ঘুষের টাকায়

আবু মূসা আব্দুল্লাহ

আনন্দ নগর, নওগাঁ।

ঘুষের টাকায় চালাই গাড়ী ঘুষের টাকায় নারী

ঘুষের টাকায় গড়েছি আমি আকাশ ছোঁয়া বাড়ী।

ঘুষের টাকায় জামা-জুতা আরও আলতা ফিতা

ঘুষের টাকায় সংসার চালাই আমি ঘুষখোর পিতা।

ঘুষের টাকায় কেনা আমার যত আসবাবপত্র

ঘুষের টাকায় দেশ-বিদেশে ঘুরি যত্রতত্র।

ঘুষের টাকায় সংগ্রহ আমার রঙ্গিন টেলিভিশন

ঘুষের টাকায় চলি ফিরি ঘুষেরই করি অনুশীলন।

ঘুষের টাকায় চালাই কত চাকর-বাকর শ্রমজীবি

ঘুষের টাকার খাবার খেয়ে আমি ডায়াবেটিসের রোগী।

ঘুষের টাকায় আজ আমার হয়েছে হাই পারটেনশান

ঘুষের টাকায় গড়েছি আমি ভুড়িটা পাহাড় সমান।

ঘুষের টাকায় গড়া আমার জীবন যৌবন খানি

ঘুষের টাকায় খেয়োনা কেউ হ’লেও এক গ্লাস পানি।

ঘুষের টাকায় আমার মত জীবন কেউ গড়ো না

ঘুষের টাকায় সংসার চালিয়ে জাহান্নামে যেও না।

জন্ম আমার

মুহাম্মাদ লিলবর আল-বারাদী

যশপুর, তানোর, রাজশাহী।

এমন দেশে জন্ম আমার

জন্মসূত্রে মুসলমান,

ইসলাম হ’ল মোদের ধর্ম

কুরআন-হাদীছ নয় সংবিধান।

মুসলিম ঘরে জন্ম নিয়েও

ইসলাম হ’ল অন্তরাল,

শরী‘আতের পরিপন্থী

মেনে চলি সব বিধান।

আদালতে বৃটিশ আইন

অফিস পাড়ায় দুর্নীতি,

সূদে ঘুষে দেশটা ভরা

জনগণের দুর্গতী।

খুনী, সন্ত্রাসী, যালেম যারা

আইন তাদেরই পকেটে,

ধর্মপ্রাণ মুসলিম যারা

বিনা অপরাধে জেল খাটে।

ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিতে যারা

ছাতা ধরা মুসলমান,

কুরআন-হাদীছ পরিপন্থী

ক্বিয়াস তাদের মূল বিধান।

ঈদের চাঁদ

আতিয়ার রহমান

সোনাবাড়িয়া, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।

দিগ্বলয়ের নীল সামীনায় এক ফালি চাঁদ দেয় উঁকি,

ঘুচলো মনের ভাবনা যত শত পাপীর চিন্তা কি?

মিটিয়ে দিতে পঙ্কিলতা গড়তে আবার পুণ্য মন,

আযাযীলের পুচ্ছ ভেঙে করতে হবে জীবন পণ।

উঠলো আজি পশ্চিমেতে ঈষৎ বাঁকা ঈদের চাঁদ,

পুরবে সবি ঈমানদারের মনের কোণের স্বপ্নসাধ।

মাসটি ভরে শয়তানেরা ছিল কারা বন্দীতে,

পারছিল তাই ছিয়াম সাধক ইবাদতে মন দিতে।

আয়রে তোরা দেখ চেয়ে দেখ বিদায়ী রামাযানের চাঁদখানা,

দু’কর জোড়ে দরবারে তাঁর মন খুলে কর প্রার্থনা।

চাই হ’তে চাই বহুত প্রিয় আমরা তোমার দরবারে,

সিজদা দিয়ে কাঁদবো বহুত ভাসবে তনু চোখনীরে।

পাপী তাপী পাইতে মাফি আশায় সবাই বুক বাঁধে

লক্ষ পাপের সাক্ষী যেজন তাই তো হৃদয় তার কাঁদে।

রাসূল (ছাঃ)-এরই ছিরাত দিয়ে চলবো আমরা বর্ষভর,

শিরক, বিদ‘আত দু’চরণে দলবো সবি জীবন ভর।

আজ ঈদের চাঁদ চলতে বলে রাসূলেরই পথ ধরে,

চলতে পথে হুঁচোট খেতে আর কি কভু কেউ পারে?

ঈদের আমেজ

এফ.এম. নাছরুল্লাহ

কাঠিগ্রাম, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ।

ঈদের আমেজ সামনে রেখে

ঘরমুখো সব লোকজন,

সবার সাথে মিলবে ঈদে তাই

আনন্দে সব আপনজন।

বাস-ট্রেনে ভীষণ জ্যামে

যায় না ফেলা দম,

টিকিটেরও দাম বেশী হয়

এক টাকাও নেই কম।

ঈদ আনন্দের হয় সকলের

আমরা সবাই জানি,

এই আনন্দের মাঝে কারো

দুই চোখে রয় পানি।

ঈদ এলে অসহায়দের কেন

ফিরনী-পায়েস জুটছে না,

কষ্টে চাপা তাই আনন্দ

ফুল হয়ে আর ফুটছে না।

ঈদের স্বাদ

আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ

নওদাপাড়া, রাজশাহী।

অসহায়ের মুখে যেদিন ফুটবে হাঁসি অম্লান

হবে সেদিন সকলের ঈদ, শান্তি পাবে অফুরান।

ঈদ আসে ঈদ যায় চলে যায়

বছর ঘুরে বারে বার,

দুস্থ-গরীব থাকে পূর্ববৎ ঘোচে না যে দুঃখ তার।

ফিরনী-পায়েস, হরেক খাবার

খাচ্ছে ধনী পেট পুরে

গৃহপাশে কাঁদছে পড়শীর শিশু বাচ্চা অনাহারে।

জোড়ায় জোড়ায় জামা-জুতা

আরো শাড়ি জামদানী,

ঈদের জন্য করছে ধনী নিজের জন্য আমদানী।

সবার জন্য হয়েছে কেনা

কেউ কিন্তু বাদ পড়ে নাই।

পড়শীর গায়ে ছিন্নবস্ত্র তা দেখার তো সময় নাই।

টাকার জোরে ঘুরছে বিদেশ

হজ্জ করেছে দু’চার বার।

গরীবকে দান করতে টাকা

জাগে নাকি ইচ্ছা একটি বার?

ধনীর বাড়ী ঈদের আমেজ

ঈদ আসে না গরীবের ঘরে

দেখে এ সমাজের কারবার

কষ্ট-দুঃখে বুক ভরে।

যেদিন তুমি পারবে মুছতে

অশ্রুবারি দুস্থদের

সেদিন তুমি পাবে যে সুখ

স্বাদ পাবে আসল ঈদের।






আরও
আরও
.