জোড়া লাগানো যমজ শিশু শিফা-রিফাকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সফলভাবে পৃথক করা হয়েছে। গত ৭ই সেপ্টেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ ঘণ্টাব্যাপী এ অস্ত্রোপচারে ৮২ জন ডাক্তার অংশগ্রহণ করেন। অস্ত্রোপচারে নেতৃত্ব দেওয়া চিকিৎসক শিশু সার্জারী বিভাগের অধ্যাপক সাহানুর ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যমজ শিশু দু’টির জন্মগত ত্রুটি ছিল। এসব রোগীর ক্ষেত্রে কখনো দু’জনের কাউকে রক্ষা করা যায় না, আবার কখনো একজনকে বাঁচানো সম্ভব হয়। এই দুই শিশুর মধ্যে শিফার জন্মগত হৃদরোগসহ আরও কয়েকটি সমস্যা ছিল। এত সব সমস্যার মধ্যেও সফলভাবে শিশু দু’টিকে পৃথক করা গেছে। সবার সমন্বয়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এটি সফল হয়েছে। তিনি দেশবাসীর কাছে শিশু দু’টির জন্য দো‘আ চান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২৩ সালে পোষাককর্মী বাদশাহ মিয়ার স্ত্রী মাহমূদার জোড়া লাগানো যমজ শিশুর জন্ম হয়। পরে ২১শে জুন তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের চিকিৎসার জন্য বোর্ড গঠন করা হয়। ঐ বোর্ডের তত্ত্বাবধানে শিফা-রিফার চিকিৎসা চলতে থাকে। জন্মগতভাবে দুই শিশুর মাথা, দুই হাত, দুই পা, মলদ্বার, প্রস্রাবের রাস্তা আলাদা। তবে বুক ও পেট জোড়া লাগানো অবস্থায় রয়েছে। পরীক্ষার পর দেখা যায়, দু’জনের হৃৎপিন্ডের পর্দা, সাধারণ যকৃৎ নালি, পোর্টাল শিরা, ক্ষুদ্রান্ত্রের কিছু অংশ একে অন্যের সঙ্গে জোড়া লাগানো। দু’জনের মধ্যে একজন অপেক্ষাকৃত কম খেলেও ওযন বেশী ছিল। এরপর দীর্ঘদিন ঐ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে ছিল এই জময শিশুরা।
যমজ শিশুর বাবা বাদশাহ মিয়া বলেন, ‘আমি গরীব মানুষ। আমার পক্ষে এ চিকিৎসা করানো সম্ভব ছিল না। চিকিৎসক স্যারেরা অনেক কষ্ট করেছেন। আমার সন্তানদের চিকিৎসার জন্য সব খরচও দিয়েছেন তাঁরা। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই।