এলাহী তাওফীক্ব লাভের উপায়

(পূর্বে প্রকাশিতের পর)

(১০) আত্মীয়দের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা :

নিকটাত্মীয়তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে যাবতীয় কল্যাণের তাওফীক্ব অর্জিত হয়। একজন মানুষের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ আত্মীয় হ’ল তার পিতা-মাতা, স্ত্রী-সন্তান, ভাই-বোন, খালা-ফুফু, চাচা-মামা প্রমুখ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ سَرَّهُ أَنْ يُبْسَطَ لَهُ فِي رِزْقِهِ، أَوْ يُنْسَأَ لَهُ فِي أَثَرِهِ، فَلْيَصِلْ رَحِمَهُ، ‘যে ব্যক্তি চায় তার রিযিক্ব বৃদ্ধি পাক এবং আয়ূ বর্ধিত হোক, সে যেন আত্মীয়তার বন্ধন অক্ষুণ্ণ রাখে’।[1] এই হাদীছের ব্যাখ্যায় ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, أَنَّ هَذِهِ الزِّيَادَةَ بِالْبَرَكَةِ فِي عُمْرِهِ وَالتَّوْفِيقِ لِلطَّاعَاتِ وَعِمَارَةِ أَوْقَاتِهِ بِمَا يَنْفَعَهُ فِي الْآخِرَةِ وَصِيَانَتِهَا عَنِ الضَّيَاعِ فِي غَيْرِ ذَلِكَ، ‘এই বর্ধিত হওয়ার অর্থ হ’ল- তার বয়সে বরকত দেওয়া হবে এবং নেক আমলের তাওফীক্ব দেওয়া হবে। আখেরাতে উপকারী কাজে সময় ব্যয় করার তাওফীক্ব দেওয়া হবে এবং অহেতুক কাজে সময় অপচয় হওয়া থেকে তাকে রক্ষা করা হবে’।[2]

নাজমুদ্দীন গায্যী বলেন, ‘হায়াত বাড়িয়ে দেওয়ার অর্থ হ’ল- মহান আল্লাহ নেককার ও আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারীর বয়সে বরকত দান করেন। সময়কে আল্লাহর আনুগত্যে ব্যয় করার তাওফীক্ব দান করেন এবং পাপ, দুশ্চিন্তা ও বালা-মুছীবত থেকে তাকে রক্ষা করেন। যেমনভাবে হায়াত কমে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে- আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত হয়ে পড়া। ফলে দুশ্চিন্তা, হতাশা ও বিপদাপদ চারদিক থেকে তাকে ঘিরে ধরে। আর ঐ মুহূর্তে সে ধৈর্যধারণ করতে পারে না এবং আল্লাহর নির্ধারিত ফায়ছালাতে সন্তুষ্ট থাকতে পারে না’।[3] অর্থাৎ নিকটাত্মীয়দের সাথে সুসম্পর্ক রাখার মাধ্যমে যেমন জীবন জুড়ে কল্যাণের তাওফীক্ব অর্জিত হয়, রিযিকে ও হায়াতে বরকত লাভ করা যায়, ঠিক তেমনি আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক খারাপ হয়ে গেলে তাওফীক্বের রাস্তা থেকে বান্দা ছিটকে পড়ে যায়।

সুলায়মান আল-লাহেম বলেন,أن عقوق الوالدين ‌سبب ‌لعدم ‌التوفيق، وانغلاق أبواب الخير، وفقدان السعادة في الحياة، ‘জীবনে সুখ হারিয়ে ফেলা, কল্যাণের দুয়ার বন্ধ হওয়া এবং তাওফীক্বহীনতার অন্যতম কারণ হ’ল পিতা-মাতার অবাধ্যতা’।[4] তিনি আরো বলেন,أن بر الوالدين من أوسع أبواب ‌التوفيق ‌للخير والسعادة في الدنيا والآخرة، وثماره عظيمة، وآثاره ومنافعه كثيرة ظاهرة عاجلًا وآجلًا، ‘দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ ও সুখ-শান্তির সবচেয়ে প্রশস্ত তাওফীক্বের দরজা হচ্ছে পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করা। এর ফল ব্যাপক, দুনিয়া ও আখিরাতে এর প্রভাব ও কল্যাণকারিতা অত্যধিক ও প্রকাশ্য’।[5] তবে হ্যাঁ! পিতা-মাতা ও আত্মীয়দের সাথে যে সদাচরণ করা হবে, সেটা কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই হ’তে হবে। সম্পদ লাভ করা বা দুনিয়াবী কোন স্বার্থের জন্য যদি সদাচরণ করা হয়, তবে তাওফীক্ব থেকে বঞ্চিত হ’তে হবে। তাছাড়া যেসব আত্মীয়দের সাথে হাদিয়া আদান-প্রদান হয় এবং সহজে সুসম্পর্ক রাখা যায়, কেবল তাদের সাথেই নয়; বরং যারা সম্পর্ক ছিন্ন করতে চায় তাদের সাথেও আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,لَيْسَ الوَاصِلُ بِالْمُكَافِئِ، وَلَكِنِ الوَاصِلُ الَّذِي إِذَا قُطِعَتْ رَحِمُهُ وَصَلَهَا، ‘যে ব্যক্তি প্রতিদানের বিনিময়ে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে, সে প্রকৃত আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী নয়; বরং আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা হ’লেও যে ব্যক্তি তা জুড়ে রাখে, সে-ই হ’ল প্রকৃত আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী’।[6] অপর বর্ণনায় তিনি বলেন,‌صِلْ ‌مَنْ ‌قَطَعَكَ، ‌وَأَحْسِنْ ‌إِلَى ‌مَنْ ‌أَسَاءَ ‌إِلَيْكَ، وَقُلِ الْحَقَّ وَلَوْ عَلَى نَفْسِكَ، ‘যে তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চায়, তার সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন কর। যে তোমাকে কষ্ট দেয়, তার সাথে সদাচরণ কর। নিজের বিরুদ্ধে গেলেও সর্বদা হক্ব কথা বল’।[7]

