পঞ্চগড়ে কমলা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা
পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে কমলার চাষাবাদ শুরু হয়েছে। গড়ে উঠেছে ছোট-বড় শতাধিক বাগান। গাছে গাছে এখন কাঁচা-পাকা কমলা শোভা পাচ্ছে। চাষীরা কমলা চাষে পেয়েছেন ব্যাপক সাফল্য। প্রথমদিকে কয়েকজন কমলা চাষী শখের বশে বাড়ীর আঙ্গিনায় কমলার চারা রোপণ করেন। কয়েক বছরের মধ্যেই বাগানে ফল আসায় তারা বৃহৎ আকারে কমলা চাষের উদ্যোগ নেন। স্বল্প খরচে ও অল্প পরিশ্রমে অধিক মুনাফা হওয়ায় কমলা চাষের পরিধি দিন দিন বেড়ে চলেছে। গড়ে উঠেছে ছোট বড় ও মাঝারি ধরনের প্রায় শতাধিক বাগান। এসব বাগানে কমলা গাছের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাযার ৭শ’টি। প্রতিটি গাছে দু’শ থেকে আড়াই’শ কমলা ধরেছে।
মৌলবাদীকে গুলি করেছি!
গত ১৬ই ডিসেম্বর চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ঘটে গেছে এক আশ্চর্যজনক ও লজ্জাকর ঘটনা। এক তরুণ মাদরাসা ছাত্রকে ‘মৌলবাদী’ আখ্যায়িত করে গুলি করেছে এক পুলিশ কনেস্টবল। খুলনার ছেলে মহববত ছিদ্দীক উচ্চতর শিক্ষার উদ্দেশ্যে প্রায় পাঁচ মাস আগে ভর্তি হয় চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসায়। গত ১৬ই ডিসেম্বর রাত ৮-টার দিকে চিকিৎসকের কাছ থেকে হেঁটে মাদরাসা ক্যাম্পাসে আসার পথে হাটহাজারী থানার সামনে থেকে তাকে গুলি করে নোমান সিরাজী নামে এক পুলিশ কনেস্টবল। ভুক্তভোগী ছাত্রটির বক্তব্য ‘থানার গেট পার হয়ে দু’তিন কদম সামনে আসা মাত্র আচমকা একটা গুলি এসে তার পায়ে লাগে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আরেকটা গুলি এসে লাগে। গুলি খেয়ে সে ভীত-সন্ত্রস্ত কণ্ঠে নোমান সিরাজীকে তার অপরাধ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে সে রুদ্রমূর্তি ধারণ করে ‘মৌলবীর বাচ্চা মৌলবী’ বলে গালি দিয়ে বুটজুতা দিয়ে মহববতের মাথায় লাথি মারে। এসময় অন্য পুলিশ সদস্যরা তাকে গুলি করার কারণ জিজ্ঞেস করলে সে বলে, ‘আমি মৌলবাদীকে গুলি করেছি...’। অর্থাৎ সে বুঝাতে চেয়েছে টুপি দাড়িওয়ালা মানেই মেŠলবাদী। আর মৌলবাদীকে মারা কোন অন্যায় নয়।
আরও লজ্জার ব্যাপার হ’ল, পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত কনেস্টবলের কথা বলা হচ্ছে, সে মানসিক ভারসাম্যহীন!... [মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন]।
সততার দৃষ্টান্ত দেখালেন চূয়াডাঙ্গার নিযামুদ্দীন
এক গরু ব্যবসায়ীর হারিয়ে যাওয়া ৩৫ হাযার ৫০০ টাকা পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ও মাইকিং করে ফিরিয়ে দিয়ে এ যুগে মহত্তেবর অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন চূয়াডাঙ্গার দর্শনা বাজারের নিযাম কসাই ও সিএএফ এজেন্ট আতিয়ার রহমান হাবু। ডুগডুগি পশুহাটে এ টাকা কুড়িয়ে পাওয়ার এক সপ্তাহ পর উপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে প্রকৃত মালিকের হাতে তুলে দিলেন এ মহৎ ব্যক্তিদ্বয়। গরু ব্যবসায়ী যয়নাল তালুকদার গত ২৯শে ডিসেম্বর চূয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপযেলার ডুগডুগি পশু হাটে গরু বেচা-কেনা করতে এসে টাকা হারিয়েছিলেন। হাট থেকে ফেরার সময় এই টাকা রাস্তার উপর থেকে কুড়িয়ে পান কসাই নিযামুদ্দীন। তিনি টাকা নিয়ে বিষয়টি জানান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আতিয়ার রহমান হাবুকে। পরে হাবু নিজ খরচে দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেন। সাড়া না পেয়ে পরে আবারো পকেটের টাকা খরচ করে মাইকিং করেন। এরপরই খুঁজে পান এ টাকার প্রকৃত মালিক যয়নাল তালুকদারকে। টাকা ফিরিয়ে দেয়ার পর নিযামুদ্দীন জানান, এ টাকা কুড়িয়ে পাওয়ার পর থেকে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। নিজেকে খুব ভারী ভারী লাগছিল। এবার নিজেকে অনেক হালকা লাগছে। মনে হচ্ছে মাথা থেকে ভারী বোঝা নেমে গেল।
এবার কচুরীপানা থেকে ক্ষুদে বিজ্ঞানীর কৃতিত্ব!
এদেশে পানি চলার পথ বন্ধ করা, মাছের উৎপাদন হ্রাস, নৌযান চলাচলে বিঘ্ন ঘটানো, মশা, মাছি ও অন্যান্য ক্ষতিকারক পোকামাকড়ের আবাসস্থল সহ ক্ষতিকারক দিক থেকে কচুরীপানা সবার নিকট অত্যন্ত সুপরিচিত। জৈব সার প্রস্ত্ততে ও গরু-ছাগলের খাদ্য হিসাবে কিছু ব্যবহার ছাড়া এর বিরাট একটি অংশ প্রতিবছর অব্যবহৃতই থেকে যায়। অথচ এই অব্যবহৃত আগাছা কচুরীপানা থেকেই তৈরী হবে ফার্নিচার। এমনই সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়-এর ‘ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি’ ডিপার্টমেন্টের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র শাহ আহমাদুল হাসান। তার ৪র্থ বর্ষের প্রোজেক্ট থিসিস-এর গবেষণার বিষয় ছিল ‘কিভাবে কচুরীপানা হ’তে সম্ভাবনাময় ফাইবার বোর্ড তৈরী করা যায়’?, যা দ্বারা ফার্নিচার তৈরী করা সম্ভব হবে। তিনি কচুরীপানা থেকে ‘পাল্পিং পদ্ধতিতে’ উদ্ভাবিত ফাইবার দিয়ে ‘হট প্রেস প্রযুক্তি’র মাধ্যমে মাঝারী ঘনত্বের ফাইবার বোর্ড তৈরী করেন, যা বাজারে প্রচলিত মাঝারি ঘনত্বের বোর্ডের সমমানের। যা দ্বারা ঘরের অভ্যন্তরীণ সকল ফার্নিচার তৈরী করা সম্ভব। তিনি প্রফেসর ওবায়দুল্লাহ হান্নান ও প্রফেসর ড. ইফতেখার শামসের তত্ত্বাবধানে এই গবেষণা কাজটি সম্পন্ন করেন।
প্রফেসর শামসের মতে, এ উদ্ভাবন নিয়ে তিনি অত্যন্ত আশাবাদী। তিনি মনে করেন, এটি বাংলাদেশে ফাইবার বোর্ড তৈরীর একটি বিকল্প ও উত্তম কাঁচামালের উৎস হ’তে পারে। যা ব্যবহারের ফলে কাঠের ব্যবহার বহুলাংশে কমে যাবে এবং বনের উপর নির্ভরশীলতা অনেকাংশে হ্রাস পাবে। এছাড়া এ জাতীয় ফাইবার বোর্ড বাণিজ্যিকভাবে তৈরী করা গেলে তা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব হবে। গবেষক শাহ আহমাদুল হাসান এ উদ্ভাবনের জন্য মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে বলেন, এ বিষয়ে যে কোন সরকারী বা বেসরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তিনি এ বিষয়ে আরো গবেষণা করতে এবং এ উদ্ভাবনকে দেশের মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করতে পারবেন।
