বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র ৫০ দিনের মাথায় ২৫শে ফেব্রুয়ারী’০৯-এর শুভ্র সকালে বিডিআর সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনের আনন্দঘন পরিবেশে শীর্ষস্থানীয় সেনা ও বিডিআর কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে হঠাৎ এ কি ঘটল? কই প্রথমদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন দরবার হলে বিডিআর সপ্তাহের উদ্বোধন করেন, তখন তো তাদের দাবী-দাওয়ার বিষয়ে টুঁ শব্দটি শোনা যায়নি। তাহ’লে পরের দিন কোনরূপ উস্কানী ছাড়াই হঠাৎ কেন গুলীর শব্দ? বক্তৃতা শেষ হ’তে না হ’তেই কেন লুটিয়ে পড়ল বিডিআর মহাপরিচালকের রক্তাক্ত দেহ? নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও গুলী এখানে কিভাবে এল? তা-ও একটা দু’টা নয়, ঝাঁকে ঝাঁকে গুলী, আর পাখির মত পড়তে থাকল একের পর এক নিরস্ত্র সেনা কর্মকর্তাদের লাশ। শুধু মেরেই ক্ষান্ত নয়, লাশ টুকরা টুকরা করা, আগুন দিয়ে পোড়ানো, একাধিক বড় বড় গর্ত খুঁড়ে গণকবর দেওয়া, কর্মকর্তাদের অফিস ও বাড়ীতে গিয়ে লুটপাট ও তছনছ করা, তাদের গাড়ীগুলো জ্বালিয়ে দেওয়া, মহাপরিচালকের স্ত্রী নাজনীনকে তার কক্ষে হত্যা করে সিঁড়ি দিয়ে তার রক্তাক্ত লাশ নিষ্ঠুরভাবে টেনে এনে গণকবরে পুঁতে দেওয়া ইত্যাকার লোমহর্ষক ও পৈশাচিক কর্মকান্ড ৩৩ ঘন্টা ধরে একটানা চলল। অথচ খোদ ঢাকাবাসীই কিছু জানলো না। হ্যাঁ জানলো ঝিকাতলার হাড়-হাড্ডিসার বৃদ্ধ রিকশাওয়ালা, যে প্রচন্ড হ্যাঁপানীতে প্রাণ ওষ্ঠাগত অবস্থায় নিজ রিকশা নিয়ে যাচ্ছিল দোকানে ঔষধ আনতে। বিডিআর তাকে হত্যা করে রক্তের নেশা মিটালো। জানলো আজিমপুরের কোমলমতি বালক যে স্কুলে যাচ্ছিল বাপ-মায়ের ভবিষ্যৎ আশার আলো হিসাবে। বিডিআরের গুলী তার আলো নিভিয়ে দিল। জানলো গ্রাম থেকে আসা সেনাকর্মকর্তার অতিথি, বিডিআরের গুলী যার আতিথ্যের স্বাদ চিরতরে মিটিয়ে দিল। বিডিআরের বিভিন্ন দাবীর সমর্থনে কিছু লোক মিছিল করল পিলখানার সামনের রাস্তায়। কিছু পত্রিকা ও মিডিয়া চ্যানেলে তাদের দাবী-দাওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হ’ল। অথচ ভিতরের নারকীয় ঘটনা জানলো না কেউ। কিন্তু কেন? এখানেই জমেছে একরাশ প্রশ্ন..।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেত্রী উভয়েই[1] বলেছেন এর পিছনে রয়েছে বহিঃশক্তির রাষ্ট্রবিরোধী গভীর ষড়যন্ত্র। সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সেনাপ্রধান ও বর্তমানে মহাজোট নেতা জেনারেল এরশাদও একই কথা বলেছেন। যদি তাই হয়, তাহ’লে তারা কেন শুরুতেই হস্তক্ষেপ করলেন না? চেইন অব কম্যান্ড ভেঙ্গে যেখানে একবার গুলী চলেছে, খোদ মহাপরিচালক নিহত হয়েছেন, যেখানে বৃষ্টির মত গুলী চলছে, সেখানে দীর্ঘমেয়াদী আলোচনার কোন সুযোগ থাকে কি? পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল নিহত হওয়ার আগে অবস্থা আঁচ করে প্রথমে ফোন করেছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে। ফোন করেছিলেন আর্মি হেড কোয়ার্টারে। উদ্ধার পাওয়া সেনা কর্মকর্তা মেজর যায়েদী সেকথার সাক্ষ্য দিয়েছেন। সকলেই তখন বলেছিলেন, আমরা আসছি। কিন্তু কেউ আসেননি। সেনাবাহিনী ও বিডিআর বাহিনীর ভিতরকার দীর্ঘ দিনের ক্ষোভ ও গুমোট অবস্থা গোয়েন্দা সংস্থা, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারোরই অজানা থাকার কথা নয়। অথচ তারা কেউই তাৎক্ষণিক কোন ভূমিকা গ্রহণে তৎপর হননি। অতএব তাদের কারুরই এখানে কৈফিয়ত দেওয়ার সুযোগ নেই। এখন তো এটা নিশ্চিত হয়ে গেছে যে, প্রশাসনের ত্বরিৎ পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণেই সেনা কম্যান্ডের চৌকস ও ফ্রন্ট লাইন বিশেষজ্ঞ এইসব সেনা কর্মকর্তাদের জীবন দিতে হয়েছে নিতান্ত অসহায় ভাবে। সেনা অ্যাকশনের অনুমতি দিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পরের দিন বিকালে। এটা যদি তিনি আগের দিন ঘটনার পর পরই দিতেন এবং কেবল সাঁজোয়া গাড়ীর চলাচল ও সেনা হেলিকপ্টার উপরে চক্কর দিত তাহলেই ভয়ে বিডিআর বাহিনী আত্মসমর্পণ করত। সাবেক সেক্টর কমান্ডার লেঃ জেনারেল মীর শওকত আলীর মতে ১৫ মিনিটেই সব ঠান্ডা হয়ে যেত। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে কারা তখন বাধা দিয়েছিল বন্ধুর বেশে, তাদের চিহ্নিত করা দরকার।

