পর্ব ১। পর্ব ২। 

পাঠদান :

সাধারণভাবে বললে, শিক্ষকবৃন্দ কখন কিভাবে দরস দিবেন, এ ব্যাপারে তাদের পূর্ণ স্বাধীনতা ছিল।[1] কেউ কেউ প্রতিদিন দরস দিতেন। যেমন একজন বিদ্বানের ব্যাপারে বর্ণিত আছে যে, তিনি ত্রিশ বছর যাবৎ একটি দরসও স্থগিত করেননি।[2] একজন বিদ্বান (মৃ. ৪১৫ হি.) বছরে মাত্র একবার হাদীছের মজলিসের আয়োজন করতেন।[3] আরেকজন বছরে দু’টি ক্লাস নিতেন।[4] স্বাভাবিকভাবে সপ্তাহে একটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হ’ত[5] বা কখনো কখনো দু’টি অধিবেশনও সম্পন্ন হ’ত। অবশ্য সেক্ষেত্রে একটি হাদীছ বর্ণনার জন্য ও অপরটি শ্রুতলিখনের জন্য নির্ধারিত থাকত।[6] একজন ছাত্র শ্রবণের (সামা‘) জন্য নির্ধারিত ক্লাসে কোনকিছু নোট করতে পারত না। তাত্ত্বিকরা এ ব্যাপারে বিস্তর গবেষণা করে জানিয়েছেন, শ্রবণের (সামা‘) ক্লাসে যে ছাত্র লিখনকার্য চালায়, ইলমী ব্যাপারে তার উপর আস্থা রাখা যায় না। শ্রবণের (সামা‘) সময় অন্যমনস্ক হওয়া উচিত নয়। একজন ছাত্র আগে একটি বিষয় পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে শুনবে, তারপর যখন লিখন অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়, তখন লিখে নিবে।[7] একজন শিক্ষক ক্লাসের পিছন দিকে একজন দাসকে দাঁড় করিয়ে রাখতেন একারণে যে, কেউ যদি পড়ার সময় লেখার চেষ্টা করে, তাহ’লে সে তাকে ক্লাস থেকে বের করে দেবে।[8]

বলতে গেলে সারাদিন ধরেই ক্লাস চলত। কোন কোন শিক্ষক সকাল সকাল ক্লাস শুরু করতেন।[9] কখনোবা ফজর ছালাতের পূর্বেই শুরু হয়ে যেত[10], আবার কখনো ফজরের পরপরই শুরু হ’ত।[11] মধ্যদিবস পর্যন্ত[12] বা বাদ যোহর পর্যন্ত[13] কিংবা কখনো কখনো সূর্যাস্ত[14] কোন কোন ক্লাস স্থায়ী হ’ত।

বিদ্যাপীঠগুলো যেহেতু শহরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল, তাই ছাত্রদেরকে এক জায়গা হ’তে আরেক জায়গায় যাতায়াত করতে হ’ত। এই যাতায়াত ‘দাওরান’ নামে পরিচিত ছিল।[15] ইসহাক বিন ইবরাহীম মাওছীলী (মৃ. ২৩৫ হি.) একদিনে তার ‘দাওরানে’ পাঁচজন শিক্ষকের নিকট যেতেন।[16] একজন ছাত্রকে (মৃ. ১৬৮ হি.) তার সহপাঠীরা ‘জাওয়াল’ (যে অধিক ঘোরাঘুরি করে) নামে ডাকত। কারণ সে সবসময় কোন না কোন শিক্ষকের নিকট পাঠ গ্রহণ করত এবং যখনই অন্য ছাত্ররা কোন শিক্ষকের নিকট যেত, তাকে সেখানে দেখতে পেত।[17]

প্রত্যেকটি ক্লাসের স্বতন্ত্র নিয়ম-কানূন ও আদব-কায়দা ছিল। ছাত্র-শিক্ষক সবাইকে শালীনতা বজায় রাখতে হ’ত। আবু হানীফা (রহঃ) আদব-কায়দার জন্য প্রশংসিত ছিলেন। একবার তাঁর কোলের উপর ছাদ থেকে সাপ পড়ল। তিনি ব্যতীত সবাই ভয়ে দৌড় দিল। তিনি চুপচাপ বসে থেকে সাপটাকে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন।[18] একজন ছাত্রকে পা না ছড়িয়ে সোজা হয়ে বসতে হ’ত। অন্য ছাত্রদের মাড়িয়ে শিক্ষকের কাছাকাছি আসন গ্রহণ করা অত্যন্ত আপত্তিকর ছিল। ক্লাসের আসন বিন্যাস শিক্ষকের এখতিয়ারে ছিল। তবে ছাত্রদের সাধারণত পসন্দমত জায়গায় বসার স্বাধীনতা ছিল। শুধুমাত্র ‘শিক্ষকের সামনের আসনের’ ক্ষেত্রে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটত। কারণ এই আসন সংরক্ষিত থাকত সবচেয়ে সিনিয়র ছাত্রের (ছাহিব) জন্য অথবা এমন কারো জন্য যে কি-না ক্লাসের পক্ষ থেকে শিক্ষককে কিতাব পাঠ করে শোনাত। কখনো কখনো আসন বিন্যাস হ’ত ক্লাসের পারফর্মেন্স অনুযায়ী এবং সেক্ষেত্রে যারা একটি বিষয়ে তুলনামূলকভাবে বেশী পারদর্শী, তারা অগ্রাধিকার পেত।[19] ক্লাস চলাকালে কেউ শিক্ষকের দিকে পিছন ফিরে বসতে পারত না বা তাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারত না, এমনকি শিক্ষকের চেয়ে উচ্চৈঃস্বরে কথাও বলতে পারত না।

