ছাদে বাগান : পদ্ধতি ও পরিচর্যা

বর্তমানে বাড়ির ছাদে বাগান করা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অধিকাংশ বাড়ির ছাদেই বিভিন্ন ধরনের বাগান রয়েছে। তবে এসব বাগানের অধিকাংশই অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। পরিকল্পিত উদ্যোগ নেয়া হ’লে বাড়ির ছাদে ফলমুল ও শাক-সবজি উৎপাদন করা যায়। কোন গাছের জন্য কি ধরনের মাটি উপযোগী তা নিশ্চিত হয়ে ছাদে বাগান করলে ভাল হয়। এছাড়া মাটির ধরন জেনে বাগান করলে ছাদে যেকোন ধরনের গাছই জন্মানো সম্ভব। ৪-৫ কাঠা জমির উপর নির্মিত বাড়ির ছাদে পরিকল্পিতভাবে বাগান করলে পরিবারের চাহিদা পূরণ করেও বছরে বিক্রি করা যায় ৪০-৫০ হাযার টাকা। বিকল্প আয়ের উৎস হ’তে পারে এই ছাদে বাগান, যা পরিবারকে করবে সচ্ছল।

ছাদে বাগান পদ্ধতি :

ছাদে বাগান দু’ভাবে করা যায়। যেমন কাঠ বা লোহার ফ্রেম এঁটে বেড তৈরি করে এবং অন্যটি হ’ল টব, ড্রাম, পট, কনটেইনার এসব ব্যবহার করে। প্রথমোক্ত ক্ষেত্রে পুরো ছাদ বা ছাদের অংশবিশেষ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কার্নিশের পার্শ্বে বা আলাদা ফ্রেম করে সুন্দরভাবে ডিজাইন করে সেটিং করা যায়। এক্ষেত্রে জল ছাদ থাকতে হবে। জল ছাদ না থাকলে আলকাতরার প্রলেপ দিয়ে তার উপর মোটা পলিথিন বিছিয়ে তার উপর মাটি দিতে হবে। মাটির পুরুত্ব বেশি হ’তে হবে। অন্তত দু’ফুট পুরু মাটির স্তর থাকতে হবে। তবে যত বেশি হবে তত ভালো। অতিরিক্ত পানি, সার পাবার সুষ্ঠু ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রয়োজনে পরিমাণমত রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হবে। ফ্রেম তৈরির ক্ষেত্রে কাঠ, লোহা, স্টিল, মোটা রাবার এসব ব্যবহার করা যায়। তবে যেভাবেই বেড তৈরি হোক না কেন ৩-৪ বছর পর পুরো বেড ভেঙ্গে নতুন করে তৈরি করতে হবে। এতে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।

ছাদে বাগানের জন্য শুরুতেই মাটিকে ফরমালডিহাইড দিয়ে (প্রতি লিটার পানির সাথে ১০০ মিলিলিটার ফরমালডিহাইড মিশ্রিত করে) শোধন করে নেয়া যায়। মাটি শোধনের কৌশল হ’ল প্রয়োজন অনুযায়ী মাটি নিয়ে বর্ণিত মাত্রায় ফরমালডিহাইড মিশ্রিত পানি মাটিতে ছিটিয়ে দিয়ে পুরো মাটিকে মোটা পলিথিন দিয়ে ৩/৪ দিন ঢেকে রাখতে হবে। পরে পলিথিন উঠিয়ে সূর্যের আলোর তাপে খুলে রাখতে হবে পরবর্তী ৩/৪ দিন পর্যন্ত। ফরমালিনের গন্ধ শেষ হয়ে গেলেই মাটি ব্যবহারের উপযোগী হবে।

দ্বিতীয় পদ্ধতির মধ্যে আছে ড্রাম, বালতি, টব, কনটেইনার। এসবের যেকোন একটি বা দু’টি নির্বাচন করার পর পাত্রের তলায় কিছু পরিমাণ খোয়া (ইট পাথরের কণা) দিতে হবে। ইটের খোয়া পানি নিষ্কাশন এবং অতিরিক্ত পানি বের করে দেয়া এবং পাত্রের ভেতরে বাতাস চলাচলে সহায়তা করে। এক্ষেত্রেও অর্ধেক মাটি এবং অর্ধেক পঁচা জৈবসারের মিশ্রণ হ’তে হবে।

