প্রতিটি দেশের যেমন রাজধানী রয়েছে, তেমনি মানব দেহের রাজধানী হ’ল ক্বলব। দেশের জন্য রাজধানী সুষ্ঠু রাখা যেমন যরূরী, দেহের জন্য ক্বলব সুষ্ঠু রাখা তার চেয়ে কয়েক হাযার গুণ বেশী যরূরী। সকল প্রকার পাপ-পঙ্কিলতা থেকে ক্বলবকে মুক্ত রাখা, অসুস্থতা থেকে নিরাপদ রাখা এবং অসুস্থ ক্বলবের চিকিৎসা করা প্রতিটি মানুষের জন্য অতীব যরূরী। কারণ ইসলামে ক্বলবের সুস্থতা মর্যাদাপূর্ণ এবং সুস্থ ক্বলবের অবস্থান উন্নত ও সুউচ্চ। কুরআনুল কারীমে একশ’ বত্রিশ বার ক্বলব শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।[1] ক্বলব বা অন্তরই আল্লাহর দেখার বিষয়। কারণ এটি ঈমান, ইখলাছ ও তাওহীদের কেন্দ্রস্থল। হাদীছে এসেছে,
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ للهَ تَعَالَى لاَيَنْظُرُ إِلَى أَجْسَامِكُمْ وَلاَ إِلَى صُوَرِكُمْ وَلِكِنْ يَّنْظُرُ إِلَى قُلُوْبِكُمْ وَأَعْمَالِكُمْ.
‘আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের শরীর ও চেহারার দিকে দেকবেন না; বরং তিনি দেখবেন তোমাদের ক্বলব ও কর্মের দিকে’।[2]
অন্য হাদীছে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
أَلاَ وَإِنَّ فِى الْجَسَدِ مُضْغَةً إِذَا صَلُحَتْ صَلُحَ الْجَسَدُ كُلُّهُ وَإِذَا فَسَدَتْ فَسَدَ الْجَسَدُ كُلُّهُ أَلاَ وَهِىَ الْقَلْبُ.
‘জেনে রেখো! শরীরের মধ্যে এমন এক টুকরা গোশত রয়েছে, যা সুস্থ থাকলে সারা শরীরই সুস্থ থাকে, আর এটা অসুস্থ হয়ে গেলে সারা শরীরই অসুস্থ হয়ে যায়। জেনে রেখো, আর এটাই হ’ল ক্বলব’।[3]
শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, ‘ক্বলব সকল কিছুর মূল। যেমনিভাবে আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, ক্বলব হ’ল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বাদশা আর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হ’ল তার সেনাবাহিনী। বাদশা ভাল হ’লে তার সেনাবাহিনী ভাল হয়। আর সেনাবাহিনী তখনই খারাপ হবে যখন বাদশা খারাপ হয়ে যাবে’।[4]
এজন্য ক্বলবের বিভিন্ন অবস্থা জেনে তার রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করা আমাদের একান্ত কর্তব্য। নিম্নে এ বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হ’ল।-
ক্বলবের প্রকারভেদ :
‘আল্লামা ইবনুল ক্বাইয়িম আল-জাওযিয়্যাহ (রহঃ) বলেন, ক্বলব তিন প্রকার। যথা:
১। সুস্থ ক্বলব (قلب سليم) :
ক্বিয়ামাতের দিন সুস্থ ক্বলব ব্যতীত কেউই মুক্তি পাবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, يَوْمَ لاَ يَنْفَعُ مَالٌ وَلاَ بَنُوْنَ- إِلاَّ مَنْ أَتَى اللهَ بِقَلْبٍ سَلِيْمٍ- ‘ক্বিয়ামতের দিন কোন অর্থ-সম্পদ এবং সন্তান-সন্ততি কারো কোন উপকারে আসবে না। একমাত্র সে ব্যক্তি মুক্তি পাবে, যে সুস্থ ক্বলব নিয়ে আল্লাহর কাছে পৌঁছবে’ (শু‘আরা ৮৮-৮৯)।
