এ অবস্থায় তিনি তাদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। তখন বড় ছেলে রাযী হ’লে তিনি বাপ-মাকে তার যিম্মায় দিয়ে দেন ও বাকী তিন ছেলেকে থানার মাধ্যমে আদালতে পাঠান। তিনি উপযেলার পক্ষ থেকে তাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নেন।

পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন ২০১৩ অনুযায়ী পিতা-মাতার অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে বলে জানান পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। উল্লেখ্য যে, উক্ত বৃদ্ধ দম্পতি এত বয়স হওয়ার পরেও কোন বয়স্ক ভাতা পান না।

[স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কি এসব বয়স্ক মানুষকে দেখতে পান না? ধন্যবাদ উপযেলা প্রশাসনকে। উচিৎ ছিল ঐ চার ছেলেকে পুলিশ দিয়ে জনসমক্ষে আচ্ছামত পিটানো। তারপর তাদেরকে দিয়ে বাপ-মায়ের পায়ে ধরে ক্ষমা চাওয়ানো এবং বাপ-মাকে তাদের যিম্মায় স্থায়ীভাবে দিয়ে দেওয়া। গত মাসে আমরা পত্রিকায় দেখেছি, পিতার মৃতদেহ উঠানে ফেলে রেখে সন্তানেরা সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে মারামারিতে লিপ্ত হয়েছে। ২৭ ঘন্টা পর সেই মৃতদেহ দাফন করা হয়। তাছাড়া করোনায় মৃত ব্যক্তিদের নিকটাত্মীয়রা লাশ ছেড়ে পালাচ্ছেন। তাদের দাফন-কাফনেও যাচ্ছেন না। অথচ মৃত্যুর পর করোনা থাকেনা। সামাজিক এই অবক্ষয়ের মূলে রয়েছে অজ্ঞতা ও ঈমানী দুর্বলতা। এজন্য সকল সামাজিক সংগঠন ও মিডিয়াগুলির মাধ্যমে ব্যাপক গণসচেতনতা ও ঈমানী পরিবেশ সৃষ্টি করা আবশ্যক (স.স.) ]






আরও
আরও
.