হক্বের দাওয়াত
মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াকীল
নাড়াবাড়ী হাট, বিরল, দিনাজপুর।
কোথায় পাবো হক্বের দাওয়াত আজ
অসংখ্য মতবাদে বিধ্বস্ত জাতি, বিপর্যস্ত সমাজ।
চারিদিকে শুধু শিরক-বিদ‘আতের কুহেলিকা,
এরই মাঝে হক্বের দাওয়াত
অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকা।
নতুন প্রাণে উজ্জীবিত হবে জাতি
আল-হেরার আলোয় জ্যোতির্ময়;
কুয়াশা কেটে হবে নতুন সূর্যোদয়।
বাতিলের তান্ডবে বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মতবাদ
ধর্মের নামে নিত্য-নতুন পথে ইবলীসের আবির্ভাব।
লোভ-লালসা, প্রলোভনে ত্বাগূতের আহবান,
সস্তা পথে জনপ্রিয় হ’তে সেদিকের জয়গান।
অহি-র পথে হক্বের দাওয়াত
কণ্টকাকীর্ণ রাস্তায় বাতিলের সাথে হবে মুলাকাত।
তবুও থাকতে অটল, অটুট রাখতে তাওহীদি চেতনা,
অহি ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠাই মুমিনের বাসনা।
আক্বীদার সংশোধনে, নব্য জাহেলিয়াতের হবে অবসান,
হক্বের দাওয়াত থাকবে সদা হয়ে চির অম্লান।
সোনালী সকাল হাসে
আব্দুস সোবহান
পাংশা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, রাজবাড়ী।
সোনালী সকাল হাসে শূন্য রবিকর
বিকশি পুষ্প পুলক রূপসী আবীর;
মৃদু সমীরণে ভাসে সোনালী শিশির
শুষ্কতায় ঝরে যায় পল্লব মর্মর।
ঘন কুয়াশায় ঢাকা মেঘেরা অপার
পাখি ডাকা রাঙা রোদ শীতল সমীর;
ভ্রমরের গুঞ্জরণে সুর করে ভীড়
নদীতীরে মনোবর সোনালী দু’ধার।
লুকোচুরি খেলা করে বলাকার ঝাঁক
রবিকর হেসে করে নিবিড় সোহাগ;
সোনালী নোলক পেয়ে ফুলেরা অবাক
ফুলকলি ফুটে উঠে ফুলের পরাগ।
সোনালী সকাল হাসে অনন্তঃ নির্বাক
দুর্বা কোমল প্রকাশে মনোহর রাগ;
সবই সৃজিলে প্রভু করে মনোহর
গুণগান করি তাই কেবল তোমার।
ক্ষমা করে দাও প্রভু তুমি
এফ.এম. নাছরুল্লাহ হায়দারী
কাঠিগ্রাম, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ।
বৃথাই জনম কাটিয়ে দিলাম
হেলায় হারিয়ে সময়,
ভক্তি করে জীবনে প্রভু
ডাকতে পারিনি তোমায়।
ভোগ-বিলাসে কাটিয়েছি জীবন
নিজের ইচ্ছা মত,
দিনে দিনে পাপের বোঝা
ভারি করেছি কত?
মুসলিম ঘরে জন্ম নিয়েও
হ’তে পারিনি মুসলমান,
নভেল-নাটক পড়েছি কত
পড়তে পারিনি পাক কুরআন।
সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতি দিয়ে
সাজিয়েছি রঙমহল,
পাপ করেছি লভিছি অভিশাপ
করতে পারিনি নেক আমল।
তুমি বিনে কোন উপাস্য নাই
ইহকাল-পরকালে
মুক্তি পেতে পারি হাশরে
তুমি তরিয়ে নিলে।
তোমার রাসূলের তরীকায় চালাও
সব ভেদাভেদ ভুলে।
তোমার কাছে মোর এ ফরিয়াদ,
রোজ হাশরে পার করিও
তোমার কঠিন পুলছিরাত।
ক্ষমা করে দাও প্রভু তুমি
এই অসহায় বান্দারে,
শেষ সময়ে দেখাও আলো
ঠেলে দিও না গভীর অাঁধারে।
বড় দল
আবুল কাশেম
গোভীপুর, মেহেরপুর।
সত্য করে বলরে তোরা
ইনছাফ করে বল,
ইসলাম নিয়ে ভাগাভাগী
কোনটা আসল দল?
দলাদলির নাইকো ভিত্তি
আমল হবে সার,
কুরআন-হাদীছ জেনে শুনে
সঠিক আমল কর।
একটি দল মুক্তি পাবে
সেটাই রাসূলের দল,
পীর-বুযরগো গাউছ-কুতুব
যাবে রসাতল।
হিসাব-নিকাশ হবে একদিন
মীযানের পাল্লায়,
বাহাত্তর দল জাহান্নামী
করছ দলের বড়াই?
দলাদলি ভুলে গিয়ে
আমল কর খাঁটি,
সব ক্ষমতা ফুরিয়ে যাবে
সার হবে মাটি।
এসো ভাই সবে মিলে
করি দ্বীনের কাম
আহলেহাদীছ একটি দল
নেই কোন উপনাম।
***
১. দশ শতাব্দী।
২. শিরক ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজকে সংশোধন করার জন্য।
৩. সাড়ে নয়শত বছর।
৪. আবুল বাশার ছানী বা মানব জাতির দ্বিতীয় পিতা।
৫. নূহ (আঃ)।
গত সংখ্যার সাধারণ জ্ঞান (বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি)-এর সঠিক উত্তর
চলতি সংখ্যার সাধারণ জ্ঞান (ইসলামী)
১. কুরআন শব্দের অর্থ কি?
২. কুরআনের সম্পূর্ণ বক্তব্য কার?
৩. কুরআনের প্রকৃত নাম কয়টি ও কি কি?
৪. পবিত্র কুরআন সর্বপ্রথম কোথায় অবতীর্ণ হয়?
৫. পবিত্র কুরআন প্রথমে কার উপর অবতীর্ণ হয়?
চলতি সংখ্যার সাধারণ জ্ঞান (বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি)
১. কম্পিউটার কি?
২. কম্পিউটার শব্দের অর্থ কি?
৩. কম্পিউটার কে আবিষ্কার করেন?
৪. ল্যাপটপ কি?
৫. পৃথিবীতে কখন ল্যাপটপ কম্পিউটার প্রবর্তিত হয় এবং কোন কোম্পানী এটা করে?
সংগ্রহে : বযলুর রহমান
কেন্দ্রীয় সহ-পরিচালক, সোনামণি।
সোনামণি সংবাদ
হাটগাঙ্গোপাড়া, বাগমারা, রাজশাহী ১৯ জুলাই বৃহস্পতিবার : অদ্য দুপুর দেড়টায় হাটগাঙ্গোপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক সোনামণি প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ রাজশাহী যেলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাগমারা উপযেলা সোনামণির প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মাদ সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত প্রশিক্ষণে প্রধান প্রশিক্ষক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সোনামণি কেন্দ্রীয় পরিচালক ইমামুদ্দীন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর তাবলীগ সম্পাদক আব্দুল হালীম, এলাকা ‘যুবসংঘ’-এর সভাপতি মুহাম্মাদ মুহসিন আলী ও অত্র স্কুলের প্রধান শিক্ষক জনাব আব্দুল হামীদ প্রমুখ।
কমরগ্রাম, জয়পুরহাট ২১ জুলাই শনিবার : অদ্য বাদ যোহর কমরগ্রাম আহলেহাদীছ জামে মসজিদে সোনামণি জয়পুরহাট যেলার উদ্যোগে এক সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সোনামণি যেলা উপদেষ্টা মুহাম্মাদ আমীনুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সোনামণি কেন্দ্রীয় পরিচালক ইমামুদ্দীন। অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা করেন সোনামণি যেলা সহ-পরিচালক ফিরোয আহমাদ। অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন সোনামণি যেলা পরিচালক মুনায়েম হুসাইন।
শাসনগাছা, কুমিল্লা ২৫ জুলাই বুধবার : অদ্য সকাল ১০-টায় শহরের শাসনগাছাস্থ আল-মারকাযুল ইসলামী কমপ্লেক্সে এক সোনামণি প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। যেলা ‘সোনামণি-র প্রধান উপদেষ্টা ও যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা ছফিউল্লাহ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত প্রশিক্ষণে প্রধান প্রশিক্ষক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সোনামণি কেন্দ্রীয় পরিচালক ইমামুদ্দীন। অন্যান্যের মধ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন যেলা উপদেষ্টা ও যেলা ‘যুবসংঘ’-এর সভাপতি মুহাম্মাদ জামীলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ আলী ও সোনামণি’র শুভাকাংখী মোছতফা কামাল প্রমুখ। অনুষ্ঠানে কুরআন তেলাওয়াত করে আব্দুল্লাহ এবং ইসলামী জাগরণী পরিবেশন করে ফারীহা, খালিদ মাহমূদ ও আসাদুল্লাহ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন যেলা সোনামণি সহ-পরিচালক আহমাদুল্লাহ। উল্লেখ্য যে, যেলার ১২টি শাখা থেকে আগত আড়াই শতাধিক সোনামণি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে।
পাঁচদোনা, নরসিংদী ২৬ জুলাই বৃহস্পতিবার : অদ্য সকাল ১০-টায় পাঁচদোনা ইবতেদায়ী মাদরাসায় এক সোনামণি প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক জনাব ওয়াহীদুযযামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সোনামণি কেন্দ্রীয় পরিচালক ইমামুদ্দীন। অন্যান্যের মধ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন সোনামণি যেলা পরিচালক আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইসহাক। অনুষ্ঠানে সোনামণি পাঁচদোনা মাদরাসা শাখা গঠন করা হয়।
পাঁচবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ ২৬ জুলাই বৃহস্পতিবার : অন্য বাদ যোহর পাঁচ বাড়িয়া আহলেহাদীছ জামে মসজিদে এক সোনামণি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। নরসিংদী যেলা ‘সোনামণি’ উপদেষ্টা আব্দুল্লাহ আল-মামূনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘সোনামণি’ কেন্দ্রীয় পরিচালক ইমামুদ্দীন। অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা পেশ করেন ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জালালুদ্দীন ও নরসিংদী যেলা সোনামণি পরিচালক আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইসহাক।
পালবাড়ী, নরসিংদী ২৭ জুলাই শুক্রবার : অদ্য সকাল ৮-টায় পালবাড়ী আহলেহাদীছ জামে মসজিদে এক সোনামণি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক জনাব মাহফূযুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সোনামণি কেন্দ্রীয় পরিচালক ইমামুদ্দীন। অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা করেন সোনামণি যেলা পরিচালক আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইসহাক। অনুষ্ঠানে পরিচালনা করেন অত্র মসজিদস্থ মক্তবের শিক্ষক মুখতারুল ইসলাম। সমাবেশে তিনশতাধিক সোনামণি অংশগ্রহণ করে।
রায়রামপুর, মহাদেবপুর, নওগাঁ ১ আগষ্ট বুধবার : অদ্য সকাল ১০-টায় রায়রামপুর আহলেহাদীছ জামে মসজিদে এক সোনামণি প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। যেলা ‘আন্দোলন’-এর সহ-সভাপতি জনাব আফযাল হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘সোনামণি’র কেন্দ্রীয় পরিচালক ইমামুদ্দীন। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘সোনামণি’র কেন্দ্রীয় সহ-পরিচালক বযলুর রহমান। অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন সোনামণি যেলা পরিচালক মুহাম্মাদ হাফীযুর রহমান।
স্বদেশ
এনার্জি ড্রিংকসের নামে মাদকের থাবা
সারা দেশ নেশাজাতীয় এবং যৌন উত্তেজক এনার্জি ড্রিংকসে সয়লাব হয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মানহীন এসব এনার্জি ড্রিংকস খেয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে মানুষ। এ ধরনের এনার্জি ড্রিংকস সেবনের পর শরীরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সাময়িক উত্তেজনার জন্যই যুবসমাজ এই মরণ নেশার দিকে ঝুঁকে পড়ছে। সাম্প্রতিক তথ্য মতে, বাজারে প্রচলিত এসব এনার্জি ড্রিংকসে অপিয়েটস এবং সিলডেনাফিল সাইট্রেট রয়েছে, যা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকায় ভয়ঙ্কর মাদকের উপাদান হিসাবে চিহ্নিত। ঐ ধরনের এনার্জি ড্রিংকসে এম ফিটামিন কেমিক্যাল থাকে। পচা সুপারির রস, গাছ-পালা, লতা-পাতার রস, ছালপচা রস, চিনি, পানি, রাসায়নিক উপাদান ও এ্যালকোহল মিশিয়ে তৈরি করা হয় এসব এনার্জি ড্রিংকস। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব এনার্জি ড্রিংকস নিয়মিত সেবনে হার্ট, লিভার, কিডনি অকেজো হয়ে পড়তে পারে। ক্ষতিকর এসব এনার্জি ড্রিংকসের মধ্যে রয়েছে হর্স পাওয়ার, হর্স ফিলিংস, টাইগার, এনার্জি ড্রিংকস, ডাবল হর্স, এনার্জি পাওয়ার, জিনসিন পাওয়ার, ফাস্ট হর্স, স্ট্রং, রুচিতাসহ নানান নামে যৌন উত্তেজনাকর ও নেশাজাতীয় পানীয় বোতল।
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ
গত ১৮ জুলাই বুধবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর গড় পাসের হার ৭৮.৬৭%। পাসের হার সবচেয়ে বেশি সিলেট বোর্ডে, ৮৫.৩৭%। এছাড়া ঢাকা বোর্ডে ৮১.৮৯%, চট্টগ্রামে ৭২.২৯%, বরিশালে ৬৬.৯৮%, কুমিল্লায় ৭৪.৫৬%, যশোরে ৬৭.৮৭%, দিনাজপুরে ৭৫.৪১% এবং রাজশাহী ৭৮.৪৪% শিক্ষার্থী পাস করেছে। মাদরাসা বোর্ডে এবার পাসের হার ৯১.৭৭%। আর কারিগরী বোর্ডে পাস করেছে ৮৪.৩২% শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্রীদের পাসের হার ৮৯.১৯%, আর ছাত্রদের ক্ষেত্রে ৭৮.২৩%।
বছরে ১৫ হাযার নারী ও শিশু পাচার
চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সংঘবদ্ধচক্র গ্রামের দরিদ্র-অসহায় নারী-শিশু পাচার করছে। সীমান্ত দিয়ে তাদের পাশের দেশে পাচার করা হয়। বিদেশে চাকরি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামেও পাচার করা হয় নারীদের। এক সময় শিশুদের চাকরি দেয়ার নামে আরব আমিরাতে পাচার করে উটের জকি হিসাবে ব্যবহার করা হলেও এখন তা অনেকটাই বন্ধ হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার উদ্যোগে শিশুদের উটের জকিতে ব্যবহার বন্ধ হলেও নারী-শিশু পাচার বন্ধ করা যায়নি।
জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) তথ্য অনুযায়ী , বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রায় ১৫ হাযার মানুষ পাচার হচ্ছে। এর বেশিরভাগই নারী ও শিশু। দেশের ২০ যেলার ৯৩টি পয়েন্ট দিয়ে মানুষ পাচার করা হয়। গত ১০ বছরে পাচার হয়েছে প্রায় এক লাখ মানুষ। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত পাচার হয়েছে ১০ লাখেরও বেশি। পাচার হওয়া চার লাখ নারী আটক আছে ভারতের পতিতালয়ে। ১০ হাযারেরও বেশি নারী বিক্রি হয়েছে পাকিস্তানের পতিতালয়ে।
কুমিল্লার শ্রীকাইলে দু’টি স্তরে গ্যাস পেয়েছে বাপেক্স
কুমিল্লার মুরাদনগরের শ্রীকাইলে গত ১৩ জুলাই প্রথম একটি স্তরে গ্যাস পাওয়ার পর সম্প্রতি দ্বিতীয় স্তরেও গ্যাস পেয়েছে বাপেক্স। গত ৩১ জুলাই বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মর্তুযা আহমাদ ফারূক এ কথা জানান। তিনি আরো জানান, গ্যাসের খুব ভালো চাপ আছে। এখানে ভালো মজুদের আশা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এ স্তর থেকে দৈনিক ১৭ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উঠবে। আগামী নভেম্বর মাস নাগাদ প্রতিদিন ৪০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস তোলা সম্ভব হবে। উল্লেখ্য যে, এটি দেশের ২৫তম গ্যাসক্ষেত্র।
শায়খুল হাদীছ আযীযুল হকের ইন্তিকাল
ইসলামী ঐক্যজোটের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সাবেক আমীর ও অভিভাবক সদস্য, ছহীহ বুখারীর অনুবাদক আল্লামা আযীযুল হক (৯৪) গত ৮ আগস্ট বুধবার দুপুর সাড়ে ১২-টায় ঢাকার আজিমপুরস্থ নিজ বাসভবনে ইন্তিকাল করেন। ইন্না লিলা-হি ওয়া ইন্না ইলায়হে রাজি‘ঊন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি ৫ ছেলে, ৮ মেয়ে, নাতী-নাতনী, আত্মীয়-স্বজনসহ বহু গুনগ্রাহী রেখে যান। পরদিন বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১-টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে তাঁর জানাযার ছালাত অনুষ্ঠিত হয়। জানাযার ছালাতে ইমামতি করেন তাঁর মেজো ছেলে ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত জামে‘আ রহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মাহফূযুল হক। জানাযা শেষে বেলা ১-টার সময় তাঁকে কেরানীগঞ্জের আটিবাজারে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।
শিক্ষা জীবন : মাওলানা আযীযুল হক ১৯১৯ সালে ঢাকা যেলার মুন্সিগঞ্জ মহকুমার লৌহজং থানাধীন ভিবিচখা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগহণ করেন। পাঁচ বছর বয়সে তিনি তার মাকে হারান। ৭ বৎসর বয়সে তার পিতা তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জামে‘আ ইউনুসিয়ায় ভর্তি করান। সেখানে ৪ বছর অধ্যয়নের পর ১৯৩১ সালে ঢাকার বড় কাটারা মাদরাসায় ভর্তি হন। ১৯৪৩ সালে তিনি সেখান থেকে দাওরায়ে হাদীছ সমাপ্ত করে উচ্চ শিক্ষার জন্য ভারতে গমন করেন। সেখানে তিনি জামে‘আ ইসলামিয়া ও দারুল উলূম দেওবন্দে অধ্যয়ন করেন।
কর্মজীবন : ভারতে পড়াশুনা শেষ করে তিনি ঢাকার বড় কাটারা মাদরাসায় মাসিক ৪০ টাকা বেতনে শিক্ষক হিসাবে যোগদানের মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবনের সূচনা করেন। অতঃপর পর্যায়ক্রমে লালবাগ মাদরাসা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ (ভিজিটিং প্রফেসর), বরিশাল জামে‘আ মাহমূদিয়া, জামে‘আ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া মুহাম্মাদপুর, মিরপুর জামেঊল উলূম, উত্তরা দারুস সালাম, লালমাটিয়া জামে‘আ ইসলামিয়া, সাভার ব্যাংক কলোনী ও বনানী জামে‘আ ইসলামিয়া প্রভৃতি মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। ১৯৭৮ সালে কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক)-এর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৮ সালে ঢাকার মুহাম্মাদপুরে সাত মসজিদের পার্শ্বে জামে‘আ রহমানিয়া আরাবিয়া প্রতিষ্ঠা করেন।
রাজনৈতিক জীবন : ‘নেযামে ইসলাম পার্টি’র রাজনৈতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর ‘জমিয়তে উলামায়ে ইসলামে’র সভাপতি, ১৯৮১ সালে হাফেজ্জী হুজুরের ‘খেলাফত আন্দোলন’-এর নায়েবে আমীর এবং ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের তিনিই মূল রূপকার ও প্রতিষ্ঠাতা মুখপাত্র ছিলেন। পরবর্তীতে তাঁরই ছাত্র মাওলানা ফযলুল করীম যার নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৮৯ সালে তাঁর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস’ এবং ১৯৯১ সালে তাঁকে চেয়ারম্যান করে সমমনা কয়েকটি ইসলামী দল নিয়ে গঠন করা হয় ‘ইসলামী ঐক্যজোট’। তিনি বিভিন্নভাবে রাজনৈতিক যুলুম-নির্যাতনেরও শিকার হন। জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি সর্বপ্রথম কারা নির্যাতিত হন। বাবরী মসজিদ ইস্যুতে আন্দোলন করতে গিয়ে ১৯৯৩ সালের ৯ এপ্রিল ঢাকার বায়তুল মুকাররম চত্বর থেকে গ্রেফতার হন। অতঃপর হাইকোর্টের ফৎওয়া বিরোধী রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে তৎকালীন আওয়ামী সরকারের ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় তিনি তৃতীয় বারের মত গ্রেফতার হন এবং প্রায় চার মাস কারান্তরীণ থাকেন।
প্রচলিত নির্বাচনীয় কিংবা গণতান্ত্রিক রাজনীতির মাধ্যমে সমাজে কিংবা রাষ্ট্রে ইসলামী নীতি-আদর্শের প্রতিফলন ঘটানো খুবই কঠিন বলে তিনি মনে করতেন। তাঁর মতে মানবতার সত্যিকার মুক্তি ও মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার একমাত্র গ্যারান্টি হচ্ছে খেলাফত রাষ্ট্র ব্যবস্থা। তাঁর দল বিভিন্ন নির্বাচনে অংশ নিলেও তিনি নিজে কোনদিন নির্বাচনে প্রার্থী হননি।
বিদেশ
প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের মন্তব্য
মিয়ানমার থেকে বিতাড়নই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান
রোহিঙ্গাদের বিতাড়ন বা জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) পরিচালিত আশ্রয় শিবিরে পাঠানোই রোহিঙ্গা সমস্যার ‘একমাত্র সমাধান’ বলে মন্তব্য করেছেন মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন। মিয়ানমারে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে যারা পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে বাস করছে। তবে মিয়ানমার তাদের নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নিয়েছে। থেইন সেইন বলেছেন, ‘নৃতাত্ত্বিকভাবে যারা আমাদের জনগণ, আমরা তাদের দায়িত্ব নেব। কিন্তু মিয়ানমারে অবৈধভাবে প্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব নেওয়া আমাদের পক্ষে অসম্ভব। রোহিঙ্গারা নৃতাত্ত্বিকভাবে আমাদের জনগণ নয়’।
[এটি একটি ডাহা মিথ্যাচার। রোহিঙ্গারা খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর পূর্ব থেকেই আরাকানের আদি বাসিন্দা। বর্তমানের বৌদ্ধরা ৭৮৮ খ্রীষ্টাব্দের পরের মানুষ। ১৯৪২ সালে বর্মা সরকার রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব বাতিল করে স্রেফ মুসলমান ও বাঙ্গালী হওয়ার অপরাধে (দ্রঃ সম্পাদকীয় জুলাই ’১২)]।
রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন অব্যাহত
রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্যাতন এখনো অব্যাহত রয়েছে। মিয়ানমার সরকার এবং মগ বৌদ্ধরা মিলে যেভাবে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে, তার কোন খবরই মিডিয়াতে আসছে না। মিয়ানমারের মংডু এলাকার এক রোহিঙ্গা মুসলমান রেডিও তেহরানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ মগ বৌদ্ধদের নাসাকা পোষাক পরিয়ে মুসলমানদের ওপর গণহত্যা চালানোর অনুমতি দেয়া হয়েছে। তারা একই সঙ্গে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাড়ি-ঘরে গিয়ে লুটপাট চালাচ্ছে, তরুণীদের গণধর্ষণ করছে এবং অন্যান্যদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
৮ জুনের পর যরূরী অবস্থা ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত আমাদেরকে ছালাত আদায় করতে দিচ্ছে না সরকার। প্রথমে সরকার ঘোষণা দিল শুক্রবারে জুম‘আর ছালাত পড়তে পারবে না মুসলমানরা। তারপর ঘোষণা দিল কোনো ছালাতই পড়তে পারবে না মসজিদে গিয়ে। সম্প্রতি সরকারী প্রশাসনের লোক, সেনাবাহিনী, নাসাকা ও পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মসজিদে আযান দেয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। প্রথম রামাযানে তারাবীহ পড়ানোর অভিযোগে চারজন বিশিষ্ট ইমামকে গ্রেফতার করে কোথায় নিয়ে গেছে তা জানা যায়নি। বুছিডং নামে একটা জায়গায় বৌদ্ধদের চিতা রয়েছে। সেখানে রোহিঙ্গা মুসলমানদের হত্যার পর গণকবর দিচ্ছে বলে আমাদের অনেকে দেখেছেন’। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী গত জুনে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের হত্যা, ধর্ষণ ও গণগ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’। সরকার তাদেরকে রক্ষায় কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানায় সংস্থাটি।
ভারতের মহারাষ্ট্রে ১ বছরে অপুষ্টিতে ২৪ হাযার শিশুর মৃত্যু
ভারতের মহারাষ্ট্রে এক বছরে অপুষ্টিতে ভুগে ২৪ হাযারের বেশি শিশু মারা গেছে। রাজ্যের সরকারী এক প্রতিবেদনে এ মর্মান্তিক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। মহারাষ্ট্রের বিধান সভায় পেশ করা এ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়- রাজ্যে ১০ লাখ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে এবং এদের মধ্যে এক লাখ ২৪ হাযারের বেশি শিশু মারাত্মক অপুষ্টির শিকার। ভারতে এখনো সন্তান প্রসবের সময় প্রতি ১০ মিনিটে একজন মা মারা যান বলে সম্প্রতি এক তথ্যে জানা গেছে।
১৩ বছর বয়সী এক বালিকার ওপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগে ইতালির একজন খৃষ্টান ধর্মীয় পুরোহিতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর পরই রুগেইরিকে পৌরহিত্যের সব ধরনের দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নের হাযার হাযার ঘটনা এবং এ ধরনের বহু ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার খবর ফাঁস হওয়ায় ক্যাথলিক গির্জা মারাত্মক সংকটের মুখে পড়েছে। মানবাধিকার কর্মীরা মনে করছেন শিশুদের ওপর পাদ্রীদের যৌন নির্যাতনের বহু ঘটনা এখনও ফাঁস হয়নি। বিশেষ করে ইতালীসহ যেসব দেশে ক্যাথলিক খৃষ্টানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে সেসব দেশে এ ধরনের অনেক ঘটনা ধামাচাপা দেয়া হয়।
[বিয়ে না করে সাধুতা দেখানোর বানোয়াট ধর্মীয় রীতির তিক্ত ফলাফল এগুলি। অতএব নিজেদের তৈরী এসব ধর্ম ছেড়ে আল্লাহ প্রেরিত স্বভাবধর্ম ইসলামে প্রবেশ করার মধ্যেই খৃষ্টানদের মুক্তি নিহিত রয়েছে (স.স.)]
দারিদ্রে্যর কাছে পরাজিত ইসরাঈলীর আত্মহত্যার চেষ্টা
ইহুদীবাদী ইসরাঈলের রাজধানী তেলআবিবে বিক্ষোভের সময় এক অসহায় গরীব ইসরাঈলী গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গায়ে আগুন দেয়ার আগে তিনি বলেন, তার দুর্দশার জন্য প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দায়ী। ৫২ বছর বয়সী বিক্ষোভকারী গায়ে পেট্রোল ঢেলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে ইসরাঈলের বহুল প্রচারিত দৈনিক ‘হারেতজ’। ঘটনাস্থল থেকে ব্যক্তির লেখা একটি চিঠি উদ্ধার করা হয়েছে। তাতে লেখা ছিল ‘ইসরাঈল আমার সম্পদ চুরি-ডাকাতি করেছে এবং আমাকে অসহায় অবস্থায় ফেলেছে’।
ভারতে ৬২ রূপীতে সন্তান বিক্রি
ভারতের বিহারে অভাবের তাড়নায় চার মাসের শিশু সন্তানকে ৬২ রূপীতে বিক্রি করে দিয়েছে এক অসহায় মা। বিহারের ফরবিশগঞ্জ স্টেশনে মাত্র ৬২ রূপীর বিনিময়ে শান্নু খাতুন নামে ৩৫ বছরের মা এক নেপালী দম্পতির হাতে নিজের যমজ সন্তানকে তুলে দেন। অক্ষম স্বামী ও অন্য তিন সন্তানকে বাঁচাতেই স্বেচ্ছায় এ কাজ করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ভূগর্ভস্থ পানি দিয়ে ৪০০ বছর চলতে পারবে নামিবিয়া!