যদি ছাত্রদেরকে এক এক করে পাঠদান করা হ’ত, সেক্ষেত্রে সাধারণত ক্লাসে আগমনের ক্রম অনুযায়ী ছাত্রদেরকে পাঠ গ্রহণ করতে হ’ত।[20] তবে বহিরাগত ছাত্রদের ক্ষেত্রে মনে হয় ক্লাসে আগমনের ক্রম ধর্তব্য ছিল না, তারা স্থানীয় ছাত্রদের আগে পাঠ গ্রহণ করতে পারত। বাগদাদের উপকণ্ঠের একজন ছাত্র একবার এই সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সচেতন শিক্ষক তা ধরে ফেলেছিলেন এবং বলেছিলেন, ‘আমরা কখনো শহরের ছাত্রদের এ সুযোগের আওতায় আনিনি। আল্লাহ যেন তোমার এ চেষ্টাকে সফল না করেন। তুমি আমার নিকট আগমনের পূর্বে তোমার মায়ের সঙ্গে সকালের নাশতা গ্রহণ করেছ’।[21]

ক্লাসের মধ্যে শিক্ষকের সাথে তর্ক করা বেয়াদবী বলে গণ্য হ’ত। তবে উপযুক্ত প্রশ্ন হ’লে তা সাদরে গৃহীত হ’ত। অপ্রয়োজনে কেউ দরসে ব্যাঘাত ঘটাতে পারত না। কোন শিক্ষক যদি এক মজলিসে দুই বার বিরক্ত করা হ’ত, তাহ’লে তিনি সেদিনের মত ক্লাস সমাপ্ত করে দিতেন।[22]

পাঠদান ও গ্রহণের পদ্ধতি :

প্রথম দিকে শুধুমাত্র হাদীছ শাস্ত্রকে বুঝানোর জন্য ‘ইলম’ শব্দটি ব্যবহৃত হ’ত এবং প্রকৃতপক্ষে এ শাস্ত্রটি ইলমের অন্য সব শাখাকে প্রভাবিত করেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ শাস্ত্রের পঠন-পাঠনের পদ্ধতি ও পরিভাষা অনুসৃত হয়েছে। যেমন চিকিৎসা শাস্ত্রের কিতাবা সমূহে ইসনাদের (বর্ণনাকারীদের পরম্পরা) ব্যবহার শুরু হয়েছিল। এমনিভাবে কেউ যদি কোন কথা একজন নির্ভরযোগ্য শিক্ষকের নিকট থেকে সরাসরি শ্রবণ না করে থাকে তাহ’লে সে তা অন্যের নিকট প্রচার করতে পারবে না। এই মূলনীতিটিও অন্যান্য সব শাস্ত্রের ক্ষেত্রে স্বীকৃত নিয়ম ছিল। শ্রবণরীতি (সামা‘) ছিল এমন যে, প্রথমে কোন কিছুর, যেমন হাদীছ, বর্ণনা বা উপস্থাপনা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করতে হ’ত, অতঃপর শ্রুত বিষয়টি লিখে (ইমলা) নিতে হ’ত। ইলম অর্জনের ক্ষেত্রে মুখস্থকরণ (হিফয) গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হ’ত। ইবনুল মুবারকের পিতা তার সন্তানের পড়াশোনার ঘোর বিরোধী ছিলেন। তিনি তার সন্তানকে হুমকি দিয়ে বললেন, তিনি যদি কখনো তার কিতাব দেখতে পান, তাহ’লে তা তৎক্ষণাৎ পুড়িয়ে দেবেন। কিন্তু পিতার ধমকিকে পুত্র মোটেই পরোয়া করল না; বরং নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বলল, ‘পোড়ানোর মতো কোন বই আপনি কখনো পাবেন না। কারণ আমি প্রত্যেকটি বিষয় হিফয করে নিয়েছি। সেকারণ একটা কিতাবও ঘরে রাখিনি।[23] হিফয করার জন্য যে পদ্ধতি প্রয়োগ করা হ’ত তা হ’ল পুনরাবৃত্তি এবং একাজের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুনরাবৃত্তিকারীদের (মুঈদ) নিয়োগ দেয়া হ’ত।

হাদীছের ক্ষেত্রে মুযাকারার (অন্যের সাথে আলোচনা করার মাধ্যমে কোন কিছু ইয়াদ করা) মজলিসগুলো খুবই জনপ্রিয় ছিল।[24] প্রথমদিকে এটি ছিল ছাত্রদের মধ্যে বা শিক্ষকদের মধ্যে ঘরোয়াভাবে আলোচনা-পর্যালোচনার মাধ্যমে হাদীছ বিনিময়ের সভা। মূলতঃ এটি কোন পাঠদান সভা ছিল না, তবে ‘মুযাকারায়’ শ্রুত হাদীছ অন্যের নিকট বর্ণনার অনুমতি ছিল।[25] তবে এক্ষেত্রে হাদীছটি যে উক্ত উপায়ে শ্রুত হয়েছিল, তা উল্লেখ করে দিতে হ’ত।[26] মুযাকারা বৈঠকগুলো সকলের জন্য উন্মুক্ত ছিল। শায়খরা সংক্ষিপ্ত সফরে দরস প্রদান করার চেয়ে মুযাকারায় শরীক হয়ে স্থানীয় শায়খদের সাথে হাদীছ বিনিময় করা বেশী পসন্দ করতেন।[27] কখনো কখনো বিশেষভাবে মুযাকারার আয়োজন করা হ’ত।[28]

