উত্তর : রুকূ পরবর্তী যিকিরের তিন অবস্থা- (১) ইমাম তার ইমামতিকালে ‘সামি‘আল্লা-হু লিমান হামিদাহ’ ও ‘আল্লা-হুম্মা রববানা লাকাল হামদ...’ উভয়টি বলবে (নববী, আল-মাজমূ‘ ৩/৪১৯; মারদাভী, আল-ইনছাফ ২/৪৮; ইবনু রুশদ, বিদায়াতুল মুজতাহিদ ১/১৫১; ইবনুল হুমাম, ফাৎহুল ক্বাদীর ১/২৯৮)

(২) মুক্তাদী একা ছালাত আদায়কালীন ‘সামি‘আল্লা-হু লিমান হামিদাহ’ ও ‘আল্লা-হুম্মা রববানা লাকাল হামদ...’ উভয়টি বলবে (ইবনু কুদামাহ, মুগনী ১/৩৬৬; ফাৎহুল বারী ২/২৮৪; ইবনু আব্দিল বার্র, আল ইস্তিযকার ২/১৭৮; ইবনু রুশদ, বিদায়াতুল মুজতাহিদ ১/১৫১)। কারণ আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) যখন سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলে (রুকূ হ’তে উঠতেন) তখনاللَّهُمَّ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ বলতেন, আর তিনি যখন রুকূতে যেতেন এবং রুকূ হ’তে মাথা উঠাতেন, তখন তাকবীর বলতেন এবং উভয় সিজদা হ’তে যখন দাঁড়াতেন, তখন اللهُ أَكْبَرُ বলতেন (বুখারী হা/৭৯৫; আহমাদ হা/৮২৩৬)। এই হাদীছ থেকে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, ইমাম ও একা ছালাত আদায়কারী উভয়টি বলবে।

(৩) জামা‘আতে ছালাত আদায়কালে মুক্তাদী সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ না বলে কেবল ‘রাববানা ওয়া লাকাল হাম্দ’ বা হাদীছে বর্ণিত দো‘আগুলো পাঠ করবে (ইবনুল হুমাম, ফাৎহুল ক্বাদীর ১/২৯৮; বাহূতী, কাশশাফুল ক্বেনা‘ ১/৩৪৯; মারদাভী, আল-ইনছাফ ২/৪৭)। কারণ রাসূল (ছাঃ) বলেন, ইমাম তো নির্ধারণ করা হয় তাকে অনুসরণ করার জন্যে। কাজেই তিনি তাকবীর বললে, তোমরাও তাকবীর বলবে, রুকূ করলে তোমরাও রুকূ করবে, তিনি মাথা তুললে তোমরাও মাথা তুলবে। তিনি যখন ‘সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলবেন তখন তোমরা বলবে, ‘রাববানা ওয়া লাকাল হামদ’(বুখারী হা/৬৮৯; মিশকাত হা/১১৩৯)

অন্য বর্ণনায় এসেছে, ইমাম যখন ‘সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলবে, তখন তোমরা বলবে, ‘আল্লাহুম্মা রাববানা লাকাল হামদ’। কেননা যার কথা ফেরেশতাদের কথার সাথে মিলবে, তার পূর্বে কৃত পাপ মাফ করে দেওয়া হবে’ (বুখারী হা/৭৯৬; মুসলিম হা/৪০৯; মিশকাত হা/৮৭৪)। আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ) ছাহাবায়ে কেরামকে যে ছালাত শিক্ষা দিয়েছিলেন তাতে ছিল ইমাম যখন ‘সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলবে, তোমরা তখন ‘আল্লাহুম্মা রববানা- লাকাল হামদ’ বলবে, আল্লাহ তোমাদের এ কথা শুনবেন। কেননা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবী (ছাঃ)-এর ভাষায় বলেছেন, ‘সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ’ (আল্লাহ তাঁর প্রশংসাকারীর প্রশংসা শুনেন) (মুসলিম হা/৪০৪; মিশকাত হা/৮২৬)। এমর্মে একাধিক হাদীছ বর্ণিত হয়েছে যার সবগুলোতে রুকূর পরে ইমাম এবং মুক্তাদীর আলাদা করণীয় বর্ণিত হয়েছে।

এজন্য শায়খ ওছায়মীন (রহঃ) এবং শায়খ বিন বায (রহঃ) বলেন, মুক্তাদী কেবল ‘রাববানা ওয়া লাকাল হাম্দ’ বা এজাতীয় দো‘আগুলো পাঠ করবে, সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ’ পাঠ করবে না (লিক্বাউল বাবিল মাফতূহ ১১/১৭; ফাতাওয়া নূরুন ‘আলাদ-দারব ৮/২৮৭)। উপরোক্ত বক্তব্যই ইমাম আবু হানীফা, ইমাম মালেক ও ইমাম আহমাদসহ জুমহূর বিদ্বানের (ইবনুল হুমাম, ফাৎহুল ক্বাদীর ১/২৯৮; শর মুখতাছারুল খলীল ১/২৮১; মারদাভী, আল-ইনছাফ ২/৪৭)

