উত্তর :
অনুবাদ : ‘যখন তিনি তাদের উভয়কে একটি সুঠামদেহী সন্তান দান করেন, তখন
তাদেরকে যা কিছু দেয়া হয়েছে তাতে তারা অন্যদেরকে আল্লাহর শরীক বানিয়ে নেয়।
অথচ যাদেরকে তারা শরীক বানায়, তাদের থেকে আল্লাহ অনেক ঊর্ধ্বে’। এখানে
‘উভয়কে’ অর্থ মুশরিক দম্পতি। উল্লেখ্য যে, আহমাদ ও তিরমিযী সামুরা বিন
জুনদুব (রাঃ) হ’তে মরফূ‘ সূত্রে এবং হাকেম ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে মওকূফ
সূত্রে যে হাদীছগুলি এনেছেন তা যঈফ (যঈফাহ হা/৩৪২)। সেখানে বলা
হয়েছে যে, আদম-দম্পতি তাঁদের সন্তানদের নাম আব্দুল্লাহ এবং ওবায়দুল্লাহ
রাখলে তারা মারা যায়। পরে ইবলীস মানুষের বেশ ধরে এসে বলে যে, তোমরা আমার
নামে নাম রাখলে সন্তান বাঁচবে। তখন তার কথা অনুযায়ী পরবর্তী সন্তানের নাম
রাখা হয় ‘আব্দুল হারেছ’। তাতে সন্তান বেঁচে যায় (ইবনু কাছীর)। এতে বুঝা যায় যে, আদম-হাওয়া উভয়েই শিরক করেছিলেন (নাঊযুবিল্লাহ)।
মুফাসসিরগণ এর ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন যে, আদম-হাওয়া সরাসরি হারেছকে ‘রব’
বলেননি। বরং হারেছকে তাঁদের সন্তান বেঁচে যাওয়ার অসীলা হিসাবে গ্রহণ
করেছিলেন। যেমন লোকেরা মেহমানের সামনে নত হয়ে নিজেকে তার গোলাম বলে থাকে।
যদিও মেহমান তার প্রকৃত প্রভু নয় (কুরতুবী)। ইমাম কুরতুবী বলেন,
উক্ত তাফসীর যে সঠিক নয় তার বড় প্রমাণ এই যে, আয়াতের শেষে আল্লাহ বহুবচনের
ক্রিয়া ব্যবহার করেছেন। উদ্দেশ্য আদম-হাওয়া হ’লে সেখানে দ্বিবচনের ক্রিয়া
হ’ত। অতঃপর তিনি বলেন, এরূপ বহু ইস্রাঈলী কাহিনী রয়েছে। যার কোন ভিত্তি নেই
(কুরতুবী)। হাসান বছরী বলেন, এর অর্থ আদম-হাওয়া নয়। বরং মুশরিক দম্পতিগণ (ইবনু কাছীর)। আর শিরকের উৎপত্তি হয়েছে আদম (আঃ)-এর হাযার বছর পরে নূহ (আঃ)-এর যুগে (বুখারী হা/৪৯২০; সূরা নূহ ৭১/২৩-২৪)।