চাইবো কি আর
আতিয়ার রহমান
মাদরা, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
মনের কপাট খোলে আমি করবো কি আর প্রার্থনা?
চাইবো যাহা তোমার কাছে আছে তোমার সবজানা।
চাইবো শুধু তোমার কাছে তোমায় ডাকার শক্তিটা.
হৃদয় ভরে দাও কেবলই তোমার উপর ভক্তিটা।
করতে পারি তোমায় স্মরণ দু’চোখ ভরা ক্রন্দনে,
আমার শির তোমার পায়ে লুটিয়ে পড়ুক আনমনে।
থাকতে তোমার পথের পরে কোন বাধা মানবো না,
শিরক, বিদ‘আত ও জাহিলিয়াতের হাতছানিটা শুনবো না।
সরল-সঠিক তোমার পথে চালাও তুমি রহমান,
দীপ্ত ঈমান দাও তুমি দাও হই না যেন নাফরমান।
তোমার দেওয়া দান যেটা লই যেন তা খোশদীলে,
সুখ সাগরে ভাসাতে ভেলা এটা তুমি নাই দিলে।
যা দিয়েছ এই দুনিয়ায় তাহার শুকর হচ্ছে কই?
তার পরে কি চাইবো বল চাইবো না আর কোনটাই।
থাকলে খুশী দোজাহানে এটাই বড় পাওনা মোর,
আমার পরে ঝরুক নে‘মত খুলুক তব রহমতের দোর।
চাই না কিছু চাই কেবলই তোমার দীদার শেষ দিনে,
আমার নয়ন তোমার ছূরাত সঠিকভাবে নিক চিনে।
নয়ন ভরে দেখি আল্লাহ তোমার সৃষ্ট বিশ্বটা,
নাই তুলনা সৃষ্টি তোমার এত সুন্দর দৃশ্যটা।
ইচ্ছা জাগে দেখতে তোমায় কত সুন্দর তুমি তাই,
পুরাও মনের অযুত আশা আমার প্রার্থনা এটাই।
আমার চরণ নাই চলে যায় কভু কোন ভ্রান্তিতে,
বিচার শেষে জান্নাতে তব থাকতে পারি শান্তিতে।
***
পরশ পাথর
মুহাম্মাদ মুমতায আলী খান
সহকারী শিক্ষক, ঝিনা দারুল উলুম ইসলামিয়া মাদরাসা, গোদাগাড়ী, রাজশাহী।
নয়া যামানার নও বেলাল তুমি আত-তাহরীক,
তোমার আযান জাগালো প্রাণ বিশ্ব চতুর্দিক।
ছহীহ পথ পাইনি খুঁজেছিলাম অন্ধকারে,
দেখিয়ে দিলে নয়াদিগন্ত অভিজ্ঞানের দ্বারে।
তাকলীদের প্রাচীরে বন্দী রেওয়াজী জনগণ,
তুমি জানালে প্রথম আহলেহাদীছ আন্দোলন।
জুজুবুড়ির ভয় দেখানো আমরা ছোট্ট খোকা নই,
অহি-র বিধান বলছে ডেকে শুনছো নাকি ঐ।
তাহরীক তুমি কালের সাক্ষী, আমরা আছি সাথী,
নির্ভীক সেনা এগিয়ে চলো, বাতিলের মাথায় লাথি।
তোমার পাতার প্রতিটি শব্দ যেন শব্দবোমা,
আযাযীল আজ ভাগছে ডরে বলছে মাগো মা।
তোমার পরশ পেয়ে জাতি খুলছে ভাঙ্গা ডোর,
যুগে যুগে তাহরীক তুমি পরশ পাথর\
***
সত্যের ডাক
জারীন তাসনীম
মহিলা সালাফিয়া মাদরাসা, রাজশাহী।
হে মুসলিম নওজোয়ান! উচু কর তোমার শির
ঝেড়ে ফেল সব ক্লান্তি, মুছে ফেল অবসাদ।
উঠাও তোমার ঈমানের শাণিত তলোয়ার
চেয়ে দেখ সমগ্র বিশ্বে ছেয়ে গেছে অন্যায়-অত্যাচার
দৃপ্তপদে চল সেখানে, যেখানে মুসলমান হচ্ছে
নিগৃহীত, নির্যাতিত।
তুমি হও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ
তিমির রজনীতে চল নির্ভয়ে
কুরআন-সুন্নাহ অাঁকড়ে ধরে
হানা দাও কাফিরদের আস্তানায়।
তোমাকে হ’তে হবে খালিদ, হামযার আদর্শে
উজ্জীবিত দুঃসাহসী এক বীর।
আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে
প্রকম্পিত কর গগণ-পবন।
শান্তির আলোকবর্তিকা নিয়ে
সংস্কার কর এ বর্বরোচিত সমাজকে
তোমার পথ পানে চেয়ে আছে
কত অসহায় মা-বোন!
ওঠ, থেকো না আর চোখ বুজে
রাসূলের দেখানো পথ ধর
তাওহীদের পতাকা উড্ডীন কর।
শান্তির সমীরণ বইয়ে দাও ধরণীর প্রতিটি প্রান্তে
সাম্যের ঝান্ডা উড়িয়ে দাও
অসাম্যে কলুষিত সমাজে।
জাগো, জাগো, হে নবীন-তরুণ!
হাতে নাও সত্যের তরবারী,
এগিয়ে চল সম্মুখপানে।
***
যে বোধে বিবেক জাগে
সাইফুল ইসলাম
শ্যামপুর, মতিহার, রাজশাহী।
আমি অস্ত যুগের কেউ নই
আমি উদ্ভাসিত আগামীকাল
কর্তিত ফসলের চারা, সবুজ চিরকাল।
হালাল রূযীর সন্ধানে অভুক্ত কাটিয়েছি কত কাল
তবু আমি রয়েছি সতেজ চিরকাল।
আমি সময়ের উন্মোচিত ঘড়ি
যার আগমন বোধ শক্তিকে নাড়া দেয়।
বাঘের আগমন রোধ করেছিল মেষের রাখাল
আমি বোধ করি ধেয়ে আসে নূহের প্লাবন
বোধ হয় এই বুঝি ইসরাফীল শিংগায় ফুঁক দেয়।
আশাহত নই আমি দীপ জ্বেলে যাই,
কান পেতে শোন বখতিয়ারের ঘোড়ার
আওয়াজ যেন শোনা যায়।
প্রবল বেগে ধাবমান সহস্র অশ্বের হ্রেস্বা ধ্বনি
আমাকে প্রতিবাদের ভাষা শেখায়।
আমি শুনতে পাই ইয়াছরিবের বসন্ত যুগের গান
আযানের ধ্বনিই আমাদের আলোকিত জীবনের আহবান।