সুস্থ ক্বলব চেনার উপায় : এ প্রকার ক্বলব আল্লাহর আদেশ-নিষেধের বিপরীত সকল প্রকার লোভ-লালসা, কামনা-বাসনা থেকে মুক্ত। নিশ্চিত ইলমের দ্বারা সন্দেহ মুক্ত ও যেকোন প্রকার শিরক থেকে মুক্ত। এমনকি তার সকল প্রকার আনুগত্য, ইচ্ছা, ভালবাসা, ভরসা, তওবা, নত হওয়া, বিনয়ী হওয়া, ভয় করা সবই আল্লাহর উদ্দেশ্যে হয়ে থাকে। যদি কাউকে ঘৃণা করে, কোন কাজকে বাধা প্রদান করে, তবে তা আল্লাহর উদ্দেশ্যেই করে থাকে। এ প্রকার ক্বলবওয়ালা ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর পূর্ণ আনুগত্য করে। তার উপর অন্যের কথাকে অগ্রগণ্য মনে করে না। আত্মসাৎ, হিংসা-বিদ্বেষ, শত্রুতা, ঈর্ষা, কৃপণতা, গর্ব-অহংকার, দুনিয়ার মায়া ও নেতৃত্বের লোভ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থাকে। আল্লাহর স্মরণ থেকে দূরে রাখে এমন সব আপদ, বাধা, বেড়া থেকে মুক্ত। উক্ত গুণাবলী অর্জনের জন্য পাঁচটি বিষয় থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। (ক) তাওহীদ বিরোধী শিরক হ’তে মুক্ত হ’তে হবে (খ) সুন্নাত বিরোধী বিদ‘আত হ’তে (গ) আল্লাহর নির্দেশ বিরোধী কামনা-বাসনা হ’তে (ঘ) আল্লাহর যিকর বিরোধী অলসতা হ’তে (ঙ) ইখলাছ বিরোধী কুপ্রবৃত্তি হ’তে।
সুস্থ ক্বলবের উপকারিতা : এ প্রকার ক্বলব প্রশান্তি প্রাপ্ত। দুনিয়াতে এর কোন ভয় নেই, আখিরাতে এর নেই কোন চিন্তা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
إِنَّ الَّذِيْنَ آمَنُوْا وَالَّذِيْنَ هَادُوْا وَالصَّابِؤُوْنَ وَالنَّصَارَى مَنْ آمَنَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وعَمِلَ صَالِحاً فَلاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُوْنَ-
‘নিশ্চয়ই যারা ঈমানদার, ইহুদী, ছাবেয়ী বা খ্রীষ্টান, তাদের মধ্যে যারা ঈমান আনয়ন করে এক আল্লাহর প্রতি, শেষ দিবসের প্রতি এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না’ (মায়েদাহ ৬৯)।
যাদের ক্বলব সুস্থ তারাই আল্লাহর উপর ও ঈমানের দাবীদার যাবতীয় বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে। আর তাদের জন্যই রয়েছে আয়াতে বর্ণিত সুসংবাদ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
مَنْ عَمِلَ صَالِحاً مِّنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُمْ بِأَحْسَنِ مَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ-
‘পুরুষ ও নারীদের মধ্যে যে সৎকর্ম করে সে মুমিন, আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের উত্তম কাজের জন্য প্রাপ্য পুরস্কার দেব যা তারা করত’ (নাহল ৯৭)।
উল্লিখিত আয়াত দ্বারা বুঝা গেল, যারা পরহেযগার এবং সৎকর্ম পরায়ণ তারাই দুনিয়া ও আখিরাতের নে‘মত দ্বারা সফলকাম হবে। এরাই উভয় জগতের পবিত্র জীবন অর্জনকারী। ক্বলব প্রশান্তির মূলে রয়েছে হারাম প্রবৃত্তি পরিহার এবং অমূলক সন্দেহ পরিত্যাগ করা। সুতরাং যে তার ক্বলবে এ দু’টির প্রতিফলন ঘটাতে পেরেছে তার জন্যই উক্ত সফলতা রয়েছে। ক্বলব পরিশুদ্ধ হ’লে তার মধ্যে আলোর বিকাশ ঘটে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