ইবনুল মাদীনী (আলী বিন আব্দুল্লাহ, আবুল হাসান) বলেন, ‘আমি গত চল্লিশ বছর যাবৎ যখনই বাগদাদে গিয়েছি, আহমাদ বিন হাম্বলের সাথে মুযাকারা আকারে হাদীছ নিয়ে আলোচনা করেছি।[29] নীতি অনুসরণ করার কারণে কোন কোন শিক্ষক হাদীছের দরস দিতেন না, কিন্তু মুযাকারা পেলে তারা তৎক্ষণাৎ অংশগ্রহণ করতেন।[30] বিশর হাফী (মৃ. ২২৭ হি.) যা কিছু লিপিবদ্ধ করেছিলেন, তার সবই মুযাকারায় শ্রুত ছিল।[31] যাহোক মুযাকারাগুলো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ঈর্ষামুক্ত ছিল না। একজন শায়খের ব্যাপারে শোনা যায়, তিনি তৎকালীন শায়খদের সাথে মুযাকারায় অংশগ্রহণ করতেন এবং সবসময় যেকোন উপায়ে বিজয়ী হ’তেন।[32]

প্রথমদিকে ইলমে হাদীছের মূল লক্ষ্য ছিল হাদীছ বর্ণনা করা (রিওয়াইয়া)। এরপর আসল হাদীছ অনুধাবন করার (দিরায়া) প্রসঙ্গ এবং এ থেকেই এক সময় ফিক্বহ শাস্ত্রের উৎপত্তি হ’ল। মুনাক্বাশার (যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করা) মাধ্যমে ইলমে ফিক্বহের চর্চা হ’ত। এই পদ্ধতিতে শিক্ষক, মুফতী বা ছাত্রদের সামনে একটি প্রশ্ন (মাসআলা) পেশ করে উত্তর (জওয়াব, ফৎওয়া) দিতে বলা হ’ত। ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) এই পদ্ধতিটি বিশেষভাবে পসন্দ করতেন এবং পাঠদানের ক্ষেত্রে এটি অনুসরণ করতেন।[33] তাঁর একজন প্রাক্তন ছাত্র প্রাতিষ্ঠানিক আকারে ‘মাজলিসুন নযর’ (বিতর্কসভা) গড়ে তুলেছিলেন।[34] পরবর্তীতে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান মুসলিম সমাজের অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে গেল। আমরা অন্যত্র মজলিসে নযর বা কাযী মাহামিলীর কথা উল্লেখ করেছি। মজলিসটি ২৭০ হিজরীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং দুইশত বছর পরে হিজরী পঞ্চম শতকেও এটি বহাল ছিল। স্বয়ং খত্বীব বাগদাদী এই মজলিসে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

‘মজলিসে মুনাযারা’ নামে পরিচিত তর্ক-বিতর্কের প্রতিষ্ঠানগুলোও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মনে করা হয়, আববাসীয় খলীফা মামূন এ ধরনের সংস্থার প্রবর্তন করেছিলেন। তিনি একবার প্রধান বিচারপতি ইবনে আকসামকে (মৃ. ২৪২হি.) বাগদাদের বাছাই করা পন্ডিতদের নিয়ে একটি সভার আয়োজন করতে বললেন। অনুষ্ঠান শেষে তিনি এটি নিয়মিতভাবে আয়োজন করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন।[35] পরবর্তীতে মন্ত্রী ও অভিজাত শ্রেণী তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে এ ধরনের বহু বিতর্কসভা গড়ে তোলেন। গাযালী মনে করেন, খলীফা ও অন্যান্য কর্মকর্তারা, যারা ধর্মতত্ত্বের ব্যাপারে উৎসাহী ছিলেন, তারাই মূলতঃ ইলমে কালাম নিয়ে মুনাযারার বিষয়টিকে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন। অবশ্য পরবর্তীতে ফিক্বহী জিজ্ঞাসা সামনে উঠে এসেছিল।[36] মুনাযারাগুলোতে প্রায় সব শাস্ত্রের চর্চা হ’ত। এমনকি কবিরা পর্যন্ত এসব মজলিসে একজন আরেকজনের সাথে প্রতিযোগিতা করেছেন বলে জানা যায়। ব্যাকরণবিদ মুবার্রাদ এবং অভিধান রচয়িতা ছা‘লাবের মাঝে কয়েকটি বিখ্যাত ‘মুনাযারা’ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।[37] সিবাওয়াইহ যখন ইয়াহ্ইয়া বারমাকীর নিকট আগমন করলেন, তিনি তখন তাকে তার ও কিসাঈর মাঝে একটি মুনাযারা আয়োজন করতে অনুরোধ করেছিলেন।[38] ইমাম শাফেঈ ও ইবনু রাহওয়াইহ-এর মাঝে মক্কাবাসীদের প্রসঙ্গে একটি মুনাযারা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।[39] আরেকবার ‘খবরে আহাদ’ (যে হাদীছের কোন স্তরে মাত্র একজন রাবী রয়েছে) প্রসঙ্গে ইবনে উলাইয়ার সাথে ইমাম শাফেঈর বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এমনিভাবে মুনাযারা প্রাক-মাদ্রাসা যুগে ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গে পরিণত হয়েছিল।[40]