সুতরাং এলাহী তাওফীক্ব লাভ করতে হ’লে রক্তের সম্পর্কীয় এবং নিকটাত্মীয়দের কষ্ট দেওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে এবং সর্বদা তাদের সাথে ভালোবাসার বন্ধন বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। সেই সুসম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যম হ’তে পারে সদাচরণ, সুন্দর কথা, মিষ্টি হাসি, খোঁজ-খরব নেওয়া, হাদিয়া-তোহফা প্রদান, দান-ছাদাক্বা করা, সেবা-শুশ্রূষা, দাওয়াত-যিয়াফত, বিপদাপদে সহযোগিতা প্রভৃতি।

(১১) পরোপকারী হওয়া :

এলাহী তাওফীক্ব লাভের আরেকটি বড় মাধ্যম হ’ল পরপোকার। যারা অন্যের উপকারে নিজেকে নিয়োজিত করে, তারা তাদের বিপদাপদে এমন সব মানুষের সহযোগিতা ও আশ্রয় লাভ করে, যাদের কাছ থেকে উপকৃত হওয়ার কথা সে আগে কখনো ভাবেনি। পরোপকারী ব্যক্তি তার নিজের জীবনের দিকে তাকালে দেখতে পাবে, দুর্দিনে সে এমন এমন মানুষের সহযোগিতা পেয়েছে, যাদের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার কথা সে কখনও কল্পনা করেনি। মূলতঃ আল্লাহ তা‘আলা পরোপকারী বান্দাকে তার সৃষ্টিকুলের কাছ থেকে উপকার হাছিলের তাওফীক্ব দিয়ে থাকেন এবং তিনি সেই বান্দার সাহায্যকারী হয়ে যান। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,وَاللهُ فِي عَوْنِ الْعَبْدِ مَا كَانَ الْعَبْدُ فِي عَوْنِ أَخِيهِ، ‘আল্লাহ সেই বান্দাকে সাহায্য করেন, যে তার ভাইয়ের সহযোগিতায় নিয়োজিত থাকে’।[8] সেই সাহায্য হ’তে পারে কায়িক পরিশ্রমের মাধ্যমে, ঋণ প্রদানের মাধ্যমে, সুপরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে অথবা তার জন্য অন্তরখোলা দো‘আ করার মাধ্যমে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,مَنْ دَعَا لِأَخِيهِ بِظَهْرِ الْغَيْبِ، قَالَ الْمَلَكُ الْمُوَكَّلُ بِهِ: آمِينَ، وَلَكَ بِمِثْلٍ، ‘যে লোক তার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার জন্য দো‘আ করে, তার জন্য একজন নিয়োজিত ফেরেশতা ‘আমীন’ বলতে থাকেন আর বলেন, তোমার জন্যও অনুরূপ হোক’।[9] অর্থাৎ অপর মুসলিম ভাইয়ের জন্য দো‘আ করলে ফিরেশতাদের দো‘আ লাভ করার তাওফীক্ব অর্জিত হয়। তাছাড়া পশু-পাখির প্রতি দয়া প্রদর্শনের মাধ্যমেও আল্লাহর দয়া ও করুণা লাভের তাওফীক্ব হয়।[10]

(১২) প্রকাশ্যে ও গোপনে আল্লাহকে ভয় করা :