আফ্রিকার মরু-অধ্যুষিত দেশ নামিবিয়ার উত্তরাঞ্চলে মাটির নীচেই আবিষ্কৃত হয়েছে সুপেয় পানির এক বিশাল আধার। ঐ পানি দিয়ে আগামী অন্তত ৪০০ বছর এতদঞ্চলের লাখো মানুষের প্রয়োজন মেটানো সম্ভব হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে শত শত বছর ধরে এ দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ পানি অন্তত ১০ হাযার বছরের পুরোনো। কিন্তু আধুনিক অন্যান্য উৎস থেকে পাওয়া পানির চেয়ে তা অনেক বেশি পরিষ্কার ও পানযোগ্য। পানীয় জলের চাহিদা মেটানোর উদ্দেশ্যে নামিবিয়ার সরকার জার্মানী ও ইউরোপের অন্যান্য দেশের গবেষকদের সহায়তায় ভূগর্ভস্থ পানির অনুসন্ধান করছিল। অনুসন্ধান দলটি অ্যাঙ্গোলা ও নামিবিয়া সীমান্তে বহমান এই বিশাল পানির আধার আবিষ্কার করে।
[সারা পৃথিবীতেই আল্লাহর নে‘মত লুকিয়ে আছে ভূগর্ভে, ভূপৃষ্ঠে ও অন্তরীক্ষে। বাংলাদেশ-এর ভূগর্ভে অনুরূপ লুকিয়ে আছে অফুরন্ত সম্পদ। সেগুলো উঠিয়ে কাজে লাগানোর দায়িত্ব আমাদের (স.স.)]
রাশিয়ায় মাদকের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করলেন পুতিন
রাশিয়া থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্র ও ওয়েবসাইটে মাদক দ্রব্যের বিজ্ঞাপনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আইনটি প্রশাসনিকভাবে প্রকাশ করার পর থেকেই ওয়েবসাইটগুলোতে বিজ্ঞাপনের এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। তবে রাশিয়ার পত্রিকাগুলোতে মাদকদ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধে কিছুটা বিলম্ব হবে। কারণ পত্রিকাগুলো বিজ্ঞাপন প্রচারে মাদক কোম্পানীগুলোর সঙ্গে বছরের শুরুতেই চুক্তিবদ্ধ হয়। তাই আগামী বছর অর্থাৎ ২০১৩ সালের জানুয়ারী থেকে পত্রিকার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
ভারতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রণব মুখার্জীর বিজয়
স্বাধীনতার ৬৫ বছরের ইতিহাসে প্রথম বাঙালী রাষ্ট্রপতি
ভারতের স্বাধীনতার ৬৫ বছরের ইতিহাসে প্রথম বাঙালী হিসাবে গত ২৫ জুলাই ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নিলেন পশ্চিম বঙ্গের প্রণব মুখার্জী। আগামী ৫ বছরের জন্য তিনিই ১২০ কোটি মানুষের দেশ ভারতের রাষ্ট্রপতি। যোগ্যতাবলেই সম্মানজনক এ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন কমবেশি সবার কাছে শ্রদ্ধাভাজন এ প্রবীণ নেতা। প্রথম জীবনে শিক্ষক ও সাংবাদিক এই নেতা ১৯৬৯ সালে কংগ্রেসের হয়ে প্রথম রাজ্যসভার সদস্য হন। ১৯৮০ সালে রাজ্যসভার দলনেতা। ১৯৮২-৮৪ সালে প্রথমবার দায়িত্ব পান কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর। ১৯৯১ সালে পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান হন। এরপর ১৯৯৫ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত কয়েক দফায় কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও অর্থমন্ত্রী হয়েছেন।
ভারতীয় রাজনীতির ‘চাণক্য’ এবং বর্তমান ইউপিএ সরকারের ক্রাইসিস ম্যানেজার হিসাবে পরিচিত, দীর্ঘ ৪৩ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ প্রণব মুখোপাধ্যায় (৭৭) পশ্চিম বঙ্গের বীরভূম যেলার মিরাটি গ্রামের এক নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ পরিবারে ১৯৩৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শ্বশুরবাড়ী বাংলাদেশের নড়াইল যেলার সদর থানার ভদ্রবিলা গ্রামে এবং তিনি মুর্শিদাবাদের জঙ্গীপুর থানার এম.পি। তবে প্রেসিডেন্ট হওয়ায় এখন ওটা শূন্য হ’ল।
ভারতে ধর্ষণের ঘটনায় শীর্ষে রাজধানী দিল্লী
ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর পরিসংখ্যান-রিপোর্ট অনুযায়ী দেশটিতে গত তিন বছরে ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। দেশের বড় শহরগুলোর মধ্যে ধর্ষণের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাজধানী দিল্লী। কলকাতার স্থান তালিকায় তৃতীয়। রাজ্যভিত্তিক পরিসংখ্যানে পশ্চিমবঙ্গের স্থান দ্বিতীয় এবং সবার উপরে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ। ২০০৯ সালে মধ্যপ্রদেশে ২৯৯৮টি, ২০১০ সালে ৩১৩৫টি এবং ২০১১ সালে ৩৪০৬টি ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। দেশের চারটি মেট্রো শহরে ধর্ষণের পরিসংখ্যান বলছে, দিল্লী শহরে সব থেকে বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ২০০৯ সালে দিল্লীতে ৪শ’ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে, ২০১০ ও ২০১১ সালে এই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ৪১৪ ও ৪৫৩ তে।
ইউরোপ ও ভারতে ইসলামবিদ্বেষী তৎপরতা ক্রমেই বাড়ছে
ইউরোপে ইসলাম-বিদ্বেষী তৎপরতা বেড়ে চলেছে এবং ভারতের গুজরাটের মুসলমানরা এখনও নির্যাতনের ভয়ে সন্ত্রস্ত। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ২০১১ সালের ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপে ইসলাম-বিদ্বেষী তৎপরতা ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বাড়তে থাকায় তা উদ্বেগের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ঘোমটা বা নেকাব নিষিদ্ধ করার আইন পাসের জন্য ইউরোপের কোনো কোনো সরকারের তৎপরতা বাড়তে থাকায় সেখানকার মুসলিম নারীদের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। ইউরোপীয় নিরাপত্তা ও সহযোগিতা সংস্থাও ভিয়েনায় এক সম্মেলনে বলেছে, ‘ইউরোপে ইসলাম-বিদ্বেষী তৎপরতা এখন গণহত্যার পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ইসলাম-বিদ্বেষী নরওয়ের এক যুবকের সাম্প্রতিক হত্যাযজ্ঞই এর দৃষ্টান্ত।’
কৃষ্ণাঙ্গ বলে দম্পতির বিয়ে হয়নি মার্কিন গির্জায়
যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ দম্পতি চার্লস ও টিএন্ড্রিয়া উইলসন গির্জায় বিয়ে করতে গেলে কালো হওয়ায় যাজক তাদের বিয়ে দিতে রাজি হননি। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস রাজ্যে এ ঘটনা ঘটে। যাজক স্ট্যান হুইদারফোর্ড এবিসিকে জানান, ক্রিস্টাল স্প্রিংসের ফাস্ট ব্যাপ্টিস্ট চার্চটি তার যাত্রা শুরু করে ১৮৮৩ সালে। তখন থেকে এ পর্যন্ত কখনও এখানে কালোদের বিয়ে পড়ানো হয়নি।
পাকিস্তানের অধিকাংশ মানুষ ইসলামী অনুশাসনের পক্ষে
পাকিস্তানের ৮২% মানুষ পবিত্র কুরআনের নীতি অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনার পক্ষে। আমেরিকার ‘পিউ রিসার্চ সেন্টার’ কর্তৃক পাকিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি দেশে পরিচালিত এক জনমত জরিপ থেকে এ তথ্য উঠে এসেছে। জরিপে দেখা যায়, দেশটির জনগণের বিরাট অংশ উগ্র ও চরমপন্থার বিরোধিতা করেছে। এ জরিপে দেখা যায়, জর্দানের শতকরা ৭২% এবং মিসরের শতকরা ৬০% মানুষ ইসলামী আইনের পক্ষে। তিউনিসিয়া ও মিসরের জনগণের শতকরা ৬৭ ও ৬৩% গণতন্ত্রের পক্ষে। এছাড়া লেবাননের বৃহত্তর জনসমাজ ইসলামী আইন চান এবং তারা মনে করেন দেশ শাসনের ক্ষেত্রে ইসলামের একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা থাকা উচিত।
মিসরে নেকাব পরিহিতাদের স্বতন্ত্র টিভি চ্যানেল
মিসরে মারিয়া টিভি নামে নতুন একটি টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচার শুরু করেছে। এই চ্যানেলটির বৈশিষ্ট্য হল নেকাব পরিহিত নারীরাই কেবল এতে অংশ নেবেন। রামাযান মাসের প্রথম দিন থেকেই এটির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইউরোপের অনেক দেশের মতো মিসরেও নারীদের নেকাব পরা নিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে নানা বিড়ম্বনার শিকার হ’তে হয়। একই কারণে চাকরি, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্যেরও শিকার হ’তে হয় বলে এনডিটিভির এক খবরে বলা হয়েছে। রক্ষণশীল সালাফী ইসলামপন্থীদের ধর্মীয় চ্যানেলে দৈনিক ৬ ঘণ্টা করে অনুষ্ঠান প্রচার করবে মিসরের মারিয়া টিভি।
মিসরে নতুন মন্ত্রীসভার শপথ গ্রহণ
মিসরের নবনিযুক্ত মন্ত্রীসভার শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদ মুরসী। সাবেক সেচ ও পানিসম্পদমন্ত্রী হিশাম কান্দিলকে প্রধানমন্ত্রী করে তার নেতৃত্বে এ মন্ত্রীসভা গঠিত হয়। ৩৫ সদস্যের নতুন মন্ত্রীসভায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন মিসরের সেনা প্রধান ফিল্ড মার্শাল হোসেন তানতাবী। মন্ত্রীসভার গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো মূলত লাভ করেছেন মুসলিম ব্রাদারহুড এবং এর রাজনৈতিক মিত্ররা। পাশাপাশি মোবারক পরবর্তী সেনা সমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকারের সাত জন সদস্যও অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন নতুন মন্ত্রীসভায়। তাদের মধ্যে সেনা পরিষদ সমর্থিত ক্যাবিনেটের অর্থমন্ত্রী মুমতায সাঈদ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুহাম্মাদ কামাল আমরও রয়েছেন। দু’জন নারীকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন সংখ্যালঘু খৃষ্টান সম্প্রদায়ের। শপথ গ্রহণের পরপরই মিসরের প্রধানমন্ত্রী হিশাম কান্দিল বলেন, ‘আমরা জনগণের সরকার, কোনো বিশেষ ধারা বা গোষ্ঠীকে প্রতিনিধিত্ব করছি না আমরা’।
লিবিয়ার সাধারণ নির্বাচনে জিব্রীল জয়ী
লিবিয়ার সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়েছে মাহমুদ জিব্রীলের নেতৃত্বাধীন জোট। কিন্তু ঐতিহাসিক এ নির্বাচনে কোন জোটই এককভাবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন পায়নি। তবে উভয়পক্ষই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে জোট গঠন করে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের চেষ্টা করছে। ফলাফল অনুযায়ী, দেশটির জাতীয় পরিষদের ২শ’ আসনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সংরক্ষিত ৮০ আসনের ৩৯টিতে জয়ী হয়েছে জিব্রীলের ন্যাশনাল ফোর্সেস অ্যালায়েন্স। অপরদিকে আন্তর্জাতিক সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থিত দেশটির সর্ববৃহৎ ইসলামপন্থী দল জাস্টিস অ্যান্ড কন্সট্রাকশন পার্টি পেয়েছে ১৭টি আসন। বাকি ১২০টি আসন স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল। ১৯৬৯ সালে কর্নেল গাদ্দাফী ক্ষমতায় আসার পর লিবিয়ায় এই প্রথমবারের মতো গণপরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হ’ল। ১৯৫২ সালে লিবিয়া স্বাধীন হওয়ার কিছু দিন পর দেশটিতে প্রথম অবাধ গণপরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সর্বশেষ জাতীয় ভোট অনুষ্ঠিত হয় ১৯৬৫ সালে। তাতে কোনো রাজনৈতিক দল অংশ নেওয়ার অনুমতি পায়নি।
অপরাধী চেনাবে মাইন্ড রিডিং হেলমেট
মার্কিন টেকনোলজিক্যাল কোম্পানী ভেরিটাস সায়েন্টিফিক তৈরি করছে মাইন্ড রিডিং হেলমেট। ব্রেইন ওয়েভ মনিটর করে অপরাধ করার আগেই বিপজ্জনক ব্যক্তিকে শনাক্ত করাই মাইন্ড রিডিং হেলমেট তৈরির মূল উদ্দেশ্য। ভেরিটাস সায়েন্টিফিকের তৈরি মাইন্ড রিডিং হেলমেটটি দেখতে মোটরসাইকেল আরোহীর হেলমেটের মতোই হবে। আর হেলমেটটির ভেতরে থাকবে মেটাল ব্রাশ সেন্সর। হেলমেট পরা ব্যক্তির সামনে দেখানো হবে বিভিন্ন ছবি। হেলেমেটের সেন্সরগুলো ইইজির মাধ্যমে ব্রেইন ওয়েভ মনিটর করে ডাটা সংগ্রহ করবে। আর ওই ডাটা বিশ্লেষণ করেই সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে ব্যক্তিটি বিপজ্জনক বা অপরাধপ্রবণ মানসিকতার কি-না।
কম্পিউটারভিত্তিক রেললাইন নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র আবিষ্কার
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রুয়েটের ৪র্থ বর্ষের ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ছাত্র খন্দকার মারছুছ আবিষ্কার করল কম্পিউটার ভিত্তিক রেললাইন নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র। বাংলাদেশের রেল লাইনে বিদ্যমান ক্রসিংগুলো সাধারণত গেটম্যান দ্বারা পরিচালিত হয়। এছাড়া অনেক জায়গায় দেখা যায় গেটম্যানও থাকে না। ফলশ্রুতিতে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এছাড়া গেটম্যানের সামান্য অবহেলাও একটি বড়রকম দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এর সমাধানকল্পে মারছুছ আবিষ্কার করল এ যন্ত্রটি। ট্রেন আসার নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই যন্ত্রটি রেলক্রসিংয়ের গেটটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করে দেবে। আবার ট্রেনটি ক্রসিং পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে দেবে। ফলে অন্যান্য গাড়ি চলাচল শুরু করতে পারবে। এছাড়া বর্তমানে বিদ্যমান গেটনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় সময় সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। হয়তো বা দেখা গেল ট্রেন আসার অনেক আগেই অথবা নির্দিষ্ট সময়ের পরে গাড়ির রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে। ফলে একদিকে যেমন দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও বেড়ে যায় তেমনি অপচয় হয় সময়ের। কিন্তু এ যন্ত্র সম্পূর্ণরূপে এই সমস্যাগুলো দূর করতে সক্ষম বলে তিনি দাবি করেন। এ যন্ত্রের সঙ্গে কম্পিউটার সংযোগ থাকার ফলে প্রতি মুহূর্তে ট্রেন আসা-যাওয়া বা গেট কাজ করছে কিনা এগুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে দূর থেকে বসে পর্যবেক্ষণ এবং নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। একটি কম্পিউটার থেকে প্রায় ৪০-৫০টি গেট এক সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে তিনি জানান।
অন্ধত্বের কারণ হ’তে পারে কম্পিউটার স্ক্রিন
কম্পিউটার মনিটর বা টেলিভিশনের স্ক্রিনের সামনে লম্বা সময় কাটানো চোখের জন্য যে ক্ষতিকর তা নতুন কোনো খবর না হলেও এর ভয়াবহতা এতদিন অজানাই ছিল। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জার্নাল অব পিডিয়াট্রিকসের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী অন্ধত্বের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে ব্যবহারকারীদের স্ক্রিন আসক্তি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিশুরা কম্পিউটার মনিটর এবং টেলিভিশনের সামনে প্রতিদিন নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে শতকরা ৬৬ ভাগ সময় বেশি কাটায়। বিশ্বব্যাপী আরো কয়েক কোটি মানুষকে কাজের খাতিরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় কম্পিউটার মনিটরের সামনে। কম্পিউটার মনিটর বা টিভি স্ক্রিনের সামনে এভাবে লম্বা সময় কাটালে তা ধীরে ধীরে চোখের এতই ক্ষতি করে যে, অন্ধ হয়ে যেতে পারেন উজ্জ্বল স্ক্রিনের সামনে লম্বা সময় কাটানো ব্যক্তিরা। দীর্ঘ সময় স্ক্রিনের সামনে কাটালে ক্লান্ত হয়ে পড়ে চোখের ছোট ছোট মাংসপেশী। আর সাধারণ একজন মানুষের চোখের পাতা পড়ে প্রতি মিনিটে ১২ থেকে ১৫ বার। কিন্তু ইলেকট্রনিক স্ক্রিনের সামনে থাকলে তা কমে ৪ থেকে ৫ বারে দাঁড়ায়। স্ক্রিনের দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে ‘কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম’ বা সিভিএসে আক্রান্ত হ’তে পারে ব্যবহারকারীরা। এতে ঘোলা দৃষ্টি, মাথাব্যথা এবং আলোর প্রতি মারাত্মক সংবেদনশীলতার শিকার হন ব্যবহারকারীরা। চোখের এমন ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে কিছুক্ষণ পর পর স্ক্রিনের সামনে থেকে উঠে যতটা সম্ভব দূরে বসে সময় কাটানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও স্ক্রিনের উজ্জ্বল আলো থেকে চোখ রক্ষা করতে গ্লেয়ার প্রোটেক্টর ব্যবহারের পরামর্শও দিয়েছেন তারা।
স্প্রে করে জোড়া দেয়া যাবে ভগ্ন হৃদয়!