اللهُ نُوْرُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ مَثَلُ نُوْرِهِ كَمِشْكَاةٍ فِيْهَا مِصْبَاحٌ اَلْمِصْبَاحُ فِيْ زُجَاجَةٍ الزُّجَاجَةُ كَأَنَّهَا كَوْكَبٌ دُرِّيٌّ يُوْقَدُ مِنْ شَجَرَةٍ مُّبَارَكَةٍ زَيْتُوْنَةٍ لاَّ شَرْقِيَّةٍ وَلاَ غَرْبِيَّةٍ يَكَادُ زَيْتُهَا يُضِيْءُ وَلَوْ لَمْ تَمْسَسْهُ نَارٌ نُّوْرٌ عَلَى نُوْرٍ يَهْدِيْ اللهُ لِنُوْرِهِ مَنْ يَّشَاءُ وَيَضْرِبُ اللهُ الْأَمْثَالَ لِلنَّاسِ وَاللهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيْمٌ-
‘আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের জ্যোতি, তাঁর জ্যোতির উদাহরণ যেন একটি কুলঙ্গি, যাতে আছে একটি প্রদীপ, প্রদীপটি একটি কাঁচপাত্রে স্থাপিত, কাঁচ পাত্রটি উজ্জ্বল নক্ষত্র সদৃশ। তাতে পূত-পবিত্র যয়তূন বৃক্ষের তৈল প্রজ্বলিত হয়, যা পূর্বমুখী নয় এবং পশ্চিমমুখীও নয়। অগ্নি স্পর্শ না করলেও তার তৈল যেন আলোকিত হওয়ার নিকটবর্তী। জ্যোতির উপর জ্যোতি। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ দেখান তাঁর জ্যোতির দিকে। আল্লাহ মানুষের জন্য দৃষ্টান্তসমূহ বর্ণনা করেন এবং আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত’ (নূর ৩৫)।
উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, ‘কারো কারো মতে مَثَلُ نُوْرِهِ এর (ه) সর্বনামটি মুমিনের দিকে প্রত্যাবর্তন করেছে। অর্থাৎ মুমিনের অন্তরের জ্যোতির দৃষ্টান্ত যেন একটি দীপাধার। সুতরাং মুমিনের অন্তরের পরিচ্ছন্নতাকে প্রদীপের কাঁচের সাথে উপমা দেওয়া হয়েছে।[5] আসলে মুমিনের অন্তরে যে নূর রয়েছে, সেটা সেই নূর যা দ্বারা বান্দা তার প্রভুর সন্তুষ্টি লাভে নিজেকে ধন্য করবে। এছাড়াও যখন ক্বলব আলোকিত হবে তখন চারদিক থেকে তার নিকট সকল প্রকার কল্যাণ আসতে থাকবে। যেমনিভাবে যদি কেউ যুলুম করে তবে অকল্যাণ ও বিপদের মেঘমালা সকল দিক থেকেই তার দিকে অগ্রসর হয়। অবশেষে ক্বলবের নূরের বিলুপ্তি ঘটে এমন অন্ধ হয়ে যায়, যে অন্ধ অন্ধকারে পথ খুঁজে বেড়ায়।
মোটকথা পরিশুদ্ধ ক্বলবের নানাবিধ উপকারিতা রয়েছে। এ প্রকার ক্বলব সত্য ও মিথ্যার মাঝে পার্থক্যকারী, ঈমানী শক্তিতে বলিয়ান, সকল প্রকার কুপ্রবৃত্তি থেকে নিজেকে বাঁচাতে সক্ষম। তার ভালবাসা, চিন্তা-চেতনা, ইচ্ছাশক্তি, মন-মানসিকতা, কাজ-কর্ম, শয়ন-স্বপন, উঠা-বসা, কথা-বার্তা সবই আল্লাহর জন্য।
(২) মৃত ক্বলব (قلب ميت) :
মৃত ক্বলব জীবিত ক্বলবের বিপরীত। ক্বলব বিদ্যমান কিন্তু নিষ্প্র্রাণ। যার ফলে ঐ ক্বলব দ্বারা ভাল-মন্দ কিছুই বুঝতে পারে না। আর এর আবাসস্থল হবে জাহান্নাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَلَقَدْ ذَرَأْنَا لِجَهَنَّمَ كَثِيْراً مِّنَ الْجِنِّ وَالْإِنْسِ لَهُمْ قُلُوْبٌ لاَّ يَفْقَهُوْنَ بِهَا وَلَهُمْ أَعْيُنٌ لاَّ يُبْصِرُوْنَ بِهَا وَلَهُمْ آذَانٌ لاَّ يَسْمَعُوْنَ بِهَا أُوْلَـئِكَ كَالأَنْعَامِ بَلْ هُمْ أَضَلُّ أُوْلَـئِكَ هُمُ الْغَافِلُوْنَ-