পাঠদানের ভাষা :

পাঠদানের মাধ্যম ছিল আরবী। অবশ্য কোন কোন জায়গায় আঞ্চলিক ভাষায় দরস চলত। তবে কতিপয় দ্বিভাষী শিক্ষক সম্পর্কে জানা যায়, তারা যুগপৎভাবে আরবী ও ফারসী ভাষায় পাঠদান করতেন বা আরবী বয়ানগুলো বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় তরজমা করে দিতেন। এতে উপকৃত হ’ত সেসব ছাত্র, যারা হয়ত উচ্চতর আরবী ভাষায় পারদর্শী ছিল না। তবে একজন ছাত্রের মাতৃভাষা যা-ই হোক, তাকে আরবী ভাষা শিখতে হ’ত। মুসলিম বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠায় এর ব্যাপক ভূমিকা ছিল। যেমন যেকোন জায়গা হ’তে আগত একজন ছাত্র বিশাল মুসলিম সাম্রাজ্যের যেকোন শহরের যেকোন মসজিদে প্রবেশ করে ইলমী মজলিসে অংশগ্রহণ করতে পারত। কারণ তার যদি আরবী জানা থাকত, তাহ’লে দরস বুঝতে কোন সমস্যা হ’ত না।

উস্তাযগণ ছাত্রদের ভাষার বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখতেন। আব্দুল্লাহ বিন ইদরীস (রহঃ)-এর ক্লাসে কেউ যদি ব্যাকরণগত ভুল করত, সাথে সাথে তিনি ক্লাসের সমাপ্তি ঘোষণা করতেন। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘মাওছিলে কি এমন একজনও নেই, যে শুদ্ধরূপে আরবী বলতে পারে?[41] তবে শুদ্ধ আরবীর উপর এমন জোর দেয়ার বিরূপ প্রতিক্রিয়াও ছিল।

যেমন ক্লাসের মধ্যে ছাত্ররা কিতাব পাঠ করতে ভয় পেত। একজন ছাত্র তার সিনিয়র সহপাঠী প্রসঙ্গে বলেছে যে, তারা তার আগমনের অপেক্ষায় থাকত। কারণ সে ক্লাসের পক্ষ থেকে শিক্ষককে কিতাব পাঠ করে শোনাত।[42] জনৈক শিক্ষক একবার এক ছাত্রের আরবী পড়া শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন। তিনি এতটা চমৎকৃত হয়েছিলেন যে, ছেলেটির আরবী ভাষায় পারদর্শিতা দেখে তিনি জানতে চাইলেন, সে আরবের কোন গোত্রভুক্ত, যদিও ছেলেটি ছিল অনারব।[43] শিক্ষকদের জন্যও আরবী ভাষায় পারদর্শিতা অর্জন করা সমানভাবে যরূরী ছিল। কারণ তারা যদি ভুল আরবী বলতেন, তাহ’লে ছাত্ররা তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করত। যেমন একজন শিক্ষক একবার ব্যাকরণগত ভুল করলে একজন ছাত্র তাকে অত্যন্ত কঠোর ভাষায় শুধরে দিয়েছিল।[44]

টিউশন ফী :

উস্তাযদের টিউশন ফী গ্রহণ করা উচিত কি-না, এ নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। কেউ কেউ ফী গ্রহণের তীব্র বিরোধী, আবার কেউ কেউ পাঠদানের বিনিময়ে ফি গ্রহণে কোন দোষ দেখেন না। এটি বিশেষ করে সেসব শিক্ষকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যাদের অর্থোপার্জনের অন্য কোন মাধ্যম নেই। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মুবার্রাদ (মৃ. ২৮৫ হি.) ফী গ্রহণ করতেন।[45] একজন ছাত্রকে একটি হাদীছের জন্য তিন ‘দীনার’ দিতে হ’ত।[46] আরেকজন হাদীছ প্রতি দুই ‘দানাক্ব’ দিয়েছিল।[47] এমনিভাবে আরেকজন হাদীছ প্রতি মাত্র এক ‘দানাক্ব’ দিয়েছিল।[48] ইবরাহীম হারবী নিজে টিউশন ফী নিতেন না। কিন্তু ছাত্রদেরকে একজন শিক্ষকের নিকট যাওয়ার পরামর্শ দিতেন, যিনি দরসের বিনিময়ে ফী গ্রহণ করতেন।[49]

সেই ঘটনা ইতিমধ্যে বলা হয়ে গেছে, যেখানে একজন ছাত্রকে টিউশন ফী দিতে না পারায় ক্লাস থেকে বেরিয়ে যেতে হয়েছিল।[50] ইবনুল আরাবীর (মৃ. ২৩০ হি.) ব্যাপারে বর্ণিত আছে যে, তিনি প্রতি মাসে টিউশন ফী হ’তে এক হাযার দিরহাম আয় করতেন।[51] মুহাম্মাদ বিন জা‘ফর (মৃ. ৩৪৮ হি.) নিজেই বর্ণনা করেছেন, তিনি কুরআন শিখিয়ে তিন লক্ষ দীনার আয় করেছিলেন।[52]

ছাত্রবৃন্দ ও তাদের আর্থিক অবস্থা :

