পটভূমি :

সার্ভকোয়াল (SERVQUAL) মডেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা পরিষেবার গুণগতমান নিরূপণের একটি বহুল ব্যবহৃত তত্ত্ব।[1] মডেলটি উপস্থাপিত করার আগে কয়েকটি ধারণার ব্যাপারে আলোচনা করা প্রয়োজন। প্রথমতঃ শিক্ষা মূলত: ছাত্রদের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন। এই প্রয়োজন মিটানোর জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন সম্পদ ব্যয় করে শিক্ষা পরিষেবা (education service) তৈরি করে এবং ছাত্রদের সরবরাহ করে টিউশন ফিসের বিনিময়ে অথবা অবৈতনিকভাবে।[2]দ্বিতীয়তঃ শিক্ষা একটি পরিষেবা (service) এবং এই কারণে অন্যান্য পরিষেবার (যেমন স্বাস্থ্য পরিষেবা, ভ্রমণ পরিষেবা, আতিথেয়তা পরিষেবা প্রভৃতি) সাথে শিক্ষা পরিষেবার বৈশিষ্ট্যগত সাদৃশ্য রয়েছে। যেমন শিক্ষা পরিষেবা হচ্ছে অধরা বা অমূর্ত বা বস্ত্তনিরপেক্ষ (intangible)। অর্থাৎ এই পরিষেবা লাভ করার আগে বা গ্রহণ করার আগে দেখা যায় না। আর এটা সংরক্ষণ বা স্টোর (store) বা ইনভেন্টরি (inventory) করা যায় না। এছাড়াও এটার উৎপাদন (production) ও ব্যবহার বা ভোগ (consumption) একই সাথে সম্পন্ন হয়। তার মানে, শিক্ষক ক্লাসে গিয়ে যখন পড়ানো শুরু করেন, তখন শিক্ষা পরিষেবা উৎপাদন শুরু হয়। আর ক্লাসে উপস্থিত থেকে ছাত্ররা সাথে সাথে শিক্ষা পরিষেবা গ্রহণ/ভোগ করে। ক্লাস শেষ হওয়ার সাথে সাথে শিক্ষা পরিষেবার উৎপাদন (production) ও ভোগ (consumption) সম্পন্ন হয়ে যায়।[3] এই সমস্ত বিশেষ গুণাবলীর কারণে শিক্ষা পরিষেবা সহ যেকোন পরিষেবার (service) মান (quality) নির্ণয় করা বিভিন্ন প্রয়োজন পূরণকারী অন্যান্য দৃশ্যমান (tangible or observable) পণ্যের (product) তুলনায় অধিকতর চ্যালেঞ্জিং বা কঠিন।[4]

তৃতীয়তঃ শিক্ষা পরিষেবার মান নির্ধারণ করতে হ’লে ঠিক করে নিতে হবে কার দৃষ্টিকোণ থেকে গুণগতমান নির্ধারণ করা হবে। কেননা শিক্ষা পরিষেবার বিভিন্ন প্রকার স্টেকহোল্ডার (stakeholder) আছে। অর্থাৎ নানা ধরনের মানুষের নানা ধরনের স্বার্থ শিক্ষা পরিষেবার সাথে জড়িত। যেমন ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-কর্মকর্তা, ম্যানেজমেন্ট, অভিভাবক, তত্ত্বাবধায়ক, সহায়তাকারী, তহবিল সরবরাহকারী, শিক্ষা বোর্ড, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, পরিচালনা পরিষদ, সামাজিক কণ্ঠ, স্নাতকদের সম্ভাব্য নিয়োগকর্তা বৃনদ, উচ্চ শিক্ষার কর্তৃপক্ষ, বৃহত্তর সমাজ প্রভৃতির এরা সবাই শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মানকে একভাবে দেখে না।[5] যেমন ছাত্ররা চায় ভাল পড়াশুনা, ভাল রেজাল্ট, উচ্চ শিক্ষার ভাল সুযোগ ও ভাল চাকরি পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন ইত্যাদি। অন্যদিকে ম্যানেজমেন্টের লক্ষ্য থাকে সফলতার মাত্রা (succes rate), ছাত্র ধরে রাখা (student retention), শিক্ষানীতির বাস্তবায়ন, রিসোর্স আকর্ষণ, ইমেজ বৃদ্ধি, নতুন নতুন প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্ট (development) ইত্যাদির উপর। সার্ভকোয়াল মডেল অনুযায়ী ছাত্রদের, যারা হ’ল প্রধান ক্লায়েন্ট (client), তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে শিক্ষা পরিষেবার মান নির্ণয় করা তাতে অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের (stakeholder) আশা-আকাঙ্ক্ষা অনেকটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে (automatically) অর্জিত হয়ে যাবে। সেজন্য সার্ভকোয়াল মডেল ছাত্রদের দৃষ্টিকোণ থেকে বা শিক্ষার্থীমুখী শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মানের ব্যাখ্যা প্রদান করে।[6]

