আজ মানুষের মনে আল্লাহভীতির বড্ড অভাব। অথচ মানুষের জন্য পরকালে মহাসাফল্য লাভ দু’টি বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। তা হচ্ছে, নিজেকে পরিশুদ্ধ করা এবং আল্লাহ পাককে যথাযথভাবে ভয় করা (বাক্বারাহ ১৮৯, আ‘লা ১৪, শামস ৯)। নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে অন্তরে আল্লাহভীতি জাগ্রত থাকা আবশ্যক। মূলতঃ এ দু’টি বিষয় অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। অন্তরে আল্লাহভীতি জাগ্রত থাকলে মানুষ যাবতীয় অন্যায় কাজ হ’তে বিরত থাকবে। আর অন্যায় হ’তে বিরত থাকলেই পরিশুদ্ধতা অর্জিত হবে।

আজ মানুষ বে-পরোয়াভাবে আল্লাহপাকের যাবতীয় নিষিদ্ধ কাজে নিমজ্জিত রয়েছে। মানুষ পার্থিব সুখ-শান্তির জন্য জীবনের শেষদিন পর্যন্ত প্রাচুর্য প্রতিযোগিতায় মোহগ্রস্ত হয়ে পড়েছে (তাকাছুর ১-২)। তাই প্রতিদিনই মানুষকে খুন-খারাবীসহ নানা নিষিদ্ধ কাজে জড়িত থাকতে দেখা যায়।

মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলির মধ্যে খাদ্য প্রথম স্থানে রয়েছে। মানুষকে বেঁচে থাকতে হ’লে আহারের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। দৈনন্দিন জীবনে চলতে আল্লাহপাক মানুষের জন্য সীমারেখা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আহারের ক্ষেত্রেও এ সীমারেখা বাদ পড়েনি। আল্লাহ পাক দুনিয়ার প্রথম মানুষ হযরত আদম (আঃ)-কে সৃষ্টির পর জান্নাতের সকল ফলমূল খেতে অনুমতি দিলেন। কেবল একটি গাছের কাছে যেতে নিষেধ করলেন। আল্লাহ পাকের এ নিষেধ উপেক্ষার পরিণতি সম্বন্ধে সকল মানুষের অবগতি আছে। আদম (আঃ) শয়তানের প্ররোচনায় নিষিদ্ধ গাছের ফল ভক্ষণ করায় শাস্তি স্বরূপ তাঁকে দুনিয়ায় অবতরণ করতে হয়। যদি হযরত আদম (আঃ) একটি মাত্র নিষিদ্ধ কাজ করায় জান্নাতের মত শান্তির আবাস হ’তে বহিষ্কৃত হয়ে থাকেন, তাহ’লে আমাদের ক্ষেত্রে শত শত নিষেধ উপক্ষো করার পরিণতি কি হ’তে পারে, এ বিষয়ে সকল মানুষের একটু চিন্তা-ভাবনা করা উচিত।

গান-বাজনা নিষিদ্ধ বিষয়ের আওতাভুক্ত। অথচ গান-বাজনাতে দেশ পুরাপুরিভাবে সয়লাব হয়ে গেছে। সিনেমা, টিভি, সিডি, মেমোরী চীপ গান-বাজনার আধুনিক উন্নতমানের উপকরণ। এগুলির অশ্লীলতার কারণে যুবসমাজ ধ্বংসের পথে নিত্য অগ্রসরমান। এগুলির অশ্লীলতা নিয়ন্ত্রণে সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। অথচ এ ব্যাপারে সরকারের সঠিক পদক্ষেপ লক্ষণীয় নয়।

নৈতিক চরিত্রের উন্নতির জন্য মানুষকে আল্লাহ প্রদত্ত যাবতীয় বিধানের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে সে মোতাবেক জীবন পরিচালনা করতে হবে। মানুষকে নৈতিক চরিত্রে উন্নীত করার একমাত্র হাতিয়ার কুরআনী শাসন ব্যবস্থা চালু করা। সরকারকে সেদিকে দৃষ্টি দিতে আকুল আহবান জানাই।

মুহাম্মাদ আতাউর রহমান

সন্ন্যাসবাড়ী, বান্দাইখাড়া, নওগাঁ।






আরও
আরও
.