পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । পর্ব ৪ । পর্ব ৫ । শেষ পর্ব ।
জমিতে উৎপাদিত ফল ও ফসলের যাকাত
আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে আশরাফুল মাখলূকাত তথা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসাবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। আর পৃথিবীকে করেছেন মানুষের জন্য বসবাস উপযোগী আবাস। যমীনকে করেছেন মানুষের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَلَقَدْ مَكَّنَّاكُمْ فِيْ الْأَرْضِ وَجَعَلْنَا لَكُمْ فِيْهَا مَعَايِشَ قَلِيْلاً مَّا تَشْكُرُوْنَ ‘আমরা তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করেছি এবং সেখানে তোমাদের জীবিকার ব্যবস্থাও করেছি। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা সবীকার কর’ (আ‘রাফ ৭/১০)। তিনি অন্যত্র বলেন,
أَفَرَأَيْتُمْ مَا تَحْرُثُوْنَ- أَأَنْتُمْ تَزْرَعُوْنَهُ أَمْ نَحْنُ الزَّارِعُوْنَ- لَوْ نَشَاءُ لَجَعَلْنَاهُ حُطَامًا فَظَلْتُمْ تَفَكَّهُوْنَ- إِنَّا لَمُغْرَمُوْنَ- بَلْ نَحْنُ مَحْرُوْمُوْنَ-
‘তোমরা যে বীজ বপন কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি? তোমরা কি তাকে অংকুরিত কর, না আমরা অংকুরিত করি? আমরা ইচ্ছা করলে তাকে খড়কুটায় পরিণত করতে পারি, তখন তোমরা হতবুদ্ধি হয়ে পড়বে। বলবে, আমরা তো ঋণের চাপে পড়ে গেলাম; বরং আমরা হূত সর্বসব হয়ে পড়লাম’ (ওয়াকি‘আ ৫৬/৬৩-৬৭)। তিনি অন্যত্র বলেন,
فَلْيَنْظُرِ الْإِنْسَانُ إِلَى طَعَامِهِ- أَنَّا صَبَبْنَا الْمَاءَ صَبًّا- ثُمَّ شَقَقْنَا الْأَرْضَ شَقًّا- فَأَنْبَتْنَا فِيْهَا حَبًّا- وَعِنَبًا وَقَضْبًا- وَزَيْتُوْنًا وَنَخْلاً- وَحَدَائِقَ غُلْبًا- وَفَاكِهَةً وَأَبًّا- مَتَاعًا لَكُمْ وَلِأَنْعَامِكُمْ-
‘মানুষ তার খাদ্যের প্রতি লক্ষ্য করুক, আমরাই প্রচুর পানি বর্ষণ করেছি, এরপর আমরা ভূমিকে বিদীর্ণ করেছি, অতঃপর তাতে উৎপন্ন করেছি শস্য, আঙ্গুর, শাক-সব্জি, যয়তুন, খেজুর, ঘন উদ্যান, ফল এবং ঘাস তোমাদের ও তোমাদের চতুষ্পদ জন্তুদের উপকারার্থে’ (আবাসা ৮০/২৪-৩২)।
আল্লাহ তা‘আলা যমীনকে যেমন মানুষের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস বানিয়েছেন, তেমনি তা হ’তে উৎপাদিত ফসলের যাকাত ফরয করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا أَنْفِقُوْا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا كَسَبْتُمْ وَمِمَّا أَخْرَجْنَا لَكُمْ مِنَ الْأَرْضِ وَلاَ تَيَمَّمُوْا الْخَبِيْثَ مِنْهُ تُنْفِقُوْنَ وَلَسْتُمْ بِآخِذِيْهِ إِلَّا أَنْ تُغْمِضُوْا فِيْهِ وَاعْلَمُوْا أَنَّ اللهَ غَنِيٌّ حَمِيْدٌ-
‘হে মুমিনগণ! তোমরা যা উপার্জন কর এবং আমরা যা ভূমি হ’তে তোমাদের জন্য উৎপাদন করে দেই তন্মধ্যে যা উৎকৃষ্ট তা ব্যয় কর এবং তার নিকৃষ্ট বস্ত্ত ব্যয় করার সংকল্প কর না; অথচ তোমরা তা গ্রহণ করবে না, যদি না তোমরা চোখ বন্ধ করে থাক। আর জেনে রেখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ অভাবমুক্ত, প্রশংসিত’ (বাক্বারাহ ২/২৬৭)। তিনি অন্যত্র বলেন,