চতুর্থতঃ শিক্ষা পরিষেবার গুণগতমানকে কেন গুরুত্ব দিতে হবে? শিক্ষার গুরুত্ব পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ দ্বারা সাব্যস্ত। যেমন কুরআনের কয়েকটি আয়াতে বলা হচ্ছে, ‘আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বিশেষ প্রজ্ঞা দান করেন। আর যাকে উক্ত প্রজ্ঞা দান করা হয়, তাকে প্রভূত কল্যাণ দান করা হয়’ (বাক্বারাহ ২/২৬৯), ‘হে প্রভু! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দাও’ (ত্বোয়াহা ২০/১১৪), ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে, আল্লাহ তাদেরকে উচ্চ মর্যাদা দান করবেন’ (মুজাদালাহ ৫৮/১১)

অনুরূপভাবে ছহীহ হাদীছেও শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। যেমন আনাস ইবনে মালেক বর্ণনা করেছেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘প্রত্যেক মুসলিমের উপরে জ্ঞান অন্বেষণ করা ফরয’।[7] অন্যত্র আবু হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইলম হাছিল করার উদ্দেশ্যে পথ চলবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের পথ সুগম করে দিবেন’।[8]

যেহেতু শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ তাই অপরিহার্যভাবে শিক্ষার গুণগত মানও গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও বহির্বিশ্বের শিক্ষা-সাহিত্য বা শিক্ষার বৈজ্ঞানিক গবেষণা শিক্ষার গুণগত মানের গুরুত্ব নানাভাবে তুলে ধরেছে। উদাহরণ স্বরূপ গুণগত শিক্ষা মানুষকে মানবিক করার জন্য সচেতন প্রচেষ্টা। একটি জাতির প্রাণশক্তির জন্য প্রথম ও প্রধান শর্ত হ’ল গুণগত জ্ঞান অর্জন করা। গুণগত শিক্ষা পরিষেবা ছাত্রদের ভ্যালু-পারসেপশন (value-perception) বৃদ্ধি করে।

এখানে ভ্যালু-পারসেপশন এটার পারিভাষিক (পরিষেবা সাহিত্য অনুযায়ী) অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, যার অর্থ হচ্ছে ছাত্ররা শিক্ষা পরিষেবা থেকে যা কিছু অর্জন করছে (benefits) এবং এই শিক্ষা পরিষেবা পাওয়ার জন্য যা কিছু ত্যাগ (sacrifices) করছে এই দুইয়ের একটি অনুপাত (ratio of benefits/sacrifices)। অর্জনের মধ্যে আছে ভাল শিক্ষা লাভ, শিক্ষার প্রত্যাশিত লক্ষ্য অর্জন, প্রত্যাশিত দক্ষতা অর্জন, প্রতিযোগিতামূলক হওয়া, আত্মতৃপ্তি ইত্যাদি। আর ত্যাগের মধ্যে আছে সময় ব্যয়, প্রচেষ্টা চালানো, পরিশ্রম, অর্থ-সম্পদ ব্যয় ইত্যাদি। এই অনুপাত যত বৃদ্ধি পাবে, অর্থাৎ ত্যাগের তুলনায় অর্জন যত বেশি হবে ভ্যালু-পারসেপশন তত বৃদ্ধি পাবে।

বহির্বিশ্বের সকল প্রকার প্রতিষ্ঠানসমূহ এই ভ্যালু-পারসেপশন বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাদের সকল পরিকল্পনা ও সমস্ত প্রচেষ্টা পরিচালিত করে থাকে। কেননা শিক্ষা পরিষেবার ভ্যালু-পারসেপশন আর শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মান পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। একের হ্রাস-বৃদ্ধির দ্বারা অন্যটির হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে।[9] গবেষণা অনুযায়ী সার্ভকোয়াল মডেল অনুসরণ করে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তার পরিষেবার গুণগত মান উন্নয়নের মাধ্যমে ছাত্রদের ভ্যালু-পারসেপশন বাড়িয়ে প্রতিষ্ঠানের টেকসই প্রবৃদ্ধি এবং দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্ব বহুলাংশে নিশ্চিত করতে পারে।[10] এই সংক্ষিপ্ত পটভূমির পরে এবার আমরা সার্ভকোয়াল মডেল নিয়ে আলোচনা করব।

