২০০৪
সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছেন ভারতীয় প্লাস্টিক সার্জন ডা. সুবোধ কুমার সিং।
যিনি বিনা পারিশ্রমিকে এ পর্যন্ত ৩৭ হাযার ঠোঁট-তালু কাটা শিশুকে স্বাভাবিক
অবস্থায় ফিরিয়ে এনেছেন অপারেশনের মাধ্যমে। সাথে সাথে ভারতজুড়ে আরো কয়েক
ডজন ডাক্তারকে এর প্রশিক্ষণও দিয়েছেন তিনি।
নাবালক অবস্থায় পিতৃহারা দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা ডা. সুবোধ জানান, ছোট থেকেই অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েছি আমি। দরিদ্রদের দুঃখ-কষ্টগুলো বুঝতে পারি। কারণ আমিও তাদের মতোই। যেহেতু চিকিৎসক হিসেবে আমার সুযোগ আছে দরিদ্রদের সাহায্য করার, তাই আমি এ সুযোগ কখনো হাতছাড়া করিনি।
বিশ্বে গড়ে প্রতি ৭০০ জনের মধ্যে অন্তত একজন শিশু ঠোঁট-তালু কাটার সমস্যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। সে হিসাবে বছরে প্রায় ২ লাখ ঠোঁট কাটা ও তালু ফাটা শিশু জন্মায়। এটি এক ধরনের জন্মগত ত্রুটি। যা গর্ভাবস্থায় শিশুর ঠোঁট বা মুখ সঠিকভাবে তৈরি না হ’লে ঘটে। প্লাস্টিক সার্জারির সাহায্যে এ ত্রুটি সংশোধন করা সম্ভব। তবে ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেক পরিবারই সার্জারী করাতে পারেন না।
এই শিশুরা প্রয়োজন অনুযায়ী দুধ খেতে পারে না। অনেকে অপুষ্টির কারণে মারা যায়। অনেকের বিকাশ ঘটে না সঠিকভাবে। এমন শিশুদের কথা বলার জন্য জিহবা ব্যবহার করতে অসুবিধা হয়, ফলে কথা বলতে সমস্যা হয়। বৈষম্যের কারণে অনেক শিশুরা স্কুল ছেড়ে দেয়। চাকরিতেও তারা থাকে পিছিয়ে। অনেক পরিবার এমন শিশু জন্মানোর পেছনে নারীকে দোষারোপ করে। এমন পিতা-মাতাও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এসব সমস্যার সমাধান দিতে পারে প্লাস্টিক সার্জারী। জানিয়েছেন ডা. সুবোধ।
ডা. সুবোধের আশা, একদিন তিনি ঠোঁট ও তালু কাটা সার্জারী বিষয়ে একটি জাতীয় কেন্দ্র স্থাপন করতে সক্ষম হবেন।
[আল্লাহ তার যেকোন বান্দাকে দিয়ে বান্দার কল্যাণ করে থাকেন। ডা. সুবোধ কুমার সিং-এর এই মহতী প্রচেষ্টাকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। অন্যান্য সার্জন ও চিকিৎসকদেরকেও এভাবে মানব কল্যাণে এগিয়ে আসার আহবান জানাই। যেকোন মহৎপ্রাণ ভাই-বোনদের উচিৎ এই ধরনের মেধাবী চিকিৎসকদের সহযোগিতা করা। যাতে তারা নির্বিঘ্নে এগিয়ে যেতে পারেন (স.স.)।]