‘আর আমি সৃষ্টি করেছি জাহান্নামের জন্য বহু জিন ও মানুষ। তাদের ক্বলব রয়েছে, কিন্তু তা দিয়ে তারা অনুধাবন করে না, তাদের চোখ রয়েছে, তা দিয়ে দেখে না, কান রয়েছে তা দিয়ে শুনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর মত; বরং তার চেয়েও নিকৃষ্টতর। তারাই হ’ল গাফেল শৈথিল্যপরায়ণ’ (আ‘রাফ ১৭৯)।
উক্ত আয়াত দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, ক্বলব মৃত বলে তা দিয়ে অনুধাবন করতে পারে না। আর এটা কাফিরদের ক্বলব। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, صُمٌّ بُكْمٌ عُمْيٌ فَهُمْ لاَ يَعْقِلُوْنَ ‘তারা বধির, মূক, অন্ধ, সুতরাং তারা বুঝে না’ (বাক্বারাহ ১৭১)। তিনি আরো বলেন,
أَفَلَمْ يَسِيْرُوْا فِي الْأَرْضِ فَتَكُوْنَ لَهُمْ قُلُوْبٌ يَعْقِلُوْنَ بِهَا أَوْ آذَانٌ يَسْمَعُوْنَ بِهَا فَإِنَّهَا لاَ تَعْمَى الْأَبْصَارُ وَلَكِن تَعْمَى الْقُلُوْبُ الَّتِيْ فِي الصُّدُوْر.
‘তারা কি এই উদ্দেশ্যে দেশ ভ্রমণ করেনি, যাতে তারা বুঝদার হৃদয় (ক্বলব) ও শ্রবণশক্তি সম্পন্ন কর্ণের অধিকারী হ’তে পারে? বস্ত্ততঃ চক্ষুতো অন্ধ হয় না কিন্তু বক্ষস্থিত ক্বলবই অন্ধ হয়’ (হজ্জ ৪৬)।
উক্ত ক্বলব প্রভুর হেদায়াত পেতে অক্ষম, যে ইবাদতে তিনি রাযী-খুশী সে ধরনের ইবাদত করে না; বরং সে তার প্রবৃত্তির উপরই প্রতিষ্ঠিত থাকে। সে প্রভুর সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টি কিছুই মনে করে না। সে সব সময় ভয়-ভীতিতে, আশা-আকাঙ্ক্ষায়, রাগ-গোস্বায়, ইয্যত-সম্মানে গায়রুল্লাহর ইবাদতে মত্ত থাকে। যদি কাউকে ভালবাসে ঘৃণা করে তবে প্রবৃত্তির কারণেই করে, যদি কাউকে কিছু প্রদান করে প্রবৃত্তির কারণেই করে, যদি কাউকে কোন কিছু থেকে নিষেধ করে প্রবৃত্তির কারণেই নিষেধ করে। কোন কাজই আল্লাহর উদ্দেশ্যে করে না। অবশেষে তার নিকট প্রভুর সন্তুষ্টির চেয়ে প্রবৃত্তিই শ্রেয় বলে মনে হয়। এমনকি প্রবৃত্তিই তার নেতা বনে যায়। প্রবৃত্তিই হয় প্রধান সেনাপতি, মূর্খতা তার পরিচালক, দুনিয়া অর্জনই তার অভিপ্রায়। এই শ্রেণীর লোকেরা সত্যের সাথে মিথ্যাকে মিশ্রিত করে দেয়। যার ফলে তারা সত্যকে সত্য হিসাবে এবং মিথ্যাকে মিথ্যা হিসাবে গ্রহণ করতে পারে না। কখনো কখনো সত্যকে মিথ্যা, মিথ্যাকে সত্য, বিদ‘আতকে সুন্নাত, সুন্নতাকে বিদ‘আত হিসাবে বিশ্বাস করে থাকে। এ ধরনের ক্বলব ওয়ালা ব্যক্তিরা নছীহত শুনতে চায় না। যদিও শুনে কবুল করে না। কারণ এরা শয়তানের বন্ধু বা অনুসারী। অহেতুক কথাবার্তায় এরা খুব পটু। তাতে ইসলামের পক্ষে বিপক্ষের পরোয়া করে না। এ ধরনের লোকের সাথে চলাফেরা করা ধ্বংসাত্মক ব্যাপার। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَقَدْ نَزَّلَ عَلَيْكُمْ فِي الْكِتَابِ أَنْ إِذَا سَمِعْتُمْ آيَاتِ اللهِ يُكْفَرُ بِهَا وَيُسْتَهْزَأُ بِهَا فَلاَ تَقْعُدُوْا مَعَهُمْ حَتَّى يَخُوْضُوْا فِيْ حَدِيْثٍ غَيْرِهِ إِنَّكُمْ إِذاً مِّثْلُهُمْ إِنَّ اللهَ جَامِعُ الْمُنَافِقِيْنَ وَالْكَافِرِيْنَ فِيْ جَهَنَّمَ جَمِيْعاً.