এটা নিশ্চিত যে, সব ছাত্র ধনী পরিবার থেকে উঠে আসেনি। যেমন ইয়াহ্ইয়া ইবনু মাঈন উত্তরাধিকার সূত্রে দশ লক্ষ দিরহামেরও বেশি পেয়েছিলেন। তার সমগ্র অর্থ তিনি হাদীছ চর্চায় ব্যয় করেছিলেন।[53] এমন অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে, যেখানে দেখা যায়, ইলম অর্জনে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করা হয়েছে।[54] অর্থের বিবেচনায় অন্য অনেকে কম সৌভাগ্যবান ছিলেন। যেমন জনৈক ছাত্র যখন ইসফারাঈন ফিরে আসল, তখন তার নিকট মাত্র এক দিরহাম অবশিষ্ট ছিল। অতঃপর শহরের একজন রুটি প্রস্ত্ততকারকের সাথে তার দেখা হয়, যে কি-না তাকে মাত্র এক দিরহামের বিনিময়ে পুরো মাস ধরে প্রতিদিন দুই টুকরো করে রুটি দিতে রাযী হয়েছিল।[55] ইবরাহীম হারবীর ব্যাপারে কথিত আছে যে, তিনি মাত্র আড়াই দিরহাম দিয়ে দীর্ঘ এক মাস কাটিয়েছিলেন।[56]

সচ্ছল শিক্ষকরা গরীব ছাত্রদের সহযোগিতা করতেন। আবু হানীফা (রহঃ) ছিলেন একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী এবং তিনি কেবল তার নিয়মিত ছাত্রদের প্রতিই নয়; বরং অন্যদের প্রতিও উদারহস্ত ছিলেন।[57] তিনি একবার একজন ছাত্রকে দরিদ্র মনে করে ক্লাস শেষে অপেক্ষা করতে বললেন। ছাত্রটি তাই করল এবং সে খুব অবাক হ’ল যখন দেখল আবু হানীফা (রহঃ) তার সামনে ১০০০ দিরহাম পেশ করছেন। অবশ্য ছেলেটি তা গ্রহণ করেনি।[58] আবু ইউসুফের পিতা ছিলেন অত্যন্ত গরীব এবং তিনি তার পুত্রের পড়াশোনার ঘোর বিরোধী ছিলেন। ফলে আবু ইউসুফ আবু হানীফা (রহঃ)-এর নিকট থেকে নিয়মিত ভাতা লাভ করতেন।[59] এমন অনেক শিক্ষক ছিলেন, যারা তাদের দরসে উপস্থিত প্রত্যেকটি ছাত্রকে তাদের সাথে খাবার গ্রহণের জন্য পীড়াপীড়ি করতেন।[60] কতিপয় শায়খের কথা ইতিমধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁরা ছাত্রদেরকে ভাতা দিতেন বা অন্য উপায়ে সহযোগিতা করতেন। এসব শায়খের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হ’লেন, মুহাম্মাদ ইবনু হিববান আল-বুসতী (মৃ. ৩৫৪ হি.) এবং শরীফ রাযী (মৃ. ৪০৬ হি.)। আবু হামিদ ইসফারাঈনী (মৃ. ৪০৬ হি.) প্রতি মাসে ছাত্রদের মাঝে ১৬০ দীনার করে বিতরণ করতেন।[61]

মন্ত্রী ইয়াকূব বিন কিল্লিস, যিনি ফাতেমীয় খলীফা আযীয বিল্লাহর অনুমতিক্রমে ৩৭৮ হিজরীতে আযহার মসজিদে ছাত্রদের জন্য একটি ভবন নির্মাণ করেছিলেন। তিনি তাদের জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ভাতারও ব্যবস্থা করেছিলেন।[62] এছাড়াও অনেক জনহিতৈষী ছাত্রদেরকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতেন।[63] একজন ধনী ব্যক্তির ব্যাপারে শোনা যায়, তিনি ছাত্রদের জন্য বছরে ৪০,০০০ থেকে ৫০,০০০ দিরহাম ব্যয় করতেন।[64] আরেকজন ধনী ব্যক্তি সাহিত্যের ছাত্রদের জন্য তার সম্পত্তির অংশবিশেষ ওয়াকফ করে দিয়েছিলেন।[65] একজন ধনী ব্যক্তির ব্যাপারে বর্ণিত আছে, তিনি একবার একজন শায়খের নিকট গিয়ে তাকে ১০০ দীনার পেশ করলেন, কিন্তু তিনি তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালেন। তখন লোকটি তাকে উক্ত অর্থ ছাত্রদের মাঝে বিতরণ করে দেয়ার অনুরোধ করলেন। শায়খ তখন লোকটিকে উক্ত অর্থ মেঝের উপর রাখতে বললেন এবং সেখান থেকে ছাত্রদেরকে প্রয়োজন মতো গ্রহণ করতে বললেন।[66]

কখনো কখনো সরকারের পক্ষ থেকে অনুদান আসত। যেমন ‘ইলমুল ক্বিরাআহ’ (আবৃত্তিবিদ্যা)-এর ছাত্ররা একবার অনুদান লাভ করেছিল। তবে এটা সম্ভবত একবারই দেয়া হয়েছিল। কারণ একজন লোক সেসময় উক্ত অর্থ গ্রহণে আপত্তি জানিয়েছিল। যদিও লোকটি পরে সত্যি সত্যি অর্থাভাবে পড়লে কোন রাষ্ট্রীয় সহায়তা পায়নি।[67] হারূনুর রশীদ সম্পর্কেও বলা হয়, তিনি মুহাম্মাদ বিন হাসান শায়বানীর নিকট ছাত্রদের মাঝে বিতরণ করার জন্য অর্থ পাঠিয়েছিলেন।[68] মন্ত্রী ইবনুল ফুরাত ছাত্রদের মাঝে উদারহস্তে দান করার জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন।[69]

