ভূমিকা : আল্লাহ
প্রেরিত সর্বশেষ অহিভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের এক বৈপ্লবিক আন্দোলন
‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’। সর্বস্তরের মানুষের নিকট ইসলামের প্রকৃত রূপ
তুলে ধরার জন্য দেশব্যাপী চারটি পর্যায়ে দাওয়াতী কাজ পরিচালনা করে যাচ্ছে এ
সংগঠন। বত্রিশোর্ধদের মাঝে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’, ১৬-৩২ বছর বয়স্ক
ছাত্র ও যুবকদের মাঝে ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’, ৭-১৫ বছর বয়স্ক
শিশু-কিশোরদের মাঝে ‘সোনামণি এবং মহিলাদের মাঝে ‘আহলেহাদীছ মহিলা সংস্থা’।
সোনামণি একটি আদর্শ জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন
বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ
আল-গালিব ১৯৯৪ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর রোজ শুক্রবার সূরা হজ্জের ২৩ ও ২৪ নং
আয়াতের আলোকে ‘সোনামণি’ নামটি ঘোষণা করেন। এ সংগঠনের রয়েছে লক্ষ্য ও
উদ্দেশ্য, মূলমন্ত্র, কর্মসূচী, ৫টি নীতিবাক্য ও ১০টি গুণাবলী, যা পবিত্র
কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে নির্ণিত হয়েছে। নিম্নে ৫টি নীতিবাক্য সম্পর্কে
আলোচনা করা হ’ল।-
সোনামণি সংগঠনের ৫টি নীতিবাক্য :
(১) সকল অবস্থায় আল্লাহর উপর ভরসা করি : এর অর্থ সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে, রোগে-শোকে সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপরে দৃঢ়ভাবে ভরসা করা। সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপর ভরসা করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরয। এটি মুমিন-মুত্তাকীদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তবে সকল কাজকর্ম বন্ধ করে দিয়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকার নাম আল্লাহর উপরে ভরসা নয়। বরং সামর্থ্য ও সাধ্যানুযায়ী বৈধ পথে কাজ করা এবং ফলাফলের বিষয়টি আল্লাহর কাছে ন্যস্ত করার নাম আল্লাহর উপর ভরসা। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللهِ إِنَّ اللهَ يُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِيْنَ ‘অতঃপর যখন তুমি কোন কাজের দৃঢ় সংকল্প করবে, তখন আল্লাহর উপর ভরসা করবে। যারা আল্লাহর উপর ভরসা করে তাদেরকে তিনি ভালবাসেন’ (আলে ইমরান ৩/১৫৯)।
এ ব্যাপারে মহানবী মুহাম্মাদ (ছাঃ) এবং ছাহাবায়ে কেরাম আমাদের সামনে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, وَعَلَى اللهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُوْنَ ‘মুমিনদের উচিত আল্লাহর উপর ভরসা করা’ (আলে ইমরান ৩/১২২, ১৬০; ইবরাহীম ১৪/১১; মুজাদালাহ ৫৮/১০; তাগাবুন ৬৪/১৩; মায়েদাহ ৫/১১; তওবাহ ৯/৫১)।
তিনি আরো বলেন, ‘মুমিন তো তারাই যখন তাদের নিকট আল্লাহর নাম স্মরণ করা হয়, তখন তাদের অন্তর কম্পিত হয় এবং যখন তাদের নিকট তাঁর আয়াত তেলাওয়াত করা হয় তখন ঈমান বেড়ে যায়। আর তারা তাদের প্রতিপালকের উপর ভরসা করে’ (আনফাল ৮/২)।
আল্লাহ অন্যত্র বলেন, وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللهِ فَهُوَ حَسْبُهُ ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্য তিনিই যথেষ্ট’ (ত্বালাক ৬৫/৩)।
আল্লাহ আরো বলেন,وَمَا تَوْفِيْقِيْ إِلاَّ بِاللهِ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ
وَإِلَيْهِ أُنِيْبُ ‘আল্লাহর সাহায্য ছাড়া আমার কোন ক্ষমতা নেই, আমি তাঁর
উপরই ভরসা করি এবং তাঁরই নিকট ফিরে যাব’ (হূদ ১১/৮৮)।[1]