সার্ভকোয়াল মডেল

সার্ভকোয়াল (SERVQUAL) মডেলটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮৫ সালে এবং সেই থেকে বহির্বিশ্বের বিদ্বানরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন পরিষেবা সরবরাহকারী সংস্থার পরিষেবার গুণগত মানের মূল্যায়ন করতে এই মডেলটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করছেন। এই মডেল অনুসারে পরিষেবা গুণগত মানের (service quality) পাঁচটি মাত্রা (dimensions) রয়েছে, যথা (১) বস্ত্তগত দিক (tangibility), (২) নির্ভরযোগ্যতা/বিশ্বাসযোগ্যতা (reliability), (৩) প্রতিক্রিয়াশীলতা (responsiveness), (৪) আশ্বাসন (assurance) এবং (৫) সহানুভূতিশীলতা (empathy)। প্রথমতঃ এই মডেলের মাত্রার (dimensions) সংখ্যা ছিল ১০টি যা পরবর্তীতে উপরোক্ত ৫ টিতে একীভূত করা হয়েছে সহজতর এবং অধিকতর প্রয়োগযোগ্য করার জন্যে।[11] এই মডেল অনুযায়ী ছাত্রদের মধ্যে এই পাঁচটি মাত্রা সম্বন্ধে প্রত্যাশা (expectations) তৈরী হয় এবং এরপর শিক্ষা পরিষেবার অভিজ্ঞতা লাভ করার মাধ্যমে তাদের মধ্যে এই পাঁচটি মাত্রার ব্যাপারে বাস্তব উপলব্ধি (perceptions) অর্জিত হয়। প্রত্যাশা এবং বাস্তব উপলব্ধির পার্থক্যের (discrepancies) দ্বারা শিক্ষা পরিষেবার গুণমানকে সংজ্ঞায়িত করা হয়। প্রত্যাশার তুলনায় বাস্তব উপলব্ধি কম হ’তে পারে, সমান হ’তে পারে বা বেশী হ’তে পারে। যখন প্রত্যাশার তুলনায় বাস্তব উপলব্ধি কম হবে, তখন ছাত্রদের কাছে শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মান অসন্তোষজনক হবে। আর যখন প্রত্যাশার তুলনায় বাস্তব উপলব্ধি সমান বা বেশী হবে তখন ছাত্রদের কাছে শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মান সন্তোষজনক (satisfactory) হবে।

এভাবে প্রত্যাশা এবং বাস্তব উপলব্ধির পার্থক্যের মাধ্যমে শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মান নির্ধারণের পন্থাকে বলে ডিসকনফার্মেশন পন্থা (disconfirmation approach)। এই পন্থার আরেকটি সহজ সংস্করণ হ’ল পরিষেবা গুণগত মানের পাঁচটি মাত্রার (dimensions) শুধু বাস্তব উপলব্ধির (perceptions) মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মান নির্ণয় করা।[12] সেক্ষেত্রে পরিষেবার গুণগত মানের স্তর নির্ধারণের জন্য কোন এক প্রকার গ্রেডিং স্কেলের প্রয়োজন হবে। যেমন একটি ৫ পয়েন্ট গ্রেডিং স্কেল (১) তীব্র অসন্তুষ্ট, (২) অসন্তুষ্ট, (৩) অসন্তুষ্ট বা সন্তুষ্টও নয়, (৪) সন্তুষ্ট এবং (৫) তীব্র সন্তুষ্ট। এই গ্রেডিং স্কেল অনুযায়ী পাঁচটি মাত্রার বাস্তব উপলব্ধির পরিমাপ ৩ পয়েন্ট-এর উপরে থাকলে শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মান ভাল বলে গণ্য হবে। আর ৩ পয়েন্ট-এর নিচে হ’লে পরিষেবার গুণগত মান ভাল নয় ধরতে হবে। এবার শিক্ষা পরিষেবা গুণগত মানের (service quality) পাঁচটি মাত্রা সম্বন্ধে আলোচনা করা হবে।

(১) বস্ত্তগত দিক (tangibility) : একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সকল বস্ত্তগত বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত। যেমন অবকাঠামো, বিল্ডিং, ক্লাস রুম, অঙ্গন, পাঠাগার, পরীক্ষাগার, জিমনেশিয়াম, হোস্টেল, অফিস, টয়লেট, ক্যাফেটারিয়া, কম্পিউটার, প্রজেক্টর, বইয়ের দোকান, ছাত্র সভার স্থান, সরঞ্জাম, শিক্ষক-স্টাফ, যোগাযোগের উপকরণ, ব্রোশিওর, প্রসপেক্টাস, ছাত্র হ্যান্ড আউট, পোস্টার, পাঠ্যতালিকা ইত্যাদি। এগুলোর কতগুলো চরিত্রগত দিক, যথা এদের (ক) দৃশ্যমান উপস্থাপনা (physical appearance), (খ) আধুনিকতা (level of modernity), (গ) রক্ষণাবেক্ষণের মান (how well they are maintained), এবং (ঘ) পরিচ্ছন্নতা ও পরিপাটিত্ব (neat and tidiness)। এগুলি সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মানের বস্ত্তগত দিকমাত্রাটি (tangibility dimension) কি পরিমাণ মান সম্পন্ন তা নির্ধারণ করে। এটি এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, শিক্ষক-স্টাফদের দৃশ্যমান উপস্থাপনা (physical appearance) এবং পরিচ্ছন্নতা ও পরিপাটিত্ব বস্ত্তগত দিক মাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