যারা প্রকাশ্যে ও গোপনে আল্লাহকে ভয় করতে পারে, তাদের জীবনে তাওফীক্ব লাভ হয়। গোপনে-প্রকাশ্যে সর্বত্র তাক্বওয়া বজায় রাখতে হবে। তাক্বওয়ার মূল হচ্ছে নির্জনতায়ও আল্লাহকে ভয় করা। যা অন্তরের বিষয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) স্বীয় বুকের দিকে ইশারা করে তিনবার বলেছেন,التَّقْوَى هَاهُنَا ‘তাক্বওয়া এখানে অবস্থান করে’।[11] অন্যত্র তিনি বলেন,إِنَّ اللهَ لَا يَنْظُرُ إِلَى صُوَرِكُمْ وَأَمْوَالِكُمْ، وَلَكِنْ يَنْظُرُ إِلَى قُلُوبِكُمْ وَأَعْمَالِكُمْ، ‘আল্লাহ তোমাদের চেহারা-সুরাত ও অর্থ-সম্পদের দিকে তাকান না; বরং তিনি তোমাদের অন্তর ও আমল সমূহের দিকে তাকান’।[12] ইবনে হাজার হায়তামী (রহঃ) বলেন,أن ‌الأعمال ‌الظاهرة ‌لا ‌تحصل ‌بها ‌التقوى، وإنما تحصل بما يقع في القلب من عظمة الله تعالى وخشيته ومراقبته، ‘বাহ্যিক আমলগুলোর মাধ্যমে তাক্বওয়া অর্জিত হয় না; বরং আল্লাহর বড়ত্ব, ভয় ও পর্যবেক্ষণের যে অনুভূতি হৃদয়ে লুক্কায়িত থাকে, তার ভিত্তিতেই তাক্বওয়া অর্জিত হয়’।[13]

সুতরাং যাবতীয় পাপচার ও আল্লাহর আযাব থেকে মুক্তি লাভের তাওফীক্ব পেতে হ’লে সর্বদা আল্লাহভীরুতা বজায় রাখা অপরিহার্য। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ثَلَاثٌ مُنْجِيَاتٌ : فَتَقْوَى اللهِ فِي السِّرِّ والعلانيةِ والقولُ بالحقِّ فِي الرضى وَالسُّخْطِ وَالْقَصْدُ فِي الْغِنَى وَالْفَقْرِ، ‘তিনটি বিষয় মুক্তিদানকারী- (১) প্রকাশ্যে ও গোপনে আল্লাহ্কে ভয় করা, (২) সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টিতে হক্ব কথা বলা এবং (৩) সচ্ছলতা ও অসচ্ছলতায় মধ্যপন্থা অবলম্বন করা’।[14] আল্লাহ বলেন, وَمَنْ يَتَّقِ اللهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا، وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ، ‘আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য উপায় বের করে দেন এবং তাকে তার ধারণাতীত উৎস থেকে রিযিক প্রদান করে থাকেন’ (তালাক্ব ৬৫/২-৩)

রাসূল (ছাঃ)-এর ছাহাবী হিকাম বিন আমর আল-গিফারী (রাঃ) বলেন,أُقْسِمُ بِاللهِ، لَوْ كَانَتِ السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ رَتْقاً عَلَى عَبْدٍ، فَاتَّقَى اللهَ، يَجْعَلُ لَهُ مِنْ بَيْنِهِمَا مَخْرَجاً، ‘আল্লাহর কসম! যদি কোন বান্দার উপরে আকাশ-যমীন মিলিত করে দেওয়া হয়, আর সে যদি আল্লাহকে ভয় করে, তাহ’লে আল্লাহ তাকে এতদুভয়ের মাঝ থেকে বের হয়ে আসার পথ সৃষ্টি করে দিবেন’।[15] সুতরাং দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় অনিষ্টকারিতা ও মুছীবত থেকে পরিত্রাণের তাওফীক্ব লাভের অন্যতম উপায় হ’ল আল্লাহভীরুতা।

আল্লাহভীতির মাধ্যমে শুধু অকল্যাণ থেকে বাঁচার তাওফীক্ব লাভ করা যায় না; বরং কল্যাণ লাভেরও তাওফীক্ব অর্জিত হয়। আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَقُولُوا قَوْلا سَدِيدًا، يُصْلِحْ لَكُمْ أَعْمَالَكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَمَنْ يُطِعِ اللهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِيمًا- ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল। তাহ’লে তিনি তোমাদের কর্মসমূহকে সংশোধন করে দিবেন ও তোমাদের পাপ সমূহ ক্ষমা করবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, সে মহা সাফল্য অর্জন করে’ আহযাব’ (৩৩/৭০-৭১)

হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, কর্ম সমূহ সংশোধন করার অর্থ হ’ল-يُوَفِّقُهُمْ لِلْأَعْمَالِ الصَّالِحَةِ، وَأَنْ يَغْفِرَ لَهُمُ الذُّنُوبَ الْمَاضِيَةَ، ‘আল্লাহ তাদের সৎ আমল করার তাওফীক্ব দিবেন এবং তাদের পূর্ববর্তী পাপরাশি ক্ষমা করে দিবেন’।[16]

শায়খ বিন বায (রহঃ) বলেন,ومن يتق الله ‌يوفقه ‌الله ويعوضه خيرا مما أخذ منه، ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তাকে তাওফীক্ব দান করেন এবং তার কাছ থেকে যা কিছু ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে তার চেয়ে উত্তম বস্ত্ত তাকে দান করেন’।[17] আওন ইবনে আব্দুল্লাহ (রহঃ) বলেন,فواتح التَّقْوَى حسن النِّيَّة وخواتمها ‌التَّوْفِيق، ‘আল্লাহভীরুতা শুরু হয় সঠিক নিয়তের মাধ্যমে এবং শেষ হয় তাওফীক্ব লাভের মাধ্যমে’।[18] অতএব যারা সকল কাজে তাক্বওয়া বজায় রাখে, আল্লাহ তাদের যাবতীয় কল্যাণের তাওফীক্ব দান করেন। তাক্বওয়ার মাধ্যমে আমল-আখলাক্ব, জীবন-জীবিকা, স্বাস্থ্য-নিরাপত্তা, সন্তান-সন্ততি, বাসা-বাড়ি, ব্যবসা-বাণিজ্য, খাদ্য-পানীয়, পড়াশোনা-গবেষণা, ফসল-ফলাদি, পরিবার-পরিজন, বিপদাপদ, সমস্যা-সম্ভাবনা যাবতীয় ক্ষেত্রে এমন উৎস থেকে এলাহী তাওফীক্ব অর্জিত হয়, বান্দা যা কল্পনাই করতে পারে না। ইবনুল জাওযী (রহঃ) বলেন, يَا هَذَا زَاحِمْ بِاجْتِهَادِكَ الْمُتَّقِينَ، وَسِرْ فِي سِرْبِ أَهْلِ الْيَقِينِ، هَلِ الْقَوْمُ إِلا رِجَالٌ طَرَقُوا ‌بَابَ ‌التَّوْفِيقِ ففتح لهم، ‘ওহে! মুত্ত্বাক্বীদের সাথে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা কর এবং দৃঢ় বিশ^াসী লোকদের সাথে চলাফেরা কর। তারাই কি সেই মহা পুরুষ নয়, যারা তাওফীক্বের দজায় কড়া নেড়েছে, অতঃপর তাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে’?[19]

(১৩) যুলুমকারী না হওয়া :

যুলুমের মাধ্যমে তাওফীক্ব লাভের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। যুলুম দুইভাবে হয়। নিজের প্রতি এবং অন্যের প্রতি। মানুষ বিভিন্নভাবে অন্যের প্রতি যুলুম করে। যেমন- কাউকে তার প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা, খেয়ানত করা, টাকা মেরে খাওয়া, সম্পদ জবর-দখল করা, গীবত-তোহমত-চোগলখুরী করা, মানুষকে ঠকানো, খাদ্যে ভেজাল মিশানো, শারীরিক ও মানসিকভাবে কাউকে কষ্ট দেওয়া, কারো উদ্দেশ্যে কটু কথা বলা ইত্যাদি। আর দ্বিতীয় প্রকার যুলুম হচ্ছে- আল্লাহর অবাধ্যতা করা বা পাপচারে লিপ্ত হওয়া। কারণ মানুষ পাপ করার মাধ্যমে নিজ আত্মার প্রতি যুলুম করে থাকে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এই দুই প্রকার যুলুমের ব্যাপারটি একই হাদীছে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন,المُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ المُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ، وَالمُهَاجِرُ مَنْ هَجَرَ مَا نَهَى اللهُ عَنْهُ، ‘প্রকৃত মুসলিম সেই ব্যক্তি, যার জিহবা ও হাত থেকে অন্য মুসলিমগণ নিরাপদ থাকে। আর প্রকৃত মুহাজির সেই ব্যক্তি, যে আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয় সমূহ পরিত্যাগ করে’।[20] অতএব অত্যাচার থেকে নিবৃত না হওয়া পর্যন্ত প্রকৃত মুসলিম হওয়া যায় না। সুতরাং হাত ও যবান দিয়ে অপরকে কষ্ট দেওয়ার বা যুলুম করার প্রবণতা থেকে যদি বিরত থাকা যায় এবং আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকা যায়, তবে খাঁটি মুসলিম হওয়ার তাওফীক্ব অর্জন করা যায়।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মু‘আয বিন জাবাল (রাঃ)-কে ইয়ামনে পাঠানোর সময় উপদেশ দিয়ে বলেছিলেন,اتَّقِ دَعْوَةَ الـمَظْلُومِ، فَإِنَّهَا لَيْسَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ اللهِ حِجَابٌ، ‘তুমি মাযলূমের বদ দো‘আ থেকে বেঁচে থাক। কেননা সেই বদ দো‘আ ও আল্লাহর মাঝে কোন প্রতিবন্ধকতা থাকে না’।[21] এমনকি সেই বদ দো‘আ কোন কাফের অথবা পাপী লোকের পক্ষ থেকে হ’লেও, আল্লাহ তা সাথে সাথে কবুল করে নেন।[22] মাযলূমের দো‘আ এতই গুরুত্ববহ যে, এটা আল্লাহর কাছে পৌঁছার জন্য আকাশের দরজা খুলে দেওয়া হয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,وَدَعْوَةُ الْمَظْلُومِ تُحْمَلُ عَلَى الْغَمَامِ وَتُفْتَحُ لَهَا أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَيَقُولُ الرَّبُّ عَزَّ وَجَلَّ وَعِزَّتِي لأَنْصُرَنَّكَ وَلَوْ بَعْدَ حِينٍ، ‘মাযলূমের দো‘আ মেঘের উপরে তুলে নেওয়া হয় এবং আকাশের দরজা খুলে দেওয়া হয়। আর আল্লাহ তা‘আলা বলতে থাকেন, আমার ইয্যতের কসম! আমি তোমাকে অবশ্যই সাহায্য করব একটু পরে হ’লেও’।[23]