ঢাকাস্থ বৃটিশ হাইকমিশনার বলেছেন, ‘প্রতিবেশীদের সাথে সহযোগিতা না থাকলে কোন রাষ্ট্রই নিরাপদ নয়’। এ কথার ইঙ্গিত কি ভারতের দিকে নয়? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সংকট মুকাবিলায় সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। কে না জানে মার্কিন-ভারত ও ইস্রাঈল এখন একই লবীর অন্তর্ভুক্ত। আর প্রবাদ আছে যে, আমেরিকা যাদের বন্ধু হয়, তাদের আর কোন শত্রুর প্রয়োজন হয় না। তারা বাংলাদেশকে তাদের স্বার্থের বলি হিসাবে ব্যবহার করতে চায়। ভারত বাংলাদেশে পিস মিশনের নামে তাদের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাতে চাচ্ছে। তারা প্রতিদিন সীমান্তে আমাদের নিরীহ মানুষগুলিকে আগের মতই হত্যা করে চলেছে। আর ইতিমধ্যেই তারা সীমান্তে ভারী অস্ত্রশস্ত্র জমা করেছে, সেনাশক্তি বাড়িয়েছে এবং ব্ল্যাক ক্যাট অর্থাৎ কালো বিড়ালের মুখোশধারী ভয়ংকর কম্যান্ডো বাহিনী মোতায়েন করেছে। এক্ষণে যদি কোন দুর্মুখ একথা বলেন যে, বিগত আওয়ামী সরকারের সময় ২০০১ সালের ১৭-১৮ এপ্রিলে কুড়িগ্রামের রৌমারি সীমান্তে এবং সিলেটের পাদুয়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ-দের সংঘবদ্ধ চোরা হামলার মোকাবিলায় বিডিআরের দুঃসাহসিক অভিযানে বহু লাশ ফেলে পালিয়ে যাওয়া ভারতীয় সেনাবাহিনী বর্তমান সরকারের আমলে পিলখানা ট্রাজেডীর মাধ্যমে তার প্রতিশোধ নিল, তাহ’লে সেকথার জওয়াব কি দেওয়া যাবে? যে কথার ইঙ্গিত ইতিমধ্যে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বি-রমনের গত ২৭শে ফেব্রুয়ারীর লেখায় পাওয়া গেছে।