১০ হাযার ভোল্টের থ্রিডি ইলেকট্রিক স্প্রেয়ার হৃৎপিন্ডের ক্ষত জোড়া দেবে জীবন্ত হার্ট সেল ছুঁড়ে দিয়ে। হার্ট অ্যাটাকের ফলে সৃষ্ট হৃৎপিন্ডের ক্ষত সারাতে চিকিৎসকদের শেষ ভরসা হ’তে পারে এই ‘স্প্রে-প্যাচ’ প্রযুক্তি। হার্ট অ্যাটাক হ’লে মারা যায় হৃৎপিন্ডের কিছু সেল। পরে রোগী সুস্থ হয়ে উঠলেও ঐ মৃত হার্ট সেলগুলো ঠিক হয় না বরং থেকে যায় ক্ষত। পরে হৃৎপিন্ডে রক্ত সঞ্চালনে বাধা সৃষ্টি করতে পারে হৃৎপিন্ডের ঐ মৃত অংশটুকু। এ কারণে হৃৎপিন্ডের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যায় ভোগেন হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত অনেক ব্যক্তি।
দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতের ঐ সমস্যা সমাধানে জীবন্ত হার্ট সেল পেইন্টের মতো হৃৎপিন্ডে ছুঁড়ে দেবার প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা করছেন বৃটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের বিজ্ঞানীরা। হৃৎপিন্ডের ভেতরের ক্ষত সারিয়ে তোলা সম্ভব হ’তে পারে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
অফিসে খবরদারী করবে রোবট বস!
কর্মীদের ওপর খবরদারী করতে রোবট বস বানাচ্ছে মাইক্রোসফট। ঐ রোবট বসের বদৌলতে ছুটিতে গেলেও অফিসের ওপর খবরদারী করতে পারবেন বস।
রেডমন্ড, ওয়াশিংটনের রিসার্চ ল্যাবে ঐ রোবট বসটি বানাচ্ছেন মাইক্রোসফটের ইঞ্জিনিয়াররা। মাইক্রোসফটের রোবটটিতে থাকছে দু’টি ক্যামেরা ও একটি হাই ডেফিনেশন ডিসপ্লে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ওয়েবক্যাম আছে এমন একটি কম্পিউটারের সামনে বসেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে রোবটটি।
রোবটটি ব্যবহার করে দূরে থেকেও রীতিমতো অফিসে ঘুরে বেড়াতে পারবেন এর চালক। কথা বলতে পারবেন কর্মীদের সঙ্গে। রোবটটির প্রক্সি ক্যামেরাকে নির্দিষ্ট একজন ব্যক্তির ওপর ফোকাস করে তার কথা বলতে প্রশিক্ষণ দেয়াও সম্ভব।
পবিত্র মাহে রামাযান উপলক্ষে র্যালী
হাটগাঙ্গোপাড়া, বাগমারা, রাজশাহী ১৯ জুলাই বৃহস্পতিবার :
অদ্য বাদ আছর ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ হাটগাঙ্গোপাড়া এলাকার উদ্যোগে পবিত্র মাহে রামাযান উপলক্ষে এক র্যালী অনুষ্ঠিত হয়। হাটগাঙ্গোপাড়া বাজার আহলেহাদীছ জামে মসজিদ থেকে শুরু হয়ে বাজারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও রাস্তা প্রদক্ষিণ করে পুনরায় মসজিদে এসে র্যালীটি সমাপ্ত হয়। এ সময় সংগঠনের বিভিন্ন প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়। র্যালী শেষে হাটগাঙ্গোপাড়া বাজার মসজিদে মাহে রামাযানের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘সোনামণি’র কেন্দ্রীয় পরিচালক ইমামুদ্দীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় তাবলীগ সম্পাদক আব্দুল হালীম বিন ইলিয়াস। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী-উত্তর সাংগঠনিক যেলা ‘যুবসংঘ’-এর সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মুহসিন।
বগুড়া ১৯ জুলাই বৃহস্পতিবার : অদ্য বাদ আছর ‘সোনামণি’ বগুড়া যেলার উদ্যোগে পবিত্র মাহে রামাযান উপলক্ষে এক র্যালী অনুষ্ঠিত হয়। শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠ থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সমূহ প্রদক্ষিণ করে সাতমাথায় এসে পথসভার মাধ্যমে র্যালীটি সমাপ্ত হয়। পথসভায় বক্তব্য রাখেন ‘সোনামণি’ বগুড়া যেলার প্রধান উপদেষ্টা ও যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম, যেলা ‘যুবসংঘে’র সভাপতি ও ‘সোনামণি’ যেলা উপদেষ্টা মুহাম্মাদ আব্দুস সালাম, যেলা ‘সোনামণি’-এর পরিচালক আব্দুস সালাম, সহ-পরিচালক ও সাবগ্রাম মাদ্রাসাতুল হাদীছ আস-সালাফিইয়াহ ও দারুল আইতাম এর শিক্ষক আব্দুস সালাম। র্যালিতে চার শতাধিক সোনামণি ও সুধী অংশগ্রহণ করেন।
সাতক্ষীরা ১৯ জুলাই বৃহস্পতিবার : অদ্য বাদ আছর ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ সাতক্ষীরা যেলার উদ্যোগে মাহে রামাযানের পবিত্রতা রক্ষার দাবীতে এক র্যালী অনুষ্ঠিত হয়। শহরের আব্দুর রাযযাক পার্ক থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় আব্দুর রাযযাক পার্কে এসে র্যালীটি সমাপ্ত হয়। এই সময় উপস্থিত ছিলেন যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নান, সহ-সভাপতি ফযলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আলতাফ হোসাইন, যেলা ‘যুবসংঘে’র সভাপতি মুহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম, সহ-সভাপতি হাফেয মুহাম্মাদ মুহসিন, সাবেক কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক অধ্যাপক শাহীদুযযামান ফারূক, যেলা ‘যুবসংঘে’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুযাযফর রহমান প্রমুখ।
আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল
ধামরাই, ঢাকা ২৭ জুলাই, ৭ রামাযান শুক্রবার : অদ্য বাদ জুম‘আ ঢাকা যেলার ধামরাই থানাধীন ইকুরিয়া পূর্বপাড়া আহলেহাদীছ জামে মসজিদে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্থানীয় কাকরান দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা সাইফুল ইসলাম বিন হাবীবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ডঃ মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক জনাব তাসলীম সরকার। অনুষ্ঠান শেষে অধ্যাপক হাবীবুর রহমানকে সভাপতি ও ডাঃ আতাউর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০ সদস্য বিশিষ্ট ‘আন্দোলন’-এর ইকুরিয়া এলাকা এবং নাছরুল্লাহকে সভাপতি ও রুবেল মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট ‘যুবসংঘ’-এর ইকুরিয়া এলাকা কমিটি গঠন করা হয়।
উল্লেখ্য যে, ইকুরিয়া পূর্বপাড়া জামে মসজিদে ডঃ মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, ইকুরিয়া মধ্যপাড়া জামে মসজিদে জনাব সাইফুল ইসলাম বিন হাবীব ও ইকুরিয়া বড়পাড়া জামে মসজিদে তাসলীম সরকার জুম‘আর খুৎবা পেশ করেন। ইকুরিয়ায় ‘আন্দোলন’ ও ‘যুবসংঘে’র এলাকা কমিটি গঠিত হওয়ায় স্থানীয় মুছল্লী ও সুধীবৃন্দের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়ে এবং ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’-এর পতাকা তলে সমবেত হয়ে দাওয়াতী কাজ আঞ্জাম দেওয়ার জন্য তারা দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সাভার, ঢাকা ২৭ জুলাই, ৭ রামাযান শুক্রবার : অদ্য বাদ আছর ঢাকার সাভার থানাধীন গেন্ডা বাজার সংলগ্ন ৩১ রাজাবাড়ীর জনাব আশরাফুল ইসলামের বাসায় ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ সাভার এলাকার উদ্যোগে এক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এলাকা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা জনাব আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মাসিক আত-তাহরীক সম্পাদক ও ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ডঃ মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক তাসলীম সরকার ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিন হাবীব। অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন সাভার এলাকা ‘আন্দোলন’-এর সহ-সভাপতি কারী হারূনুর রশীদ ও অর্থ সম্পাদক ডাঃ আব্দুল জাববার প্রমুখ।
সূদ ভিত্তিক নয়, যাকাত ভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থা চালু করুন!