হিজরতের সময় কঠিন বিপদ মুহূর্তে ছাওর পর্বতের গুহায় আল্লাহর উপর দৃঢ় ভরসা করে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আবু বকর (রাঃ)-কে বলেছিলেন, لاَ تَحْزَنْ إِنَّ اللهَ مَعَنَا ‘চিন্তিত হয়ো না, আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন’ (তওবাহ ৯/৪০)।
আল্লাহ
তা‘আলার উপর ভরসা করা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ বলেন, لَوْ أَنَّكُمْ
تَتَوَكَّلُوْنَ عَلَى اللهِ حَقَّ تَوَكُّلِهِ لَرَزَقَكُمْ كَمَا
يَرْزُقُ الطَّيْرَ تَغْدُو خِمَاصاً وَتَرُوْحُ بِطَاناً- ‘তোমরা যদি
আল্লাহ তা‘আলার প্রতি যথাযথ ভরসা করতে তাহ’লে তিনি যেমন পক্ষীকুলকে রূযী
দান করেন, তেমনিভাবে তোমাদেরকেও দান করতেন। তারা ভোরে খালি পেটে বের হয় ও
সন্ধ্যাবেলায় ভরা পেটে ফিরে আসে’।[2]
রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন,يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْ أُمَّتِىْ سَبْعُوْنَ أَلْفًا
بِغَيْرِ حِسَابٍ. هُمُ الَّذِيْنَ لاَ يَسْتَرْقُوْنَ وَلاَ
يَتَطَيَّرُوْنَ وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُوْنَ. ‘আমার উম্মতের সত্তর
হাযার লোক বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারা ঐসব লোক যারা ঝাড়-ফুঁক
করায় না, অশুভ লক্ষণে বিশ্বাস করে না এবং যারা তাদের প্রভুর উপর ভরসা
রাখে’।[3]
(২) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে সর্বোত্তম আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করি: এই নীতিবাক্য সোনামণিসহ অভিভাবক, দায়িতবশীল ও সকল মানুষের জন্য প্রযোজ্য। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) স্বীয় কথা, কর্ম ও সম্মতিমূলক আচরণের মাধ্যমে কুরআনুল কারীমের ব্যাখ্যা ও বাস্তব নমুনা প্রদর্শন করে গেছেন। তাই যাবতীয় মানব রচিত তন্ত্র-মন্ত্র ও আদর্শ ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে একমাত্র আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন, لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيْ رَسُوْلِ اللهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ ‘নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ নিহিত রয়েছে’ (আহযাব ৩৩/২১)। মহান আল্লাহ আরো বলেন, وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا ‘রাসূল তোমাদেরকে যা প্রদান করেন তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক’। (হাশর ৫৯/৭)।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর আদর্শ অনুসরণের মধ্যেই আল্লাহর সন্তুষ্টি নিহিত রয়েছে। তাঁর আদর্শ ও নির্দেশের বিরোধিতা করার এখতিয়ার কোন মুমিনের নেই। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, قُلْ إِنْ كُنتُمْ تُحِبُّوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِيْ يُحْبِبْكُمُ اللهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ ‘তুমি বলে দাও, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবেসে থাক, তবে আমার অনুসরণ কর। তাহলে তিনি তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহসমূহ ক্ষমা করবেন। আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (আলে ইমরান ৩/৩১)।
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন, কোন মুমিন পুরুষ ও নারীর পক্ষে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দেওয়া ফায়ছালার ব্যাপারে (ভিন্নমত পোষণের) কোনরূপ এখতিয়ার নেই। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করল, সে স্পষ্ট ভ্রষ্টতার মধ্যে পতিত হ’ল’ (আহযাব ৩৩/৩৬)।