وَهُوَ الَّذِيْ أَنْشَأَ جَنَّاتٍ مَعْرُوْشَاتٍ وَغَيْرَ مَعْرُوْشَاتٍ وَالنَّخْلَ وَالزَّرْعَ مُخْتَلِفًا أُكُلُهُ وَالزَّيْتُوْنَ وَالرُّمَّانَ مُتَشَابِهًا وَغَيْرَ مُتَشَابِهٍ كُلُوْا مِنْ ثَمَرِهِ إِذَا أَثْمَرَ وَآتُوْا حَقَّهُ يَوْمَ حَصَادِهِ وَلاَ تُسْرِفُوْا إِنَّهُ لاَ يُحِبُّ الْمُسْرِفِيْنَ-
‘তিনিই লতা ও বৃক্ষ-উদ্যানসমূহ সৃষ্টি করেছেন এবং খেজুর গাছ, বিভিন্ন স্বাদ বিশিষ্ট খাদ্যশস্য, যায়তুন ও ডালিমও সৃষ্টি করেছেন; এগুলি একে অপরের সদৃশ এবং বিসদৃশও। যখন তা ফলবান হয় তখন তার ফল আহার করবে আর ফসল কাটার দিনে তার হক (যাকাত) প্রদান করবে এবং অপচয় করবে না; নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদেরকে ভালবাসেন না’ (আন‘আম ৬/১৪১)।
কৃষিপণ্যের যাকাতের নিছাব ও পরিমাণ
কৃষিপণ্যের যাকাতের নিছাব সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, لَيْسَ فِيْمَا أَقَلُّ مِنْ خَمْسَةِ أَوْسُقٍ صَدَقَةٌ ‘পাঁচ ওয়াসাক-এর কম উৎপন্ন ফসলের যাকাত নেই’।[1]
‘ওয়াসাক’-এর পরিমাণ : ১ ওয়াসাক সমান ৬০ ছা‘। অতএব ৫ ওয়াসাক সমান ৬০×৫=৩০০ ছা‘। ১ ছা‘ সমান ২ কেজি ৫০০ গ্রাম হ’লে ৩০০ ছা‘ সমান ৭৫০ কেজি হয়। অর্থাৎ ১৮ মন ৩০ কেজি। এই পরিমাণ শস্য বৃষ্টির পানিতে উৎপাদিত হ’লে ১০ ভাগের ১ ভাগ যাকাত ফরয। আর নিজে পানি সেচ দিয়ে উৎপাদন করলে ২০ ভাগের ১ ভাগ যাকাত ফরয। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,
فِيْمَا سَقَتِ السَّمَاءُ وَالْعُيُوْنُ أَوْ كَانَ عَثَرِيًّا الْعُشْرُ، وَمَا سُقِىَ بِالنَّضْحِ نِصْفُ الْعُشْرِ-
‘বৃষ্টি ও ঝর্ণার পানি দ্বারা সিক্ত ভূমিতে উৎপাদিত ফসল বা নালার পানিতে উৎপন্ন ফসলের উপর ‘ওশর’ (দশ ভাগের এক ভাগ) যাকাত ওয়াজিব। আর সেচ দ্বারা উৎপাদিত ফসলের উপর ‘অর্ধ ওশর’ (বিশ ভাগের এক ভাগ) যাকাত ওয়াজিব’।[2]
বৃষ্টির পানি ও কৃত্রিম সেচ উভয় মাধ্যমে উৎপাদিত শস্যের যাকাতের পরিমাণ : যে শস্য শুধুমাত্র বৃষ্টির পানি অথবা শুধুমাত্র কৃত্রিম সেচের মাধ্যমে উৎপন্ন হয় না। বরং কিছু অংশ বৃষ্টির পানিতে এবং কিছু অংশ কৃত্রিম সেচের মাধ্যমে উৎপন্ন হয়, সে শস্যের দশ ভাগের তিন-চতুর্থাংশ যাকাত দিতে হবে। অর্থাৎ কারো ২০ মণ ধান সম্পূর্ণ বৃষ্টির পানিতে উৎপন্ন হ’লে তার দশ ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ দুই মণ যাকাত দিতে হবে। আর নিজে সেচ দিয়ে উৎপন্ন করলে তার বিশ ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ এক মণ যাকাত দিতে হবে। আর কিছু অংশ বৃষ্টির পানি ও কিছু অংশ নিজের সেচের মাধ্যমে উৎপন্ন হ’লে তার দশ ভাগের তিন-চতুর্থাংশ অর্থাৎ এক মণ বিশ কেজি যাকাত দিতে হবে। ইবনু কুদামা (রহঃ) বলেন, এ ব্যাপারে ওলামায়ে কেরামের মধ্যে কোন মতভেদ আছে বলে আমার জানা নেই।[3]
এক শস্য অন্য শস্যের নিছাব পূর্ণ করবে কি?