-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত
ঢাকা ৩০ জুলাই সোমবার : অদ্য বাদ আছর ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ ঢাকা যেলার উদ্যোগে ঢাকার ‘ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স’ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির ভাষণে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব উপরোক্ত আহবান জানান। তিনি বলেন, সূদ ভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থার ফলে পুঁজিপতিদের সম্পদ বৃদ্ধি পায়, কিন্তু গরীব নিঃস্ব হয়ে পথের ভিখারী হয়ে যায়। অথচ ইসলাম দেড় হাযার বছর আগেই এই অসম অর্থনীতিকে ধিক্কার জানিয়ে চূড়ান্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং তদস্থলে যাকাত ভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থা চালুর নির্দেশ প্রদান করেছে। যার মাধ্যমে সমাজের গাছতলা ও পাঁচতলার মধ্যেকার প্রভেদ দূরীভূত হওয়া সম্ভব। তিনি সমবেত কর্মী ও সুধীদেরকে সঠিকভাবে যাকাত আদায়ের এবং তা হকপন্থী সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানে দান করার উদাত্ত আহবান জানান।
ঢাকা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি আলহাজ্জ মুহাম্মাদ আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, দারুল ইফতা-র সদস্য ও আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী নওদাপাড়া, রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুযাফফর বিন মুহসিন, সাধারণ সম্পাদক আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব, ‘সোনামণি’র কেন্দ্রীয় পরিচালক ইমামুদ্দীন প্রমুখ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ‘আন্দোলন’-এর মজলিসে শূরা সদস্য ও কুমিল্লা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা ছফিউল্লাহ, কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য অধ্যাপক জালালুদ্দীন, ঢাকা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক তাসলীম সরকার, তাবলীগ সম্পাদক মাওলানা শামসুর রহমান আযাদী, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা শফীকুল ইসলাম, ঢাকা যেলা ‘যুবসংঘ’-এর সভাপতি ছফিউল্লাহ খান প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন ঢাকা যেলা ‘আন্দোলন’-এর অর্থ সম্পাদক কাযী হারূনুর রশীদ।
উল্লেখ্য যে, বাদ মাগরিব হ’তে রাত সাড়ে আট-টা পর্যন্ত আয়োজিত প্রাণবন্ত প্রশ্নোত্তর পর্বে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত শ্রোতাদের মাসআলা-মাসায়েল ও সংগঠন বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
শরীফপুর, গাযীপুর, ৩১ জুলাই মঙ্গলবার : অদ্য বা‘দ যোহর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব গাযীপুর যেলা ‘যুবসংঘ’-এর সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ যুবায়েরের অসুস্থ পিতা জনাব সিরাজুদ্দীন মোল্লার সাথে সাক্ষাতের জন্য এক সংক্ষিপ্ত সফরে গাযীপুর যেলার শরীফপুরে গমন করেন। সেখানে পৌঁছে তিনি স্থানীয় নবনির্মিত আবু বকর (রাঃ) জামে মসজিদে যোহরের ছালাত আদায়ের পর উপস্থিত মুছল্লীদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আহলেহাদীছ আন্দোলনের মৌলিক দাওয়াত তুলে ধরেন। অতঃপর অসুস্থ রোগীর বাসায় গিয়ে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং তাঁর সার্বিক সুস্থতা কামনা করে দো‘আ করেন। উল্লেখ্য যে, দীর্ঘদিন যাবৎ প্যারালাইসিস রোগে শয্যাশায়ী জনাব সিরাজুদ্দীন মোল্লা মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের সাথে সাক্ষাতের প্রবল আকাংখ্যা পোষণ করেছিলেন। তাই ঢাকা সফরের এক ফাঁকে তিনি এই বয়োবৃদ্ধ শুভাকাঙ্খীর সাথে সাক্ষাৎ করেন।
এসময় আমীরে জামা‘আতের সফরসঙ্গী ছিলেন মাসিক আত-তাহরীক সম্পাদক ও ‘আন্দোলন’-এর প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ সঊদী আরব শাখার সাবেক সভাপতি জনাব আবুল কালাম আযাদ, ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব এবং ঢাকা যেলা ‘আন্দোলন’-এর অর্থ সম্পাদক কাযী হারূনুর রশীদ। একই দিনে তিনি ‘আন্দোলন’-এর ঢাকা অফিসে ইফতার করেন ও দায়িত্বশীলদের সঙ্গে বৈঠক করেন। অতঃপর তিনি রাতে বায়তুল মুকাররম চত্বরে আয়োজিত মাসব্যাপী ই.ফা.বা. বইমেলায় হাদীছ ফাউন্ডেশন বুক স্টল পরিদর্শন করেন।
রাজশাহী, ০৬ আগস্ট, সোমবার : অদ্য দারুলহাদীছ বিশ্ববিদ্যালয় (প্রস্তাবিত) জামে মসজিদে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ, রাজশাহী মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব বলেন, সার্বিক জীবনে আল্লাহভীতিই ব্যক্তি ও জাতীয় উন্নয়নের চাবিকাঠি। তিনি বলেন, যে আল্লাহর ভয়ে আমরা ছিয়াম অবস্থায় গোপনেও এক গ্লাস পানি পান করি না, সেই আল্লাহর ভয়ে কি ইফতার থেকে সাহারী পর্যন্ত যাবতীয় হারাম থেকে বিরত থাকতে পারি না? তিনি বলেন, এই একমাসের প্রশিক্ষণ আগামী ১১ মাস ধরে রাখতে পারলেই আমাদের ইহকালীন মঙ্গল ও পরকালীন মুক্তি সম্ভব।
মহানগর ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা রুস্তম আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত ইফতার মাহফিলে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় যুববিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক আমীনুল ইসলাম, মাসিক আত-তাহরীক সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, ‘আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়ার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, মহানগর ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ সিরাজুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন মহানগর ‘আন্দোলন’-এর দফতর সম্পাদক অধ্যাপক মবিনুল ইসলাম সহ মহানগর কমিটির অন্যান্য সদস্য বৃন্দ।
কৃতি ছাত্র সংবর্ধনা
সাতক্ষীরা ১৯ জুলাই বৃহস্পতিবার : অদ্য বেলা ১১-টায় ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ সাতক্ষীরা সাংগঠনিক যেলার উদ্যোগে সাতক্ষীরা পৌর অডিটরিয়ামে ২০১২ সালের এস.এস.সি/দাখিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্রদেরকে এক সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। যেলা ‘যুবসংঘ’-এর সভাপতি মুহাম্মাদ সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মাদ নযরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি নূরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব, সাবেক কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক শেখ রফীকুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নান, সহ-সভাপতি মাওলানা ফযলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আলতাফ হোসাইন, সদর উপযেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মুহাম্মাদ আব্দুল খালেক, যেলা ‘যুবসংঘে’র সহ-সভাপতি হাফেয মুহাম্মাদ মুহসিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামূন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুযাফফর রহমান প্রমুখ।
আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল
রাজশাহী ০২ আগস্ট বৃহস্পতিবার : অদ্য বেলা ৩-টায় নগরীর সাফাওয়াং চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রদত্ত প্রধান অতিথির ভাষণে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব বলেন, নোংরা দলীয় রাজনীতি ও অনৈসলামী সংস্কৃতির নামে শয়তানী আগ্রাসন হ’তে তোমরা সর্বদা দূরে থাকবে। আখেরাতে সফলতা লাভকে জীবনের লক্ষ্য হিসাবে নির্ধারণ করবে। জ্ঞানার্জনের জন্য আমি তোমাদেরকে রাজনীতির মিছিলে নয়, বরং সর্বদা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে ও লাইব্রেরীতে দেখতে চাই। তোমরা প্রকৃত মানুষ হও। শিক্ষা মানুষকে প্রকৃত মানুষে পরিণত করে। জীবনের সর্বক্ষেত্রে তোমরা কুরআন ও হাদীছের দু’টি আলোকস্তম্ভ থেকে আলো নিয়ে পথ চলবে। ইনশাআল্লাহ তোমরা ইহকাল ও পরকালে সফলকাম হবে।
‘যুবসংঘ’ রাবি শাখার সভাপতি হাফেয মুকাররম-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত ইফতার মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সভাপতি মুযাফফর বিন মুহসিন, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী নওদাপাড়ার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ আবু আব্দুল্লাহ প্রমুখ। অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব। এতে উত্তর প্রদান করেন কেন্দ্রীয় সভাপতি মুযাফফর বিন মুহসিন। অনুষ্ঠানটি বিকাল ৩ টা থেকে শুরু হয়ে ইফতার-এর মাধ্যমে শেষ হয়।
রাজশাহী ০৮ আগস্ট বুধবার : অদ্য বেলা সাড়ে ৩-টায় নগরীর সাফাওয়াং চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ রাজশাহী মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রদত্ত প্রধান অতিথির ভাষণে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব বলেন, যে কোন মূল্যে নিজেকে আল্লাহর পথে ধরে রাখো। আখেরাতে সফলতা লাভকে জীবনের লক্ষ্য হিসাবে গ্রহণ করো। পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যে তোমরা আত্মনিবেদিত হও!
মহানগর ‘যুবসংঘে’র সভাপতি মুখতারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত ইফতার মাহফিলে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাসিক আত-তাহরীক সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়ার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় মুবাল্লিগ শরীফুল ইসলাম, ‘যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল লতীফ ও যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি ডাঃ ইদরীস আলী। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন ‘যুবসংঘ’ রাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মান্নান।
মৃত্যু সংবাদ
‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মজলিসে শূরা সদস্য ও রাজশাহী যেলার অর্থ সম্পাদক মাস্টার মুহাম্মাদ আব্দুল খালেক (৬৫) গত ১৮ জুলাই সকাল ১১-টায় রাজশাহী যেলার গোদাগাড়ী থানাধীন উপরবিল্লী গ্রামের নিজ বাড়ীতে ইন্তিকাল করেন। ইন্নালিল্লা-হি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে রেখে গেছেন। একই দিন বিকাল ৬-টায় তাঁর নিজ গ্রাম উপরবিল্লীতে তাঁর জানাযার ছালাত অনুষ্ঠিত হয়। জানাযার ছালাতে ইমামতি করেন মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় দফতর ও যুববিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক আমীনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক ডঃ মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম, ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় অফিস সহকারী মোফাক্ষার হোসাইন ও আনোয়ারুল হক, রাজশাহী যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি ডা. ইদ্রী্স আলী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
মাস্টার আব্দুল খালেক প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর সক্রিয় কর্মী ছিলেন। সংগঠনের অধীনে মানোন্নয়ন পরীক্ষার মাধ্যমে তিনি কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সদস্য মানে উন্নীত হন। ১৯৯৪ সালে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ গঠিত হওয়ার পর তিনি আন্দোলনে যোগ দেন। তিনি এ সংগঠনের কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য ছিলেন। তিনি ছিলেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ‘আন্দোলন’-এর একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী।
উল্লেখ্য, তিনি ১৯৫৯ সালে ঝিনা ফ্রী প্রাইমারী স্কুল হ’তে ৫ম শ্রেণী পাশ করে কাকনহাট উচ্চবিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হন। ১৯৬৫ সালে এস.এস.সি পরীক্ষায় ২য় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। অতঃপর ১৯৬৯ সালে ১ম বিভাগে রাজশাহী বোর্ড থেকে এইচ.এস.সি পাশ করেন। ১৯৭২ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসাবে বি.এ ডিগ্রী লাভ করেন। স্মর্তব্য যে, তিনি মেধাবী ছাত্র হিসাবে পরিচিত ছিলেন। ছাত্রাবস্থায় শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ১ম স্থান অধিকার করে ১৯৬৫ সালে সহকারী শিক্ষক হিসাবে চান্দলাই ভূষণা ফ্রী প্রাইমারী স্কুলে যোগদান করেন। পরের বছর রাজশাহী পিটিআই থেকে সি.এন.এড. প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি রিশিকুল, পাকড়ী, মোহনপুর ইউনিয়নের সবকটি উল্লেখযোগ্য স্কুলে অত্যন্ত সুনাম ও যোগ্যতার সাথে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি বিভাগীয় প্রমোশনে উপযেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েও তা গ্রহণ করেননি।
তিনি পেশায় শিক্ষক হ’লেও সামাজিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে ললিতনগর উচ্চ বিদ্যালয়, পাকড়ী উচ্চ বিদ্যালয়, জয়রামপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা রাখেন। এছাড়াও অত্রাঞ্চলে সংগঠনের উদ্যোগে মসজিদ, পাঠাগার, গভীর নলকূপ স্থাপনে ও অন্যান্য বিষয়ে সহায়তা করে জনসেবায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
[আমরা তাঁর রূহের মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নছীব করুন-আমীন! -সম্পাদক]
প্রশ্ন (১/৪৪১) : ইসলামিক টিভি-র প্রশ্নোত্তর পর্বে জনৈক মুফতী বলেন, ফজরের আযানের পর এবং মাগরিবের আযানের কিছু পূর্বে মসজিদে প্রবেশ করার পর তাহিইয়াতুল ওযূ বা দুখূলুল মসজিদের ছালাত আদায় করা যাবে না। তবে ফজরের সুন্নাতের সাথে বা মাগরিবের আযানের পর সুন্নাতের সাথে দুখুলুল মসজিদের নিয়তে ছালাত আদায় করলে একই সঙ্গে উভয় সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে। উক্ত কথার দলীল আছে কি?
-মুহাম্মাদ আশিকুর রহমান
ধানমন্ডি, ঢাকা।
উত্তর : ব্যাপক ভিত্তিক হাদীছের (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৭০৪) কারণে সঠিক হচ্ছে এই যে, যে কোন সময়ে মসজিদে প্রবেশ করলে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় না করে বসবে না। এ কারণে উক্ত কথা সঠিক নয়। বরং সর্বাবস্থায় ফরয ছালাতের পূর্বে সময় থাকলে ওযূ করে মসজিদে প্রবেশের পর প্রথমে তাহিইয়াতুল ওযূ, অতঃপর তাহিইয়াতুল মসজিদ আদায় করে ছালাতের নির্ধারিত সুন্নাত আদায় করবে। আর সময় না থাকলে নির্ধারিত সুন্নাত আদায় করলেই তা তাহিইয়াতুল মসজিদ-এর জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ৭/২৪৪)।
প্রশ্ন (২/৪৪২) : ঢাকা বেতার কেন্দ্র থেকে ইশরাক্ব ছালাতের ফযীলত সম্পর্কে বলা হয়েছে, একটি কবুল হজ্জ ও একটি কবুল ওমরার ছওয়াব পাওয়া যাবে। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক?
-মুহাম্মাদ আতাউর রহমান
সন্ন্যাসবাড়ী, বান্দাইখাড়া, নওগাঁ।
উত্তর : উক্ত বক্তব্য সঠিক (তিরমিযী হা/৫৮৬, সনদ হাসান)।
প্রশ্ন (৩/৪৪৩) : কালেমা কয়টি এবং কী কী? নিম্নের কোন্টি কালেমা শাহাদত? ‘আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু’। না কি ‘আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা শারীকালাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু ওয়া রাসূলুহু’?
-মুহাম্মাদ আমীনুল ইসলাম
শেরপুর, বগুড়া।
উত্তর : মূলতঃ কালেমার কোন প্রকার নেই। একই কালেমা বিভিন্ন শব্দে হাদীছের গ্রন্থগুলোতে বর্ণিত হয়েছে। ভারত বর্ষের বিদ্বানগণ ঐ শব্দগুলোর প্রতি লক্ষ্য করে কালেমার বিভিন্ন নামকরণ করেছেন। যেমন- কালেমা তাইয়েবাহ, শাহাদাত, তাওহীদ, তামজীদ ইত্যাদি। এটি ইজতেহাদী বিষয়।
প্রশ্নে বর্ণিত দু’টি কালেমাই কালেমায়ে শাহাদাতের অন্তর্ভুক্ত (প্রথমটি দ্রষ্টব্য : আবুদাঊদ হা/২৬৭৯। দ্বিতীয়টি দ্রষ্টব্য : ছহীহ মুসলিম হা/২৩৪)।
প্রশ্ন (৪/৪৪৪) : মাসিক মদীনা জুন ২০০৯ সংখ্যায় ৪১ নং প্রশ্নের উত্তরে বলা হয়েছে, ‘ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার সময় ছানা পড়ার পর আঊযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ পড়ার প্রয়োজন নাই’। এ বক্তব্য কি সঠিক?
-আব্দুল মজীদ
ঘোড়াঘাট, দিনাজপুর।
উত্তর : উক্ত বক্তব্য সঠিক নয়। বরং সূরা ফাতিহা পাঠের পূর্বে আঊযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ পড়তে হবে, যা রাসূল (ছাঃ) পড়েছেন (আবুদাঊদ, তিরমিযী; মিশকাত হা/১২১৭; আবুদাঊদ হা/৪০০১)।
প্রশ্ন (৫/৪৪৫) : শেষ রাত্রে তাহাজ্জুদ ছালাত কিংবা ছালাতুত তাওবাহ পড়ার পর হাত তুলে দো‘আ করা যাবে কি?
-মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ
মদীনাতুল উলূম কামিল মাদরাসা, রাজশাহী।
উত্তর : একাকী হাত তুলে দো‘আ করা যাবে (ছহীহ সীরাহ নববী, পৃঃ ১৪৭)। তাছাড়া অন্য হাদীছে এসেছে, হাত তুলে দো‘আ করলে আল্লাহ্ শূন্য হাত ফিরিয়ে দেন না (আবুদাঊদ হা/১৪৮৮; তিরমিযী হা/৩৫৫৬)। তবে দো‘আ শেষে হাত মুখে মাসাহ না করে ছেড়ে দিবেন। কারণ মুখে হাত মাসাহ করা সংক্রান্ত হাদীছ যঈফ (আবুদাঊদ; মিশকাত হা/২২৫৫)।
প্রশ্ন (৬/৪৪৬) : যিনি মুরশিদ তিনি রাসূল। কখনো তিনি খোদা হন। এ কথা শুধু লালন নয় কুরআনও বলে। এর প্রমাণে তারা আলে ইমরান ৩১; নিসা ৮০, ১৫০; কাহ্ফ ১১০ আয়াত দলীল হিসাবে পেশ করে। উক্ত দাবী কি সঠিক? লালনের ভক্ত এই শ্রেণীর লোকদের অবস্থা পরকালে কী হবে?
