উত্তর : যে ইমাম তাবীয লেখার মত শিরকী কাজ এবং ভাগ্য গণনার মত কুফরী কাজে লিপ্ত, তার পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে না। কমিটির দায়িত্ব হবে অনতিবিলম্বে তাকে সরিয়ে বিশুদ্ধ আক্বীদা সম্পন্ন কোন আলেমকে ইমাম নিযুক্ত করা (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ, ফৎওয়া ক্রমিক ২৯৪৮ পৃ. ১/৫৯৯-৬০০)। আল্লাহ বলেন, ‘গায়েবের চাবিকাঠি তাঁর কাছেই রয়েছে। তিনি ব্যতীত কেউই তা জানেনা’ (আন‘আম ৬/৫৯; নামল ২৭/৬৫)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টির পঞ্চাশ হাযার বছর পূর্বেই আল্লাহ স্বীয় মাখলূক্বাতের তাক্বদীরসমূহ লিপিবদ্ধ করেছেন’ (মুসলিম হা/২৬৫৩; মিশকাত হা/৭৯)।
তাবীয লটকানো শিরক। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তাবীয লটকালো সে শিরক করল’ (আহমাদ হা/১৭৪৪০; ছহীহাহ হা/৪৯২, ৩৩১)। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন কিছু লটকালো তার উপরেই তাকে সোপর্দ করা হ’ল’ (তিরমিযী হা/২০৭২; মিশকাত হা/৪৫৫৬)।
ভাগ্য গণনা কুফরী। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি গণকের কাছে গেল এবং তাকে কোন কথা জিজ্ঞেস করল, তার চল্লিশ দিনের ছালাত কবুল হবে না’ (মুসলিম হা/২২৩০; মিশকাত হা/৪৫৯৫ ‘ভাগ্য গণনা’ অনুচ্ছেদ)। অন্য বর্ণনায় এসেছে তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি গণকের কাছে আসল এবং সে যা বলল তা বিশ্বাস করল, ঐ ব্যক্তি মুহাম্মাদ-এর প্রতি যা নাযিল হয়েছে তার সাথে কুফরী করল (তিরমিযী হা/১৩৫; মিশকাত হা/৫৫১)।
জাদু করা কুফরী। আল্লাহ বলেন, ‘সুলায়মান কুফরী করেনি, বরং শয়তানেরাই কুফরী করেছিল। যারা মানুষকে জাদুবিদ্যা শিক্ষা দিত’ (বাক্বারাহ ২/১০২)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ঐ ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয়, (১) যে পাখি উড়িয়ে ভাগ্যের ভাল-মন্দ যাচাই করল এবং যার জন্য এটি করা হ’ল অথবা (২) যে ভাগ্য গণনা করল ও যার জন্য এটি করা হ’ল অথবা (৩) যে জাদু করল ও যার জন্য এটি করা হ’ল অথবা (৪) যে ব্যক্তি সুতায় গিরা দিল ও যার জন্য এটি করা হ’ল অথবা (৫) যে গণকের কাছে গেল, অতঃপর সে যা বলল তাতে বিশ্বাস স্থাপন করল, সে ব্যক্তি মুহাম্মাদ-এর উপর যা নাযিল হয়েছে, তা অস্বীকার করল’ (বাযযার হা/৩৫৭৮; ছহীহাহ হা/২১৯৫, ২৬৫০)।
অতঃপর যে মসজিদের অধিকাংশ তাক্বওয়াশীল ও বিচক্ষণ নিয়মিত মুছল্লী কোন ইমামকে অপসন্দ করেন, তার সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘তিন ব্যক্তির ছালাত তাদের মাথার উপর এক বিঘৎ পরিমাণও উঠানো হয় না। যে ব্যক্তি লোকদের ইমামতি করে, অথচ মুছল্লীরা তাকে অপসন্দ করে’... (ইবনু মাজাহ হা/৯৭১; মিশকাত হা/১১২৮)। অতএব ঐ ইমামকে প্রথমে তার আক্বীদা ও আমল পরিবর্তনের জন্য বলতে হবে। সংশোধন না হ’লে তাকে বাদ দিয়ে হকপন্থী কোন মুত্তাক্বী আলেমকে ইমাম নিযুক্ত করতে হবে।
প্রশ্নকারী : হাফীযুর রহমান, পশ্চিম বিনোদপুর, নোয়াখালী।