শাক-সবজি, ফুলের জন্য ছোট-খাট টব বা পাত্র হ’লেও চলে। কিন্তু ফলের ক্ষেত্রে পাত্র/ড্রাম যত বড় হয় তত ভালো। কেননা ফল গাছের শেকড় প্রকৃতিগতভাবে বেশ গভীরে যায়। কিন্তু ড্রাম/টব/পাত্রের সীমিত জায়গায় যথাযথভাবে বিস্তৃতি লাভ করতে পারে না। সেজন্য ছাদের বাগানে টব/ড্রামের আকার যত বড় হয় তত ভালো। টবে/ড্রামে চাষের ক্ষেত্রে গাছের জাত নির্বাচনের পর যৌক্তিকভাবে সাজাতে হবে। যেমন বড় গাছ পূর্ব ও দক্ষিণ পাশে না দিয়ে পশ্চিম ও উত্তর পাশে দিতে হবে। এতে আলো বাতাস রোদ ভালোভাবে পাবে। তাছাড়া ছোট বড় জাতের মিশ্রণ করে সেটিং করলে গাছের গাত্র বৃদ্ধিসহ বাড়তি ভালো হয়। আরেকটি যরূরী বিষয় হ’ল ছাদে বাগান করার ক্ষেত্রে ফল চাষাবাদে কলমের এবং হাইব্রিড জাতের ব্যবহার বেশি ফলদায়ক।

আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে সুন্দরভাবে বাঁশ/পিলার তৃতীয় রড দিয়ে জাংলো বা মাচা বানিয়ে টব/প্লাস্টিকের পাত্রে ফুল, বাহারী গাছ-গাছালী, অর্কিড আবাদ করা। এক্ষেত্রে ঝুলন্ত টব/পাত্র মাঝখানে না ঝুলিয়ে পাশে ডিজাইন করে সেটিং করলে জায়গার সদ্ব্যবহার হয়, দেখতেও সুন্দর লাগে।

ছাদে চাষ উপযোগী গাছ নির্বাচন করতে হবে। হাফ ড্রাম, টব বা চৌবাচ্চা কাঠামোয় চাষ পদ্ধতি ও পরিচর্যার ধরন জেনে নিতে হবে। ছাদ খোলামেলা থাকতে হবে। স্থায়ী বাগান করার জন্য ছাদে সিমেন্টের স্থায়ী টব তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে। গরুর নান্দার মতো বাজারে সিমেন্টের টব কিনতে পাওয়া যায়। লোহার হাফ ব্যারেল হ’লে সবচেয়ে ভাল হয়। স্থানান্তরের সুবিধার্থে ব্যারেলের দু’পাশে হাতল থাকলে সুবিধা হবে। টবের নিচে ছিদ্র থাকা যরূরী। কয়েকটি ভাঙা চাড়ি ছিদ্রের মুখে দিয়ে মাটি ভরতে হবে। তিন ভাগ মাটি, দুই ভাগ গোবর সার ও এক ভাগ পাতা পচা সার দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে টব পূর্ণ করতে হবে। বর্ষার আগে আগে টবে চারা কলম লাগাতে হবে।

ছাদে যেসব গাছ লাগানো যায় :

জাত নির্বাচনে সতর্ক সচেতন হওয়া যরূরী। সাধারণ জমিতে যেভাবে চাষ করা যায়, ছাদে সেভাবে করা যায় না। গাছ সাধারণভাবে তাদের বৃদ্ধির জন্য তেমন জায়গা পায় না। সেজন্য অতিরিক্ত সেবা-যত্ন ও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ছাদের বাগানে কখনো ঝোপ-ঝাড়-বাঁশ টাইপের কোন বড় গাছ লাগানো যাবে না। এতে হিতে বিপরীত হবে। বেশি রোদ বা গরম সহ্য করতে পারে এমন গাছই ছাদে বপন করা উত্তম।