কোন ব্যক্তির ১০ মণ ধান ও ১০ মণ গম উৎপন্ন হ’লে সে কি উভয় শস্য একত্রিত করে যাকাত আদায় করবে? না-কি পৃথকভাবে কোনটি নিছাব পরিমাণ না হওয়ায় যাকাত আদায় করা থেকে বিরত থাকবে? এ ব্যাপারে ছহীহ মত হ’ল, গম, যব, ধান ইত্যাদি প্রত্যেকটি পৃথক শস্য। অতএব শস্যগুলি পৃথকভাবে নিছাব পরিমাণ হ’লেই কেবল যাকাত ফরয। অন্যথা ফরয নয়। তবে একই শস্যের বিভিন্ন শ্রেণী একই নিছাবের অন্তর্ভুক্ত। যেমন মিনিকেট, পারিজা, চায়না, স্বর্ণা সহ বিভিন্ন শ্রেণীর ধান একই নিছাবের অন্তর্ভুক্ত।[4]
যে সকল শস্যের যাকাত ফরয
যে সকল শস্য জমিতে উৎপন্ন হয় তা যদি মানুষের সাধারণ খাদ্য হিসাবে বিবেচিত হয় এবং তা ওযন ও গুদামজাত করা যায়, সে সকল শস্যেই কেবল যাকাত ফরয। হাদীছে এসেছে,
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ إِنَّمَا سَنَّ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الزَّكَاةَ فِيْ هَذِهِ الأَرْبَعَةِ الْحِنْطَةِ وَالشَّعِيْرِ وَالزَّبِيْبِ وَالتَّمْرِ-
ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) গম, যব, কিসমিস এবং খেজুর এই চারটি শস্যের যাকাত প্রবর্তন করেছেন।[5] অন্য হাদীছে এসেছে,
عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ قَالَ عِنْدَنَا كِتَابُ مُعَاذٍ عَنِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ إِنَّمَا أَخَذَ الصَّدَقَةَ مِنَ الْحِنْطَةِ وَالشَّعِيْرِ وَالزَّبِيْبِ وَالتَّمْرِ-
মূসা ইবনু ত্বালহা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কর্তৃক মু‘আয (রাঃ)-এর নিকট প্রেরিত পত্র আমাদের নিকট ছিল। যাতে তিনি গম, যব, কিসমিস ও খেজুরের যাকাত গ্রহণ করেছেন।[6]
উল্লিখিত হাদীছদ্বয়ে বর্ণিত চারটি শস্যের যাকাতের কথা বলা হ’লেও এই চারটিকেই নির্দিষ্ট করা হয়নি। বরং ওযন ও গুদামজাত সম্ভব সকল শস্যই এর অন্তর্ভুক্ত। যেমন ধান, ভুট্টা ইত্যাদি।
অতএব গুদামজাত অসম্ভব এমন শস্যের যাকাত ফরয নয়। যেমন শাক-সবজি বা কাঁচা মালের কোন যাকাত (ওশর) নেই। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, لَيْسَ فِى الْخَضْرَوَاتِ زَكَاةٌ ‘শাক-সব্জিতে কোন যাকাত (ওশর) নেই’।[7] উল্লেখ্য যে, এ জাতীয় সম্পদের বিক্রয়লব্ধ অর্থ এক বছর অতিক্রম করলে এবং নিছাব পরিমাণ হ’লে শতকরা ২.৫০ টাকা হারে যাকাত দিতে হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, لاَ زَكَاةَ فِيْ مَالٍ حَتَّى يَحُوْلَ عَلَيْهِ الْحَوْلُ ‘এক বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে মালের যাকাত নেই’।[8]
কখন শস্যের যাকাত ফরয?