-আব্দুল্লাহ মাস‘ঊদ
বামুন্দী, গাংণী, মেহেরপুর।
উত্তর : এটি সম্পূর্ণরূপে শিরকী আক্বীদা। সৃষ্টি ও সৃষ্টিকর্তাকে যারা এক করে দেখাতে চায়, তারা সর্বেশ্বরবাদী শিরকী দর্শনের অনুসারী। উক্ত বানোয়াট দর্শনের পক্ষে দলীল হিসাবে যা পেশ করা হয়েছে তা স্রেফ ধোঁকা ও প্রতারণা মাত্র। পৃথিবীর কোন সৃষ্টিই সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সাথে তুলনীয় নয়। আল্লাহ বলেন, ‘তাঁর তুলনীয় কিছু নেই। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা’ (শূরা ১১)। আর মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর বান্দা এবং আল্লাহ প্রেরিত সর্বশেষ ও শ্রেষ্ঠ রাসূল। আল্লাহ বলেন, (হে মুহাম্মাদ) আপনি বলুন, ‘আমি তো তোমাদের মতই একজন মানুষ মাত্র; আমার প্রতি অহী করা হয় যে, তোমাদের মা‘বূদ মাত্র একজন’ (হা-মীম সাজদাহ ৬)।
প্রশ্নে বর্ণিত আয়াতগুলিতে রাসূল (ছাঃ)-এর প্রতি আনুগত্যের মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসা অর্জনের কথা বলা হয়েছে। রাসূলকে আল্লাহ বলা হয়নি। অথচ এইসব মুশরিকরা লালন ফকীরকে মুরশিদ ও রাসূল ভেবেছে। অতঃপর তাকেই আল্লাহ ভেবে নিয়েছে। এককথায় শয়তান এদের উপর সওয়ার হয়েছে। এগুলি শিরক। আর শিরকী আক্বীদার পরিণাম হ’ল জাহান্নাম। আল্লাহ বলেন, إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ ‘যে আল্লাহর সাথে শিরক করে, আল্লাহ তার উপর জান্নাতকে হারাম করে দেন। তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম’ (মায়েদাহ ৭২)। সুতরাং উক্ত ধোঁকা থেকে সাবধান থাকতে হবে।
প্রশ্ন (৭/৪৪৭) : জনৈক আলেম বলেন, দুই সিজদার মাঝে দো‘আ পড়া ওয়াজিব নয়। অল্প কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে হবে। দো‘আ না পড়লে ছালাতের কোন ক্ষতি হবে না। উক্ত বক্তব্য কি সঠিক?
-মামূন
কানসাট, শিবগঞ্জ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : উক্ত দাবী ঠিক নয়। দুই সিজদার মাঝে দো‘আ পড়া সুন্নাত (আবুদাঊদ, তিরমিযী হা/২৮৪; মিশকাত হা/৯০০)।
প্রশ্ন (৮/৪৪৮) : ব্রয়লার মুরগীর ডিম কৃত্রিমভাবে উৎপাদন করা হয়। অন্য পশুর ভ্রণ দ্বারা লেয়ার মুরগীর সাথে প্রজনন ঘটিয়ে ডিম উৎপাদন করা হয়। এই মুরগী খাওয়া বৈধ হবে কি?
-মুহাম্মাদ রাশেদ
বাদুল্লাপুর, সলঙ্গা, সিরাজগঞ্জ।
উত্তর : পশুর ক্ষেত্রে প্রজনন বৃদ্ধি পায়, এমন কোন পদ্ধতি গ্রহণ করা শরী‘আত সম্মত। কারণ শরী‘আতের বিধান মেনে চলার হুকুম পশুর উপরে নয়। তা কেবল জিন ও ইনসানের উপর অর্পিত হয়েছে (যারিয়াত ৫৬)। বৃক্ষের ক্ষেত্রে যেকোন পদ্ধতি গ্রহণ করার বৈধতা রয়েছে (মুসলিম হা/২৩৬৩)। সুতরাং ব্রয়লার মুরগীর গোশত খাওয়ায় কোন বাধা নেই।
প্রশ্ন (৯/৪৪৯) : কোন কিছু চুরি হয়ে গেলে আল্লাহর কাছে তার প্রতিদান পাওয়া যাবে কি? চোরের বিচার আল্লাহ কখন করবেন?
-ইউসুফ ইসলাম
বোর্ড হাট, বিরল, দিনাজপুর।
উত্তর : চুরির সম্পদ পরবর্তীতে পাওয়া না গেলে মালিক ছাদাক্বা করার সমান নেকী পাবে (মুসলিম, মিশকাত হা/১৯০১ ‘ছাদাক্বার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ)। চোরের উচিত চুরি করা সম্পদ ফিরিয়ে দেওয়া এবং তওবা করা। চোরের শারঈ দন্ড দুনিয়াতে যদি না হয় এবং মালিককে যদি ফিরিয়ে না দেয়, তাহলে পরকালে তার কঠিন শাস্তি হবে (বুখারী হা/২৪৪৯, মিশকাত হা/৫১২৬)। উল্লেখ্য, কোন জিনিস চুরি হয়ে গেলে বিপদের দো‘আ হিসাবে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজে‘উন’ পড়তে হয় (মুসলিম, মিশকাত হা/১৬১৮)।
প্রশ্ন (১০/৪৫০) : স্ত্রীর কোন ভুলের কারণে সাক্ষী ছাড়াই স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে কেউ যদি তালাক দেয়, তাহ’লে সেই তালাক কার্যকর হবে কি? স্ত্রীকে না জানিয়ে যদি মনে মনে বলে স্ত্রী অনুমতি ব্যতীত কোন কাজ করলে তালাক। উক্ত তালাক কার্যকর হবে কি?
-মুহাম্মাদ শাহেদ
সেগুনবাগিচা, ঢাকা-১০০০।
উত্তর : সাক্ষী থাক আর না থাক, ভুলের জন্য হোক বা অন্য কোন কারণে হোক, তালাক দিলে অবশ্যই তালাক কার্যকর হয়ে যাবে। এমনকি তামাশা বা মজা করে তালাক দিলেও তালাক হয়ে যাবে (আবুদাউদ হা/২১৯৪; মিশকাত হা/৩২৮৪)। মুখে প্রকাশ করা পর্যন্ত মনে মনে বলে তালাক হবে না। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা আমার উম্মাতের জন্য মনের কথাকে এড়িয়ে গেছেন যতক্ষণ পর্যন্ত মুখে প্রকাশ করে না বলবে অথবা কার্যে পরিণত না করবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৬৩)।
প্রশ্ন (১১/৪৫১) : আবু জাহ্লের বংশ পরিচয় সম্পর্কে জানিয়ে বাধিত করবেন। রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে তাঁর কোন রক্ত সম্পর্ক ছিল কি?
-জাহাঙ্গীর আলম
বালানগর, বাগমারা।
উত্তর : কুরাইশ বংশীয় হিসাবে রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে আবু জাহ্লের দূরবর্তী সম্পর্ক রয়েছে, নিকটবর্তী কোন সম্পর্ক নেই। রাসূল (ছাঃ) আবদু মানাফ গোত্রীয় আর আবু জাহ্ল বানু মাখযূম গোত্রীয়। রাসূল (ছাঃ) এবং আবূ জাহ্ল উভয়ের বংশ ‘মুর্রা ইবনু কা‘বে’ গিয়ে মিলিত হয়েছে (সীরাতে ইবনে হিশাম ১/১ ও ১/২৬৫ পৃঃ)।
প্রশ্ন (১২/৪৫২) : প্রভিডেন্ট ফান্ডের ব্যাপারে হানাফী মাযহাবের ফৎওয়া হ’ল, চাকুরী শেষে যা একবারে সরকার প্রদান করে থাকে তা হালাল। কিন্তু বর্তমান সরকারী চাকুরীর ক্ষেত্রে যা দেখা যাচ্ছে তা হ’ল- সরকার প্রতি মাসে কর্মচারীদের বেতন থেকে নির্দিষ্ট হারে একটি অংশ কেটে রাখে এবং তা সূদী ব্যবসায় খাটায়। অতঃপর চাকুরী শেষে মুনাফাসহ যে পরিমাণ টাকা জমা হয়, তা এককালীন অথবা গ্রাহক চাইলে মাসিক ভিত্তিতে প্রদান করে। উক্ত অর্থ গ্রহণ করা কি হালাল হবে?
-আবুল কালাম, নোয়াখালী।
উত্তর : সরকারের পক্ষ থেকে নির্ধারিত বেতনের যে অংশ প্রতি মাসে কেটে নেওয়া হয়, চাকুরী শেষে শুধু সেই অর্থই গ্রহণ করা জায়েয হবে। আর বেতন থেকে সূদের অংশটি আলাদা করে সমাজ কল্যাণে ব্যয় করতে হবে। তবে তাতে নেকীর আশা করা যাবে না। যে কোন মূল্যে সূদ থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য একান্ত কর্তব্য। কারণ হারাম রূযী দ্বারা পরিপুষ্ট দেহ কখনোই জান্নাতে যাবে না’ (বায়হাক্বী, মিশকাত হা/২৭৮৭; ছহীহাহ হা/২৬০৯)।
প্রশ্ন (১৩/৪৫৩) : খলীফা মামূনুর রশীদের আমলে মু‘তাযিলা সম্প্রদায় যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল, তখন তারা ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ)-কে কেন এই আক্বীদা পোষণ করার জন্য চাপ দিয়েছিল যে, ‘কুরআন আল্লাহর কালাম নয় বরং এটা আল্লাহর সৃষ্ট’?
-আবু সারা, কুয়েত।
উত্তর : কারণ হল, তৎকালীন সময়ে ইমাম আহমাদ (রহঃ) সবচেয়ে বড় বিদ্বান ছিলেন এবং তার কথা সকল হক্বপন্থী জনগণ এক বাক্যে মেনে নিত। তাই তিনি যদি বিষয়টির ব্যাপারে স্বীকৃতি দেন, তাহলে সবাই এক বাক্যে তা মেনে নেবে। উল্লেখ্য যে, ‘কুরআন সৃষ্ট’ মতবাদটি কুফরী মতবাদ। কেননা এর দ্বারা কুরআনকে অন্যান্য সৃষ্টির মত ধারণা করা হয়। অথচ কুরআন সরাসরি আল্লাহর কালাম এবং এটাই আহলে সন্নাত ওয়াল জামা‘আত আহলেহাদীছের ছহীহ আক্বীদা (বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : আহলেহাদীছ আন্দোলন, ডক্টরেট থিসিস পৃঃ ১০৫-০৬)।
প্রশ্ন (১৪/৪৫৪) : জনৈক ব্যক্তি পিতা-মাতার অবাধ্যতায় বিবাহ করেছে। এখন সে কিভাবে আল্লাহ তা‘আলা এবং পিতা-মাতার নিকটে ক্ষমা পাবে?
-নযরুল ইসলাম
কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ।
উত্তর : এজন্য পিতা-মাতার নিকটে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। কেননা পিতা-মাতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের জান্নাত (তিরমিযী; মিশকাত হা/৪৯২৭; নাসাঈ হা/৩১০৪)।
প্রশ্ন (১৫/৪৫৫) : ছালাতের সময় পায়জামা টাখনুর উপরে গুটিয়ে নেওয়া যাবে কি?
-আব্দুল্লাহ, মান্দা, নওগাঁ।
উত্তর : টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরা সর্বাবস্থায় নিষিদ্ধ। শুধু ছালাতের সময় পায়জামা টাখনুর উপরে তুলে নিতে হবে এমনটি নয়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَا أَسْفَلَ مِنَ الْكَعْبَيْنِ مِنَ الإِزَارِ فَفِى النَّارِ ‘টাখনুর নীচে যতটুকু যাবে, ততটুকু জাহান্নামের আগুনে পুড়বে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৪৩১৪)। ছালাত অবস্থায় পুরুষের জন্য জামার হাতা সমূহ বা কাপড় গুটিয়ে রাখা যাবে না। বরং খোলামেলা ছেড়ে দিতে হবে (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৮৮৭; ছিফাত পৃ: ১২৫)।
প্রশ্ন (১৬/৪৫৬) : জারজ সন্তান যদি কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী ছালাত আদায় করে তাহলে তার সাথে চলাফেরা করা এবং তার মৃত্যুর পর জানাযায় শরীক হওয়া যাবে কি?
-
উত্তর : যাবে। কেননা পিতা-মাতার অন্যায়ের দায় জারজ সন্তানের উপর পড়ে না (বাক্বারাহ ২৮৬; আন‘আম ১৬৪)। উল্লেখ্য যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, وَلَدُ الزِّنَا شَرُّ الثَّلاَثَةِ ‘জারজ সন্তান হ’ল তিনজন নিকৃষ্ট ব্যক্তির একজন’ (আবুদাঊদ হা/৩৯৬৩)। এ বিষয়ে ইমাম ত্বীবী (রহঃ) বলেন, এ কথার মধ্যে জারজ সন্তানের বিষয়ে ইসলামের কঠোর দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ ঘটেছে। যাতে ঐ সন্তান নিজে ব্যভিচারে ধ্বংস না হয় (মিরক্বাত)।
প্রশ্ন (১৭/৪৫৭) : ‘আল্লাহর রাস্তায় এক রাত পাহারা দেওয়া এক হাযার বছর নিজ বাড়িতে রাতে ইবাদত করা এবং দিনে ছিয়াম পালন করার চেয়েও উত্তম’। উক্ত মর্মের হাদীছটি ছহীহ কি-না জানিয়ে বাধিত করবেন।
ইউনুস, শাসনগাছা, কুমিল্লা।
উত্তর : উক্ত মর্মে বর্ণিত হাদীছটি মওযূ বা জাল (যঈফ ইবনু মাজাহ হা/৬০৯, সিলসিলা যঈফাহ হা/ ১২৩৪)। তবে এ মর্মে ছহীহ হাদীছটি হ’ল- ‘একটি দিন ও রাত্রি আল্লাহ রাস্তায় নিজেকে নিয়োজিত রাখা, এক মাস ছিয়াম ও রাত্রিতে ছালাতে দন্ডায়মান থাকার চাইতে উত্তম। আর উক্ত কাজে নিযুক্ত থাকা অবস্থায় মারা গেলে তার ছওয়াব সে প্রতিদিন পেতে থাকবে। জান্নাত হ’তে তার রিযিক আসতে থাকবে এবং (কবরের) ফিৎনা হ’তে নিরাপদ থাকবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৭৯৩)।
প্রশ্ন (১৮/৪৫৮) : ‘ছালাত জান্নাতের চাবি’ মর্মে হাদীছটি কি ছহীহ? জান্নাতের চাবি কি?