‘আর নিশ্চয়ই তিনি কুরআনের মাধ্যমে তোমাদের প্রতি এই নির্দেশ জারী করেছেন যে, যখন আল্লাহ তা‘আলার আয়াত সমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রূপ হ’তে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে। তা না হ’লে তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ জাহান্নামের মাঝে মুনাফিক ও কাফিরদেরকে একই জায়গায় সমবেত করবেন’ (নিসা ১৪০)।
(৩) অসুস্থ ক্বলব (قلب سقيم) :
এই প্রকার ক্বলব জীবিত কিন্তু ব্যধিগ্রস্ত। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যেমনভাবে রোগাক্রান্ত হয়, তেমনিভাবে ক্বলবও রোগগ্রস্ত হয়। হাতের রোগ ধরতে, পায়ের রোগ চলতে, চোখের রোগ দেখতে, জিহবার রোগ কথা বলতে যেমন বাধা দেয়, তেমনি ক্বলবের রোগ আল্লাহর হেদায়াত লাভে প্রভুর প্রতি সাক্ষাতের আশা পোষণ করতে, ভাল কাজে অগ্রসর হ’তে, ইবাদতে মনোনিবেশ করতে বাধা সৃষ্টি করে। এই প্রকার ক্বলবে ঈমান ও নিফাক উভয় থাকতে পারে। যদি ঈমান, ইখলাছ, আল্লাহর প্রতি ভালবাসা, তাওয়াক্কুল দ্বারা প্রভাবিত হয় তবে সুস্থ ক্বলবের পর্যায়ে উন্নীত হয়। আবার যদি কুপ্রবৃত্তি, হিংসা, তাকাববুরী, শিরক, মন্দ কাজের দ্বারা প্রভাবিত হয় তবে মৃত ক্বলবের পর্যায়ে চলে যায়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
تُعْرَضُ الْفِتَنُ عَلَى الْقُلُوْبِ كَعَرَضِ الْحَصِيْرِ عُوْدًا فَأَىُّ قَلْبٍ أُشْرِبَهَا نُكِتَتْ فِيْهِ نُكْتَةٌ سَوْدَاءُ، وَأَىُّ قَلْبٍ أَنْكَرَهَا نُكِتَتْ فِيْهِ نُكْتَةٌ بَيْضَاءُ حَتَّى تَعُوْدَ الْقُلُوْبُ عَلَى قَلْبَيْنِ، قَلْبٌ أَسْوَدُ مُرْبَادًّا كَالْكُوْزِ مُجَخِّيًا- لاَيَعْرِفُ مَعْرُوْفًا وَلاَيُنْكِرُ مُنْكَرًا إِلاَّ مَا أُشْرِبَ مِنْ هَوَاهُ، وَقَلْبٌ أَبْيَضُ، لاَ تَضُرُّهُ فِتْنَهٌ مَادَامَتِ السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ.