এদেশের সাথে কাদের স্বার্থ বেশী জড়িত? ’৪৭-এর স্বাধীনতার সময় নেহেরু বলেছিলেন, অনধিক ২০ বছরের মধ্যেই পাকিস্তান পুনরায় ভারতভুক্ত হবে। ২৪ বছরের মাথায় পাকিস্তান ভেঙ্গে দু’টুকরা হয়েছে। এখন দুর্বল দুই টুকরাকে গিলে ফেলার পালা। দুর্বলকে দুর্বলতর করার জন্য তারা বাংলাদেশের উজানে সকল নদীতে বাঁধ দিয়েছে। এ দেশকে তারা মরুভূমি বানিয়ে ফেলার প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন করেছে। চোরাচালান ও পাহাড় প্রমাণ অসম বাণিজ্যের মাধ্যমে দেশের আর্থিক মেরুদন্ড গুঁড়িয়ে দেওয়ার চক্রান্ত সফল হতে চলেছে। বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ দক্ষিণ তালপট্টি তারা দখল করে রেখেছে। ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির মাধ্যমে নিজেরা বেরুবাড়ী নিলেও দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা আজও তারা বাংলাদেশের জন্য উন্মুক্ত করেনি।[2] সীমান্তে দৈনিক তারা গড়ে একজন করে নিরীহ বাংলাদেশীকে হত্যা করছে। তারা সীমান্তে ফেন্সিডিল কারখানা তৈরী করে এদেশে সাপ্লাই দিয়ে এদেশের তরুণ সমাজকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। আর অতি সাম্প্রতিক তথ্য মতে ভারত ও আমেরিকা একযোগে কাজ করছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে টুকরো টুকরো করে ২০২০ সালের মধ্যে ইউনাইটেড স্টেট্স অব ইন্ডিয়া (USI) গঠন করার জন্য। ইসলামী দলগুলোর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করাও তাদের অন্যতম লক্ষ্য। এটা জানা কথা যে, বাংলাদেশের ইসলামী শক্তিগুলিই এদেশের স্বাধীনতার অতন্দ্র প্রহরী ও জানবায অকুতোভয় শক্তি। তাই বাংলাদেশকে জঙ্গী রাষ্ট্র বানাবার জন্য বহিঃশক্তির মদদে এদেশে সৃষ্টি করা হয়েছে তথাকথিত জঙ্গী দলসমূহ। তাদেরই প্রত্যক্ষ মদদে সৃষ্টি হয়েছিল খুলনা-যশোর অঞ্চলে কথিত ‘স্বাধীন বঙ্গভূমি’ আন্দোলন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে ‘স্বাধীন জুমল্যান্ড’ আন্দোলন। যাদের সশস্ত্র শাখা তথাকথিত ‘শান্তিবাহিনী’র হাতে প্রায় ৩০ হাযার মানুষ নিহত হয়েছে। বিচার কিছুই হয়নি। এদেরই সরাসরি প্রশিক্ষণে স্বাধীনতার পর দেশে গড়ে তোলা হয় ‘রক্ষীবাহিনী’। যাদের হাতে খুন হয় প্রায় ৪২ হাযার মানুষ। কোন বিচার হয়নি। সেনাবাহিনী সদস্যগণের অধিকাংশ ধর্মভীরু ও দেশপ্রেমিক। তাই আমাদের সেনাবাহিনীকে তারা কখনোই পসন্দ করেনি। গত ১লা ফেব্রুয়ারী কলিকাতার সুভাষ ইনস্টিটিউটে এদের বশংবদ বাংলাদেশের কথিত হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের একটি অঙ্গ সংস্থার ৪র্থ বার্ষিক সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে ইসলাম ও সেনাবাহিনীকে উৎখাত করার জন্য ভারত সহ আন্তর্জাতিক শক্তি সমূহের সাহায্য চাওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশে বিদেশীদের নগদ স্বার্থ কি? প্রথমে ভারতের স্বার্থ হ’ল বাংলাদেশের উপর দিয়ে ট্রেন চালানো ও এদেশকে তাদের ব্যবসায়ের রুট হিসাবে ব্যবহার করা। মার্কিনীদের স্বার্থ হ’ল চট্রগ্রামে সামরিক ঘঁাটি করা ও চীনকে ভয় দেখানো। অথচ দু’টিই বাংলাদেশের স্বার্থের প্রতিকূলে। বাংলাদেশের কোন সরকারই এযাবত ভারত বা মার্কিনের এসব অযৌক্তিক দাবী মেনে নেয়নি। আর তাই বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য ও তাদের দাবীর সামনে মাথা নত করানোর জন্য দেশের প্রধানতম শক্তি সুশৃংখল সেনাবাহিনী ও বিডিআর বাহিনীকে দুর্বল করাই ছিল তাদের লক্ষ্য। দেশের ভিতরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে মার্কিন-ভারতের চরেরা কাজ করছে। তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হ’ল পিলখানা ট্রাজেডীর মাত্র চার ঘন্টার মাথায় দিল্লী টিভির বেলা ২ টার সংবাদে ঢাকায় বিডিআর বিদ্রোহে মেজর জেনারেল শাকিল সহ ১৫ জন সেনা কর্মকর্তার নিহত হবার খবর নিশ্চিত করে বলা। অথচ বাংলাদেশের কোন মিডিয়া এ সম্পর্কে তখন কোন তথ্য দিতে পারেনি।