এছাড়াও আলে ইমরান ৩/৩২, নিসা ৪/৫৯, ৬৫, ৮০; মুহাম্মাদ ৪৭/৩৩ আয়াতে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর অনুগত্য করার মাধ্যমে তাঁর আদর্শে জীবন গড়তে মহান আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহ সার্বিক জীবনে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর আনুগত্য করা মানেই তাঁর আদর্শে জীবন গড়া। যেমন-
(১) রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘অস্বীকারকারী ব্যতীত আমার সকল উম্মত জান্নাতে প্রবেশ
করবে। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হল, কে অস্বীকার করে? তিনি বলেন, যে আমার আনুগত্য
করে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে আমার নাফরমানী করবে সেই হল
অস্বীকারকারী’।[4]
(২) অন্যত্র রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) এরশাদ করেন, لاَ يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى أَكُوْنَ أَحَبَّ
إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهِ وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ ‘তোমাদের
মধ্যে কেউ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার নিকটে সর্বাধিক প্রিয় হব
তার পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও দুনিয়ার সকল মানুষের চেয়ে’।[5]
(৩)
রাসূল (ছাঃ)-এর আদর্শে জীবন গড়া মুমিনের বৈশিষ্ট্য। তাঁর আদর্শ অমান্য করা
কাফিরের বৈশিষ্ট্য। যেমন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মুহাম্মাদের
আনুগত্য করল সে আল্লাহর আনুগত্য করল। আর যে ব্যক্তি মুহাম্মাদের অবাধ্যতা
করল, সে আল্লাহর অবাধ্যতা করল। মুহাম্মাদ (ছাঃ) হ’লেন লোকদের মধ্যে
পার্থক্যকারী’।[6]
(৪) মহানবী মুহাম্মাদ
(ছাঃ)-এর আদর্শে জীবন গড়ার মধ্যেই ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি নিহিত
রয়েছে। অন্যথা জাহান্নামের কঠিন শাস্তি অবশ্যই ভোগ করতে হবে। যেমন
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যার হাতে মুহাম্মাদের জীবন তাঁর কসম করে বলছি, এই
উম্মতের যে কেউ ইহূদী হোক বা নাছারা হোক আমার নবুওয়াতের কথা শুনবে অথচ আমি
যা সহকারে প্রেরিত হয়েছি তার প্রতি ঈমান না এনে মারা যাবে, সে অবশ্যই
জাহান্নামের অধিবাসী হবে’।[7]
(৩) নিজেকে সৎ ও চরিত্রবান হিসাবে গড়ে তুলি : চরিত্র শব্দটি বিশ্লেষণ করলে অর্থ দাঁড়ায় মানুষ হিসাবে সমগ্র উত্তম গুণাবলী ধারণ করা। পৃথিবীর অধিকাংশ বস্ত্ত অর্থের বিনিময়ে খরিদ করা গেলেও চরিত্র কোন কিছুর বিনিময়ে খরিদ করা যায় না। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কঠোর সাধনার মাধ্যমে গড়ে তুলতে হয় সচ্চরিত্র।
চরিত্রের বলেই একজন মানুষ উত্তম হিসাবে পরিচিতি লাভ করতে পারে। পিতা-মাতা, শিক্ষক-মুরুববী ও বড়দের প্রতি শ্রদ্ধা ও ছোটদের প্রতি স্নেহ-মমতাবোধ, নিয়মিত ছালাত আদায়, সত্যবাদিতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, ওয়াদা পালন, আমানত রক্ষা, বিনয়-নম্রতা, ভদ্রতা, সৎ সাহস, বুদ্ধিমত্তা, অধ্যবসায়, পরোপকার ইত্যাদি গুণাবলীর সমন্বিত রূপই সচ্চরিত্র।
একজন সৎ ও চরিত্রবান ব্যক্তি পৃথিবীর অমূল্য সম্পদ।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, إِنَّ مِنْ خِيَارِكُمْ أَحْسَنَكُمْ أَخْلاَقًا
‘তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি যিনি চরিত্রের দিক দিয়ে উত্তম’।[8]
