
বিশিষ্ট
আহলেহাদীছ আলেম ও লেখক, পাকিস্তানের ফেডারেল শারী‘আহ কোর্টের প্রাক্তন
ধর্মীয় পরামর্শক এবং সাপ্তাহিক আল-ই‘তিছাম পত্রিকার প্রধান সম্পাদক হাফেয
ছালাহুদ্দীন ইউসুফ (৭৫) গত ১১ই জুলাই ২০২০ লাহোরে মৃত্যুবরণ করেছেন। ইন্না লিল্লা-হি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজে‘ঊন।
১২ই জুলাই বাদ যোহর লাহোরের লরেন্স রোডে মারকাযী জমঈয়তে আহলেহাদীছের
কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তাঁর জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। দু’দফা জানাযায় শায়খ মাসঊদ
আলম এবং শায়খ ইরশাদুল হক আছারী ইমামতি করেন। এতে মারকাযী জমঈয়তে
আহলেহাদীছের আমীর সিনেটর সাজিদ মীরসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ,
আলেম-ওলামা এবং সর্বস্তরের হাযার হাযার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। স্থানীয়
গোরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
হাফেয ছালাহুদ্দীন ইউসুফ ১৯৪৫ সালে ভারতের রাজস্থানের জয়পুর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। দেশবিভাগের পর তাঁর পরিবার পাকিস্তানের করাচীতে পাড়ি জমায়। করাচীস্থ জামে‘আ রহমানিয়া থেকে লেখাপড়া শেষে সাপ্তাহিক আল-ইতিছামে কর্মজীবন শুরু করেন। সর্বশেষ তিনি লাহোরের দারুস সালাম প্রকাশনীর গবেষণা বিভাগের প্রধান ছিলেন। তিনি প্রায় শতাধিক গ্রন্থের লেখক। ‘তাফসীর আহসানুল বায়ান’ তাঁর শ্রেষ্ঠ কীর্তি, যেটি সঊদী সরকারের পক্ষ থেকে হাজীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। এছাড়া তাঁর সম্পাদনায় বহু বই প্রকাশিত হয়েছে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁর প্রায় সহস্রাধিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ। তাঁর গ্রন্থসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হ’ল- আযমাতে হাদীছ আওর উসকে তাক্বাযা, আহলে হাদীছ আওর আহলে তাক্বলীদ, খাওয়াতীন সে মুতা‘আল্লাক বা‘য আহাম মাসায়েল আহাদীছ কী রওশনী মে, নাফায শারী‘আত কিঁউ আওর কেইসে? ইজতিহাদ আওর তা‘বীর শারী‘আত কে ইখতিয়ার কা মাসআলাহ, ইসলামী খুলাফা ওয়া মুলূক কে মুতা‘আল্লাকা গালাত্ব ফাহমিয়ূঁ কা ইযালাহ, তাহরীকে জিহাদ; জামা‘আতে আহলেহাদীছ আওর ওলামায়ে আহনাফ প্রভৃতি। পীস টিভি উর্দূ, পয়গাম টিভিসহ পাকিস্তানের বিভিন্ন টিভিতে তিনি নিয়মিত আলোচক ছিলেন।
[ডক্টরেট থিসিস-এর জন্য পাকিস্তান, ভারত ও নেপালে ৫২ দিনের স্টাডি ট্যুরের এক পর্যায়ে ১৯৮৮ সালের ২৬শে ডিসেম্বর থেকে ৮৯ সালের ২রা জানুয়ারী পর্যন্ত লাহোরে সাপ্তাহিক আল-ই‘তিছাম অফিসে অবস্থানকালে দারুস সালাফিইয়াহ লাইব্রেরীর চাবি তিনি আমাকে দিয়ে বাসায় যেতেন। রাত-দিন আমি সেখানে পড়াশুনা করতাম। তখনই তাঁর সঙ্গে আমার হৃদ্যতা তৈরী হয়। পরে সর্বশেষ ২০০০ সালে সঊদী বাদশাহর মেহমান হিসাবে হজ্জের সফরে এক সরকারী অনুষ্ঠানে তাঁর ও ইরশাদুল হক আছারীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। বারবার তাঁদের কথা মনে পড়ে। তাঁর দেওয়া কয়েকটি বই এখনও আমার কালেকশনে আছে। আজ তাঁর মৃত্যুসংবাদে আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। উপমহাদেশের আকাশ থেকে আহলেহাদীছের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র খসে পড়ল। আল্লাহ তাকে জান্নাতে সর্বোচ্চ স্থান দান করুন- আমীন! (স.স.)]