-আমানুল্লাহ
ধান্দিয়া, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : উক্ত মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (তিরমিযী, সিলসিলা যঈফাহ হা/৩৬০৯)। বরং ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ হ’ল জান্নাতের চাবি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘যার শেষ কালেমা ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ হবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে’ (আবুদাঊদ হা/৩১১৬; মিশকাত হা/১৬২১)। ওয়াহাব বিন মুনাবিবহ (রহঃ)-কে বলা হল, ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ কি জান্নাতের চাবি নয়? তিনি বললেন, অবশ্যই। তবে প্রত্যেক চাবিরই দাঁত থাকে। যদি তুমি দাঁতওয়ালা চাবি নিয়ে যাও, তবে তোমার জন্য জান্নাত খোলা হবে। অন্যথায় তা তোমার জন্য খোলা হবে না’ (কালেমার দাঁত হ’ল নেক আমল)।-বুখারী, মিশকাত, হা/৪৩ ‘ঈমান’ অধ্যায়।
প্রশ্ন (১৯/৪৫৯) : জীবনসঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের কি কি গুণাবলী থাকা আবশ্যক?
-বাশীরা
কামারকুড়ী, মান্দা, নওগাঁ।
উত্তর : বিবাহের ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে পাত্র ও পাত্রী উভয়ের ধার্মিকতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আল্লাহ বলেন, তোমরা মুশরিক মেয়েদের বিয়ে করো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। নিশ্চয়ই একজন ঈমানদার মেয়ে মুশরিক মেয়ের চেয়ে উত্তম। যদিও সে তোমাদেরকে মোহিত করে। তোমরা মুশরিক পুরুষদের বিয়ে করো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। নিশ্চয়ই একজন ঈমানদার পুরুষ মুশরিক পুরুষের চেয়ে উত্তম। তারা জাহান্নামের দিকে আহবান করে। আর আল্লাহ জান্নাত ও ক্ষমার দিকে আহবান করেন...(বাক্বারাহ ২২১)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, সাধারণতঃ মেয়েদের চারটি গুণ দেখে বিবাহ করা হয়- তার ধন-সম্পদ, বংশ-মর্যাদা, সৌন্দর্য এবং ধর্ম। তোমরা ধার্মিক মেয়েকে অগ্রাধিকার দাও। অন্যথায় তোমাদের উভয় হস্ত অবশ্যই ধূলায় ধূসরিত হবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩০৮২, ৩০৯০, ‘বিবাহ’ অধ্যায়)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা বিবাহের জন্য উপযুক্ত পাত্রী নির্বাচন কর এবং সমতা দেখে বিবাহ কর (ইবনু মাজাহ হা/১৯৬৮; সিলসিলা ছহীহাহ হা/১০৬৭)। পাত্রের ক্ষেত্রে তার দ্বীনদারী এবং উত্তম আচরণের দিকে লক্ষ্য করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَنْ تَرْضَوْنَ دِيْنَهُ وَخُلُقَهُ فَزَوِّجُوْهُ ‘যার দ্বীনদারী এবং উত্তম আচরণে তোমরা সন্তুষ্ট, তার সাথে বিবাহ দাও’ (তিরমিযী, মিশকাত হা/৩০৯০)।
প্রশ্ন (২০/৪৬০) : যাকাতের টাকা ইসলাম প্রচারের কাজে ব্যয় করা যাবে কি? যেমন ইসলামিক সিডি, বই, ক্যাসেট ইত্যাদি কিনে বিতরণ করা হয়।
-তালহা খালেদ
দাম্মাম, সঊদী আরব।
উত্তর : যাকাতের টাকা ইসলাম প্রচারের কাজে ব্যবহার করা যাবে। এগুলো ফী সাবীলিল্লাহর অন্তর্ভুক্ত হবে (মাজমু‘ ফাতাওয়া উছায়মীন ১৮/২৫২)।
প্রশ্ন (২১/৪৬১) : একজন সন্তানহীনা বিধবা তার স্বামীর পরিত্যক্ত সম্পত্তির কত অংশ পাবে? দেশের আইনই বা কত অংশ দিচ্ছে ?
-আবু আমীনা, কুয়েত।
উত্তর : মোট সম্পত্তির চার ভাগের এক ভাগ পাবে (নিসা ১২)। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে অনুরূপই দেওয়া হয়।
প্রশ্ন (২২/৪৬২) : আমার এক আত্মীয় মারা যাওয়ার সময় এমন এক অছিয়ত করে গেছেন, যা পূরণ করতে তার রেখে যাওয়া সব সম্পদ লাগবে। এমতাবস্থায় করণীয় কী?
মুহাম্মাদ আমীনুল ইসলাম
সীতাকুন্ডু, চট্টগ্রাম।
উত্তর : অছিয়ত স্বরূপ সর্বোচ্চ এক তৃতীয়াংশ সম্পত্তি দান করা যায়। এর বেশী অছিয়ত করা বৈধ নয় (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/৩০৭১)। অতএব উক্ত অছিয়ত পূরণ করা আবশ্যক নয়।
প্রশ্ন (২৩/৪৬৩): পেটে বাচ্চা ওয়ালী গাভী অসুস্থ হলে যবেহ করে খাওয়া যাবে কি?
-মুছাবিবর, সৈয়দপুর, নীলফামারী।
উত্তর : পেটে বাচ্চা ওয়ালী গাভী অসুস্থ হলে যবেহ করে খাওয়াতে কোন দোষ নেই। জাবির (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, পেটের বাচ্চাকে যবেহ করা হচ্ছে তার মাকে যবেহ করা (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪০৯১)। অত্র হাদীছে গাভীর পেটের বাচ্চাকে হালাল বলা হয়েছে। মানুষের রুচি হলে পেটে বাচ্চাওয়ালী গাভী তো খেতে পারেই, এমনকি পেটের বাচ্চাও খেতে পারে।
প্রশ্ন (২৪/৪৬৪): একজন কুরআনের হাফেয কি একজন আলেমের চেয়ে অধিক মর্যাদাবান? উভয়ের উপস্থিতিতে কে ইমামতি করবেন?
-আব্দুল্লাহ, মান্দা, নওগাঁ।
উত্তর : আলেম ইমামতি করবেন। যদি তিনি শুদ্ধ করে কুরআন তেলাওয়াত করতে পারেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সবচেয়ে ভাল ক্বারীকে ইমাম হওয়ার জন্য বলেছেন। উভয়ে যদি ক্বিরাআতের দিক থেকে সমান হন, তাহ’লে যিনি সুন্নাহ সম্পর্কে অধিক অবগত, তিনি ইমামতি করবেন (মুসলিম, মিশকাত হা/১১১৭)।
প্রশ্ন (২৫/৪৬৫): একটি সূরা বার বার পড়লে প্রত্যেকবার বিসমিল্লাহ পড়তে হবে কি? সূরার মধ্য থেকে পড়লে বিসমিল্লাহ বলতে হবে কি? পড়তে পড়তে কিছুক্ষণ বিরতির পর পড়লে বিসমিল্লাহ বলতে হবে কি?
-শফীকুল ইসলাম
গাবতলী, বগুড়া।
উত্তর : সূরার প্রথম থেকে পড়া আরম্ভ করলে প্রতিবার বিসমিল্লাহ বলতে হবে। এমনকি কিছু বিরতির পর পড়লেও। কারণ একটি সূরা থেকে তার একটি সূরা পৃথক করার মাধ্যম হচ্ছে বিসমিল্লাহ (আবুদাঊদ হা/৭৮৮)। যেকোন সময়ে যে কোন স্থান হতে কুরআন পড়লে আঊযুবিল্লাহ পড়বে। আল্লাহ বলেন, আপনি যখন কুরআন তেলাওয়াত করবেন তখন অভিশপ্ত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাইবেন (নাহল ৯৮)। তবে বিষয়টি ‘মানদূব’ (ইচ্ছাধীন) পর্যায়ভুক্ত (তাফসীর কুরতুবী, ইবনু কাছীর)।
প্রশ্ন (২৬/৪৬৬) : এক ছাত্র লেখাপড়া না করে টাকা দিয়ে ৭টি সেমিষ্টার শেষ করেছে। এখন বাকী ৫টি সেমিষ্টার সে ভালভাবে লেখাপড়া করতে চায়। উক্ত সার্টিফিকেট দিয়ে চাকুরী করা হালাল হবে কি?
-রওশন, ঢাকা।
উত্তর : হালাল হবে না। কারণ এটা স্রেফ প্রতারণা মাত্র। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি প্রতারণা করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২৮৬০, ৩৫২০)।
প্রশ্ন (২৭/৪৬৭): আমাদের দেশে সরকারীভাবে হিন্দুদের পূজায় টাকা দেওয়া হয়। নাগরিক হিসাবে এতে আমাদের পাপ হবে কি-না।
-আব্দুস সাত্তার
কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ।
উত্তর : সরকার অমুসলিমদের জন্য নির্ধারিত খাত থেকে হিন্দুদের পূজার জন্য সহযোগিতা করতে পারে। তবে কোন মুসলিম ব্যক্তি কোন প্রকার সহযোগিতা করতে পারবে না। কারণ এটা বড় শিরকের অন্তর্ভুক্ত। আর কোন প্রকার পাপের কাজে সহযোগিতা করতে আল্লাহ নিষেধ করেছেন (মায়েদাহ ২)।
প্রশ্ন (২৮/৪৬৮): স্বামীর কি কি অধিকার পালন করলে স্ত্রী জান্নাতে যেতে পারবে?
-আবুবকর, নাগেশ্বরী, কুড়িগ্রাম।
উত্তর : ‘অধিকার’ বিষয়টি ব্যাপক। সেকারণ এ বিষয়ে ইসলামী শরী‘আতে মৌলিকভাবে বর্ণিত হয়েছে। যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন, যেকোন স্ত্রী (১) নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করে (২) রামাযানের ছিয়াম পালন করে (৩) লজ্জাস্থানের হেফাযত করে এবং (৪) স্বামীর আনুগত্য করে, সে জান্নাতের যেকোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। (আবু নঈম, মিশকাত হা/৩২৫৪, সনদ হাসান)। অন্যত্র তিনি বলেন, তোমরা প্রত্যেকে দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকে স্ব স্ব দায়িত্ব সম্পর্কে ক্বিয়ামতের দিন জিজ্ঞাসিত হবে। ...স্ত্রী তার স্বামীর গৃহের ও সন্তানদের দায়িত্বশীল’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩৬৮৫)। তিনি বলেন, উত্তম স্ত্রী সেই, যার দিকে তাকিয়ে স্বামী আনন্দিত হয়। স্বামী কোন আদেশ করলে তা পালন করে এবং স্বামী যা অপসন্দ করেন, স্ত্রী তা করেনা’ (নাসাঈ, মিশকাত হা/৩২৭২)।
প্রশ্ন (২৯/৪৬৯) : বিবাহের সময় স্বামী তার স্ত্রীর মোহরানা আদায় করেনি। এখন আদায় করতে ইচ্ছুক। সম্পদ ও অর্থ কোনটি দ্বারা আদায় করবে?
-মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম
তালা, সাতক্ষীরা।
উত্তর : সম্পদ বা অর্থ যা দিয়ে পরিশোধ করা হোক না কেন, তা ধার্যকৃত মোহরের সমপরিমাণ হতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তোমাদের স্ত্রীদের কাছ থেকে যে স্বাদ গ্রহণ করেছ, তার বিনিময়ে তাদের জন্য নির্ধারিত মোহরানা আদায় কর’ (নিসা ২৪)।
প্রশ্ন (৩০/৪৭০): ছালাত অবস্থায় কেউ সালাম দিলে উত্তর দেওয়ার পদ্ধতি কি? ছালাতরত অবস্থায় কেউ ডাকলে গলায় আওয়াজ করা যাবে কি?
-মুহাম্মাদ ইসমাঈল
মোহনপুর, রাজশাহী।
উত্তর : ছালাতরত অবস্থায় কেউ সালাম দিলে কথা না বলে শুধু হাত বা আঙ্গুলের ইশারায় সালামের উত্তর দিতে হবে (তিরমিযী, নাসাঈ সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৯৯১)। উল্লেখ্য যে, ছালাতরত অবস্থায় গলার আওয়াজ দেওয়ার হাদীছটি যঈফ (নাসাঈ, মিশকাত হা/৪৬৭৫; তামামুল মিন্নাহ পৃঃ ৩১২)।
প্রশ্ন (৩১/৪৭১): পিতা-মাতা আক্বীক্বা করে নাম রেখেছে। সন্তান বড় হয়ে বুঝতে পারলো যে, তার নাম অর্থহীন। এমতাবস্থায় তার নাম কি পরিবর্তন করা যাবে?
-আলাউদ্দীন, রাজারবাগ, ঢাকা।
উত্তর : অর্থগত দৃষ্টিকোণ থেকে ত্রুটিপূর্ণ নামকে পরিবর্তন করে একটি সুন্দর ইসলামী নাম রাখাই শরী‘আতের বিধান। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মন্দ নাম পরিবর্তন করে দিতেন (তিরমিযী, মিশকাত হা/৪৭৭৪; ছহীহাহ হা/২০৭)। অতএব একজন ভালো আলেমের নিকট থেকে জেনে নিয়ে একটি উত্তম নাম রাখুন। প্রয়োজনে কোর্টে নাম পরিবর্তন করে এফিডেভিট করুন (বিস্তারিত দেখুন : মাসায়েলে কুরবানী ও আক্বীকা পৃঃ ৫১-৫৩)।
প্রশ্ন (৩২/৪৭২): অল্প পরিমাণ অ্যালকোহল মিশ্রিত পেপসি, সেভেনআপ, কোকাকোলা, এনার্জি ডিংক্স প্রভৃতি কোমল পানীয় পান করা বৈধ হবে কি?