(২) নির্ভরযোগ্যতা/বিশ্বাসযোগ্যতা (reliability) : নির্ভরযোগ্যতা/বিশ্বাসযোগ্যতা হচ্ছে শিক্ষক-স্টাফ (শিক্ষা পরিষেবা কর্মীরা) কত দক্ষতার সাথে ছাত্রদের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ শিক্ষা পরিষেবা নির্ভরযোগ্যভাবে এবং সঠিকভাবে প্রদান করে থাকে। এখানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ শিক্ষা পরিষেবা হচ্ছে সেই সমস্ত শিক্ষা পরিষেবা যেগুলোর কথা বলা হয়েছে ব্রোশিওরে, প্রসপেক্টাসে, সিলেবাসে, কোর্সের রূপরেখায় (course outlines), শেখার ফলাফলে (learning outcomes), কোর্স অবজেক্টিভে (course objectives), শিক্ষণ কৌশলে (teaching strategies), প্রতিষ্ঠানের ভিশন ও মিশন (vision and mission), প্রভৃতিতে। আর নির্ভরযোগ্যভাবে হচ্ছে প্রতিটি প্রতিশ্রুত শিক্ষা পরিষেবা সর্বদা সময়মতো (consistently on time) সম্পন্ন করা। যেন ছাত্রদের মাঝে এ ব্যাপারে কোন অনিশ্চয়তা না থাকে। পরিশেষে সঠিকভাবে শিক্ষা পরিষেবা প্রদান করা হচ্ছে শিক্ষক-স্টাফরা এমনভাবে নিজেদেরকে প্রশিক্ষিত করে তুলবেন যাতে করে যে কোন শিক্ষা পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে প্রথমবারেই সঠিক বা ত্রুটিমুক্ত পরিষেবা দিতে পারেন ধারাবাহিকভাবে (consistently)।

(৩) প্রতিক্রিয়াশীলতা (responsiveness) : প্রতিক্রিয়াশীলতা হ’ল ছাত্রদের সহায়তা করার জন্য শিক্ষক-স্টাফদের আন্তরিক আগ্রহ থাকা এবং ছাত্রদের সর্বদা দ্রুত পরিষেবা প্রদান করা। এখানে ছাত্রদের সহায়তা করার ব্যাপারে আগ্রহ থাকা হচ্ছে, শিক্ষক-স্টাফরা সর্বদা ছাত্রদের সাহায্য করার জন্য তৈরি থাকবেন এবং সাহায্য চাওয়া মাত্রই সাহায্য করতে নিয়োজিত হবেন। দ্রুত পরিষেবা প্রদান করা হ’ল ছাত্রদের জন্য শিক্ষক-স্টাফদের প্রাপ্য/উপস্থিত থাকা এবং কোন ব্যস্ততার কারণে ছাত্রদের সহায়তা করা থেকে বিরত না থাকা। অর্থাৎ ছাত্রদের সহায়তার কাজকে অগ্রাধিকার দেওয়া। যখন ছাত্রদের সহায়তা করার কাজ চলে আসবে তখন অন্যসব কাজ স্থগিত করে ছাত্রদের সহায়তা করতে হবে।

(৪) আশ্বাসন (assurance) : আশ্বাসন হ’ল শিক্ষক-স্টাফদের জ্ঞান, শিষ্টাচার/ভদ্রতা এবং আস্থা ও আত্মবিশ্বাস চিত্রিত করার দক্ষতা/যোগ্যতা। বিশেষভাবে ছাত্রদের শিক্ষা পরিষেবা প্রদান করার জন্য শিক্ষক-স্টাফদের পর্যাপ্ত ও হালনাগাদ জ্ঞান থাকা আবশ্যক। উপরন্তু শিক্ষক-স্টাফরা ছাত্রদের প্রতি সর্বদা ভদ্র আচরণ করবেন। ছাত্রদের সম্মানবোধে আঘাত লাগতে পারে এমন কোন আচরণ করা থেকে বিরত থাকবেন। অধিকন্তু তাঁদের গভীর ও প্রাসঙ্গিক জ্ঞান এবং ভদ্র আচরণের দ্বারা শিক্ষক-স্টাফরা ছাত্রদের আস্থা অর্জনের চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। অবশেষে শিক্ষক-স্টাফদের সামগ্রিক ব্যবহার এমন হবে যা ছাত্রদের আত্মবিশ্বাসী হ’তে অনুপ্রাণিত করে।