অনেক সময় ছাত্ররা একে অপরের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিত। বেশ কিছু দৃষ্টান্ত রয়েছে, যেখানে দেখা যায়, ধনী ছাত্ররা তাদের গরীব সহপাঠীদের দেখাশোনা করেছে।[70] কথিত আছে, একজন ছাত্র উস্তাযের সামনেই ১০,০০০ দিরহাম বিলিয়ে দিয়েছিল।[71] এমনিভাবে একজন মেধাবী ছাত্রের জন্য অন্য ছাত্ররা মিলে মাসিক ১০০ দিরহাম ভাতার ব্যবস্থা করেছিল।[72] আবু ইসহাক রিফাঈও (মৃ. ৪১১ হি.) তার ছাত্রবন্ধুদের নিকট থেকে আর্থিক সহযোগিতা লাভ করেছিলেন।[73]

সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী থেকে ছাত্ররা আসত। তাদের কেউ কেউ ছিল ধনীর দুলাল, আবার কেউবা ছিল দরিদ্র পিতা-মাতার সন্তান। যাহোক অধিকাংশই ছিল কারিগর ও ব্যবসায়ীর মতো পেশাজীবির সন্তান। ইবনু খালদূনের বিবৃতিতে এ কথার প্রমাণ মেলে। যেমন তিনি বলেন, জ্ঞানবিজ্ঞানে আরবদের তেমন কোন অংশগ্রহণ ছিল না। কারণ একদিকে তারা ক্ষমতাদ্বন্দ্বে লিপ্ত ছিল, অপরদিকে ইলমের সাথে সম্পর্কিত পেশা ও শিল্পের প্রতি তাদের কোন আগ্রহ ছিল না।[74]

অনেক সময় ছাত্ররা অন্যের দোকানে কাজ করত[75] অথবা ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করত।[76] আবু আহমাদ বিন আলী বিন ফাঙ্গয়ী (মৃ. ৪২৮ হি.) এমনই একজন প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি ব্যবসায়িক কাজে নিশাপুরে গিয়ে হাদীছও অধ্যয়ন করেছিলেন। পরবর্তীতে নিশাপুরে স্থায়ী হওয়ার আগে তিনি খোরাসান, হেরাত এবং তুরান সফর করেছিলেন। তিনি নিশাপুরের খারকুশী মাদ্রাসায় দরসও দিয়েছেন।[77] বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করতে গিয়ে ছাত্রদেরকে দূরদেশে পাড়ি জমাতে হ’ত। সেজন্য তাদের পক্ষে ‘রিহলা’ (ইলম অন্বেষণের জন্য সফর) সহজ ছিল।

পেশা হিসাবে শিক্ষকতা :

প্রথম যুগে যখন বেতনভুক্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে স্থায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি, সে সময়ের ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থায় পেশাদার শিক্ষকের সংখ্যা ছিল খুবই কম, আদৌ যদি থেকে থাকে। প্রায় প্রত্যেকটি শিক্ষক পাঠদান ছাড়াও কোন না কোন পেশার সাথে যুক্ত ছিলেন। আর তাই তারা পাঠদানের জন্য অবসর সময়কে বেছে নিতেন। সে সময় যারা নিজেদেরকে দ্বীনী ইলম চর্চায় নিয়োজিত রেখেছিলেন, সংখ্যার বিচারে তাদের অধিকাংশই ছিল ব্যবসায়ী।[78] একটি

গবেষণা মতে, হিজরী তৃতীয় ও চতুর্থ শতকে শায়খদের প্রায় ৭৫ শতাংশ ছিলেন হয় ব্যবসায়ী না হয় কারিগর।[79] এ কারণে তারা আর্থিকভাবে সচ্ছল ছিলেন।

তবে কতিপয় শিক্ষক যে টিউশন ফী গ্রহণ করতেন, তা থেকে প্রমাণিত হয়, তাদের কারো কারো নিকট পাঠদান ছিল উপার্জনের একটি মাধ্যম।[80] কখনো কখনো রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তার পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা আসত, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা আসত ব্যক্তিগত উদ্যোগে। সরকারী অনুদানব্যবস্থা ছিল বলে মনে হয় না। কতিপয় শায়খের ব্যাপারে জানা যায়, তারা রাষ্ট্রীয় ভাতা পেতেন।[81] তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হ’লেন, হাসান বছরী (মৃ. ১১০ হি.)[82] এবং হানাফী ফক্বীহ আবু ইউসুফ[83] ও আলী বিন সাঈদ ইসতাখরী (মৃ. ৪০৪ হি.) খলীফা ক্বাদিরের (৩৮১-৪২২ হি.) নিকট থেকে ভাতা পেয়েছিলেন।[84] যাজ্জাজ (মৃ. ৩১১ হি.) একই সাথে তিনটি রাষ্ট্রীয় ভাতা লাভ করেছিলেন।[85] অনেক সময় শায়খগণ রাষ্ট্রীয় ভাতা প্রত্যাখ্যান করতেন।[86] জীবিকা নির্বাহের জন্য তারা সাধারণত রাষ্ট্রীয় ভাতা বা দাতা ব্যক্তিদের উপর নির্ভর না করে কোন একটা কাজ বেছে নিতেন।[87]