সোনামণিদের
এই নীতিবাক্য মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশের প্রতিফলন যা পবিত্র
কুরআন ও ছহীহ হাদীছে বর্ণিত হয়েছে। উত্তম চরিত্রের ফলাফল সম্পর্কে
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, إِنَّ الْمُؤْمِنَ لَيُدْرِكُ بِحُسْنِ خُلُقِهِ
دَرَجَةَ الصَّائِمِ الْقَائِمِ ‘নিশ্চয়ই মুমিন ব্যক্তি তার উত্তম
চরিত্রের কারণে রাত্রিতে তাহাজ্জুদের ছালাত আদায়কারী ও দিনে নফল ছিয়াম
পালনকারীর মর্যাদা লাভ করবে’।[9] অন্যত্র তিনি বলেন, إنَّ أَثْقَلَ شَىْءٍ
يُوْضَعُ فِى مِيْزَانِ الْمُؤْمِنِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ُلُقٌ حَسَنٌ
‘ক্বিয়ামতের দিন আমলের পাল্লায় সবচেয়ে ভারী হবে মুমিনের উত্তম চরিত্র’।[10]
তাই অভিভাবকগণ নিজেদেরকে সৎ ও চরিত্রবান হিসাবে গড়ে তোলার সাথে সাথে সোনামণিদের জীবনে এই নীতিবাক্য বাস্তবায়নে সর্বদা সচেষ্ট থাকবেন।
(৪) ন্যায়ের আদেশ ও অন্যায়ের প্রতিরোধ করি :
এর অর্থ আল্লাহ প্রেরিত সর্বশেষ অহী পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে ন্যায়ের আদেশ ও অন্যায়ের নিষেধ করা।
ন্যায়ের আদেশ ও অন্যায়ের নিষেধ মুসলিম উম্মাহর প্রতি আল্লাহর নির্দেশ। মুসলমানগণ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি। আর এ শ্রেষ্ঠ জাতির প্রধান দু’টি বৈশিষ্ট্য হ’ল ন্যায়ের আদেশ ও অন্যায়ের নিষেধ।
মহান আল্লাহ বলেন,كُنتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللهِ ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, যাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে মানব জাতির কল্যাণের জন্য। তোমরা সৎ কাজের আদেশ করবে ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে’ (আলে ইমরান ৩/১১০)।
মুমিন চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য এটি। যেমন মহান আল্লাহ বলেন,وَالْمُؤْمِنُوْنَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاء بَعْضٍ يَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ ‘মুমিন পুরুষ ও নারী পরস্পরের বন্ধু। তারা সৎ কাজের আদেশ দেয় ও অসৎ কাজে নিষেধ করে’ (তওবা ৯/৭১)। পক্ষান্তরে মুনাফিকের চরিত্রের বৈশিষ্ট্য হ’ল অসৎ কাজের নির্দেশ ও সৎ কাজের নিষেধ করা। যেমন আল্লাহ বলেন,اَلْمُنَافِقُوْنَ وَالْمُنَافِقَاتُ بَعْضُهُم مِّن بَعْضٍ يَأْمُرُوْنَ بِالْمُنكَرِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمَعْرُوْفِ. ‘মুনাফিক পুরুষ ও নারী পরস্পরে সমান। তারা অসৎ কাজের নির্দেশ দেয় ও সৎকাজে নিষেধ করে’ (তওবা ৯/৬৭)।
মুসলিম জাতিকে শ্রেষ্ঠ জাতির মর্যাদায় আসীন হ’তে হ’লে সোনামণিদের এই নীতিবাক্য অনুসরণে অবশ্যই আমর বিল মা‘রূফ ও নাহী আনিল মুনকার-এর কাজ করতে হবে এবং সোনামণিদেরকে ছোট থেকেই এগুণে অভ্যস্ত করতে হবে। যেমন লোকমান হাকীম তার ছেলেকে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেন, ‘হে বৎস! ছালাত কায়েম কর, সৎ কাজের আদেশ দাও ও অসৎ কাজের নিষেধ কর এবং বিপদে ধৈর্যধারণ কর। নিশ্চয়ই এটা খুব সাহসিকতার কাজ’ (লোকমান ৩১/১৭)।
সকল
মুমিন মুসলমানেরই দায়িত্ব সৎকাজের আদেশ দেওয়া ও অন্যায় কাজ হ’তে নিষেধ
করা। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘তোমাদের যে কেউ গর্হিত কিছু দেখবে, সে যেন
তা হাত দিয়ে প্রতিরোধ করে। না পারলে যবান দিয়ে প্রতিবাদ করে, না পারলে
অন্তর দিয়ে ঘৃণা করে। আর এটা হ’ল দুর্বলতম ঈমান’।[11] এরপরে তার মধ্যে আর সরিষাদানা পরিমাণ ঈমানও থাকবে না।[12]