শস্য যখন পরিপক্ক হবে এবং তা কর্তন করা হবে তখন শস্যের যাকাত আদায় করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَآتُوْا حَقَّهُ يَوْمَ حَصَادِهِ ‘ফসল তুলবার দিনে তার হক (যাকাত) প্রদান করবে’ (আন‘আম ৬/১৪১)। উল্লেখ্য যে, শস্য কর্তন করে তা সংরক্ষণের যথাস্থানে রাখার পূর্বে নষ্ট বা হারিয়ে গেলে তার উপর যাকাত ফরয নয়। তবে তা সংরক্ষণের যথাস্থানে রাখার পরে মালিকের অলসতা বা অবহেলার কারণে নষ্ট হ’লে বা হারিয়ে গেলে তার উপর যাকাত ফরয। আর তা সংরক্ষণের যথাসাধ্য চেষ্টা করার পরে নষ্ট বা হারিয়ে গেলে তার উপর যাকাত ফরয নয়।[9]
শস্য উৎপাদনের ব্যয় বাদ দিয়ে যাকাত ফরয
উৎপাদনকারী শস্য উৎপাদনের কাজে ব্যয়কৃত যাবতীয় খরচ হিসাব করে বাদ দিয়ে অবশিষ্ট শস্যের যাকাত আদায় করবে। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন,
يَقْضِيْ مَا أَنْفَقَ عَلَى الثَّمَرَةِ، ثُمَّ يُزَكِّى مَا بَقِىَ-
‘প্রথমত ফল উৎপাদনে যা ব্যয় করেছে তা পরিশোধ করবে, অতঃপর অবশিষ্টাংশের যাকাত আদায় করবে’।[10]
বাৎসরিক লিজ নেয়া জমি থেকে উৎপাদিত শস্যের যাকাত
লীজের টাকা বাদ দিয়ে বাকী শস্যের যাকাত আদায় করতে হবে, না-কি উৎপাদিত সমুদয় শস্য হিসাব করে যাকাত দিতে হবে? এ ব্যাপারে ওলামায়ে কেরামের মধ্যে মতভেদ পরিলক্ষিত হয়। তবে গ্রহণীয় মত হ’ল, লীজের টাকা সহ উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে বাকী শস্য নিছাব পরিমাণ হ’লে তার ওশর আদায় করবে।[11]
মধুর যাকাতের হুকুম
আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে যেসব নে‘মত দান করেছেন তার মধ্যে মধু অন্যতম। তিনি বলেন,
وَأَوْحَى رَبُّكَ إِلَى النَّحْلِ أَنِ اتَّخِذِي مِنَ الْجِبَالِ بُيُوْتًا وَمِنَ الشَّجَرِ وَمِمَّا يَعْرِشُوْنَ- ثُمَّ كُلِيْ مِنْ كُلِّ الثَّمَرَاتِ فَاسْلُكِيْ سُبُلَ رَبِّكِ ذُلُلًا يَخْرُجُ مِنْ بُطُوْنِهَا شَرَابٌ مُخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيْهِ شِفَاءٌ لِلنَّاسِ إِنَّ فِيْ ذَلِكَ لَآيَةً لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُوْنَ-
‘আর তোমার রব মৌমাছিকে ইংগিতে জানিয়েছেন যে, তুমি পাহাড়ে ও গাছে এবং তারা যে গৃহ নির্মাণ করে তাতে নিবাস বানাও। অতঃপর তুমি প্রত্যেক ফল থেকে আহার কর এবং তুমি তোমার রবের সহজ পথে চল। তার পেট হ’তে এমন পানীয় বের হয়, যার রং ভিন্ন ভিন্ন, যাতে রয়েছে মানুষের জন্য রোগ নিরাময়। নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে সে কওমের জন্য, যারা চিন্তা করে’ (নাহল ১৬/৬৮-৬৯)।
এক্ষণে প্রশ্ন হ’ল, মানুষের উপর আললাহ তা‘আলার দানকৃত উপরোক্ত নে‘মত মধুর যাকাত আদায় করতে হবে কি-না? এ ব্যাপারে ওলামায়ে কেরামের মধ্যে মতভেদ পরিলক্ষিত হয়। তবে ছহীহ মত হ’ল, মধুর যাকাত আদায় করতে হবে না। কেননা তা প্রথমতঃ কুরআন ও ছহীহ হাদীছের দলীল দ্বারা সাব্যস্ত নয়। দ্বিতীয়তঃ তা এক প্রকার প্রাণীর পেট থেকে বের হয় যা গাভীর দুধের মত। সুতরাং দুধের যেমন যাকাত ফরয নয়, তেমনি মধুর যাকাত ফরয নয়।[12]
ব্যবসায়িক মালের যাকাত
