
উত্তর : উক্ত হাদীছ ছহীহ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, আমার উম্মতের বয়স ষাট হ’তে সত্তর বছরের মাঝামাঝি এবং এমন লোকের সংখ্যা কম হবে যারা তা অতিক্রম করবে’ (তিরমিযী হা/২৩৩১, ৩৫৫০; মিশকাত হা/৫২৮০; ছহীহাহ হা/৭৫৭)। উম্মতে মুহাম্মাদীর ষাট থেকে সত্তর বছরের হায়াতের বিষয়টি অধিকাংশের ভিত্তিতে বলা হয়েছে, অন্যথায় অনেকেই নববই এমনকি একশত বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকেন। এগুলো ব্যতিক্রমী ঘটনা। এ হাদীছ থেকে উদ্দেশ্য এটাও হ’তে পারে যে, উম্মতের ষাট থেকে সত্তর বছরের হায়াত হ’ল ইবাদত-বন্দেগীর ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এটা মধ্যবর্তী সময়, যাতে উম্মাতের অধিকাংশ মানুষ পৌঁছতে পারে। আমাদের নবী মুহাম্মাদ (ছাঃ) এবং খুলাফায়ে রাশিদীনের প্রথম ও দ্বিতীয় খলীফা যথাক্রমে আবুবকর ছিদ্দীক এবং ওমর ফারূক (রাঃ) সহ অনেক মনীষী যেমন ইমাম বুখারী, ইমাম মুসলিম, ইমাম তিরমিযী প্রমুখ এই বয়সেই মৃত্যুবরণ করেন। (মোল্লা আলী ক্বারী, মিরক্বাতুল মাফাতীহ ৮/৩৩০৩)।
ষাট থেকে সত্তর বছর বয়স হ’ল এ উম্মতের জীবনের উৎকর্ষতার নির্দিষ্ট স্তর (STANDARD TIME)। খুব অল্প সংখ্যক মানুষ এটা অতিক্রম করে একশত বা তার ঊর্ধ্বে পৌঁছতে পারে। ছাহাবীদের মধ্যে আনাস ইবনু মালিক, আসমা বিনতে আবুবকর প্রমুখ একশত বছর বা তার চেয়ে অধিক বছর বেঁচে ছিলেন। এছাড়াও ব্যতিক্রম দুই একজন ছাহাবী শতবর্ষের ঊর্ধ্বে বেঁচে ছিলেন, যেমন কবি হাসসান ইবনু ছাবিত, সালমান ফারেসী প্রমুখ ছাহাবী (মিরক্বাত ৮/৩৩০৩; লুম‘আত ৮/৪৯১)।
উল্লেখ্য যে, বয়স বৃদ্ধির পাশাপাশি আমল বৃদ্ধি পেলে তা জীবনের জন্য খুবই কল্যাণকর। আবূ বাকরাহ (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! সবচেয়ে উত্তম কে? তিনি বললেন, যার আয়ু দীর্ঘ হয় এবং কর্ম উত্তম হয়। লোকটি বলল, আর সবচেয়ে মন্দ কে? তিনি বললেন, যার আয়ু দীর্ঘ হয় এবং কর্ম খারাপ হয়’ (তিরমিযী হা/২৩২৯, সনদ ছহীহ)।
প্রশ্নকারী : ইমরান হোসাইন, পূর্বাচল, ঢাকা।