আবু
বকর ছিদ্দীক (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, إنَّ
النَّاسَ إذَا رَأَوْا مُنْكَرًا فَلَمْ يُغَيِّرُوْهُ يُوْشِكُ أَنْ
يَّعُمَّهُمُ اللهُ بِعِقَابِهِ ‘যখন লোকেরা কোন অন্যায় কাজ হ’তে দেখে অথচ
তা পরিবর্তন করে না, সত্বর তাদের সকলের উপর আল্লাহ তাঁর শাস্তি ব্যাপকভাবে
নামিয়ে দেন’।[13]
হুযায়ফা (রাঃ) বলেন,
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেছেন, وَالَّذِىْ نَفْسِىْ بِيَدِهِ
لَتَأْمُرُنَّ بِالْمَعْرُوفِ وَلَتَنْهَوُنَّ عَنِ الْمُنْكَرِ أَوْ
لَيُوشِكَنَّ اللهُ أَنْ يَبْعَثَ عَلَيْكُمْ عِقَابًا مِنْهُ ثُمَّ
تَدْعُوْنَهُ فَلاَ يُسْتَجَابُ لَكُمْ ‘যার হাতে আমার জীবন নিহিত তার কসম
করে বলছি, অবশ্যই তোমরা সৎ কাজের আদেশ করবে ও অসৎ কাজে নিষেধ করবে। নইলে
সত্বর আল্লাহ তাঁর পক্ষ হ’তে তোমাদের উপর শাস্তি প্রেরণ করবেন। অতঃপর তোমরা
দো‘আ করবে। কিন্তু তা আর কবুল করা হবে না’।[14]
পরিবার,
সমাজ ও রাষ্ট্রে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ এর নীতি চালু থাকলে
সকলেই মুক্তি পাবে। অন্যথা সবাই ধ্বংস হবে। সে বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
একটি দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন, ‘আল্লাহর দন্ড সমূহ বাস্তবায়নে অলসতাকারী এবং
অপরাধী ব্যক্তির দৃষ্টান্ত ঐ লোকদের মত, যারা একটি জাহাযে আরোহণের জন্য
লটারী করল। তাতে কেউ উপরে ও কেউ নীচতলায় বসল। নীচতলার যাত্রীরা উপর তলায়
পানি নিতে আসে। তাতে তারা কষ্টবোধ করে। তখন নীচতলার একজন কুড়াল দিয়ে পাটাতন
কাটতে শুরু করল। উপর তলার লোকজন এসে কারণ জিজ্ঞেস করলে সে বলল, উপরে পানি
আনতে গেলে তোমরা কষ্টবোধ কর। অথচ পানি আমাদের লাগবেই। এ সময় যদি উপর তলার
লোকেরা তার হাত ধরে, তাহ’লে সে বাঁচল, তারাও বাঁচল। আর যদি তাকে এভাবে ছেড়ে
দেয়, তাহ’লে তারা তাকে ধ্বংস করল এবং নিজেরাও ধ্বংস হ’ল’।[15]
(৫) আদর্শ পরিবার গড়ি এবং দেশ ও জাতির সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করি :
এর অর্থ পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে ইসলামী পরিবার গড়ে তোলা এবং কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে দেশ ও জাতির সেবায় আত্মনিয়োগ করা।
আল্লাহ প্রদত্ত অফুরন্ত নে‘মতসমূহের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ নে‘মত হচ্ছে ফুটন্ত ফুলের মত আমাদের শিশু-কিশোর ছোট্ট সোনামণিরা। ইসলাম তাদেরকে চোখ জুড়ানো সম্পদ বলে বিবেচনা করে থাকে। মহান আল্লাহ বলেন,اَلْمَالُ وَالْبَنُوْنَ زِيْنَةُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ‘ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য’ (কাহফ ১৮/৪৬)। আদর্শ ইসলামী পরিবার গঠনের মাধ্যমে সন্তান-সন্ততিকে সম্পদে পরিণত করার দায়িত্ব পিতা-মাতা ও অভিভাবকদের। যাতে তারা ইহকালে শান্তি ও পরকালে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে পারে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদেরকে ও স্বীয় পরিবারকে সেই জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর। সেখানে রয়েছে পাষাণ হৃদয়, কঠোর স্বভাব ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ তা‘আলা যা আদেশ করেন তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয় তাই করে’ (তাহরীম ৬৬/৬)।
আদর্শ
পরিবার তথা সন্তান গঠনের জন্য পিতা-মাতা ও দায়িত্বশীলদের উচিত তাদের
