ঝিনাইদহ সদর উপযেলার গান্না ইউনিয়নের চাঁন্দেরপোল গ্রামের সফল কৃষক আফযাল হোসেন (৬৫) মসুরের আবাদ করে পেয়েছেন অভাবনীয় সাফল্য। বর্তমানে তার স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ তিন কোটি টাকার বেশী। চলতি মৌসুমে তিনি ১২ বিঘা জমিতে বারি-৪, ৫ ও ৬ জাতের মসুর আবাদ করেছেন। প্রতি বিঘায় তার খরচ হয়েছে ২,৫০০ টাকার মতো। বিঘাপ্রতি তিনি ১০ মণ করে মসুর ঘরে তুলবেন বলে আশা করছেন। এতে খরচ বাদে তার লাভ হবে দুই লাখ টাকা।

আফযাল হোসেন ১৯৬৯ সালে এসএসসি পাস করেন। সংসারে প্রচন্ড অভাবের কারণে কলেজে ভর্তি হ’তে পারেননি। এরপর শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীনতার পর তাদের পরিবারে নেমে আসে আরও দুর্গতি। দুর্ভিক্ষের সময় পরিবারের সবাই একটানা ৩-৪ দিন পর্যন্ত না খেয়ে থেকেছেন। পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাতে হাতে তুলে নেন লাঙ্গল-জোয়াল, শুরু করেন কৃষিকাজ। প্রথমে ৪ বিঘা জমিতে মসুর চাষ করেন। পান ঈর্ষণীয় সাফল্য। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সংসারে আসতে থাকে সচ্ছলতা।

আফযাল হোসেনের বিশ্বাস কৃষিকাজই পারে দেশের ও নিজের সমৃদ্ধি আনতে। তার কাছে প্রতিটি ডালের দানা সোনার দানার মতো। ’৮০ দশকের শুরুতে তার কৃষি বিপ্লব এলাকার কৃষকদের আকৃষ্ট করে। সবাই ছুটে আসতে থাকেন পরামর্শ নেয়ার জন্য। একজন শিক্ষিত চাষী হিসাবে তিনি অন্যান্য চাষীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। মসুর ডাল আবাদ করে ব্যাপক সফলতা অর্জন করায় গাজীপুর কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ১৯৯৭ সালে আফযাল হোসেনকে ‘জাতীয় কৃষি পদক’ দেয়। যেলা পর্যায়ে তিনি দুইবার সফল ডালচাষী হিসাবে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেন।

আফযাল হোসেন এলাকায় এখন কোটিপতি কৃষক হিসাবে পরিচিত। তার জমির পরিমাণ ৪৫ বিঘার বেশী। গোয়েলে আছে ৮টি গরু, পুকুর ভরা মাছ। বর্তমানে তিনি প্রায় ৩ কোটি টাকার মালিক। তিনি ২০০০ সালে গান্নায় প্রতিষ্ঠা করেছেন আলহাজ্জ মশীউর রহমান ডিগ্রি কলেজ।

 [সংকলিত]






আরও
আরও
.