‘বিএলআরআই’ উদ্ভাবন করল নতুন জাতের মুরগী
বাংলাদেশ প্রাণীসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট ‘বিএলআরআই’ উদ্ভাবন করেছে নতুন জাতের ডিমপাড়া মুরগী। সাধারণ মুরগী বর্তমানে ৮০ সপ্তাহে ডিমপাড়া বন্ধ করে। এই জাতের মুরগী ১০০ সপ্তাহ পর্যন্ত লাভজনক হারে ডিম দেয়। এছাড়াও এর ডিম আকারে বড়। উদ্ভাবিত এই নতুন জাতের মুরগীর নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিএলআরআই লেয়ার স্ট্রেইন-২’ বা ‘স্বর্ণা’। এ মুরগীর উদ্ভাবক বিএলআরআইয়ের মহাপরিচালক মুহাম্মাদ নযরুল ইসলাম জানান, খামার পর্যায়ে এ মুরগী লালন-পালনের মাধ্যমে এর উৎপাদনদক্ষতা যাচাই করে ইতিমধ্যে আশাব্যঞ্জক ফল পাওয়া গেছে।
বিদেশ
এবার সাময়িকীর প্রচ্ছদে রাসূল (ছাঃ)-এর ব্যঙ্গ কার্টুন
আবারও রাসূল (ছাঃ)-এর ব্যঙ্গ কার্টুন প্রকাশ করেছে ফরাসী সাময়িকী ‘শার্লি এবদো’। তার বিরুদ্ধে অতি সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে পত্রিকাটির সম্পাদক ও চার কার্টুনিস্টসহ মোট ১২ জন নিহত হওয়ার এক সপ্তাহ পর সাময়িকীটি তাদের উপর হামলার প্রতিক্রিয়া স্বরূপ তাদের নতুন সংখ্যার প্রচ্ছদে পুনরায় রাসূল (ছাঃ)-এর ব্যঙ্গ কার্টুন প্রকাশের মত ধৃষ্ঠতা দেখাল। প্রতি সপ্তাহে ম্যাগাজিনটি গড়ে ৩৫ থেকে ৬০ হাযার কপি ছাপা হলেও এবার তা ৫০ গুণ বাড়িয়ে ছাপা হয়েছে ৩০ লাখ কপি। অনূদিত হয়েছে মোট ১৬টি ভাষায়। যা সকাল ৯-টার পরে আর পাওয়া যায়নি। এর আগে ২০১১ সালে রাসূল (ছাঃ)-এর ব্যঙ্গ কার্টুন ছাপানোকে কেন্দ্র করে ‘শার্লি এবদো’ মুসলমানদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার করেছিল। আবার তাদের এরূপ ঘৃণ্য কর্মকান্ডে মুসলিম দেশগুলোর আপামর জনসাধারণের মাঝে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। পাকিস্তান, আলজেরিয়া, কাতার, তুরস্ক, ইরান প্রভৃতি দেশগুলি রাষ্ট্রপ্রধানগণ এই ঘৃণ্য পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এ ঘটনার মাত্র কয়েকদিন পর ইসলাম গ্রহণ করেছেন ফ্রান্সের চলচ্চিত্র পরিচালক অভিনেত্রী ইসাবেলা ম্যাটিক। তিনি গত ১১ জানুয়ারী তার ফেসবুক পেজে তার ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন।
[আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করছি যেন দুনিয়া ও আখেরাতে এদেরকে লাঞ্ছিত করেন। এর প্রতিবাদে যে অভিনেত্রী ইসলাম কবুল করেছে, আমরা তাকে স্বাগত জানাচ্ছি এবং প্রার্থনা করছি তার মত অন্যরাও যেন দ্রুত ইসলাম কবুল করে এবং ফ্রান্স ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত হয়ে যায়। সাথে সাথে ইসলামের শত্রুদেরকে এ ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণের আবেদন জানাচ্ছি (স.স.)]