ইসলামের আলোকে উত্তম শিক্ষা প্রদান করা। এক্ষেত্রে প্রথমে নিজেদেরকে উত্তম
শিষ্টাচার শিক্ষা দিতে হবে এবং নিজেদের চরিত্র ও আমল সর্বাধিক সুন্দর করতে
হবে। কারণ পিতা-মাতার স্বভাবের উপরই সন্তান গড়ে ওঠে। যেমন রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, ‘প্রত্যেক আদম সন্তান ফিৎরাতের উপর জন্মগ্রহণ করে। অতঃপর তার
পিতা-মাতা তাকে ইহূদী, খ্রিস্টান অথবা অগ্নিপূজক বানায়। যেমন চতুষ্পদ জন্তু
একটি পূর্ণাঙ্গ বাচ্চা জন্ম দেয়। তোমরা কি তাতে কোন কানকাটা দেখেছ’?[16]
তাই
আদর্শ পরিবার গঠনের ক্ষেত্রে পিতা-মাতাকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।
অন্যথা মহান আল্লাহর নিকট জওয়াব দিতে গিয়ে আটকে যেতে হবে। কেননা
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘সাবধান, তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং
তোমাদের প্রত্যেকেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। জনগণের শাসকও
দায়িত্বশীল। তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। আর পুরুষ তার
পরিবারের দায়িত্বশীল। তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। স্ত্রী
তার স্বামীর পরিবারের ব্যাপারে দায়িত্বশীলা। তাকেও তার দায়িত্ব সম্পর্কে
জিজ্ঞেস করা হবে’।[17]
সোনামণি সংগঠনের এই
নীতিবাক্যের আলোকে পরিবার গঠনের জন্য পরিবারকে শিষ্টাচার শিক্ষাদানের
উদ্দেশ্যে শাসন করা থেকে বিরত থাকা যাবে না। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
বলেছেন, عَلِّقُوْا السَّوْطَ حَيْثُ يَرَاهُ أَهْلُ الْبَيْتِ فَإِنَّهُ
لَهُمْ أَدَبٌ ‘পরিবারকে সংশোধন করার জন্য চাবুক এমন স্থানে রাখ, যেন
পরিবার তা দেখতে পায়। কারণ এটাই তার জন্য শিষ্টাচার’।[18]
উত্তম
পরিবার গঠনের অন্যতম পদ্ধতি হ’ল ছোটবেলা থেকেই সন্তানদেরকে ছালাতে অভ্যস্ত
করানো। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে ছালাতের
নির্দেশ দাও, যখন তাদের বয়স সাত বছর হয়। দশ বছর বয়স হ’লে ছালাতের জন্য
প্রহার কর এবং তাদের বিছানা পৃথক করে দাও’।[19]
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এশার ছালাতের পূর্বে ঘুমিয়ে যাওয়া অপসন্দ করতেন এবং এশার পর কথা বলা খারাপ মনে করতেন।[20] তাই এশার ছালাতের পর ছেলে-মেয়ে কোথায় কি করছে তা দেখার দায়িত্ব পিতা-মাতার। পিতা-মাতা উত্তম শিক্ষার মাধ্যমে আদর্শ পরিবার গড়লে তাদের সন্তানরা ছালাত পরিত্যাগ করা ও বাজে সময় নষ্ট করে রাতের পর রাত অন্যায় কাজে লিপ্ত না হয়ে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেয়ে জান্নাত লাভে ধন্য হবে ইনশাআল্লাহ।
দেশ ও জাতির সেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে। কেননা অনেকে তা করে পার্থিব স্বার্থ লাভের জন্য বা সুনাম-সুখ্যাতির জন্য। ফলে তা রিয়া বা ছোট শিরকে পরিণত হয়ে যায়। আবার অনেকে দেশ ও জাতির সেবার নামে নিজের পেটপূজা ও স্বার্থপরতায় লিপ্ত হয়। কেউ কেউ এগুলোর ধারে কাছে না গিয়ে শুধু নিজস্ব উন্নতি ও অর্থ-সম্পদ লাভের চিন্তায় সারাদিন বিভোর থাকে, যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। মানুষের সেবা করা, তাদের খোঁজ-খবর নেওয়া, মুসলিমকে সালাম প্রদান করা এবং খাদ্য খাওয়ানোর প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।
আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, জনৈক
ব্যক্তি নবী করীম (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করল, أَىُّ الإِسْلاَمِ خَيْرٌ قَالَ
