ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, চীন সহ এশিয়া ও ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ। সম্প্রতি চীনের অর্থনৈতিক হাব সাংহাইতে আঘাত হেনেছে টাইফুন বেবিনকা। ৭৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ১৫১ কিলোমিটার গতিবেগসম্পন্ন এই ঝড়ের প্রভাবে সাংহাই জুড়ে চরম অচলাবস্থা বিরাজ করছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার চার দেশে আঘাত হেনেছে টাইফুন ইয়াগি। যার প্রভাবে সৃষ্ট প্রবল ঝড়-বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসে মিয়ানমার, ভিয়েতনাম, লাওস ও থাইল্যান্ডে প্রাণহানি পাঁচ শতাধিক ছাড়িয়েছে। লাখ লাখ বাড়িঘর ও বেশ কিছু বাঁধ ধ্বংস হয়ে গেছে। ঘরছাড়া হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ। নিখোঁজ রয়েছে অনেকে।

অন্যদিকে, ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে মধ্য ও পূর্ব ইউরোপ। তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে ইউরোপের দেশ পোল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি ও চেক প্রজাতন্ত্র। নাজুক অবস্থায় রয়েছে অস্ট্রিয়া, জার্মানি ও সেলাভাকিয়া। সব দেশেই জারী রয়েছে বন্যা সতর্কতা। বন্যা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশগুলোর সরকার। মানুষের দুর্ভোগ পৌঁছেছে চরমে।

এদিকে মেক্সিকোর উত্তরাঞ্চলে শুক্রবার মৌসুমি ঝড় ইলিয়ানা আঘাত হানার প্রভাবে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে বন্যা ও ভূমিধস দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে ১০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছে অনেকে। চলছে উদ্ধার তৎপরতা।

চেক রিপাবলিকের অনেক শহর-গ্রাম বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। শহরের প্রায় প্রতিটি রাস্তা এখন ৬ ফুট পানির নীচে। মোবাইল ও টেলিযোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন।

ভারতের বিভিন্ন স্থানে চলতি বছর অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ। কলকাতায় টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়েছে জনজীবন। পশ্চিমবঙ্গের কাছাকাছি অবস্থান করায় বৈরি আবহাওয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সেখানকার উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাসের পাশাপাশি বন্যা সতর্কতা জারী করা হয়েছে।

বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়েছে এশিয়ার আরেক দেশ পাকিস্তান। ভারি বৃষ্টি, ভূমিধস আর বন্যায় শুধু খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

এক্ষণে এসব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণ কি কেবল আবহাওয়া পরিবর্তন! সে বিষয়ে এখনো ঐক্যমতে আসতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। তবে একটা বিষয়ে বিজ্ঞানীরা একমত যে বৈশ্বিক উষ্ণতা যত বাড়ছে, ঘূর্ণিঝড় তত বেশী শক্তিশালী হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা আরও অধিক উষ্ণ হওয়া এর প্রাথমিক কারণ হ’তে পারে। গত চার দশকে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।







আরও
আরও
.