ভারতে মাসজিদুল আক্বছামুখী মসজিদ
ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন মসজিদ হিসাবে ঐতিহাসিকগণ ৬২৯ খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত কেরালার চেরামান জুম‘আ মসজিদকেই জানতেন। তবে সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর তথ্য আবিষ্কৃত হয়েছে। আর তা হ’ল ভারতের গুজরাটস্থ ভাবনগরের ঘোঘা জনপদে একটি প্রাচীন মসজিদ পাওয়া গেছে, যার কিবলা হচ্ছে জেরুযালেমের দিকে। উল্লেখ্য যে, জেরুযালেমের মসজিদুল আক্বছাই ছিল মুসলমানদের প্রথম কিবলা। হিজরতের পর হ’তে ১৬/১৭ মাস এদিকে ফিরেই মুসলমানরা ছালাত আদায় করত। অতঃপর দ্বিতীয় হিজরীতে বদর যুদ্ধের কিছু পূর্বে কিবলা পরিবর্তন সম্পর্কে আয়াত নাযিল হওয়ার পর মুসলমানরা কা‘বা গৃহের দিকে মুখ করে ছালাত আদায় শুরু করেন।
অতএব ভাবনগরের এই মসজিদটির অস্তিত্ব প্রমাণ করছে যে, দ্বিতীয় হিজরীর পূর্বেই ছাহাবায়ে কেরাম ব্যবসার জন্য ভারত উপমহাদেশে আগমন করেছিলেন এবং এই মসজিদটিই ভারতের প্রাচীনতম মসজিদ। গুজরাটের ভাবনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক অধ্যাপক মাহবূব দেশাই জেরুযালেমের দিক মুখ করা এই মসজিদটির কথা তুলে ধরেন। তার গবেষণা মতে, মসজিদটি ১৩০০ বছরের বেশী পুরনো।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সারা পৃথিবীতে আর কোথাও এখনো জেরুযালেমের দিকে মুখ করা মসজিদ আছে কি-না তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। উল্লেখ্য, জেরুযালেম ভাবনগর থেকে উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত, আর মক্কা শরীফ অবস্থিত পশ্চিম দিকে। সমুদ্রগামী আরবরা ছিলেন দক্ষ নাবিক। তাদের দিক ভুল করার কথা নয় বলেই পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন।
আমেরিকায় কলম্বাসের ৫০০ বছর পূর্বে ৯ম শতকের কুরআনের পান্ডুলিপি আবিষ্কার
বহু শতাব্দী ধরে এ কথা বিশ্বাস করা হয় যে, ক্রিস্টোফার কলম্বাস হ’লেন প্রথম ব্যক্তি যিনি আটলান্টিক মহাসাগরের অপর পাড়ের ‘নতুন বিশ্বকে’ আবিষ্কার করেছেন। তবে রোড আইল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক প্রদত্ত নতুন তথ্যপ্রমাণ থেকে বেরিয়ে এসেছে, সম্ভবত কলম্বাসের ৫০০ বছর পূর্বে ৯ম শতকের মুসলিম নাবিকেরা সর্বপ্রথম আমেরিকার উপকূলে বসতি স্থাপন করেছিলেন। এর ফলে এতদিনের প্রচলিত ইতিহাস নতুনভাবে লেখার প্রয়োজন হ’তে পারে। গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক ইভান ইউরেস্কো স্বীকার করেন, গবেষকেরা হঠাৎ এ বিষয়টি আবিষ্কার করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আমেরিকার প্রাগৈতিহাসিক আদিবাসী বসতির সাক্ষ্যপ্রমাণ আবিষ্কারের আশায় বিগত কয়েক দশক ধরে ঐ এলাকায় কর্মরত ছিলাম। আমরা সেখানে নবম শতকে কাদামাটির ওপর আরবীতে লেখা কুরআনের পান্ডুলিপি দেখতে পাবো এমনটি আশা করিনি’।