(৫) সহানুভূতিশীলতা (empathy) : সহানুভূতিশীলতা হ’ল ছাত্রদের প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং ছাত্রদের প্রতি ব্যক্তিগত মনোযোগ দেওয়া। আরো নির্দিষ্টভাবে ছাত্রদের প্রতি যত্নশীলতা প্রতিফলিত হবে তখন, যখন পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে শিক্ষক-স্টাফদের অন্তরে ছাত্রদের সর্বোচ্চ স্বার্থ নিশ্চিত করার বাসনা থাকবে এবং সকল প্রকার পরিষেবা ছাত্রদের সুবিধাজনক সময়ে প্রদান করা হবে। এছাড়াও শিক্ষক-স্টাফরা প্রতিটি ছাত্রের প্রতি ব্যক্তিগতভাবে মনোযোগ দিবেন এবং তাঁরা প্রতিটি ছাত্রের বিশেষ প্রয়োজন সম্বন্ধে অবগত থাকবেন।

বাস্তবায়ন কৌশল :

প্রথমতঃ সার্ভকোয়াল মডেলভুক্ত পাঁচটি শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মানের মাত্রা বা বৈশিষ্ট্য। যথা বস্ত্তগত দিক, নির্ভরযোগ্যতা, প্রতিক্রিয়াশীলতা, আশ্বাসন এবং সহানুভূতিশীলতা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। এব্যাপারে AIDA (awareness-interest-desire-action)[13] সচেতনতা-আগ্রহ-ইচ্ছা-কর্ম, তত্ত্ব অনুসরণ করা যেতে পারে। শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মানের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে শিক্ষক-স্টাফদের সচেতন করার জন্য আলোচনা সভা, সেমিনার বা কর্মশালা পরিচালনা করা যেতে পারে।

যথেষ্ট পরিমাণ সচেতনতা হাছিলের পর আগ্রহ সৃষ্টির চেষ্টা করতে হবে এবং সেজন্য সার্ভকোয়াল মডেল ও তার পাঁচটি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে অধিকতর তথ্য (নিবন্ধ, গবেষণা পেপার ইত্যাদি) সরবরাহের প্রয়োজন হবে। উপরন্তু সার্ভকোয়াল মডেল ও তার পাঁচটি বৈশিষ্ট্য বাস্তবায়নের সুবিধা-অসুবিধাগুলো তুলে ধরতে হবে। আগ্রহ সৃষ্টির পর সে আগ্রহকে ইচ্ছায় রূপান্তরের জন্য সার্ভকোয়াল মডেলভুক্ত পাঁচটি শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মানের বাস্তবায়নের ফলে শিক্ষক-স্টাফদের কি কি ফায়দা হবে (পেশাগত এবং ব্যক্তিগত) সেসব সুস্পষ্টভাবে বোঝাতে হবে। যখন ইচ্ছে জাগ্রত হবে তখন শিক্ষক-স্টাফরা বাস্তবায়নের জন্য অনুপ্রাণিত হবেন এবং আনন্দের সাথে বাস্তবায়ন করবেন।

দ্বিতীয়তঃ সার্ভকোয়াল মডেল ও তার পাঁচটি বৈশিষ্ট্য মোটা দাগে বিবৃত হয়েছে। যেমন (১) বস্ত্তগত দিকগুলো আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করা, আধুনিক করার চেষ্টা করা, নিয়মিত ও যথাযত রক্ষণাবেক্ষণ করা এবং পরিচ্ছন্নতা ও পরিপাটিত্ব বজায় রাখা; (২) সকল প্রতিশ্রুত শিক্ষা পরিষেবা সর্বদা সময় মতো এবং ত্রুটিমুক্তভাবে সম্পন্ন করা; (৩) সর্বদা ছাত্রদের সাহায্য করার জন্য তৈরি থাকা, দ্রুত পরিষেবা প্রদান করা, ছাত্রদের জন্য উপস্থিত থাকা এবং ছাত্রদের কাজকে সর্বদা অগ্রাধিকার দেওয়া; (৪) শিক্ষকদের তাদের বিষয়ের জ্ঞান হালনাগাদ রাখা, ছাত্রদের সাথে সর্বদা ভদ্র আচরণ করা, ছাত্রদের আস্থা অর্জন করা এবং ছাত্রদের আত্মবিশ্বাসী হ’তে অনুপ্রাণিত করা এবং (৫) অন্তরে ছাত্রদের সর্বোচ্চ স্বার্থ নিশ্চিত করার বাসনা রাখা, সকল প্রকার পরিষেবা ছাত্রদের সুবিধাজনক সময়ে প্রদান করা, প্রতিটি ছাত্রকে ব্যক্তিগতভাবে মনোযোগ দেওয়া এবং প্রতিটি ছাত্রের বিশেষ প্রয়োজন সম্বন্ধে অবগত থাকা।