মূল (ইংরেজী): মুনীরুদ্দীন আহমাদ

অনুবাদ : আসাদুল্লাহ আল-গালিব

শিক্ষার্থী, ইংরেজী বিভাগ, ২য় বর্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

[1]. তারীখু বাগদাদ, ২/২৬৬-৭; ১১/১৭৮; ১২/২১০; ১৩/৯, ৩৫৬, ৪৭১।

[2]. প্রাগুক্ত, ১১/১৭৮।

[3]. প্রাগুক্ত, ৫/৬৭।

[4]. প্রাগুক্ত, ১০/৩৬৭।

[5]. ইয়াকূত, মু‘জামুল উদাবা, ১৭/১৭৭।

[6]. তারীখু বাগদাদ ৩/১৮৩; ৭/৩৫৩; ১০/৬৮।

[7]. খত্বীব বাগদাদী, আল-কিফায়াহ, পৃ. ৬৬, ৬৮।

[8]. তারীখু বাগদাদ ৮/২৩৩।

[9]. প্রাগুক্ত, ৪/৪১-৪২; ৫/৪৬৯; ১১/১৭৮; ১২/৯৫।

[10]. প্রাগুক্ত, ৩/২৩০; ৮/৩২৩।

[11]. প্রাগুক্ত, ১০/১৪৫।

[12]. প্রাগুক্ত, ১১/৪৫৬-৭; ১৩/৪৭১।

[13]. প্রাগুক্ত, ১৩/৪৭১।

[14]. প্রাগুক্ত।

[15]. প্রাগুক্ত, ৬/৩৪০; ৯/১১।

[16]. প্রাগুক্ত, ৬/৩৪০।

[17]. প্রাগুক্ত, ১২/৪৫৮।

[18]. প্রাগুক্ত, ১৩/৩৩৬।

[19]. al-Jawzi, al-Muntazam. Xn. 73 (7-12).

[20]. তারীখু বাগদাদ ১৩/১১৬।

[21]. প্রাগুক্ত, ১০/৩৭২।

[22]. প্রাগুক্ত, ১৪/২৭৪।

[23]. প্রাগুক্ত, ১০/১৬৬।

[24]. See: Munir-ud-Din Ahmed, "The Institution of al-Mudhakara," ZDGM. XVII. Deutscher Orientalistentag vom 21. bis 27. Juli 1968 in Würzburg. Supplementa I: Vorträge Teil 2. 1969. 595-603.

[25]. তারীখু বাগদাদ ১/৩৫৪; ৮/৯৪।

[26]. ইবনুছ ছালাহ, উলূমুল হাদীছ (আলেপ্পো, ১৩৫০হি./১৯৩১খ্রি.) পৃ. ৭৫।

[27]. তারীখু বাগদাদ ৪/৩৪৩; ৫/৪১৭।

[28]. প্রাগুক্ত, ৬/৩১০।

[29]. প্রাগুক্ত, ১৪/১৮২।

[30]. প্রাগুক্ত, ৬/১৭৩; ৮/৯২, ৯৪।

[31]. প্রাগুক্ত, ৭/৬৭।

[32]. প্রাগুক্ত, ২/১৬৯।

[33]. প্রাগুক্ত, ১২/৩০৮; বুরহানুদ্দীন যারনূজী, তা‘লীমুল মুতা‘আল্লিমপৃ. ১৮, ১৯।

[34]. তারীখু বাগদাদ ৮/৩২।

[35]. তাইফুর, বাগদাদ, পৃ. ৭৫, দেখুন: আহমাদ আমীন, যুহাল ইসলাম (কায়রো : ১৯৫৬), পৃ. ৫৭-৫৮।

[36]. আবু হামেদ গাযালী, ইহইয়াউ ‘উলূমিদ্দীন. (কায়রো) ১/৪২।

[37]. তারীখু বাগদাদ ৫/২০৮-৯।

[38]. প্রাগুক্ত, ১২/১০৪-৫; ১৯৭-৮।

[39]. প্রাগুক্ত, ৬/৩৫১।

[40]. আরো দেখুন: মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম গুনাইমা, তারীখুল জামি‘আতিল ইসলামিয়াতিল কুবরা (Historia de los grandes universidades). (Tetuan, 1953).পৃ. ২০৪; মাকদেসী, দি রাইজ অব কলেজেস, পৃ. ১২৮।