গবেষকদল সেখানে নবম শতাব্দীর নাবিকদের একটি বড় সমাধিসৌধে চারটি কঙ্কাল দেখতে পান এবং এর সাথে তাদের পোশাক, মুদ্রা, দু’টি তলোয়ার এবং দু’টি কাদামাটির পাত্র সহ অন্যান্য বস্ত্ত আবিষ্কার করেন। দু’টি পাত্রের একটিতে এই অতি মূল্যবান পান্ডুলিপিটি পাওয়া গেছে।
ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী মধ্যযুগ সম্পর্কিত বিশেষজ্ঞ করীম ইবনে ফাল্লাহ এ পান্ডুলিপির সময়কাল নির্ণয় করেছেন। তিনি জানান, এটি নবম শতকের কুফিক লিপির পান্ডুলিপি। কলম্বাস প্রাক-আমেরিকায় কুফিক পান্ডুলিপি আবিষ্কারের ঘটনা অত্যন্ত বিস্ময়কর ঘটনা। স্মিথসোনিয়ানের জাদুঘর বিজ্ঞানী বায়রন কেন্ট মন্তব্য করেন, এ আবিষ্কার অত্যন্ত বিব্রতকর একটি বিষয়। এ কথা নিশ্চিত যে, কলম্বাসের পূর্বে আমেরিকা গমনের মতো প্রযুক্তিগত বিশেষ জ্ঞানের অধিকারী মুসলমানরা ছিলেন। তবে তারা যে তা করেছেন এমন কোন নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ নেই। বর্তমান আবিষ্কার তাদের সেই কৃতিত্বের একটি শক্তিশালী প্রমাণ। উইলামেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিখ্যাত লেখক রিচার্ড ফ্রাংকাভিজলিয়াও স্বীকার করে বলেছেন, ‘এ আবিষ্কার এক নযীরবিহীন ঘটনা। মুসলমানরা নবম ও দশম শতকে পৃথিবীর বিশাল অঞ্চলকে দ্রুত আবিষ্কার ও সেখানে বসতি স্থাপন করেছিলেন। কলম্বাস নিজেও সমুদ্রভ্রমণে জ্ঞান অর্জনের জন্য তাদের কাছে ঋণী। তাই মুসলমানদের নতুন বিশ্বে যাওয়ার মত প্রযুক্তি ও দক্ষতা যে ছিল তাতে কোন সন্দেহ নেই।’
উল্লেখ্য, মুসলিম ঐতিহাসিক ও ভূগোলবিদ আবুল হাসান আলী আল-মাসঊদী (৮৭১-৯৫৭ খ্রিঃ) তার ‘মুরূজুয যাহাব’ গ্রন্থে লিখেছেন, স্পেনের কর্ডোভার নাবিক খাসখাস ইবনে সাঈদ ইবনে আসওয়াদ ৮৮৯ সালে ডেলবা (পালোস) থেকে জাহাযযোগে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে অজানা ভূখন্ডে গিয়ে পৌঁছেন। এরপর জাহাযে রাশি রাশি মণিমুক্তা বোঝাই করে তিনি দেশে ফিরে আসেন। মাসঊদীর বিশ্ব মানচিত্রে বিরাট মহাসাগরের বিশাল এলাকাকে অন্ধকার ও কুয়াশায় আবৃত বলে দেখানো হয়েছে। এটি হ’ল অজ্ঞাত ভূখন্ড। অনেক বিশেষজ্ঞ এই অজ্ঞাত ভূখন্ডকেই আমেরিকা মহাদেশ বলে মনে করেন।