এখানে এই পাঁচটি বৈশিষ্ট্য অর্জনের প্রশস্ত দিক-নির্দেশনা আছে, যার ভিত্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-স্টাফরা (ছাত্র প্রতিনিধি রাখলেও ভাল হয়) ব্রেইনস্টর্মিং (brainstorming) করে নির্দিষ্ট প্রয়োগযোগ্য করণীয় কাজ নির্ধারণ করবেন, যেগুলো সরাসরি বাস্তবায়ন করা হবে। শিক্ষা পরিষেবার গুণমানের মডেলের আলোকে শিক্ষকদের দিক নির্দেশনামূলক বিভিন্ন ধরনের নির্দিষ্টকরণীয় কাজের তালিকা তৈরি করা হয়েছে, যেগুলো শিক্ষকদের মূল্যায়নের জন্যও ব্যবহৃত হয়। সাধারণত ছাত্ররা এই ধরনের নির্দিষ্ট করণীয় কাজের তালিকা অনুযায়ী শিক্ষকদের মূল্যায়ন করে।[14] এই মূল্যায়ন শিক্ষকদের অনুপস্থিতিতে এবং প্রশাসকদের তত্ত্বাবধানে করা হয়। সব ছাত্রের মূল্যায়নের গড় (average) করা হয় এবং ছাত্ররা অজ্ঞাতনামা থাকে। এধরনের মূল্যায়ন শিক্ষকদের সক্ষমতা এবং দুর্বলতা শনাক্তকরণে সহায়ক হয়। যার মাধ্যমে শিক্ষকরা নিজেদের আরও উন্নতি করার পথনির্দেশনা পান।[15] শিক্ষকদের নির্দিষ্টকরণীয় কাজের তালিকার একটি নমুনা নিম্নে দেওয়া হ’ল।-

পরিকল্পনা ও প্রস্ত্ততি

১। পাঠকে (lesson) বিষয়বস্ত্ত (content) প্রস্ত্ততির সাথে সুস্পষ্টভাবে সমন্বিত করা।

২। বিষয়বস্ত্ত (content) এবং শিক্ষাদান উভয়ের জ্ঞান প্রদর্শন করা।

৩। প্রতিদিনের পাঠ পরিকল্পনাগুলি স্পষ্ট করা।

৪। পাঠের প্ল্যান স্পষ্ট এবং যৌক্তিক উপায়ে করা।

৫। পাঠের পরিকল্পনাগুলিতে বিভিন্ন শিক্ষাদানের পদ্ধতি এবং মূল্যায়ন কৌশল অন্তর্ভুক্ত করা।

৬। পাঠের পরিকল্পনাগুলিতে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ, দক্ষতা এবং ইতিহাসজনিত পার্থক্যের প্রতিফলন করা।

৭। বর্তমান রিসোর্স সম্পর্কে জ্ঞান প্রদর্শন করা।

৮। শিক্ষার্থীদের শেখা এবং সম্পৃক্ততা বাড়ানোর জন্য প্রযুক্তি এবং রিসোর্স ব্যবহার করা।

শিক্ষণ

৯। পরিষ্কার এবং নির্ভুলভাবে যোগাযোগ করা।

১০। বিভিন্ন শিক্ষণ কৌশল এবং রিসোর্স ব্যবহার করা।

১১। শিক্ষার্থীদের সাথে গুণগত মানের মিথস্ক্রিয়ায় নিয়োজিত হওয়া।

১২। ছাত্রদের পার্থক্য শনাক্ত করা এবং শিক্ষণকে সে অনুযায়ী সামঞ্জস্যশীল করা।

১৩। বিষয়বস্ত্তর কার্যকরী জ্ঞান রাখা।

১৪। নির্দিষ্ট লক্ষ্য রাখা।

১৫। ভালভাবে প্রস্ত্তত থাকা।

১৬। আকর্ষণীয় এবং তথ্যমূলক ক্লাস পরিচালনা করা।

১৭। বিষয়বস্ত্ত ভালভাবে বুঝাতে পারা।

১৮। একটি উপযুক্ত গতিতে শেখানো ও পড়ানো।

১৯। ক্লাসে কার্যকরী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা।

২০। ছাত্রদের প্রশ্ন সাদরে গ্রহণ করা।

২১। বিষয় সম্পর্কে ছাত্রদের আগ্রহী করে তোলা।

২২। বিষয়টি নিয়ে উদ্দীপক আলোচনা করা।

২৩। ছাত্রদের চিন্তা করতে এবং শিখতে উৎসাহিত করা।

২৪। ক্লাসের সাথে ভাল সম্পর্ক স্থাপন করা।

২৫। অফিসের সময়ে ছাত্রদের প্রশ্নের উত্তর দিতে উপস্থিত থাকা।

২৬। পাঠ যেন পাঠের বিন্যাস অনুসরণ করে, প্রেরণা দেয়, লক্ষ্যগুলি বিবৃত করে, পূর্ববর্তী জ্ঞানে প্রবেশ করে, নির্দেশিত অনুশীলন সন্নিবেশিত করে, বুঝেছে কি-না সেটা পরখ করে, স্বাধীন অনুশীলন সন্নিবেশিত করে এবং উপসংহার দেয়, সেটা নিশ্চিত করা।