সুতরাং নিজের প্রতি ও অন্যের প্রতি যুলুম করা তো দূরের কথা, পশু-প্রাণীর প্রতিও যুলুম করা থেকে নিবৃত হওয়া উচিত। কারণ একটি বিড়ালকে কষ্ট দেওয়ার করণে একজন মহিলা জাহান্নামী হয়েছে।[24] অপরদিকে একটি তৃষ্ণার্ত কুকুরকে পানি পান করানোর কারণে একজন পতিতা মহিলা ক্ষমা লাভের তাওফীক্ব পেয়েছে।[25] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,ارْحَمُوا مَنْ فِي الأَرْضِ يَرْحَمْكُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ، ‘তোমরা যমীনবাসীর প্রতি দয়া কর, তাহ’লে আকাশবাসী (আল্লাহ) তোমাদের প্রতি দয়া করবেন’।[26] অর্থাৎ যমীনবাসীর প্রতি দয়া প্রদর্শন করতে পারলে আমরা আল্লাহর রহমত লাভের তাওফীক্ব অর্জন করব ইনশাআল্লাহ।

(১৪) রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাতের অনুসরণ করা :

দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা নিশ্চিত করতে হ’লে সার্বিক জীবনে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর আদর্শের অনুসরণ করা অপরিহার্য। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর অনুসণের মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করা যায় এবং গুনাহ মাফের তাওফীক্ব পাওয়া যায়। আল্লাহ বলেন,قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّونَ اللهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ، ‘তুমি বল, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তবে আমার অনুসরণ কর। তাহ’লে আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন ও তোমাদের গোনাহসমূহ মাফ করে দিবেন। বস্ত্ততঃ আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (আলে ইমরান ৩/৩১)

ইমাম সা‘দী (রহঃ) বলেন,وإذا أحب الله عبدا يسر له الأسباب، وهون عليه كل عسير، ووفقه لفعل الخيرات وترك المنكرات، ‘আর আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে ভালোবাসেন, তখন তার জন্য সবকিছু সহজ করে দেন, তার বিপদাপদ হালকা করে দেন, তাকে নেক কাজ করার এবং মন্দ কাজ পরিত্যাগ করার তাওফীক্ব দান করেন’।[27]

ইমাম ইবনে তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন,فَكُلُّ مَنْ اتَّبَعَ الرَّسُولَ فَاللهُ ‌كَافِيهِ ‌وَهَادِيهِ ‌وَنَاصِرُهُ ‌وَرَازِقُهُ، ‘যে ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর অনুসরণ করবে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবেন, তাকে হেদায়াত দান করবেন, সাহায্য করবেন এবং তাকে রিযিক্ব দান করবেন’।[28] তাছাড়া রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর অনুসরণের মাধ্যমে বিদ‘আত থেকে পরিত্রাণ লাভের তাওফীক্ব পাওয়া যায়। বান্দা যখন পরিপূর্ণভাবে সুন্নাতের অনুসারী হয়, তখন তার আমল-আক্বীদা থেকে বিদ‘আত দূরীভূত হয়।