تُطْعِمُ الطَّعَامَ، وَتَقْرَأُ السَّلاَمَ عَلَى مَنْ عَرَفْتَ وَمَنْ
لَمْ تَعْرِفْ ‘ইসলামের কোন কাজ সর্বোত্তম? উত্তরে নবী করীম (ছাঃ) বললেন,
তুমি অন্যকে (দরিদ্রকে) খাদ্য খাওয়াবে এবং পরিচিত ও অপরিচিত সকলকে সালাম
প্রদান করবে’।[21]
সেবা-শুশ্রূষা পাওয়ার
হকদার প্রতিবেশীকে সেবা না করলে তার ভয়াবহ পরিণতির কথা উল্লেখ করে
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, হে আদম
সন্তান! আমি পীড়িত ছিলাম, কিন্তু তুমি আমাকে সেবা-শুশ্রূষা করনি। তখন সে
(আদম সন্তান) বলবে, হে আল্লাহ! আমি তোমাকে কিভাবে সেবা-শুশ্রূষা করব অথচ
তুমি সমস্ত পৃথিবীর প্রতিপালক। আল্লাহ বলবেন, তুমি কি জানতে না যে, আমার
অমুক বান্দা পীড়িত অবস্থায় আছে, আর তুমি তার সেবা করনি। তুমি যদি তার সেবা
করতে, তাহলে তার নিকট আমাকে পেতে’।[22]
দেশ ও
জাতির নিঃস্বার্থ সেবার প্রতিফল আল্লাহর ক্ষমা ও জান্নাত। এমনকি ইতর
প্রাণী একটি বিড়ালকে কষ্ট দেওয়ার কারণে এক নারী জাহান্নামে গিয়েছিল।[23] আর এক ব্যভিচারিণী এক তৃষ্ণার্ত কুকুরকে পানি পান করানোর কারণে তাকে ক্ষমা করা হয়েছিল।[24]
উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, এদেশের কোটি কোটি শিশু-কিশোর পাশ্চাত্য অপসংস্কৃতির ছোবলে আক্রান্ত হয়ে মুসলিম ঐতিহ্য ভুলে দু’জাহানের ক্ষতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। এমতাবস্থায় পিতা-মাতা ও অভিভাবকগণের নিকট আমাদের উদাত্ত আহবান, আপনাদের আদরের সোনামণিদেরকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর আদর্শে জীবন গড়ার দৃঢ় শপথ নিয়ে উদ্ভাসিত ‘সোনামণি’ সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত করুন। সাথে সাথে এই সংগঠনের জন্য আপনাদের মূল্যবান সময়, শ্রম, মেধা ও অর্থ ব্যয় করত এর মূলমন্ত্র, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, নীতিবাক্য ও গুণাবলী সার্বিক জীবনে বাস্তবায়ন করুন। আল্লাহ আমাদের সহায় হৌন-আমীন!
আব্দুল হালীম বিন ইলিয়াস
কেন্দ্রীয় পরিচালক, সোনামণি।
[1]. এছাড়া আরো দ্রঃ সূরা আ‘রাফ ৭/৮৯, তওবাহ ৯/১২৯, ইউনুস ১০/৭১, হূদ ১১/৫৬, ইউসুফ ১২/৬৭, রা‘দ ১৩/৩০, শূরা ৪২/১০, মুমতাহিনা ৬০/৪, মুলক ৬৭/২৯।
[2]. তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/৫২৯৯।
[3]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫২৯৫।
[4]. বুখারী হা/৭২৮০; মিশকাত হা/১৪৩।
[5]. মুসলিম হা/৪৪; মিশকাত হা/৭।
[6]. বুখারী হা/৭২৮১; মিশকাত হা/১৪৪।
[7]. মুসলিম হা/৪০৩; মিশকাত হা/১০, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৯।
[8]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, বুখারী হা/৩৫৫৯।
[9]. আবুদাঊদ হা/৪৭৯৮; মিশকাত হা/৫০৮২।
[10]. তিরমিযী হা/২০০২; মিশকাত হা/৫০৮১।
[11]. মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৩৭।
[12]. মুসলিম হা/৫০; মিশকাত হা/১৫৭।
[13]. ইবনু মাজাহ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৫১৪২।
[14]. তিরমিযী, মিশকাত হা/৫১৪০।
[15]. বুখারী, মিশকাত হা/৫১৩৮।
[16]. বুখারী হা/১৩৮৫।
[17]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩৬৮৫।
[18]. সিলসিলা ছহীহা হা/১৪৪৬।
[19]. আবুদাঊদ হা/৪৯৫; মিশকাত হা/৫৭২।
[20]. বুখারী হা/৫৯৯; মিশকাত হা/৫৮৭।
[21]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, বুখারী হা/২৮; মিশকাত হা/৪৬২৯।
[22]. মুসলিম, মিশকাত হা/১৫২৮।
[23]. বুখারী হা/৩৩১৮; মিশকাত হা/১৯০৩।
[24]. বুখারী হা/৩৩২১; মিশকাত হা/১৯০২।