২৭। শিক্ষার্থীদের ধারণাগত বুঝের (conceptual understanding) জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যাখ্যা, উপস্থাপনা, রিসোর্স এবং ক্রিয়াকলাপ ব্যবহার করা।

২৮। কার্যকর প্রশ্ন করার কৌশলগুলি ব্যবহার করা এবং নির্দিষ্ট নির্দেশমূলক উদ্দেশ্যে বিভিন্নভাবে আলোচনা উদ্দীপিত করা।

২৯। নতুন ধারণাকে পরিচিত ধারণা/অভিজ্ঞতার সাথে যুক্ত করা।

৩০। শিক্ষার্থীদের সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া।

৩১। পাঠ ও শিক্ষার পরিবেশ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রয়োজনের সাথে সামঞ্জস্যশীল করা।

৩২। পাঠগুলি মাদ্রাসার লক্ষ্য, ফলাফল এবং বর্ণিত লক্ষ্যগুলির ভিত্তিতে তৈরি করা।

ব্যক্তিগত এবং পেশাদার বৈশিষ্ট্য

৩৩। ইসলামী মূল্যবোধের রোল মডেল হওয়া।

৩৪। প্রতিষ্ঠানের ইসলামী অনুষ্ঠানসমূহে অংশগ্রহণ করা।

৩৫। উৎসাহ এবং কর্মোদ্যম প্রদর্শন করা।

৩৬। ছাত্র ও শিক্ষকতা পেশার প্রতি সত্যিকার আগ্রহ প্রদর্শন করা।

৩৭। পরিষ্কার ও মনোরম কণ্ঠে কথা বলা।

৩৮। আত্মবিশ্বাস প্রদর্শন করা।

৩৯। লিখিত যোগাযোগ স্পষ্ট, সংক্ষিপ্ত এবং ব্যাকরণগত- ভাবে সঠিক করা।

৪০। মৌখিক যোগাযোগ সাবলীল এবং ব্যাকরণগতভাবে সঠিক করা।

৪১। নির্ভরযোগ্যতার সাথে শ্রেণীকক্ষের দায়িত্ব সম্পাদন করা।

৪২। শিক্ষামূলক উপকরণ ব্যবহারে সম্পদশালী হওয়া। ৪৩। কৌশলী হওয়া।

৪৪। মাদ্রাসার ক্রিয়া-কলাপ এবং দায়িত্বে নির্ভরযোগ্যতার সাথে অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা করা।

৪৫। মাদ্রাসার ভিশন ও মিশনের প্রতি অনুগত থাকা।

তৃতীয়তঃ সার্ভকোয়াল মডেলভুক্ত পাঁচটি শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মানের মাত্রা বা বৈশিষ্ট্যের অবস্থা জানার জন্য বছরে অন্তত একবার ছাত্র জরিপ করা বাঞ্ছনীয়। এই জরিপ করার জন্য শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মানের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য মাপার জন্য প্রয়োজনীয় জরিপ প্রশ্নাবলী লাগবে, যা বিদ্যমান গবেষণা নিবন্ধ থেকে পাওয়া যেতে পারে। তবে প্রতিষ্ঠানের বাস্তবতার আলোকে সেসব জরিপ প্রশ্নাবলীকে পরিবর্তন করা যেতে পারে। এ ব্যাপারে জরিপ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। জরিপের ফলাফল থেকে জানা যাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মান কোন স্তরে আছে। নির্দিষ্টভাবে শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মানের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য বর্তমানে কোন কোন স্তরে আছে তা জানা যাবে। প্রথমবারের জরিপের ফলাফল একটি মাপকাঠি স্থাপন করবে, যার সাথে পরবর্তী জরিপের ফলাফল তুলনা করা যাবে। এসব জরিপ শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মানের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে কি কি করণীয় তা সব উন্মোচিত করবে।

উপসংহার :

