(১)
চাঁপাই নবাবগঞ্জ যেলার বিশিষ্ট আলেম ও বাগ্মী মাওলানা দুর্রুল হুদা আইয়ূবী
(৮৪) গত ৪ঠা মে সোমবার রাজশাহী মহানগরীর দড়িখরবোনাস্থ নিজ বাসভবনে রাত
৮-টা ৫০ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লা-হি...)। পরদিন ৫ই মে
সকাল সাড়ে ৭-টায় স্থানীয় কাদীরগঞ্জ হাজী লাল মুহাম্মাদ কেন্দ্রীয়
আহলেহাদীছ ঈদগাহ ময়দানে তাঁর প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় ইমামতি
করেন তার কনিষ্ঠ পুত্র রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহযোগী
অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ ওবায়দুল্লাহ। জানাযায় উপস্থিত ছিলেন ‘আহলেহাদীছ
আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের
আবরী বিভাগের সিনিয়র প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব,
‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও মাসিক আত-তাহরীক সম্পাদক ড.
মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসায়েন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী ও ইসলামিক
স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ, স্থানীয় বাণীবাজার ইশা‘আতে ইসলাম মাদরাসা ও
নওদাপাড়া আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফীর শিক্ষকবৃন্দ। এছাড়া শহরের অনেক
গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সুধীবৃন্দ জানাযায় অংশগ্রহণ করেন। এরপর তার নিজ
গ্রাম চাপাই নবাবগঞ্জ যেলার গোমস্তাপুর থানাধীন চকপুস্তমে বেলা সাড়ে ১১-টায়
তার দ্বিতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ইমামতি করেন তার ২য় পুত্র রাজশাহী
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ
বারকুল্লাহ। অতঃপর তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তিনি
স্ত্রী, ৩ পুত্র ও ৩ কন্যা রেখে গেছেন।
কর্মজীবনে তিনি প্রথমে চাপাই নবাবগঞ্জ শহরের নামো শংকরবাটী হিফযুল উলূম আলিয়া মাদ্রাসার হেড মাওলানা পদে যোগদান করেন এবং সেখানে ৮ বছর শিক্ষকতা করেন। অতঃপর তিনি গোমস্তাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক পদে যোগদান করেন এবং সেখান থেকেই অবসর গ্রহণ করেন। শিক্ষকতা ও বক্তৃতার পাশাপাশি তিনি ছোট-বড় ১২টি পুস্তক রচনা করেন। তন্মধ্যে মুক্তির সন্ধান, কুমারী গঞ্জনা, যৌতুকের মরণ কৌতুক, সরল পথের ব্যতিক্রম, কাব্য কানন, মেকাপ, কালেমা তাইয়েবাহ, আদর্শ নামাজ শিক্ষা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
(২) ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ কুমিল্লা যেলার প্রধান উপদেষ্টা, ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি জামীলুর রহমানের পিতা এবং ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও মাসিক আত-তাহরীক সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসায়েনের শ্বশুর হাফেয আব্দুল মতীন (৭৫) গত ১০ই মে রবিবার দিবাগত রাত ১০-টায় কুমিল্লার বুড়িচং থানাধীন কাকিয়ারচর গ্রামে নিজ বাড়ীতে মৃত্যুবরণ করেন। (ইন্না লিল্লা-হি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেঊন)। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৫ পুত্র ও ৪ কন্যা সহ বহু নাতি-নাতনী, আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে যান। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনী রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুর পূর্বে দেড়মাস যাবৎ তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন। পরদিন ১১ই মে সোমবার বাদ যোহর কোরপাই-কাকিয়ারচর ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসা ময়দানে তার ১ম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় ইমামতি করেন তার ২য় পুত্র হাফেয জামীলুর রহমান। অতঃপর দুপুর ২-টায় কাকিয়ারচর আহলেহাদীছ জামে মসজিদে তার ২য় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে ইমামতি করেন তার কনিষ্ঠ পুত্র ইহসান এলাহী যহীর।
কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসায়েন, ঢাকা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক তাসলীম সরকার, অর্থ সম্পাদক কাযী হারূণুর রশীদ, যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা ছফিউল্লহ সহ ‘আন্দোলন’ ও ‘যুবসংঘে’র নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও সমাজ নেতাসহ যেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল সংখ্যক মুছল্লী জানাযায় অংশগ্রহণ করেন। অতঃপর তাকে কাকিয়ারচর গ্রামে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।
তিনি পাকিস্তানের জামি‘আ সালাফিইয়াহ ও মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। ১৯৭৮ সালে ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ গঠিত হ’লে তিনি মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রচার সম্পাদক হন। কর্মজীবনে তিনি রাজশাহীর চারঘাট থানাধীন ভায়ালক্ষ্মীপুর মাদরাসা ও কুমিল্লার বুড়িচং থানাধীন কোরপাই-কাকিয়ারচর ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। তিনি সঊদী সরকারের মাবঊছ হিসাবে বাংলাদেশে কর্মরত ছিলেন। তিনি আহলেহাদীছ আন্দোলনের সাথে আমৃত্যু কাজ করেছেন এবং সংগঠনকে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন।
[আমরা মাইয়েতগণের রূহের মাগফেরাত কামনা করছি এবং তাঁদের শোক সন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।-সম্পাদক]