এযাবত পাওয়া তথ্য মতে মাত্র ৪০ জন সেনা কর্মকর্তা জীবিত ফিরে এসেছেন। নিহত ও নিখেঁাজ হয়েছেন বাকীরা। সকল মহল থেকে হত্যাকারী বিডিআর সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী উঠেছে। আমরাও সে দাবী করছি। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, উপস্থিত জওয়ানদের মাত্র কিছু সংখ্যক বিপথগামীদের হাতে অথবা মুখোশধারী বহিরাগতদের হাতে এই ট্রাজেডী ঘটেছে। অনেক বিডিআর জওয়ান সেনা কর্মকর্তাদের জীবন বাঁচিয়েছেন। অতএব গুটি কয়েক দুষ্কৃতিকারীর জন্য ৭০ হাযারের বিশাল বাহিনীকে সেনাবাহিনীর শত্রু বানানো যাবে না। একজন প্রতিমন্ত্রী বলেছেন যে, বিপথগামীদের মধ্যে আগেই কোটি কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছিল। তাছাড়া সেখানে এমন কিছু অস্ত্র ও দূরবীন পাওয়া গেছে, যা বিডিআরের নয়। অতএব ঢালাওভাবে সকল বিডিআর জওয়ানকে দায়ী করা যাবে না। বরং এ বর্বরতার নেপথ্য শক্তি ও মূল ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করতে হবে ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

দলবাজি রাজনীতির কারণে বিগত ৬১ বছরের ইতিহাসে বড় কোন ট্রাজেডীতে কোন তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আলোর মুখ দেখেনি। এবারও যেন তা না হয়, সেটা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। সরকার পাঁচ বছরের জন্য। কিন্তু সেনাবাহিনী স্থায়ী। এবারের এই ট্রাজেডীর কারণে ১৯৭৫-এর ৭ই নভেম্বরের ন্যায় সেনাবাহিনী আবারও অর্জন করেছে জনগণের অকুণ্ঠ ভালোবাসা। সেনা ও জনতার এই অটুট ভালোবাসা কুচক্রীদের সব চক্রান্ত নস্যাৎ করার জন্য যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ।