অতএব তাওফীক্ব পেতে হ’লে বিদ‘আত পরিহার করে পরিপূর্ণভাবে সুন্নাতের অনুসারী হ’তে হবে। আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) বলেন, إنّ الله حَجَبَ ‌التوبةَ ‌عن ‌كلِّ ‌صَاحِبَ ‌بِدْعَةٍ ‌حَتىَّ ‌يَدَعَ ‌بِدْعَتَهُ، ‘আল্লাহ প্রত্যেক বিদ‘আতীর তওবাকে আড়াল করে রাখেন, যতক্ষণ না সে তার বিদ‘আতকে পরিত্যাগ করে’।[29] অর্থাৎ বিদ‘আত পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত বান্দা তওবা কবুলের তাওফীক্ব অর্জন করতে পারে না। কেননা বিদ‘আত একটি ঘৃণ্য অপরাধ, যার মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সুন্নাতকে অপমান করা হয় এবং মানুষ এটা নেকীর কাজ মনে করে সম্পাদন করে থাকে, ফলে সে তওবা করে না। সুফিয়ান ছাওরী (রহঃ) বলেন,‌الْبِدْعَةُ أَحَبُّ إِلَى ‌إِبْلِيسَ مِنَ الْمَعْصِيَةِ، وَالْمَعْصِيَةُ يُتَابُ مِنْهَا، وَالْبِدْعَةُ لَا يُتَابُ مِنْهَا، ‘ইবলীসের কাছে অন্যান্য পাপের চেয়ে বিদ‘আত অধিক প্রিয়তর। কেননা পাপ থেকে তওবা করা হয়, কিন্তু বিদ‘আত থেকে তওবা করা হয় না’।[30] সুতরাং বিদ‘আত অবশ্যই পরিহার করতে হবে।

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যের পাশাপাশি ছাহাবায়ে কেরাম ও তাদের সনিষ্ঠ অনুসারী সালাফদের অনুসরণ করাও কর্তব্য। আল্লাহ বলেন,وَالسَّابِقُونَ الْأَوَّلُونَ ‌مِنَ ‌الْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنْصَارِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُمْ بِإِحْسَانٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي تَحْتَهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ- ‘মুহাজির ও আনছারগণের মধ্যে যারা অগ্রবর্তী ও প্রথম দিককার এবং যারা তাদের অনুসরণ করেছে নিষ্ঠার সাথে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট। তিনি তাদের জন্য প্রস্ত্তত রেখেছেন জানণাত, যার তলদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আর এটাই হ’ল মহা সফলতা’ (তওবা ৯/১০০)। রাসূলুলুল্লাহ (ছাঃ), ছাহাবায়ে কেরাম ও সালাফে ছালেহীনের আদর্শের অনুসরণের মাধ্যমে জান্নাত লাভ করা তখনই সম্ভব হবে, যখন বান্দা আল্লাহর পক্ষ থেকে তাওফীক্ব লাভ করবে।[31]

(১৫) সংশোধনকামী ও সংস্কারপন্থী হওয়া :

নিজের ও অপরের জন্য সংশোধন কামনার মাধ্যমে এলাহী তাওফীক্ব অর্জন করা যায়। যেমন স্বামী-স্ত্রীর মাঝে যদি বিচ্ছেদের সম্ভাবনা দেখা দেয় এবং তারা উভয়েই নিজেদের সংশোধন করে নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে, তবে আল্লাহ তাদের একত্রে জীবন যাপনের তাওফীক্ব দান করেন। আল্লাহ বলেন,وَإِنْ خِفْتُمْ شِقَاقَ بَيْنِهِمَا فَابْعَثُوا حَكَمًا مِنْ أَهْلِهِ وَحَكَمًا مِنْ أَهْلِهَا إِنْ يُرِيدَا إِصْلَاحًا ‌يُوَفِّقِ اللهُ بَيْنَهُمَا إِنَّ اللهَ كَانَ عَلِيمًا خَبِيرًا، ‘আর যদি তোমরা (স্বামী-স্ত্রী) উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদের আশংকা কর, তাহ’লে স্বামীর পরিবার থেকে একজন ও স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিস নিযুক্ত কর। যদি তারা উভয়ে মীমাংসা চায়, তাহ’লে আল্লাহ উভয়ের মধ্যে (সম্প্রীতির) তাওফীক্ব দান করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও তোমাদের সবকিছু অবগত’ (নিসা ৪/৩৫)। ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, وَكَذَلِكَ كُلُّ مُصْلِحٍ ‌يُوَفِّقُهُ ‌اللهُ لِلْحَقِّ وَالصَّوَابِ، ‘এভাবে সংশোধনকামী ব্যক্তিকে আল্লাহ সঠিক কাজ করার তাওফীক্ব দান করেন’।[32]

