উত্তর :
মি‘রাজে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আল্লাহকে স্বচক্ষে দেখেননি। আবু যার
গিফারী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলা হ’ল, আপনি কি আল্লাহকে
দেখেছেন? জবাবে তিনি বললেন, ‘আল্লাহ তো নূর। আমি কি করে তাঁকে দেখব’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৬৫৯-৫৬৬০ ‘আল্লাহকে প্রত্যক্ষ করা’ অনুচ্ছেদ)।
আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘...যে ব্যক্তি বলে যে, মুহাম্মাদ (ছাঃ) স্বীয়
পালনকর্তাকে দেখেছেন সে মিথ্যা বলে। অতঃপর তিনি দেখতে না পারার প্রমাণে
দলীল পেশ করে বলেন, ‘কোন চোখ তাঁকে দেখতে পারে না। বরং তিনি সকল চোখকে
দেখতে পান’ (আন‘আম ৬/১০৩)। তারপর পাঠ করলেন, ‘অহীর মাধ্যমে বা পর্দার আড়াল থেকে ব্যতীত আল্লাহর সাথে কথা বলা কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় (শূরা ৫১; মুসলিম হা/১৭৭; তিরমিযী হা/৩০৬৮)। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর বাণী, ‘যা সে দেখেছে তার হৃদয় তা অস্বীকার করেনি.. নিশ্চয়ই সে তাকে আরেকবার দেখেছিল (নাজম ৫৩/১১ ও ১৩)। তিনি তাকে অন্তরে দু’বার দেখেছেন (মুসলিম হা/১৭৬; মিশকাত হা/৫৬৬০)।
এখন দু’বার কাকে দেখেছেন এর ব্যাখ্যায় ছাহাবীগণ বলেন, নবী করীম (ছাঃ)
জিব্রীল (আঃ)-কে তাঁর আসল আকৃতিতে দু’বার দেখেছেন তাঁর ছয়শত ডানা বিশিষ্ট
অবস্থায়। তাঁর প্রসারিত ডানা পূর্ব ও পশ্চিমের (আকাশ ও পৃথিবীর) মধ্যবর্তী
স্থানকে বেষ্টন করে রেখেছিল। এ দর্শনকে নবী করীম (ছাঃ)-এর অন্তর মিথ্যা মনে
করেনি’ (মুসলিম হা/১৭৪; তিরমিযী হা/৩২৮৩; মিশকাত হা/৫৬৬২)। উল্লেখ্য যে, যে সকল হাদীছে বর্ণিত হয়েছে যে, মুহাম্মাদ (ছাঃ) তাঁর রবকে দেখেছেন তা জাল বা যঈফ (হাকেম হা/৩২৩৪; তিরমিযী হা/৩২৭৯; যিলালুল জান্নাহ হা/৪৩৭)।
এক্ষণে ইবনু আববাসের বক্তব্য সত্য হিসাবে ধরলেও তা তার নিজস্ব উক্তি হওয়ায়
এবং আয়েশা (রাঃ)-এর প্রতিবাদ থাকায় তা দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয় (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৬/৫০৯; ইবনুল ক্বাইয়িম, ইজতিমাউ জয়ূশিল ইসলামিয়াহ ১/১২)।