‘চাটাই বুননের মত এক এক করে ফিতনা মানুষের ক্বলবে আসতে থাকে। যে ক্বলবে তা গেঁথে যায় তাতে একটি করে কালো দাগ পড়ে। আর যে ক্বলব তা প্রত্যাখ্যান করে তাতে একটি করে শুভ্রোজ্জ্বল চিহ্ন পড়ে। এমনি করে দু’টি ক্বলব দু’ধরনের হয়ে যায়। একটি উল্টানো কালো কলসির ন্যায় হয়ে যায়। প্রবৃত্তি তার মধ্যে যা গেঁথে দেয় তা ব্যতীত ভালমন্দ কিছুই চিনে না। আর অপরটি শ্বেত পাথরের ন্যায়; আসমান ও যমীনের স্থায়িত্ব যতদিন ততদিন কোন ফিতনা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না’।[6]
উক্ত হাদীছ থেকে বুঝা যায় যে, যদি ক্বলব ভাল পথে পরিচালিত হয়, তবে তার ভবিষ্যৎ খুব ভাল। কিন্তু যদি ফিতনা-ফাসাদ গ্রহণ করে তবে সেটা হবে তার জন্য ধ্বংসাত্মক ব্যাপার। কারণ অসুস্থ ক্বলব মানুষের চিন্তা-চেতনা ও ইচ্ছা শক্তির মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। অবশেষে তার প্রবৃত্তি তাকে এবং তার সুষ্ঠু চিন্তা-চেতনাকে বিকল করে দেয়। এমনকি হক্বকে হক্ব না জেনে তার বিপরীত জ্ঞান করে। আর ইচ্ছা শক্তি বিকল হওয়ার কারণে সেই হক্ব বা সত্য বিষয় ঘৃণা করে যা তার জন্য উপকারী ছিল এবং এমন মিথ্যা জিনিস গ্রহণ করে যা তার জন্য ছিল বিরাট ক্ষতির বিষয়। যত অন্যায়ই তার দ্বারা হয়ে থাকে তা সে সঠিক বলেই প্রকাশ করতে চায়। কিন্তু মন বার বার এই অন্যায়ের জন্য ধাওয়া করে বেড়ায়। সাময়িকভাবে হালকা ব্যথা মনের মাঝে অনুভূত হয়। ক্রমেই এর মাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে। যতক্ষণ পর্যন্ত অশোভনীয় কাজ পরিত্যাগ করা না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত রোগ বৃদ্ধি পেতেই থাকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, فِيْ قُلُوْبِهِم مَّرَضٌ فَزَادَهُمُ اللهُ مَرَضاً ‘তাদের অন্তকরণ ব্যাধিগ্রস্ত আর আল্লাহ তাদের ব্যাধি আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন’ (বাক্বারাহ ১০)। মূলতঃ এটা মুনাফিকের ক্বলবেরই নামান্তর। কারণ এটা হ’ল সন্দেহের রোগ। আর মুনাফিকদের অন্তরেই সন্দেহ, সংশয়, অবিশ্বাস বিরাট আকারে দানা বাধে।
অসুস্থ ক্বলবের আলামত : অসুস্থ ক্বলবের অসংখ্য আলামত রয়েছে। তন্মধ্যে কতিপয় নিম্নে উল্লেখ করা হ’ল।
(ক) অধিকাংশ সময় এরা ঐ সকল কাজে অনীহা প্রকাশ করে যে সকল উদ্দেশ্যে আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। যেমন- ইলম অর্জন, হিকমতের সাথে কাজ সম্পাদন, তাওহীদের জ্ঞানার্জন, সকল প্রকার ইবাদত সম্পাদন ইত্যাদি বিষয়ে তারা অনীহা প্রকাশ করে থাকে।
(খ) সবচেয়ে নিকৃষ্ট, ধ্বংসাত্মক, অমার্জনীয় রোগ হ’ল অহংকার, যা ক্বলবকে সত্য গ্রহণে বাধা প্রদান করে। এটাই সর্বপ্রথম পাপ, যা ইবলীস করেছিল। এর ফলে সে শয়তানে পরিণত হয়। এই অহংকারই তাকে আদম (আঃ)-কে সিজদা করতে বাধা প্রদান করেছিল।
(গ) ধর্মে সন্দেহ পোষণ, বিকৃত মাসাআলাহ প্রচার, শিরক-বিদ‘আতের মায়াজালে আবদ্ধ থাকাও ক্বলবের রোগের নিদর্শন। এমনকি এতে কাফির অবস্থায় মৃত্যু হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে।
(ঘ) কারণে-অকারণে দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা, উদ্বিগ্নতা, উৎকণ্ঠা, দুঃখ, ক্রোধ, লোভ প্রভৃতি ক্বলবের রোগের আলামত।
(ঙ) হত্যা, সন্ত্রাস, ঘুষ, সূদ, চাঁদাবাজী, মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন, ওযনে কম দেওয়া, গান-বাজনায় মত্ত, অশ্লীলতা যাবতীয় অশালীন কর্মকান্ডের সাথে যারাই জড়িত হবে, তাদের ক্বলবেই রোগ রয়েছে বলে বুঝে নিতে হবে।
প্রতিকার : ক্বলবের রোগের প্রতিকার বা চিকিৎসা করতে হ’লে রোগীর উচিত সত্যের আশ্রয় নেয়া, বেশী বেশী করে নফল ছালাত আদায় করা, গভীর রাতে ছালাতে অশ্রু ঝরানো, সকল প্রকার পাপ পরিহার করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَالَّذِيْنَ جَاهَدُوْا فِيْنَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا وَإِنَّ اللهَ لَمَعَ الْمُحْسِنِيْنَ. ‘যারা আমার পথে সাধনায় আত্মনিয়োগ করে, আমি তাদেরকে অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎ কর্মপরায়ণদের সাথে আছেন’ (আনকাবূত ৬৯)।
এ জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর জীবনাদর্শ বাস্তবে রূপায়িত করা অতীব যরূরী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيْ رَسُوْلِ اللهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَنْ كَانَ يَرْجُو اللهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللهَ كَثِيْرًا.