ছাদে বাগান করতে ছোট আকারের ও বেশি ফলনশীল হাইব্রিড জাতের ফলদ গাছ লাগানো যেতে পারে। আম্রপালি ও মল্লিকা জাতের আম, পেয়ারা, আপেল কুল, জলপাই, করমচা, শরিফা, আতা, আমড়া, লেবু, ডালিম, পেঁপে, এমনকি কলা গাছও লাগানো যাবে। বিশ্বস্ত নার্সারী ও পরিচিত লোকজন বা বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে গাছ সংগ্রহ করা ভাল। বেঁটে প্রজাতির অতিদ্রুত বর্ধনশীল ও ফল প্রদানকারী গাছই ছাদ বাগানের জন্য উত্তম। বীজের চারার চেয়ে কলমের চারা লাগালে অতি দ্রুত ফল পাওয়া যায়। আজকাল বিভিন্ন ফলের গুটি কলম, চোখ কলম ও জোড় কলম পাওয়া যাচ্ছে। ছাদ বাগানের জন্য এসব কলমের চারা উত্তম। টবে আমের মধ্যে আম্রপালি, আলফানসো, বেঁটে প্রজাতির বারোমেসে, লতা, ফিলিপাইনের সুপার সুইট, রাড়গুআই চাষ করা যেতে পারে। লেবুর মধ্যে কাগজি লেবু, কমলা, মালটা, নারকেলি লেবু, কামকোয়াট, ইরানি লেবু, বাতাবি লেবু (অ্যাসেম্বল) টবে খুব ভালো হয়। এছাড়া কলমের জলপাই, থাইল্যান্ডের মিষ্টি জলপাই, কলমের শরিফা, কলমের কদবেল, ডালিম, স্ট্রবেরি, বাউকুল, আপেলকুল, নারিকেলকুল, লিচু, থাইল্যান্ডের লাল জামরুল, গ্রিন ড্রপ জামরুল, আপেল জামরুল, আঙুর, পেয়ারা, থাই পেয়ারা, ফলসা, খুদে জাম, আঁশফল, জোড় কলমের কামরাঙা, এমনকি ক্যারালা ড্রফ প্রজাতির নারিকেলের চাষ করা যেতে পারে। সঠিক মানের চারা হ’লে এক বছরের মধ্যেই ফল আসে। আজকাল বিদেশ থেকে উন্নত মানের কিছু চারা কলম দেশে আসছে। এসব সংগ্রহ করে লাগানো যায়। বাহারি পাতার জামরুল, পেয়ারা, সফেদা গাছও বিভিন্ন নার্সারিতে কিনতে পাওয়া যায়।

টবে ফল, প্রচলিত জাতের ফুল, শাক-সবজির সবটাই সহজে উৎপাদন করা সম্ভব। ফুলের মধ্যে গোলাপ, গাঁদা, দোলনচাঁপা, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, ইউফোরবিয়াসহ মৌসুমী ফুলের সবই এবং বাড়ির বারান্দায় মালতি লতা, দোপাটি, হাসনাহেনা চাষ করা যায়। ছাদ বাগানে বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মরিচ, শসা, লাউ, কুমড়া, ঢেঁড়স, বরবটি, সিম, ক্যাপসিকাম, লেটুসপাতা, পুদিনাপাতা, ধনেপাতাসহ প্রায় সব ধরনের সবজি টবে ফলানো সম্ভব। বাড়ির উঠোনে লাউয়ের মাচা, ঘি কাঞ্চন মরিচ ইত্যাদি চাষ করা যায়।