বিগত দিনে দেশের অন্তত দু’জন জাঁদরেল অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নেতা বলেছিলেন, বাংলাদেশে কোন সেনাবাহিনীর প্রয়োজন নেই। কেননা ভারত একটি বিরাট দেশ। তাদের সাথে যুদ্ধ করার ক্ষমতা আমাদের নেই’। এরা এখনও প্রকাশ্যে রাজনীতি করেন ও বড় দেশপ্রেমিক বলে দাবী করেন। এদের চিনতে সরকারের ভুল করা উচিত নয়। আমরা সরকারকে বলব, এদেশের স্বাধীনতার মূল চেতনা হল ‘ইসলাম’। অধিকাংশ মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল হবার কারণেই পূর্ববঙ্গ পাকিস্তানের সাথে যোগ দিয়ে ভারত থেকে স্বাধীন হয়েছিল। সংখ্যাগরিষ্ট মুসলিম প্রজাদের রক্ত শোষণকারী অত্যাচারী জমিদাররা সেদিন তাদের জমিদারী হারাবার ভয়ে পূর্ববাংলার স্বাধীনতা চাননি। এমনকি তারা বৃটিশের প্রস্তাব অনুযায়ী ঢাকাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠারও বিরোধিতা করেছিলেন। যাতে পূর্ববঙ্গের লোকেরা শিক্ষিত ও অধিকার সচেতন না হ’তে পারে। তারা সেদিন বঙ্গভঙ্গ রদের আন্দোলন করেছিলেন। বাংলা মায়ের অঙ্গ ছেদনের ধুয়া তুলে তারা সেদিন উভয় বাংলাকে এক করার সংগ্রাম করেছিলেন ও গান রচনা করেছিলেন। দুর্ভাগ্য ঠাকুর কবির সেই গানই আজ স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। যা তৈরী হয়েছিল দুই বাংলাকে একবঙ্গে পরিণত করার জন্য। আজও তাদের এদেশী চরেরা এপার বাংলা ওপার বাংলার মিলনের ধুয়া তোলে। আর কথায় কথায় ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালী বাঙালী করে মুখে ফেনা তোলে। এরা দেশে শক্তিশালী সেনাবাহিনী চায়না। দেশের শান্তি ও উন্নতি চায়না। এদের টকশো, সেমিনারবাজি আর সোচ্চার বুলি কপচানোতে যেন সরকার ভুল পথে ধাবিত না হন এবং সর্বদা সঠিক পথে অগ্রসর হন, সেজন্য আল্লাহর নিকটে প্রার্থনা জানাচ্ছি। হে আল্লাহ! তুমি নিহত ভাইবোনদের ক্ষমা কর ও তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গকে ধৈর্যধারণের তাওফীক দাও। যে সকল মেধাবী সেনাকর্মকর্তাকে আমরা হারিয়েছি, হে আল্লাহ তুমি উত্তম কর্মকর্তা দিয়ে তাদের শূন্যস্থান পূরণ করে দাও। হে আল্লাহ! তুমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে হেফাযত কর- আমীন![3]


[1]. শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়া।

[2]. গত ৩১শে জুলাই’১৫ থেকে এটি ২৪ ঘণ্টার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।

[3]. ১২তম বর্ষ, ৬ষ্ঠ সংখ্যা, মার্চ ২০০৯।






বিষয়সমূহ: বিধি-বিধান
সমঝোতা ও শান্তি - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
খোশ আমদেদ মাহে রামাযান - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
মালালা ও নাবীলা : ইতিহাসের দু’টি ভিন্ন চিত্র - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর বিরুদ্ধে কটূক্তি - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
কল্যাণমুখী প্রশাসন - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
আত-তাহরীক : যাত্রা হ’ল শুরু (১ম সংখ্যা) - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
সত্যদর্শন - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
চেতনার সংঘাত - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
গ্রাহক ও এজেন্ট সংগ্রহের ফরম
নষ্ট সংস্কৃতি - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
আমেরিকার নির্বাচন - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
শাসন ও অনুশাসন - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
আরও
আরও
.