যারা দাওয়াতের ময়দানের সংশোধনকামী ও সংস্কারপন্থী হবেন, আল্লাহ তাদের কল্যাণের তাওফীক্ব দান করেন। শু‘আইব (আঃ) যখন কওমের লোকদের সংশোধন কামনা করা সত্ত্বেও তাদের কাছে তিরস্কৃত হ’লেন, তখন তিনি বলেছিলেন,إِنْ ‌أُرِيدُ إِلَّا الْإِصْلَاحَ مَا اسْتَطَعْتُ وَمَا تَوْفِيقِي إِلَّا بِاللهِ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ أُنِيبُ، ‘আমি আমার সাধ্যমত তোমাদের সংশোধন চাই মাত্র। আর আমার কোনই ক্ষমতা নেই আল্ল­াহর সাহায্য ব্যতীত। আমি তাঁর উপরেই নির্ভর করি এবং তাঁর দিকেই ফিরে যাই’ (হূদ ১১/৮৮)। সমাজ সংস্কারের ব্যাপারেও তাওফীক্বের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা উল্লেখযোগ্য।

মানুষ যখন সংশোধনকামী ও সংস্কারপন্থী হয়, আল্লাহ তাদের উপর গযব প্রেরণ করেন না; বরং তাদের নিরাপত্তা লাভের তাওফীক্ব দান করেন। আল্লাহ বলেন, وَمَا كَانَ رَبُّكَ لِيُهْلِكَ الْقُرَى بِظُلْمٍ ‌وَأَهْلُهَا ‌مُصْلِحُونَ، ‘আর তোমার প্রতিপালক এমন নন যে, সেখানকার অধিবাসীরা সৎকর্মশীল হওয়া সত্ত্বেও জনপদ সমূহকে অন্যায়ভাবে ধ্বংস করে দিবেন’ (হূদ ১১/১১৭)। অর্থাৎ তারা যদি সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করার মাধ্যমে পরস্পর সংশোধনকামী হয়, তবে আল্লাহ তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করবেন না।[33]

অনুরূপভাবে যারা নিজেদের ভুল-ত্রুটি শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করে, আল্লাহ তাদের সংশোধন হওয়ার তাওফীক্ব দান করেন। ওমর ইবনু আব্দুল আযীয (রহঃ) একবার মিম্বারে দাঁড়িয়ে বলেন,يَا أَيُّهَا النَّاسُ أَصْلِحُوا آخِرَتَكُمْ يُصْلِحِ اللهُ لَكُمْ دُنْيَاكُمْ، وَأَصْلِحُوا سَرَائِرَكُمْ يُصْلِحِ اللهُ لَكُمْ عَلَانِيَتَكُمْ، ‘হে

লোক সকল! তোমরা তোমাদের আখেরাতকে সংশোধন কর, তাহ’লে আল্লাহ তোমাদের দুনিয়া সংশোধন করে দিবেন। তোমাদের নিজেদের গোপন বিষয়গুলোকে শুধরে নাও, তাহ’লে আল্লাহ তোমাদের প্রকাশ্য বিষয়গুলোকে পরিপাটি করে দিবেন’।[34] খালেদ আল-হুসাইনান বলেন, أهل الصلاح والدين فإن الله يوفقهم للثبات عند الممات، ويحسن خاتمتهم، ‘দ্বীনদার ও সংস্কারপন্থী লোকদের মৃত্যুর সময় আল্লাহ তাদেরকে (ঈমানের উপর) অবিচল থাকার তাওফীক্ব দান করেন এবং তাদের উত্তম মৃত্যু দান করেন’।[35]

[ক্রমশঃ]

আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ

এম.ফিল গবেষক, আরবী বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।


[1]. বুখারী হা/২০৬৭; মুসলিম হা/২৫৫৭।

[2]. শারহুন নববী ‘আলা মুসলিম ১৬/১১৪।

[3]. নাজমুদ্দীন মুহাম্মাদ গায্যী, হুসনুত তানাববুহ লিমা ওয়ারাদা ফিত-তাশাববুহ, ৪/৫৬৭।