আল্লাহ তা‘আলা মুসলমানদের জন্য হালাল বস্ত্তর ব্যবসা হালাল করেছেন এই শর্তে যে, তারা তাদের ব্যবসায় ইসলামী বিধি-বিধান লংঘন করবে না এবং আমানতদারী ও সততা সর্বতোভাবে রক্ষা করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَأَحَلَّ اللهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا ‘আললাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সূদকে হারাম করেছেন’ (বাক্বারাহ ২/২৭৫)। আল্লাহ তা‘আলার হালালকৃত ব্যবসায় যে সকল মাল ক্রয়-বিক্রয় করা হয় তাতে যাকাত ফরয। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা যা উপার্জন কর এবং আমি যা ভূমি হ’তে তোমাদের জন্য উৎপাদন করে দেই তন্মধ্যে যা উৎকৃষ্ট তা ব্যয় কর এবং তার নিকৃষ্ট বস্ত্ত ব্যয় করার সংকল্প কর না; অথচ তোমরা তা গ্রহণ করবে না, যদি না তোমরা চোখ বন্ধ করে থাক। আর জেনে রেখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ অভাবমুক্ত, প্রশংসিত’ (বাক্বারাহ ২/২৬৭)।
অত্র আয়াতে বর্ণিত مَا كَسَبْتُمْ অর্থাৎ ‘তোমরা যা উপার্জন কর’ দ্বারা ব্যবসায়িক মালকে বুঝানো হয়েছে। ইমাম বুখারী (রহঃ) باب صَدَقَةِ الْكَسْبِ وَالتِّجَارَةِ তথা ‘উপার্জিত ও ব্যবসায়িক মালের যাকাত’ শিরোনামে অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন।
আল্লাহ অন্যত্র বলেন, وَفِيْ أَمْوَالِهِمْ حَقٌّ لِلسَّائِلِ وَالْمَحْرُوْمِ ‘আর তাদের ধন-সম্পদে রয়েছে প্রার্থী ও বঞ্চিতের হক’ (যারিয়াত ৫১/১৯)। তিনি অন্যত্র বলেন, خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيْهِمْ بِهَا ‘তাদের সম্পদ হ’তে ছাদাক্বা গ্রহণ করবে। এর দ্বারা তুমি তাদেরকে পবিত্র করবে এবং পরিশোধিত করবে’ (তওবা ৯/১০৩)। উল্লিখিত আয়াত সমূহে আল্লাহ তা‘আলা সম্পদের যাকাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যবসায়িক মাল তা থেকে আলাদা নয়।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ)-কে ইয়ামানে পাঠালেন এবং বললেন, তারা যদি দিন-রাত্রে পাঁচ ওয়াক্ত ছালাতকে মেনে নেয় তাহ’লে তাদেরকে জানিয়ে দাও যে,
أَنَّ اللهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً فِيْ أَمْوَالِهِمْ، تُؤْخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ وَتُرَدُّ عَلَى فُقَرَائِهِمْ-
‘আল্লাহ তা‘আলা তাদের উপর তাদের সম্পদের মধ্য থেকে ছাদাক্বা (যাকাত) ফরয করেছেন। যেটা ধনীদের নিকট থেকে গৃহীত হবে আর দরিদ্রের মাঝে বণ্টন করা হবে’।[13] আর ব্যবসায়িক সম্পদ হাদীছে উল্লিখিত মাল থেকে আলাদা নয়। অতএব তার উপর যাকাত ফরয।
ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, لَيْسَ فِيْ الْعُرُوْضِ زَكَاةٌ إِلاَّ مَا كَانَ لِلتِّجَارَةِ ‘সম্পদের যাকাত নেই, কেবল ব্যবসায়িক সম্পদ ব্যতীত।[14]
ওমর ইবনু আব্দুল আযীয (রহঃ) তাঁর কর্মচারী রুযাইক ইবনু হুকাইমকে লিখে পাঠিয়েছিলেন যে,
أنِ انظُرْ مَنْ مَرَّ بِكَ مِنَ المُسْلِمِيْنَ فَخُذْ مِمَّا ظَهَرَ مِنْ أَمْوَالِهِمْ مِنْ التِّجَارَاتِ من كلِّ أربعيْنَ دِيْنَاراً دِيْنَاراً-
‘তোমার সামনে যে মুসলমানই আসবে তার ব্যবসায় ব্যবহৃত সব প্রকাশমান সম্পদ থেকে প্রতি চল্লিশ দীনারে এক দীনার যাকাত গ্রহণ কর’।[15]
ব্যবসায়িক মালের যাকাত ফরয হওয়ার শর্ত