টবের টিপস : ফুল কিংবা ফল গাছ টবে চাষের ক্ষেত্রে গাছের আকার কত বড় হবে, সেই অনুপাতে টবের আকার নির্ধারণ করতে হবে। পানি গড়িয়ে যাওয়ার জন্য টবের নিচে ছিদ্র থাকতে হবে। ছিদ্রের উপর নারকেলের ছোবড়া বা ইটের টুকরো দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। টবে ব্যবহারের আগে ছোবড়া বা ইটের টুকরো ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। গরম পানিতে ধুয়ে নিতে পারলে ভালো হয়। যে গাছের চারা লাগানো হবে তা সাধারণ পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। এর ফলে রোগের সংক্রমণ অনেক কমে যায়। চারা কেনার সময় অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের চারা সংগ্রহ করা দরকার। গাছ বড় হ’লে প্রয়োজনে বড় টবে সাবধানে চারা স্থানান্তর করে নেওয়া যেতে পারে। তবে টব ভেঙে চারা গাছ বের করা যাবে না। চারা গাছটি যেন কোনভাবেই আঘাত না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

টবের সার-মাটি : সাধারণত দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিতে গাছ ভাল জন্মে। ছাদে বাগান করতে হ’লে এ ধরনের মাটি ব্যবহার করলে ভাল হয়। গাছের খাদ্যপুষ্টি চাহিদা মেটানোর জন্য মাটিতে দরকারি সার মেশাতে হবে। মাটিতে গোবর সার, কম্পোস্ট, পচা পাতা ও রাসায়নিক সার পরিমাণ মতো মেশাতে হবে। শুকনো দুর্বা ঘাস টবের মাটির মাঝামাঝি দিয়ে তার উপরে মাটি দিয়ে চারা গাছ লাগানো ভালো।

পরিচর্যা : ছাদে বা টবে যেহেতু স্বল্প জায়গায় সীমিত আকারে উৎপাদন করা হয় সেজন্য অতিরিক্ত সেবা-যত্ন এবং বিভিন্ন পরিচর্যায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে সার প্রয়োগে সতর্কতা যরূরী। কেননা সার কমবেশী হ’লে, গাছের সাথে লেগে গেলে গাছ মরে যাবে আবার পরিমাণ মতো না হ’লে অপুষ্টিতে ভুগবে।

টবের ক্ষেত্রে ছোট গাছ বড় হ’লে পট/টব বদল, ডিপটিং করতে হবে সময়মতো। এটা হচ্ছে পুরানো টবকে আলতো করে মাটিতে শুইয়ে গড়াগড়ি দিলে গাছটি টব থেকে বেরিয়ে আসবে। পরে অতিরিক্ত মূল কেটে মাটি বদলিয়ে সার প্রয়োগসহ নতুনভাবে গাছ বসানো। বছরে অন্তত একবার পুরাতন মাটি বদলিয়ে জৈব সারসহ নতুন মাটি দিতে হবে। ইদানিং বাজারে টবের মাটি কিনতে পাওয়া যায়। মানসম্মত মাটি কিনে টবে, পটে বা ড্রামে ভরতে হবে।

খুব সাবধানতার সাথে টব, পটে বা ড্রামে চারা, কলম বা বীজ লাগাতে হবে। ঠিক মাঝখানে পরিমাণ মতো মাটির নিচে রোপন করতে হবে। চারা বা কলমের সাথে লাগানো মাটির বল যেন না ভাঙ্গে সেদিকে নযর রাখতে হবে। চারা বা কলমের ক্ষেত্রে বীজতলা বা নার্সারীতে যতটুকু নিচে বা মাটির সমানে ছিল ততটুকু সমানে ছাদে লাগাতে হবে। বীজতলার থেকে বেশি বা কম গভীরে লাগালে গাছের বৃদ্ধিতে সমস্যা হবে। মাঠে ফলমূল সবজি চাষের চেয়ে ছাদে সবজি চাষের অনেক পার্থক্যের মধ্যে একটা হ’ল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। ছাদের বাগানে প্রতিদিন পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। সেজন্য পুরাতন রোগাক্রান্ত, বয়স্ক ডালপালা, পাতা সাবধানতার সাথে কেটে নির্দিষ্ট স্থানে জমা করতে হবে। এতে গাছপালা রোগমুক্ত থাকবে, ফলন ভাল হবে। ফুল এবং সবজিতে প্রয়োজন মাফিক সার প্রয়োগ করতে হবে। কিন্তু ফলের ক্ষেত্রে বছরে অন্তত দু’বার; বর্ষার আগে ও পরে সাবধানে পরিমাণমত সার দিতে হবে। সার প্রয়োগের সময় মাটির আর্দ্রতা দেখে নিতে হবে। কেননা বেশি আর্দ্র বা কম আর্দ্র কোনটাই সার প্রয়োগের জন্য উপযুক্ত নয়। বিশেষ ক্ষেত্রে কিছু কিছু সার পানিতে মিশিয়ে গাছে ছিটিয়ে দিতে হবে। গুঁটি সারও এক্ষেত্রে বিশেষ উপযোগী।

