পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত আইজিপি নাজিবুর রহমান। তিনি ২০১৮ সালে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমাদ ও ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়াঁর সাথে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন। অতঃপর ধার্মিক, সৎ, নীতিবান, দক্ষ ও নির্ভীক কর্মকর্তা হিসাবে সুনামের সাথে পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন দায়িত্বপালন করে ২০২১ সালে পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর থাকা অবস্থায় অবসরে যান।

নযীরবিহীন দুর্নীতির মাধ্যমে রক্ষকদের ভক্ষক হয়ে ওঠার খবরে আইন-শৃংখলা বাহিনী সহ দেশবাসী যখন দারুণভাবে বিব্রত, ঠিক তখনই নাজিবুর রহমানের মত কর্মকর্তারা সমগ্র পুলিশ বাহিনীর জন্য অনুকরণীয় হয়ে জাজ্বল্যমান দৃষ্টান্ত। পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার স্মৃতিচারণে উঠে এসেছে তার ন্যায়পরায়ণতার নানান ঘটনা।

বান্দরবান যেলার এসপি থাকার সময় তার বাটিতে অন্যদের চাইতে দু’টুকরা গোশত বেশী দেওয়াতে তিনি সেটি বাবুর্চীকে ফেরত দেন। পুলিশ লাইনের নারিকেল গাছের সমস্ত নারিকেল পেড়ে বিক্রি করে পুরো টাকা তিনি সরকারী কোষাগারে জমা দেন। নিজের জন্য দু’টি নেন বাজার মূল্য পরিশোধ করে। সরকার প্রদত্ত গাড়ি কখনোই ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতেন না। বলতেন সরকার গাড়ি দিয়েছে সরকারী কাজ করার জন্য, ব্যক্তিগত কাজের জন্য নয়। ছুটিতে বাড়ি যেতেন, সরকারী কোন প্রটোকল নিতেন না। বরং বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সিএনজিতে যেতেন। পাবলিক পরিবহন ব্যবহার করতেন। নিজের একটা করোলা গাড়ি ছিল। নিজেই ড্রাইভ করতেন। নিজের আপ্যায়ন ভাতা ও সোর্স মানি সকলের মধ্যে বিলি করে দিতেন। রাজশাহী সারদা পুলিশ একাডেমীর প্রিন্সিপাল থাকা অবস্থায় একাডেমীর সব ফল-মূল ও পুকুরের মাছ কনস্টেবল থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পর্যন্ত সমহারে বণ্টন করে দিতেন।

তিনি বলতেন, পুলিশ হ’ল মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার দায়িত্বশীল। তাই পুলিশিং হ’ল শ্রেষ্ঠ পেশা। তারা কোন কিছুর বিচার করে না, তবে বিচারের খুঁটি হিসাবে কাজ করে। তিনি বলতেন, পুলিশ জনগণের সেবক। দায়িত্ব পালনকালে কোন ক্রমেই যেন মানবাধিকার লঙ্ঘিত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তিনি বলতেন, আমি কলমের খোঁচায় ১৮ কোটি মানুষের সম্পদ চুরি করতে পারি। আমি তা করতে পারব যখন মনে হবে যে আমার মৃত্যু হবে না! কিন্তআমাকে তো মরতেই হবে। কাজেই আমি সেটা করতে পারি না’।

[ধন্যবাদ ও প্রাণঢালা দো‘আ রইল পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত আইজিপি নাজিবুর রহমানের জন্য। আল্লাহ তাকে ইহকালে ও পরকালে সম্মানিত করুন (স.স.)]







আরও
আরও
.