[4]. সুলাইমান আল-লাহেম, মারাক্বীল ইয্যাহ ওয়া মুক্বাওবিমাতিস সা‘আদাহ, পৃ. ৩৩৬।

[5]. মারাক্বিল ইয্যাহ ওয়া মুক্বাওবিমাতিস সা‘আদাহ, পৃ. ৩৩১।

[6]. বুখারী হা/৫৯৯১; আবূদাঊদ হা/ ১৬৯৭; তিরমিযী হা/১৯০৮।

[7]. ছহীহাহ হা/১৯১১; ছহীহুত তারগীব হা/২৪৬৭।

[8]. মুসলিম হা/২৬৯৯; মিশকাত হা/২০৪।

[9]. মুসলিম হা/২৭৩২।

[10]. আবূদাঊদ হা/৪৯৪১; তিরমিযী হা/১৯২৪, সনদ ছহীহ।

[11]. মুসলিম হা/২৫৬৪; মিশকাত হা/৪৯৫৯।

[12]. মুসলিম হা/২৫৬৪; মিশকাত হা/৫৩১৪।

[13]. ইবনে হাজার হায়তামী, আল-ফাৎহুল মুবীন, পৃ. ৫৬১।

[14]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/৬৮৬৫; মিশকাত হা/৫১২২, সনদ হাসান।

[15]. হাফেয শামসুদ্দীন আয-যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ৪/৯৪।

[16]. তাফসীর ইবনে কাছীর, ৬/৪৮৭।

[17]. শায়খ বিন বায, মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ৬/১৫৩।

[18]. জালালুদ্দীন সুয়ূতী, আদ্দুররুল মানছূর ১/৬২।

[19]. ইবনুল জাওযী, আত-তাবছিরাহ ২/৫৩।

[20]. বুখারী হা/১০; মুসলিম হা/৪১; মিশকাত হা/৫।

[21]. বুখারী হা/১৪৯৬; মুসলিম হা/ ১৯; তিরমিযী হা/৬২৫ ।

[22]. আহমাদ হা/৮৭৯৫; মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বা হা/২৯৩৭৪; ছহীহুল জামে‘ হা/২৬৮২, ৩৩৮২

[23]. আহমাদ হা/৮০৩০; তিরমিযী হা/ ৩৫৯৮; ইবনু মাজাহ হা/১৭৫২;

[24]. বুখারী হা/৩৪৮২; মুসলিম হা/২২৪২।

[25]. বুখারী হা/৩৪৬৭; মুসলিম হা/২২৪৫।

[26]. আবূদাঊদ হা/৪৯৪১; তিরমিযী হা/১৯২০; মিশকাত হা/৪৯৬৯, হাদীছ ছহীহ।

[27]. তাফসীরে সা‘দী, পৃ. ২৩৫।

[28]. ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘উল ফাতাওয়া ১/২৯৩।

[29]. ছহীহুত তারগীব হা/৫৪, সনদ ছহীহ।

[30]. হেবাতুল্লাহ লালকাঈ, শারহু উছূলি ই‘তিক্বাদি আহলিস সুন্নাহ ১/১৪৯।

[31]. তাফসীরে আবিস স‘ঊদ (ইরশাদুল আক্বলিস সালীম) ৭/১৫৩।

[32]. তাফসীরে তাবারী ৬/৭৩০।

[33]. তাফসীরে আবিস স‘ঊদ (মাহাসিনুত তা’বীল ৬/১৪০।

[34]. ইবনু আবীদ্দুনয়া, আল-ইখলাছ ওয়ান নিয়্যাহ, পৃ: ৭০।

[35]. খালিদ আল-হুসাইনান, হাকাযা কা-নাছ ছালিহূন, পৃ. ৬২।






বিষয়সমূহ: বিধি-বিধান
অভ্যাসগত বিশ্বাস থেকে চিন্তাশীল বিশ্বাসের পথে যাত্রা - মুহাম্মাদ আনওয়ারুল কারীম
আহলেহাদীছ একটি বৈশিষ্ট্যগত নাম - আহমাদুল্লাহ - সৈয়দপুর, নীলফামারী
হাদীছের অনুবাদ ও ভাষ্য প্রণয়নে ভারতীয় উপমহাদেশের আহলেহাদীছ আলেমগণের অগ্রণী ভূমিকা (২য় কিস্তি) - ড. নূরুল ইসলাম
ঈদায়নের কতিপয় মাসায়েল - আত-তাহরীক ডেস্ক
সার্ভকোয়াল মডেলের আলোকে শিক্ষা পরিষেবার গুণমান নির্ণয় - প্রফেসর ড. শহীদ নকীব ভূঁইয়া
কিভাবে ইবাদতের জন্য অবসর হব? - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
তাক্বলীদের বিরুদ্ধে ৮১টি দলীল (৫ম কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
আশূরায়ে মুহাররম - আত-তাহরীক ডেস্ক
আল্লাহর জন্য কাউকে ভালবাসা - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
ফৎওয়া : গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা ও বিকাশ (৩য় কিস্তি) - ড. শিহাবুদ্দীন আহমাদ, শিক্ষক, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, রাজশাহী
ইবাদতের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা (২য় কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
মানবাধিকার ও ইসলাম (১২তম কিস্তি) - শামসুল আলম
আরও
আরও
.