তবে ইমাম শাফেঈ ও আলবানী (রহঃ) দু’টি ‘আম হাদীছের ভিত্তিতে বলেন, ইমাম ও মুক্তাদী সকলেই ‘সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলতে পারে। যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা ছালাত আদায় কর, যেভাবে আমাকে ছালাত আদায় করতে দেখছ’ (বুঃ মুঃ মিশকাত হা/৬৮৩)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, ইমাম নির্ধারণ করা হয় তাকে অনুসরণ করার জন্য (বুঃ মুঃ মিশকাত হা/১১৩৯)। অত্র ‘আম হাদীছদ্বয়ের ভিত্তিতে ইমাম ও মুক্তাদী উভয়েই ‘সামি‘আললাহু লিমান হামিদাহ’ বলতে পারে (বিস্তারিত দ্রঃ মির‘আত ৩/১৮৯ ‘রুকূ’ অনুচ্ছেদ; ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ১০৫ পৃ.)

প্রশ্নকারী : বেলায়েত হোসাইন, পশ্চিম মানিকদী, ঢাকা।








বিষয়সমূহ: ছালাত
প্রশ্ন (১০/৯০) : চলাচলের ক্ষেত্রে বা মসজিদে অন্যের পায়ে বা দেহের কোন স্থানে পা লেগে গেলে করণীয় কি?
প্রশ্ন (২/২) : প্রথম স্বামী মারা যাওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করে উভয় স্বামী যদি জান্নাতী হয়, তাহ’লে আমি কোন স্বামীকে পাব?
প্রশ্ন (৩১/৪৭১): পিতা-মাতা আক্বীক্বা করে নাম রেখেছে। সন্তান বড় হয়ে বুঝতে পারলো যে, তার নাম অর্থহীন। এমতাবস্থায় তার নাম কি পরিবর্তন করা যাবে?
প্রশ্ন (৪০/২০০) : জনৈক আলেম বলেন, টিকটিকি মারলে নেকী হয়। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক? তার অপরাধ কী?
প্রশ্ন (২/৩৪২) : নাবালেগ ও পাগলের সম্পদ নিছাব পরিমাণ হ’লে যাকাত দিতে হবে কি? - -লতীফুল ইসলাম, বাগমারা, রাজশাহী।
প্রশ্ন (১৫/১৭৫) : ফজরের আযানের পূর্বে মানুষকে জাগিয়ে দেওয়ার জন্য মসজিদের মাইকে কুরআন তেলাওয়াত, দো‘আ বা ইসলামী গান গাওয়া যাবে কি? - -নাছিরুদ্দীন, বায়া, রাজশাহী।
প্রশ্ন (৩০/৪৩০) : অভিভাবকের অনুমতি না নিয়ে প্রচলিত কোর্ট ম্যারেজ কি শরী‘আতসম্মত? যদি শরী‘আতসম্মত না হয় তবে পরবর্তীতে করণীয় কি?
প্রশ্ন (৩৪/৩৫৪) স্ত্রী থাকা অবস্থায় তার বোনের মেয়েকে বিবাহ করা শরী‘আতসম্মত হবে কি?
প্রশ্ন (২২/৩০২) : আমি জনৈক হিন্দুর নিকট থেকে কিছু টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। কিন্তু ঐ ব্যক্তিকে বা তার কোন ওয়ারিছকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এক্ষণে আমার করণীয় কি?
প্রশ্ন (১২/১৭২) : মহিলারা যত সন্তান জন্ম দিবে ততটি কবুল হজ্জের নেকী পাবে। উক্ত হাদীছের সত্যতা আছে কি?
প্রশ্ন (৩০/১১০) : আমরা ভালোবেসে গোপনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করি এবং মাঝে মাঝে মিলিত হই। উভয় পরিবারের কেউ আমাদের বিবাহ সম্পর্কে জানে না। আমি রাগের মাথায় কয়েকবার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছি। আমার বিবাহ বা তালাক গ্রহণযোগ্য হবে কি?
প্রশ্ন (১১/৩৩১) : জনৈক আলেম বলেন, মহিলাদের জন্য গলায় হার, হাতে আংটি, নাকে নাকফুল দেওয়া জায়েয নয়। কারণ নাকে নাকফুল দিলে নাকে পানি প্রবেশ করে না। তাই তাদের ওযূ হয় না এবং ছালাতও হয় না। উক্ত দাবী কি সঠিক?
আরও
আরও
.