উপরে আমরা সার্ভকোয়াল মডেলটি উপস্থাপন করলাম। এই মডেলটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মান নির্ধারণের জন্য ব্যবহার করা হয়। এই মডেল অনুযায়ী শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মান নির্ণীত হয় পাঁচটি বৈশিষ্ট্য বা মাত্রা দ্বারা। যথা : বস্ত্তগত দিক (tangibility), নির্ভরযোগ্যতা/বিশ্বাসযোগ্যতা (reliability), প্রতিক্রিয়াশীলতা (responsiveness), আশ্বাসন (assurance) এবং সহানুভূতিশীলতা (empathy)। এই পাঁচটি বৈশিষ্ট্য বা মাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে কি কি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর কাজ করতে হবে সেটাও আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও এই মডেল কিভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে তার কৌশল সম্বন্ধেও আলোকপাত করা হয়েছে। যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উপরোক্ত কৌশল অবলম্বন করে এই পাঁচটি মাত্রা অনুসরণের মাধ্যমে তাদের শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মান উন্নয়ন করতে সক্ষম হবে। উল্লেখ্য, এই পাঁচটি বৈশিষ্ট্য বা মাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে শিক্ষক-স্টাফদের ভূমিকা মুখ্য। অর্থাৎ শিক্ষক-স্টাফদেরকেই শিক্ষা পরিষেবার গুণগত মান নির্ধারণের মূল ভূমিকা পালন করতে হবে।

প্রফেসর ড. শহীদ নকীব ভুঁইয়া

প্রফেসর (অবঃ), লুইজিয়ানা টেক ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা; কিং ফাহাদ ইউনিভার্সিটি অফ পেট্রোলিয়াম এ্যান্ড মিনারেলস্, সঊদীআরব; সুলতান ক্বাবূস ইউনিভার্সিটি, ওমান।


[1]. Parasuraman, A., Zeithaml, V.A. and Berry, L.L. (1985) ‘A conceptual model of service quality and its implications for future research’, Journal of Marketing, Vol. 49, pp.41–50.

[2]. Ng, I.C. and Forbes, J. (2009) ‘Education as service: the understanding of university experience through the service logic’, Journal of Marketing for Higher Education, Vol. 19, No. 1, pp.38–64.

[3]. Gronroos, Christian. "Service quality: The six criteria of good perceived service." Review of business 9.3 (1988): 10.

[4]. Ghobadian, Abby, Simon Speller, and Matthew Jones. "Service quality: concepts and models." International journal of quality & reliability management (1994).

[5]. Bhuian, Shahid N. "Evidences of service quality from an emerging educational hub, Qatar." International Journal of Management in Education 10.4 (2016): 353-369.

[6]. ৫ নং টীকা দেখুন।

[7]. ইবনু মাজাহ হা/২২৪, সনদ হাসান

[8]. তিরমিযী হা/২৬৪৬; ইবনু মাজাহ হা/২২৩; মুসলিম, মিশকাত হা/২০৪

[9]. ৫ নং টীকা দেখুন।

[10]. Gupta, Pragya, and NeerajKaushik. "Dimensions of service quality in higher education–critical review (students’ perspective)." International Journal of Educational Management (2018).

[11]. ৫ নং টীকা দেখুন।

[12]. ৫ নং টীকা দেখুন।

[13]. Hassan, Shahizan, SitiZaleha Ahmad Nadzim, and NorshuhadaShiratuddin. "Strategic use of social media for small business based on the AIDA model." Procedia-Social and Behavioral Sciences 172 (2015): 262-269.

[14]. Natriello, Gary. "The impact of evaluation processes on students." Educational Psychologist 22.2 (1987): 155-175.

[15]. Sanders, William L., S. Paul Wright, and Sandra P. Horn. "Teacher and classroom context effects on student achievement: Implications for teacher evaluation." Journal of personnel evaluation in education 11.1 (1997): 57-67.






বিষয়সমূহ: শিক্ষা-সংস্কৃতি
মহামনীষীদের পিছনে মায়েদের ভূমিকা (৬ষ্ঠ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
একটি ঐতিহাসিক রায়ের ইতিবৃত্ত - রেযাউল করীম
আরবী ভাষা কুরআন বুঝার চাবিকাঠি - ফাতেমা বিনতে আযাদ
মহামনীষীদের পিছনে মায়েদের ভূমিকা (৪র্থ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
সুন্নাত আঁকড়ে ধরার ফযীলত - মুহাম্মাদ মীযানুর রহমান
যাকাত ও ছাদাক্বা - আত-তাহরীক ডেস্ক
হকিং তত্ত্ব ও শাশ্বত সত্য - মুহাম্মাদ আব্দুল মান্নান, সহকারী শিক্ষক, রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ
ঈছালে ছওয়াব : একটি তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
মুসলিম নারীর পর্দা ও চেহারা ঢাকার অপরিহার্যতা (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
আক্বীদা ও আহকামে হাদীছের প্রামাণ্যতা - মীযানুর রহমান মাদানী
রবার্ট ক্লাইভ : ইতিহাসের এক ঘৃণ্য খলনায়ক - ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান
ক্ষমা ও সহিষ্ণুতার কতিপয় ক্ষেত্র - ড. মুহাম্মাদ আব্দুল হালীম
আরও
আরও
.