(ক) যাকাত ফরয এমন দ্রব্য না হওয়া : মূলগত দিক থেকে যে দ্রব্যের যাকাত ফরয এমন বস্ত্ত না হওয়া। কেননা একই দ্রব্যের উভয় দিক থেকে বা দু’বার যাকাত আদায় করা সম্ভব নয়। যেমন- স্বর্ণ, রৌপ্য, গবাদী পশু ইত্যাদি নিছাব পরিমাণ হ’লে তার মালিকের উপর যাকাত ফরয। সুতরাং উল্লিখিত সম্পদ ব্যবসায়িক মালের অন্তর্ভুক্ত হ’লেও তার যাকাত মূলের দিক থেকেই আদায় হবে। ব্যবসায়িক দ্রব্য হিসাবে নয়।
(খ) ব্যবসায়িক পণ্যের মূল্য নিছাব পরিমাণ হওয়া : ব্যবসায়িক পণ্য নিছাব পরিমাণ হ’তে হবে। আর তা হ’ল, ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ অথবা ৫৯৫ গ্রাম রৌপ্যের মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া।
(গ) পূর্ণ এক বছর মালিকানায় থাকা : নিছাব পরিমাণ ব্যবসায়িক পণ্য পূর্ণ এক বছর মালিকানায় থাকলেই কেবল যাকাত ফরয। অন্যথা যাকাত ফরয নয়।
দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় ব্যবসায়িক পণ্য-সামগ্রীর যাকাত
মানুষের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী যা দোকানে গচ্ছিত রেখে প্রতিনিয়ত ক্রয়-বিক্রয় করা হয়, তার যাকাত আদায় করা ফরয। আর এ সকল পণ্যের যাকাত আদায় করার জন্য মালিক তার দোকানে গচ্ছিত পণ্যের বর্তমান বাজারমূল্য হিসাব করে শতকরা ২.৫০ টাকা হারে যাকাত দিবেন। উল্লেখ্য যে, বিক্রয় করা হবে না এমন কোন জিনিস দোকানে থাকলে তার যাকাত আদায় করতে হবে না। যেমন ফ্রিজ যা পণ্যকে ঠান্ডা রাখার জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে। অনুরূপভাবে দোকানের আসবাবপত্র যা বিক্রয় করা হয় না, তার যাকাত আদায় করতে হবে না।[16]
জমির যাকাত
আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে যতগুলো সম্পদ দান করেছেন তার মধ্যে জমি অতি মূল্যবান একটি সম্পদ। এই মূল্যবান সম্পদের কখন ও কিভাবে যাকাত আদায় করতে হবে তা নিম্নে আলোচনা করা হ’ল :
(ক) জমি যদি বসবাস অথবা চাষাবাদের কাজে ব্যবহৃত হয় তাহ’লে সেই জমির কোন যাকাত আদায় করতে হবে না। বরং উক্ত জমি থেকে যে শস্য উৎপাদিত হবে তা নিছাব পরিমাণ হ’লে তার ওশর বা যাকাত আদায় করতে হবে।
(খ) উক্ত জমি ভাড়ায় খাটানো হ’লে অথবা ভাড়া দেওয়ার উদ্দেশ্যে বিল্ডিং তৈরী করা হ’লে সেই জমির কোন যাকাত আদায় করতে হবে না। বরং তা থেকে অর্জিত নিছাব পরিমাণ অর্থ এক বছর অতিক্রম করলে শতকরা ২.৫০ টাকা হারে যাকাত দিতে হবে।
(গ) ব্যবসার উদ্দেশ্যে জমি ক্রয় করলে (সরাসরি উক্ত জমি বিক্রয় করে লাভ করার উদ্দেশ্য থাকলে) এবং তা এক বছর অতিক্রম করলে সেই জমির বর্তমান মূল্য হিসাব করে শতকরা ২.৫০ টাকা হারে যাকাত দিতে হবে। উল্লেখ্য যে, উক্ত জমির বছর হিসাব করা হবে ঐ সময় থেকে, যখন থেকে তার নিকট জমি ক্রয় করার টাকা গচ্ছিত হয়েছে। এ সময় থেকে এক বছর অতিক্রম করলে উক্ত জমির বর্তমান মূল্যের শতকরা ২.৫০ টাকা হারে যাকাত প্রদান করবে। আর এক বছর অতিক্রম হওয়ার পূর্বেই জমি বিক্রয় করলে বিক্রয়লব্ধ টাকা নিছাব পরিমাণ হ’লে তা থেকে যাকাত আদায় করবে।
অতএব মূল কথা হ’ল, ব্যবসার উদ্দেশ্যে জমি ক্রয়-বিক্রয় করলেই কেবল সেই জমির বর্তমান মূল্য হিসাব করে শতকরা ২.৫০ টাকা হারে যাকাত দিতে হবে। আর ব্যবসার উদ্দেশ্য না থাকলে সেই জমির কোন যাকাত আদায় করতে হবে না। বরং তা থেকে অর্জিত অর্থ নিছাব পরিমাণ হ’লে তার শতকরা ২.৫০ টাকা হারে যাকাত দিতে হবে।[17]
