উত্তর : উভয় সময়ের মধ্যে এমন পার্থক্য থাকবে, যাতে একজন ব্যক্তি সহজে ফজরের আযানের পূর্বে প্রয়োজনে রান্না ও খাদ্য গ্রহণ সম্পন্ন করতে পারে। তা একঘণ্টা বা তার কিছু কমবেশী হ’তে পারে। যাতে মানুষ বুঝতে পারে যে ফজরের সময় ঘনিয়ে এসেছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যামানায় বেলাল (রাঃ) সাহারীর আযান দিতেন এবং আব্দুল্লাহ ইবনু উম্মে মাকতূম (রাঃ) ফজরের আযান দিতেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা বেলালের আযান শুনে খাও, যতক্ষণ না ইবনু উম্মে মাকতূমের আযান শুনতে না পাও’ (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৬৮০)। তবে কারো হাতে খাবার থাকা অবস্থায় আযান হয়ে গেলে সাহারী খাওয়া সম্পন্ন করবে। নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ খাবার পাত্র অথবা পানির পাত্র হাতে নেয়, আর এ সময় আযান শুনে, তখন সে যেন তা রেখে না দেয়; বরং খাওয়া শেষ করে’ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১৯৮৮ ‘ছওম’ অধ্যায়)।
সামুরা বিন জুনদুব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘বেলালের আযান যেন তোমাদেরকে সাহারী খাওয়া থেকে বিরত না করে। কেননা সে রাত্রি থাকতে আযান দেয় এজন্য যে, যেন তোমাদের তাহাজ্জুদ গোযার মুছল্লীগণ (সাহারীর জন্য) ফিরে আসে ও তোমাদের ঘুমন্ত ব্যক্তিগণ (তাহাজ্জুদ বা সাহারীর জন্য) জেগে ওঠে’ (মুসলিম হা/১০৯৪; মিশকাত হা/৬৮১; কুতুবে সিত্তাহর সকল গ্রন্থ তিরমিযী ব্যতীত, নায়ল ২/১১৭-১)। ইবনু ওমর (রাঃ) বর্ণিত হাদীছে বলা হয়েছে যে, উভয় আযানের মধ্যে সময়ের ব্যবধান খুবই কম ছিল। একজন নামতেন, অন্যজন উঠতেন (মুসলিম হা/১০৯২)। ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, ‘বিদ্বানগণ এর অর্থ করেছেন এই মর্মে যে, বেলাল ছুবহে ছাদিক-এর পূর্বেই আযান দিতেন। অতঃপর ফজর উদিত হওয়ার পর মিনার থেকে অবতরণ করে আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতূমকে জাগাতেন। অতঃপর ইবনে উম্মে মাকতূম পেশাব-পায়খানা, ওযূ-গোসল সেরে এসে ফজরের ওয়াক্তের শুরুতেই আযান দিতেন’ (তানক্বীহ শরহ মিশকাত ১/১৩০ পৃঃ, ‘ছালাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৬ হা/৬৮০-এর ব্যাখ্যা)।