‘যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে’ (আহযাব ২১)।
ক্বলবের চিকিৎসায় সুন্নাতী যিকির চির সঙ্গী করা একান্ত কর্তব্য। কারণ যিকির ক্বলবের সকল প্রকার ময়লা দূরীভূত করতে সক্ষম। উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রচলিত মিথ্যা, বানোয়াট ও ভেজাল প্রক্রিয়ার যিকির সবার জন্যে সর্বদা পরিতাজ্য। যেমন- ছেলে-মেয়ে একাকার হয়ে অন্ধকারে সমস্বরে ‘ইল্লাল্লাহ’ ইল্লাল্লাহ, আল্লাহ-আল্লাহ, হু-হু ইত্যাদি যিকির। এ ধরনের যিকির ক্বলবের রোগ আরো বৃদ্ধি করে। নিম্নে কুরআন এবং হাদীছ থেকে কিছু যিকির উল্লেখ করা হ’ল:
উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) প্রায়ই নিম্নে বর্ণিত দো‘আটি পাঠ করতেন, يَامُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِىْ عَلَى دِيْنِكَ ‘হে অন্তর সমূহের পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে আপনার দ্বীনের উপর স্থির রাখুন’।[7] رَبَّنَا لاَ تُزِغْ قُلُوْبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِن لَّدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ. ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাদের পথ-প্রদর্শনের পর আমাদের অন্তরসমূহ বক্র করবেন না এবং আমাদেরকে আপনার নিকট হ’তে করুণা প্রদান করুন, নিশ্চয়ই আপনি প্রচুর প্রদানকারী’ (আলে ইমরান ৮)।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এই দো‘আটিও পাঠ করতেন, اَللَّهُمَّ مُصَرِّفَ الْقُلْوْبِ صَرِّفْ قُلُوْبَنَا عَلَى طَاعَتِكَ ‘হে ক্বলব পরিবর্তনকারী আল্লাহ! আমাদের ক্বলবগুলোকে আপনার আনুগত্যের দিকে ঘুরিয়ে দিন’।[8]
اَللَّهُمَّ إِنِّىْ اَعُوْذُبِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْبُخْلِ وَالْهَرَمِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ، اَللَّهُمَّ آتِ نَفْسِىْ تَقْوَاهَا وَزَكِّهَا أَنْتَ خَيْرُ مَنْ زَكَّاهَا أَنْتَ وَلِيُّهَا وَمَوْلاَهَا، اَللَّهُمَّ إِنِّىْ أَعُوْذُبِكَ مِنْ عِلْمٍ لاَ يَنْفَعُ وَمِنْ قَلْبٍ لاَيَخْشَعُ وَمِنْ نَفْسٍ لاَتَشْبَعُ وِمِنْ دَعْوَةٍ لاَيُسْتَجَابُ لَهَا.
‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি অক্ষমতা ও অলস্য থেকে, কার্পণ্য ও বার্ধক্য থেকে এবং কবরের আযাব থেকে। হে আল্লাহ! আমার ক্বলবে তাক্বওয়া দান করুন এবং তাকে পাক করে দিন, আপনি সবচাইতে পাক-পবিত্রকারী। আপনি তার অভিভাবক ও মালিক। হে আল্লাহ! আপনার কাছে আশ্রয় চাই অপকারী ইলম থেকে, আল্লাহর ভয়শূন্য ক্বলব থেকে, অতৃপ্ত আত্মা থেকে এবং এমন দো‘আ থেকে যা কবুল হয় না’।৯
শাকাল ইবনে হুমাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাকে একটি দো‘আ শিখিয়ে দিন। তিনি বললেন, তুমি বল,
اَللَّهُمَّ إِنِّىْ أَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّ سَمْعِىْ وِمِنْ شَرِّ بَصَرِىْ وِمِنْ شَرِّ لِسَانِىْ وَمِنْ شَرِّ قَلْبِىْ وِمِنْ شَرِّ مَنِيِّىْ.
‘হে আল্লাহ! আমি আশ্রয় চাই আপনার কাছে আমার শ্রবণের অনিষ্ট থেকে, আমার দৃষ্টির অনিষ্ট থেকে, আমার জিহবার অনিষ্ট থেকে, আমার ক্বলবের অনিষ্ট থেকে এবং আমার লজ্জাস্থানের অনিষ্ট থেকে’।১০
পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছে এরূপ অসংখ্য যিকির রয়েছে, যা দ্বারা ক্বলব পরিষ্কার করা যায়। পরিশেষে লোক্বমান (আঃ)-এর একটি ঘটনা উল্লেখ করা যায়। একদা তাঁর মনিব তাঁকে একটি বকরী যবেহ করে ওর উৎকৃষ্ট দু’টি টুকরা নিয়ে আসতে বললেন। তিনি তার জিহবা ও ক্বলব নিয়ে আসলেন। কিছুদিন পর পুনরায় তাঁর মনিব তাঁকে আর একটি বকরী যবেহ করতে বললেন এবং ওর নিকৃষ্ট দু’টি টুকরা আনতে বললেন। তিনি এবারও জিহবা ও ক্বলব নিয়ে আসলেন। তাঁর মনিব তখন বললেন, ‘ব্যাপার কী? এটা কী ধরনের কাজ হ’ল? উত্তরে তিনি বললেন, ‘এ দু’টি যখন ভাল থাকে তখন দেহের কোন অঙ্গই এদু’টির চেয়ে ভাল হ’তে পারে না। আবার এ দু’টি যখন খারাপ হয়ে যায় তখন সবচেয়ে নিকৃষ্ট জিনিস এ দু’টিই হয়ে থাকে।১১
পরিশেষে অভিশপ্ত শয়তান থেকে ক্বলব ও জিহবাকে যেন হেফাযত রেখে ক্বিয়ামতের ময়দানে আল্লাহর সম্মুখে দাঁড়াতে পারি, আল্লাহ আমাদের সকলকে এই তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!!
খাইরুল ইসলাম বিন ইলইয়াস
ভেরামতলী, শ্রীপুর, গাযীপুর।
[1]. আল-মু‘জামুল মুফাহরাস লি আলফাযিল কুরআনিল কারীম, পৃঃ ৬৫৮।
[2]. মুসলিম, হা/২৫৬৪; রিয়াযুছ ছালেহীন হা/৭, পৃঃ ২২।
[3]. বুখারী, হা/৫২ ‘কিতাবুল ঈমান’।
[4]. আদ-দুরূসুর রামযানিয়্যাহ, পৃঃ ১৭২।
[5]. তাফসীর ইবনে কাছীর, ৩/৩৮৭ পৃঃ।
[6]. মুসলিম (ঢাকা : ইফাবা, ২য় মুদ্রণ ১৯৯২ইং) ১/২১৭ পৃঃ; মিশকাত হা/৫৩৮০ ‘ফিতান’ অধ্যায়।
[7]. তিরমিযী হা/২১৪০, ৩৫২২; ইবনু মাজাহ হা/৩৮৩৪, হাদীছ ছহীহ।
[8]. মুসলিম হা/২৬৫৪।
৯. মুসলিম, রিয়াযুছ ছালেহীন হা/১৪৭৯।
১০. তিরমিযী, হা/৩৪৯২, হাদীছ ছহীহ।
১১. তাফসীর ইবনে কাছীর ৩/৫৮৫ পৃঃ।