যাকাত প্রদানের খাতসমূহ
মহান আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআন মাজীদে যাকাত প্রদানের ৮টি খাত উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন,
إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِيْنِ وَالْعَامِلِيْنَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوْبُهُمْ وَفِيْ الرِّقَابِ وَالْغَارِمِيْنَ وَفِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَابْنِ السَّبِيْلِ فَرِيْضَةً مِّنَ اللهِ وَاللهُ عَلِيْمٌ حَكِيْمٌ-
‘নিশ্চয়ই ছাদাক্বা (যাকাত) হচ্ছে ফকীর ও মিসকীনদের জন্য এবং এতে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য, আর যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য; (তা বণ্টন করা যায়) দাস আযাদ করার ক্ষেত্রে, ঋণগ্রস্তদের মধ্যে, আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের মধ্যে। এটি আল্লাহর পক্ষ হ’তে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়’ (তওবা ৯/৬০)।
উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা যাকাত প্রদানের ৮টি খাত উল্লেখ করেছেন। নিম্নে প্রত্যেকটি খাত আলাদাভাবে আলোচনা করা হ’ল-
(১) ফকীর : নিঃসম্বল ভিক্ষাপ্রার্থী। যাকে আল্লাহ তা‘আলা যাকাতের ৮টি খাতের প্রথমেই উল্লেখ করেছেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) প্রতিনিয়ত দারিদ্র্য থেকে আল্লাহর নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। তিনি বলতেন, اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْكُفْرِ وَالْفَقْرِ ‘ হে আললাহ! আমি তোমার নিকট কুফরী ও দারিদ্র্য থেকে আশ্রয় চাচ্ছি’।[18]
(২) মিসকীন : যে ব্যক্তি নিজের প্রয়োজন মিটাতেও পারে না, মুখ ফুটে চাইতেও পারে না। বাহ্যিকভাবে তাকে সচ্ছল বলেই মনে হয়।[19] যাকাত প্রদানের ৮টি খাতের মধ্যে দ্বিতীয় খাত হিসাবে আল্লাহ তা‘আলা মিসকীনকে উল্লেখ করেছেন।
(৩) যাকাত আদায়কারী ও হেফাযতকারী : আল্লাহ তা‘আলা যাকাত প্রদানের তৃতীয় খাত হিসাবে ঐ ব্যক্তিকে উল্লেখ করেছেন, যে ব্যক্তি যাকাত আদায়, হেফাযত ও বণ্টনের কাজে নিয়োজিত। অতএব উক্ত ব্যক্তি সম্পদশালী হ’লেও সে চাইলে যাকাতের অংশ গ্রহণ করতে পারবে।[20]
উল্লেখ্য, রাষ্ট্র কর্তৃক যাকাত আদায়ের জন্য নিযুক্ত ব্যক্তিই থাকাতের অর্থ গ্রহণ করতে পারবেন।
(৪) ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য কোন অমুসলিমকে যাকাত প্রদান করা : ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে অথবা কোন অনিষ্ট বা কাফেরের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার লক্ষ্যে কোন অমুসলিমকে যাকাতের অর্থ প্রদান করা যায়।[21]
(৫) দাস মুক্তির জন্য : যারা লিখিত কোন চুক্তির বিনিময়ে দাসে পরিণত হয়েছে। তাদেরকে মালিকের নিকট থেকে ক্রয়ের মাধ্যমে মুক্ত করার লক্ষ্যে যাকাতের অর্থ প্রদান করা যায়। অনুরূপভাবে বর্তমানে কোন মুসলিম ব্যক্তি অমুসলিমদের হাতে বন্দি হ’লে সে ব্যক্তিও এই খাতের অন্তর্ভুক্ত হবে।[22]
