
উত্তর : দীর্ঘ তেলাওয়াতে তারাবীহ ছালাত আদায় করা মুস্তাহাব। কারণ রাসূল (ছাঃ) যে তিন দিন তারাবীহ ছালাত আদায় করেছিলেন তাতে তিনি লম্বা তেলাওয়াত করেছিলেন।
বরং একই রাক‘আতে তিনি সূরা বাক্বারাহ, আলে ইমরান ও নিসা পাঠ করেছিলেন (বুখারী হা/১১৪৭; মুসলিম হা/৭৭২; নাসাঈ হা/১৬০৫)। সায়েব বিন ইয়াযীদ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, ওমর (রাঃ) ওবাই বিন কা‘ব ও তামীম দারীকে আদেশ করলেন যেন তারা লোকেদেরকে নিয়ে রামাযান মাসের রাতের এগার রাক‘আত তারাবীহর ছালাত আদায় করে। এ সময় ইমাম তারাবীহর ছালাতে এ সূরাগুলো পড়তেন। যে সূরার প্রত্যেকটিতে একশতের বেশী আয়াত ছিল। ক্বিয়াম দীর্ঘ হওয়ার কারণে আমরা আমাদের লাঠির উপর ভর করে দাঁড়িয়ে ফজরের নিকটবর্তী সময়ে ছালাত শেষ করতাম (মুওয়াত্ত্বা, মিশকাত হা/১৩০২)।
‘খতম তারাবীহ’ বলে কোন নিয়ম শরী‘আতে নেই এবং তারাবীহর ছালাতে কুরআন খতম করার বিশেষ কোন ফযীলত নেই। বরং ক্বিরাআত দীর্ঘ হৌক বা সংক্ষিপ্ত হৌক ছালাতে খুশূ-খুযূই হ’ল প্রধান বিষয়। মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি জানিনা যে, আল্লাহর নবী (ছাঃ) কখনো এক রাত্রিতে সমস্ত কুরআন খতম করেছেন কিংবা ফজর অবধি সারা রাত্রি ব্যাপী (নফল) ছালাত আদায় করেছেন (মুসলিম হা/৭৪৬; মিশকাত হা/১২৫৭)। আজকাল খতম তারাবীহতে হাফেযগণ ক্বিরাআত এমন দ্রুত পড়েন, যা কুরআন অবমাননার শামিল। মুছল্লীরা যা বুঝতে সক্ষম হন না। অথচ আল্লাহ বলেছেন, ‘যখন কুরআন পাঠ করা হয়, তখন তোমরা তা মনোযোগ দিয়ে শোন ও চুপ থাকো’ (আ‘রাফ ৭/২০৪)। যার অর্থ কুরআন শোনা ও অনুধাবন করা। দ্রুত খতম করার ফলে অনুধাবন করার বিষয়টি উধাও হয়ে যায়। অনেকে খতম তারাবীহর ভয়ে তারাবীহর জামা‘আতেই আসেন না। অতএব মুছল্লীদের আগ্রহ বুঝে হাফেয ছাহেবগণ তারাবীহর ক্বিরাআত দীর্ঘ অথবা সংক্ষিপ্ত করবেন।
প্রশ্নকারী : আব্দুল্লাহ রাইসান, নিয়ামতপুর, নওগাঁ।