আমাদের দেশের আবহাওয়ায় যে কোন ফলে পোকা বা রোগের আক্রমণ অহরহ ঘটে থাকে। সেক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রতি দিন ২/৩ বার যদি ছাদের বাগান পরিদর্শন করা যায়, তাহ’লে বালাই আক্রমণ যেমন কম হবে তেমনি ফসলও ভাল পাওয়া যাবে। যদি হঠাৎ মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়ে যায়, তখন উপযুক্ত বালাইনাশক সঠিক সময়ে ব্যবহার করতে হবে। এ নিবন্ধে কেবল ছাদের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে স্থান, কাল ও ক্ষেত্র অনুযায়ী ঘরের ভেতরে, সিঁড়ি, ব্যালকনি, বারান্দা, কার্নিশ এসব জায়গায়ও অনায়াসে গাছ লাগানো যায়।

সেচ ও নিস্কাশন : ছাদে বাগান করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে নিয়মিত পানি সেচ দেয়া। কারণ বাগানের গাছগুলো যেহেতু সাধারণ মাটির সংস্পর্শ হ’তে দূরে থাকে তাই নিয়মিত পানি সেচ না দিলে গাছগুলো যেকোন সময় মারা যেতে পারে। প্রতিদিন সকাল-বিকাল গাছে পানি দিতে হবে। গাছের গোড়ায় যাতে পানি না জমে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ছাদে/টবে সেচ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেননা মাটির আর্দ্রতার জন্য সহজেই গাছপালা নেতিয়ে যাবে। আবার অতি পানি বা পানির আর্দ্রতার জন্যও গাছ নেতিয়ে পড়ে মরে যেতে পারে। তাই অবশ্যই ছাদের বাগানে প্রতিনিয়ত সেচের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। ছাদের বাগানে সেচের জন্য ঝাঁঝরি দিয়ে সেচ দেয়া ভালো। তাছাড়া প্লাস্টিকের চিকন পাইপ দিয়েও পানি দেয়া যায়। এক্ষেত্রে ডেলিভারী পাইপের মাথায় চাপ দিয়ে ধরলে পানি হালকাভাবে ছিটে পড়ে। ঐ পদ্ধতিও অনুসরণ করা যায়।

ছাদে বাগানের কিছু যরূরী টিপস

  1. লম্বা গাছকে পিছনে ও ছোট গাছকে সামনে রাখতে হবে।
  2. টবে বা ফ্রেমে খৈল দেয়া যাবে না, এতে পিঁপড়ার উপদ্রব বাড়তে পারে।
  3. বাজার থেকে কেনা প্যাকেটজাত কম্পোস্ট সার ব্যবহার করলে ভালো হয়।
  4. বছরে একবার নতুন মাটি দিয়ে পুরানো মাটি বদলিয়ে দিতে হবে। এটি অক্টোবর মাসে করা ভালো।
  5. ছাদের বাগানের জন্য মিশ্র সার, গুঁটি ইউরিয়া, খৈল, হাড়ের গুঁড়া (পচিয়ে) ব্যবহার করা ভালো।
  6. অবস্থা বুঝে গাছের গোড়ায় চুনের পানি সপ্তাহে ১ বার ব্যবহার করা যায়।

[সংকলিত]






আরও
আরও
.