(৬) ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি : ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিকে তার ঋণ থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে যাকাত প্রদান করা যাবে।
(৭) আল্লাহর রাস্তায় : আল্লাহর দ্বীনকে সমুন্নত করার লক্ষ্যে যে কোন ধরনের প্রচেষ্টা ‘ফী সাবীলিল্লাহ’ বা আল্লাহর রাস্তার অন্তর্ভুক্ত। জিহাদ, দ্বীনী ইলম অর্জনের যাবতীয় পথ এবং দ্বীন প্রচারের যাবতীয় মাধ্যম এ খাতের অন্তর্ভুক্ত।
(৮) মুসাফির : সফরে গিয়ে যার পাথেয় শেষ হয়ে গেছে সে ব্যক্তিকে যাকাতের অর্থ প্রদান করে বাড়ী পর্যন্ত পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে যাকাতের অর্থ দান করা যাবে। এক্ষেত্রে উক্ত মুসাফির সম্পদশালী হ’লেও তাকে যাকাত প্রদান করা যাবে।
নির্ধারিত ৮ টি খাতে যাকাত বণ্টনের পদ্ধতি
আল্লাহ তা‘আলা সূরা তওবার ৬০ নম্বর আয়াতে যাকাত প্রদানের যে ৮টি খাত নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন তার মধ্যেই যাকাত বণ্টন সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। এর বাইরে যাকাত প্রদান করা সিদ্ধ নয়। তবে যাকাতকে সমান ৮ ভাগে ভাগ করতে হবে না। বরং ৮টি খাতের মধ্যে যে খাতগুলো পাওয়া যাবে সেগুলোর মধ্যে প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রেখে কম-বেশী করে যাকাত বণ্টন করতে হবে। এমনকি প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে কোন একটি খাতে সম্পূর্ণ যাকাত প্রদান করলেও তা আদায় হয়ে যাবে।২৩
[চলবে]
মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব।
[1]. বুখারী হা/১৪৮৪, ‘যাকাত’ অধ্যায়, ঐ, বঙ্গানুবাদ (তাওহীদ পাবলিকেশন্স) ২/১২০ পৃঃ; মুসলিম হা/৯৭৯; মিশকাত হা/১৭৯৪।
[2]. বুখারী হা/১৪৮৩, ‘যাকাত’ অধ্যায়, ঐ, বঙ্গানুবাদ ২/১১৯ পৃঃ; মিশকাত হা/১৭৯৭।
[3]. ইবনু কুদামা, শারহুল কাবীর ২/৫৬৩ পৃঃ; মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল-উছায়মীন, শারহুল মুমতে‘ ৬/৭৮ পৃঃ।
[4]. ছহীহ ফিক্বহুস সুন্নাহ ২/৪৫ পৃঃ।
[5]. সুনানুদ দারাকুতনী হা/১৯৩৬; সিলসিলা ছহীহা হা/৮৭৯।
[6]. মুসনাদে আহমাদ হা/২২০৪১; সিলসিলা ছহীহা, হা/৮৭৯।
[7]. ছহীহ জামেউছ ছগীর হা/৫৪১১, আলবানী, সনদ ছহীহ।
[8]. তিরমিযী হা/৬৩২; ইবনু মাজাহ হা/১৭৯২; আলবানী, সনদ ছহীহ।
[9]. শারহুল মুমতে‘ ৬/৮২ পৃঃ।
[10]. সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী হা/৭৮৫৮।
[11]. ইউসুফ আল-কারযাভী, ইসলামের যাকাত বিধান, ১/৩৫৯ পৃঃ।
[12]. শারহুল মুমতে‘ আলা যাদিল মুস্তাকনি‘ ৬/৮৭-৮৮ পৃঃ; ফিক্বহুস সুন্নাহ ২/৫০-৫২ পৃঃ।
[13]. বুখারী হা/১৩৯৫, ‘যাকাত’ অধ্যায়, ‘যাকাত ওয়াজিব হওয়া’ অনুচ্ছেদ, ঐ বঙ্গানুবাদ, ২/৭৫ পৃঃ; মুসলিম হা/১৯।
[14]. সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী হা/৭৩৯৪; আলবানী সনদ ছহীহ।
[15]. মুওয়াত্তা মালেক, হা/৮৮০।
[16]. ছহীহ ফিকহুস সুন্নাহ ২/৫৭ পৃঃ।
[17]. শরহুল মুমতে‘ ৬/১৪২-১৪৩ পৃঃ।
[18]. আবুদাউদ হা/৫০৯০; নাসাঈ হা/১৩৪৭; মিশকাত হা/২৪৮০।
[19]. বুখারী হা/৪৫৩৯, ১৪৭৯; মুসলিম হা/১০৩৯(১০২)।
[20]. শারহুল মুনতে ৬/২২৫।
[21]. তদেব ৬/২২৬।
[22]. তদেব ৬/২৩০।
২৩. তদেব ৬/৪৭-৪৮।