-সুহাইল, পাঁচবিবি, জয়পুরহাট।
উত্তর : কোন খাদ্য ও পানীয়তে কম-বেশী যা-ই থাক না কেন, অ্যালকোহল অর্থাৎ নেশাদার দ্রব্য মিশ্রিত থাকলে তা গ্রহণ করা সম্পূর্ণ হারাম। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘মাদকতা আনয়নকারী প্রত্যেক বস্ত্তই মদ এবং প্রতিটি মাদকদ্রব্য হারাম’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৬৩৮)। অন্য হাদীছে এসেছে, ‘যার বেশী পরিমাণে মাদকতা আসে, তার কম পরিমাণও হারাম’ (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/৩৬৪৫, সনদ ছহীহ)। বিভিন্ন সংবাদসূত্রে প্রকাশ, সকল প্রকার এনার্জি ড্রিংক্সসহ অধিকাংশ কোমল পানীয়তে এ্যালকোহল মিশ্রিত থাকে। সম্প্রতি ফ্রান্সের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রকাশ করেছে যে, জনপ্রিয় দু’টি কোমল পানীয় কোকাকোলা ও পেপসিতে প্রতি লিটারে অন্ততঃ ১০ মিলিগ্রাম এ্যালকোহল রয়েছে (প্রেস টিভি নিউজ, ৩০ জুন’১২)। এছাড়া কোমল পানীয়ের মূল উপাদানে শুকরের চর্বির মিশ্রণ রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞ মহলের অভিমত। এতে শরীরের জন্য ক্ষতিকর নানা উপাদানও বিদ্যমান। যেমন কোকো, ক্যাফেইন, কীটনাশক, কার্বন ডাই-অক্সাইড, উচ্চমাত্রার এসিড প্রভৃতি, যা মানুষের কিডনী, দাঁত, হাড়সহ স্বাস্থ্যের জন্য খুব ক্ষতিকর। এজন্য বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এ সকল কোমল পানীয় নামক সোডা ওয়াটার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সুতরাং তৈরীর মূল উপাদানসমূহ সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে এ সকল পানীয় পান করা যাবে না। সর্বোপরি সন্দেহজনক বস্ত্ত থেকে দূরে থাকা আবশ্যক। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, হালাল স্পষ্ট, হারাম স্পষ্ট। এর মাঝে একটি সন্দেহযুক্ত জিনিস রয়েছে যা হারাম (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৬২)।
প্রশ্ন (৩৩/৪৭৩): ছিয়াম অবস্থায় গান শোনা, মিথ্যা কথা বলা, মেয়েদের দিকে কুদৃষ্টি দেওয়া প্রভৃতি পাপ কাজ করলে ছিয়াম বাতিল হয়ে যাবে। উক্ত বক্তব্যটি কি সঠিক?
-মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ
উপশহর, রাজশাহী।
উত্তর : কেবল সারাদিন পানাহার ও যৌন সম্ভোগ থেকে বিরত থাকার নাম ছিয়াম নয়। বরং ছিয়াম সাধনা হচ্ছে পানাহার থেকে বিরত থাকার সাথে সাথে সকল প্রকার মিথ্যা থেকে বিরত থাকা। নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকে না, সে ব্যক্তির পানাহার থেকে বিরত থাকাতে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই (বুখারী হা/১৯০৩; মিশকাত হা/১৯৯৯)। তাই এক্ষেত্রে ছিয়াম সরাসরি বাতিল না হলেও, নিঃসন্দেহে তা ক্রটিপূর্ণ হবে।
প্রশ্ন (৩৪/৪৭৪): স্বপ্ন সম্পর্কে ভালো-মন্দ বিশ্বাস করা যাবে কি?
শরীফুল ইসলাম
সাঘাটা, গাইবান্ধা।
উত্তর : স্বপ্ন ভাল মন্দ দু’টিই হ’তে পারে। রাসূল (ছাঃ) বলেন. ‘উত্তম স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, আর খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি ভাল স্বপ্ন দেখে তাহ’লে সে যেন ঐ ব্যক্তির কাছে প্রকাশ করে, যাকে সে ভালবাসে। আর যদি কেউ খারাপ স্বপ্ন দেখে তাহ’লে সে যেন তার ক্ষতি ও শয়তানের অনিষ্ট থেকে আল্লাহর নিকট পরিত্রাণ চায় এবং বাম দিকে তিনবার থুক মারে। আর কারো কাছে যেন প্রকাশ না করে। এতে তার কোন ক্ষতি হবে না’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৪৬১২)। মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে বাম দিকে ৩ বার থুক মারবে, ৩ বার আ‘ঊযুবিল্লা-হি মিনাশ শায়ত্বা-নির রজীম বলবে ও পার্শ্ব পরিবর্তন করবে’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৬১৩-১৪ ‘স্বপ্ন’ অধ্যায়)। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘স্বপ্ন তিন প্রকার হয়ে থাকে। (ক) সত্য স্বপ্ন (খ) মনের কল্পনা এবং (গ) শয়তানের পক্ষ হ’তে ভীতি প্রদর্শন। সুতরাং কেউ যদি অপসন্দনীয় স্বপ্ন দেখে তাহ’লে সে যেন উঠে ছালাত আদায় করে’ (তিরমিযী হা/২২৮০; ইবনু মাজাহ হা/৩৯০৬)।
প্রশ্ন (৩৫/৪৭৫) : ‘পাঁচটি রাত্রির দো‘আ ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। রজব মাসের ১ম রাত্রি, শা‘বানের মধ্যরাত্রি, জুম‘আর রাত্রি, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার রাত্রি।’ উক্ত হাদীছটি কি ছহীহ?
-মঈনুদ্দীন, মিরপুর, ঢাকা।
উত্তর : হাদীছটি মওযূ বা জাল (সিলসিলা যঈফাহ হা/১৪৫২)।
প্রশ্ন (৩৬/৪৭৬): আমরা ১৫ জন মিলে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা করে একটি মূলধন সংগ্রহ করে তা বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়ে থাকি। তারা ব্যবসায়িক পণ্য ক্রয় করে এবং কিস্তিতে সেই পণ্যের ক্রয়মূল্য সহ নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ (যেমন ২০০০ টাকার বিনিময়ে ২২০০ টাকা) লাভ হিসাবে আমাদেরকে প্রদান করে। উক্ত ব্যবসা হালাল হবে কি? যদি হারাম হয়ে থাকে তবে আমাদের করণীয় কি?
ইমরান, চরকুড়া, কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ।
উত্তর : উক্ত ব্যবসা হালাল নয়। কারণ উক্ত ব্যবসা রিবা আন-নাসিআহ বা বাকীতে ঋণের সূদ-এর উপর প্রতিষ্ঠিত। কেননা প্রতিষ্ঠানটি মূলতঃ বাকীতে ঋণ প্রদানের উপর অতিরিক্ত অর্থ নিচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি কেবল অর্থলগ্নিকারী, পণ্যের বিক্রেতা নয় এবং ঋণগ্রহীতার সাথে ঋণদাতার সম্পর্ক এখানে ঋণের, পণ্যের নয়। তাই আমাদের পরামর্শ আপনারা নিজেরাই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলুন। আর ইসলামে অনুমোদিত ব্যবসা দুই ধরণের। ‘মুশারাকাহ’ অর্থাৎ যার যেমন অর্থ থাকবে, সে অনুযায়ী লাভ-ক্ষতি বন্টন হবে (আবুদাঊদ, বুলূগুল মারাম হা/৮৭০) অথবা ‘মুযারাবাহ’ অর্থাৎ একজনের অর্থ নিয়ে অপরজন ব্যবসা করবে। লাভ-ক্ষতি তাদের মাঝে চুক্তিহারে বন্টিত হবে (দারাকুৎনী, মুওয়াত্ত্বা, বুলূগুল মারাম হা/৮৯৫, মওকূফ ছহীহ)।
প্রশ্ন (৩৭/৪৭৭): আমি একজন পুলিশ সদস্য। এ সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী বড় অফিসারকে দেখলে দাঁড়িয়ে সম্মান করতে হয়। নতুবা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাই বাধ্য হয়ে আমাকেও দাঁড়িয়ে সম্মান করতে হয়। প্রায় ৩৬/৩৭ বছর যাবৎ এভাবে আমি অন্যায় কর্মে সহায়তা করে যাচ্ছি। এমতাবস্থায় এ চাকুরী করা আমার জন্য জায়েয হবে কি?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
উত্তর : যিনি আপনাকে এ পাপ কর্মে বাধ্য করছেন, তিনিই মূল অপরাধী। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘যদি কেউ এতে আনন্দবোধ করে যে, লোকেরা তাকে দেখে স্থিরভাবে দন্ডায়মান থাকুক, তাহ’লে সে জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে নিল (তিরমিযী, আবুদাঊদ, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৪৬৯৯)। তাই এক্ষেত্রে আপনাকে পাপের দায়ভার নিতে হবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তোমরা সাধ্যমত আল্লাহ্কে ভয় কর (তাগাবুন ৬৪/১৬)। তবে এ প্রথা বন্ধের জন্য আপনাকে সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৩৭)।
প্রশ্ন (৩৮/৪৭৮): জনৈক আলেম বলেছেন, শী‘আরা মুসলমান নয়। কোন কোন এলাকায় বর্তমানে শী‘আদের প্রভাব দিন দিন বাড়ছে। এদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।
-হাবীবুর রহমান
বখশীগঞ্জ, বদরগঞ্জ, রংপুর।
উত্তরঃ শী‘আরা একটি ভ্রান্ত দল। ইমাম ইবনু হাযম আন্দালুসী (রহঃ) বলেন, ‘রাফেযী শী‘আরা মুসলিম নয়, তাদের কথা দীনের ব্যাপারে দলীল হিসাবে গণ্য নয়, এটি একটি নতুন দল, যা রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পঁচিশ বছর পর সৃষ্টি হয়েছে। এ দলটি ইহুদী ও খৃষ্টানদের মত মিথ্যা ও কুফরীর উপর নির্ভর করে চলে (কিতাবুল ফিছাল ২/৬৫)।
শী‘আরা পাঁচটি প্রধান দল ও বহু সংখ্যক উপদলে বিভক্ত। ইমামিয়া শী‘আরা বারো ইমামে বিশ্বাসী। তাদের দৃষ্টিতে রাসূলের পরে আবুবকর (রাঃ)-এর হাতে খেলাফতের বায়‘আত করে ছাহাবীগণ মুরতাদ হয়ে গেছেন। এজন্য উম্মতের সর্বনিকৃষ্ট ব্যক্তি হ’লেন আবুবকর, ওমর ও ওছমান (রাঃ) (নাঊযুবিল্লাহ) (আল-আদিয়ান পৃঃ ১৮১)। এছাড়া তাদের আক্বীদা মতে আলী (রাঃ) ছিলেন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ‘অছি’। অতএব আলী এবং তাঁর পরিবারের মধ্যেই খেলাফত সীমাবদ্ধ থাকবে। সেকারণ আবুবকর, ওমর ও ওছমান (রাঃ) ছিলেন তাদের দৃষ্টিতে অবৈধ খলীফা (কিতাবুল ফিছাল ২/১১৫ পৃঃ)।
প্রশ্ন (৩৯/৪৭৯): রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, আমার নামে তোমরা নাম রাখো। কিন্তু আমার উপনামে তোমরা নাম রেখো না। এর কারণ কি?
-আমীনুল ইসলাম
উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ, কারমাইকেল কলেজ, রংপুর।
উত্তর : এই উপনামের কারণ দু’টো- (ক) নবী করীম (ছাঃ) বড় ছেলের নাম ছিলো ক্বাসেম। তাই তাঁকে আবুল ক্বাসেম বলা হতো (তাবাক্বাত ১ম খন্ড, পৃঃ ১৭)। (খ) রাসূল (ছাঃ) আল্লাহর তরফ থেকে প্রাপ্ত ইলম মানুষের মধ্যে বিতরণ করতেন (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/২০০) এজন্য তাঁকে বলা হতো আবুল ক্বাসেম- তাই তিনি তাঁর উপনামে নাম রাখতে নিষেধ করেছিলেন। তবে তাঁর ইন্তিকালের পর উক্ত উপনামে নাম রাখা যাবে মর্মে ইমাম মালেক (রহঃ) মত পেশ করেছেন। কিন্তু ইমাম শাফেঈ (রহঃ)-এর মতে নিষেধাজ্ঞা বহাল আছে (আওনুল মা‘বূদ ১৩তম খন্ড, পৃঃ ২০৮)।
প্রশ্ন (৪০/৪৮০) : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘বনু আদমের অন্তর সমূহ একটি কলবের ন্যায় আল্লাহর দু’আঙ্গুলের মাঝে রয়েছে। তিনি যেভাবে খুশী সেটাকে পরিচালিত করেন’ (মুসলিম)। উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যা ও তাৎপর্য জানিয়ে বাধিত করবেন।
-মাসঊদ, মেহেরপুর।
উত্তর : অত্র হাদীছটি আল্লাহর গুণাবলী সম্পর্কিত হাদীছ সমূহের (أحاديث الصفات) অন্তর্ভুক্ত। এ হাদীছে আল্লাহর আঙ্গুলসমূহের বর্ণনা এসেছে। এখানে যেভাবে বর্ণিত হয়েছে, সেভাবে বিশ্বাস করাটাই হ’ল ছাহাবায়ে কেরাম ও আহলেসুন্নাত ওয়াল জামা‘আত আহলেহাদীছের আক্বীদা। আল্লাহর আঙ্গুল বা তাঁর আকার সেইরূপ, যেরূপ তাঁর উচ্চ মর্যাদার উপযোগী। আল্লাহ বলেন, ‘তাঁর তুলনীয় কিছুই নেই। তিনি সর্বদ্রষ্টা ও সর্বশ্রোতা (শূরা ৪২/১১)। এবিষয়ে ঝগড়াকারীগণ পথভ্রষ্ট। নিরাকারবাদীগণ মু‘আত্ত্বিলাহ (শূন্য সত্তার উপাসনাকারী)। সাদৃশ্যবাদীগণ মুশাবিবহাহ (স্রষ্টাকে সৃষ্টির সদৃশ কল্পনাকারী)। এবিষয়ে সঠিক আক্বীদা সেটাই যা ছাহাবায়ে কেরামের আক্বীদা। অতঃপর অত্র হাদীছের তাৎপর্য হ’ল এই যে, এর মাধ্যমে আল্লাহ বান্দার অন্তরকে দ্রুত পরিবর্তনের কথা বর্ণনা করেছেন। আর এটা তাঁর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। আঙ্গুল বলার মাধ্যমে হাত দ্বারা অাঁকড়ে ধরা বুঝানো হয়েছে। কেননা আঙ্গুল হাতেরই অংশ। ‘বনু আদমের অন্তুরসমূহ একটি কলবের ন্যায়’ বলার মাধ্যমে আল্লাহ সকল সৃষ্টিকে একটি কলবের ন্যায় সহজে ও দ্রুত সৃষ্টি বুঝিয়েছেন। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের সকলের সৃষ্টি ও পুনরুত্থান একটিমাত্র প্রাণীর সৃষ্টি ও পুনরুত্থানের অনুরূপ। আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা’ (লোকমান ৩১/২৮)। এর মাধ্যমে আল্লাহর অসীম ক্ষমতা বুঝানো হয়েছে (মির‘আত হা/৮৯-এর ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য)। তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন (বুরূজ ৮৫/১৬)। তবে এর দ্বারা মানুষকে বাধ্যগত প্রাণী ভাবা যাবে না। যেমনটি ভ্রান্ত ফের্কা অদৃষ্টবাদী জাবরিয়াগণ ভেবে থাকেন। কেননা আল্লাহ বান্দার তাক্বদীর জানেন। কিন্তু বান্দা তা জানেনা। তাই তাকে সাধ্যমত আল্লাহর পথে কাজ করে যেতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘বান্দা কেবল সেটাই পায়, যেটার জন্য সে চেষ্টা করে’ (নাজম ৫৩/৩৯)।