মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মুহাম্মাদ শারফুদ্দীন আহমাদ। তিনি বলেছেন, মোবাইল কম ব্যবহার করতে হবে। অধিক সময় ফোন নিয়ে বসে থাকলে স্ট্রেস বাড়ে এবং এ থেকে বাড়ে হৃদরোগের ঝুঁকি। গত ৩০শে অক্টোবর বিএসএমএমইউয়ে নিউরোসার্জারী বিভাগ আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে স্ট্রোকের রোগীদের হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হ’লে মৃত্যু ঠেকানোর পাশাপাশি বিকলাঙ্গ রোধ করা যাবে। এ রোগের চিকিৎসা করার চেয়ে প্রতিরোধ যরূরী।
সেমিনারে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী মানুষের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ স্ট্রোক। বিশ্বে প্রতি ৪ জনের ১ জন স্ট্রোকে মারা যায়। প্রতি মিনিটে ১০ জনের স্ট্রোকে মৃত্যু হয়। বিশ্বের ১০০ জন স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীর ৪৮ জনই উচ্চ রক্তচাপে ভুগেন এবং প্রতি হাজারে ৮ থেকে ১০ জন মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।
এতে আরও বলা হয়, শিশুদের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে প্রতি লাখে ২ থেকে ১৩ জন শিশু স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে স্ট্রোকের অর্ধেক হয় রক্ত চলাচল বন্ধ হওয়ার কারণে, বাকি অর্ধেক হয় মস্তিষ্কের রক্তনালি ছিঁড়ে রক্তক্ষরণের মাধ্যমে। বছরে ১০ থেকে ২৫ ভাগ শিশু স্ট্রোকে মারা যায়। ২৫ ভাগ শিশু বারবার স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। স্ট্রোকে আক্রান্ত ৬৬ ভাগ শিশুর হাত পায়ের দুর্বলতা, খিঁচুনি দেখা দিতে পারে। আক্রান্ত শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে ব্যাঘাত ঘটে।
সেমিনারে স্ট্রোক প্রতিরোধে ৭টি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে (ক) খাবারে তেল ও লবণের ব্যবহার কমানো (খ) ওযন নিয়ন্ত্রণে রাখা (গ) নিয়মিত শরীরচর্চা করা (ঘ) ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন থেকে বিরত থাকা (ঙ) ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ থাকলে নিয়ন্ত্রণে রাখা (চ) রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা ও (ছ) মানসিক চাপ কমাতে ছালাত আদায় সহ ধর্মীয় রীতি-নীতি পালন করা।