[41]. তারীখু বাগদাদ ৯/৪১৯।

[42]. প্রাগুক্ত, ১৩/১৩৩।

[43]. প্রাগুক্ত, ৭/৪০৮।

[44]. প্রাগুক্ত, ৪/১৯১।

[45]. ইয়াকূত, মু‘জামুল উদাবা, ১/১৩১।

[46]. তারীখু বাগদাদ ১৪/২৭৮।

[47]. প্রাগুক্ত, ১২/৮৯-৯০।

[48]. প্রাগুক্ত, ৯/৪৩৬।

[49]. প্রাগুক্ত, ৮/২১৯।

[50]. প্রাগুক্ত, ১২/৮৯-৯০।

[51]. মু‘জামুল উদাবা, ১৮/১৯১।

[52]. হামাদানী, আত-তাকমিলাহ, ১৭৫।

[53]. ইবনু খাল্লিকান, অফায়াত, ৫/১৯০-৯৩।

[54]. তারীখু বাগদাদ, ২/১৭৩; ৭/২২২; ৮/৩১৪; ৪২১-২২।

[55]. প্রাগুক্ত, ৪/৩৭৫।

[56]. প্রাগুক্ত, ৬/৩১।

[57]. প্রাগুক্ত, ১৩/৩৬০।

[58]. প্রাগুক্ত, ১৩/৩৬১।

[59]. প্রাগুক্ত, ১৪/২৪৪।

[60]. প্রাগুক্ত, ৮/১৯৪; ১০/৩০৮-৯।

[61]. ইবনুল জাওযী, আল-মুনতাযাম, ৭/২৭৭।

[62]. মাক্বরীযী, আল-খিতাত, ৪/৪৯।

[63]. তারীখু বাগদাদ, ১২/২৭৮।

[64]. প্রাগুক্ত, ১১/২০।

[65]. প্রাগুক্ত, ১১, ৩৬৭।

[66]. প্রাগুক্ত, ১১/৪৪।

[67]. প্রাগুক্ত।

[68]. প্রাগুক্ত, ২/১৭৩; তানূখী, নিশওয়ারুল মুহাযারা, ৫/১৮৭।

[69]. মিসকাওয়াইহ, তাজারিবুল উমাম, ১/১২০; কিতাবুল উয়ূন ওয়াল হাদায়েক্ব ফী আখবারিল হাক্বায়েক্ব, ওমর সাঈদী কর্তৃক সম্পাদিত (দামেশক, ১৯৭২-৩)।

[70]. তারীখু বাগদাদ ২/৭৪-৫।

[71]. প্রাগুক্ত, ৬/৪।

[72]. তানূখী, নিশওয়ারুল মুহাযারা, ২/২৭৫-৬।

[73]. ইয়াকূত, মু‘জামুল উদাবা, ১/১৫৫।

[74]. হাজী খলীফা, কাশফুয যুনূন (ইস্তাম্বুল, ১৩৬০-২হি./১৯৪১-২খ্রি.)।

[75]. তারীখু বাগদাদ, ৯/৪৫৬; ১৩/৪২৮।

[76]. প্রাগুক্ত, ১১/৩১২; ১২/৪৮৩।

[77]. Sarifini, Muntakhab, fol.24 b - 25 a.

[78]. S.D. Goetein, Studies in Islamic History and Institutions (Leiden, 1966), p.219.

[79]. Hayyim J. Cohn, Peraqim mi-tok: Motsa am ha kalkali n-farnaso-theham shel hokme-ha-halakah we-anshe-ha-masovah bithequfath haqlasith shel ha-Islam (Chapters from: The economic background and the secular occupation of Muslim jurisprudents and traditionists in classical period of Islam). (Jerusalem, 1962).

[80]. তারীখু বাগদাদ ৬/৯০-২; ৭/২১৯; ৯/৪৩৬; ১১/৩৮৬; ১২/১৫৬; ১৪/২৭৮।

[81]. প্রাগুক্ত, ৬/২১০; ৭/১৬০, ২৫৮; ১২/৪০৬; ১৩/২৮৮।

[82]. তানূখী, নিশওয়ারুল মুহাযারা ২/৫২-৩।

[83]. প্রাগুক্ত, ১/২৫৩।

[84]. ইবনুল জাওযী, আল-মুনতাযাম ৭/২৬৮।

[85]. ইয়াকূত, মু‘জামুল উদাবা, ১৩/২৫৬।

[86]. তারীখু বাগদাদ, ১/৩৫২; ৬/৩২-৩; ৭/২৫৮; ৮/৩৫২, ৪২৫; ১২/১৮৮-৯; ৩১৬; ১৩/৩৪০।

[87]. প্রাগুক্ত, ৩/৪-৫; ৬২; ৯২; ১৪৩; ১৬০; ২৫০-১; ৫/১৫; ৭/২৮৪; ৯/৪৪৪; ১১/৩৬১; ১৩/১৯; ৩২৫।






এক হাতে মুছাফাহা : একটি তাত্ত্বিক পর্যালোচনা - তানযীলুর রহমান - শিক্ষক, বাউটিয়া দাখিল মাদ্রাসা, রাজশাহী
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ)-এর উপর নির্যাতন - আহমাদুল্লাহ - সৈয়দপুর, নীলফামারী
চুল ও দাড়িতে কালো খেযাব ব্যবহারের বিধান - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
ইসলামে শিষ্টাচারের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
গীবত থেকে বাঁচার উপায় - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
আল্লাহর জন্য কাউকে ভালবাসা (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
ইসলামে পোশাক-পরিচ্ছদ : গুরুত্ব ও তাৎপর্য - মুহাম্মাদ আবু তাহের, পরিচালক, কিউসেট ইনস্টিটিউট, সিলেট।
আশূরায়ে মুহাররম - আত-তাহরীক ডেস্ক
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত পরিচিতি (৩য় কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব
আলেমগণের মধ্যে মতভেদের কারণ (শেষ কিস্তি) - আব্দুল আলীম বিন কাওছার
মানব জাতির প্রতি ফেরেশতাদের দো‘আ ও অভিশাপ - মুহাম্মাদ আবু তাহের, পরিচালক, কিউসেট ইনস্টিটিউট, সিলেট।
কিয়ামত আসন্ন ও অবশ্যম্ভাবী - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
আরও
আরও
.