পর্ব ১ । পর্ব ২। পর্ব ৩।  পর্ব ৪ । পর্ব ৫ । পর্ব ৬। পর্ব ৭ । পর্ব ৮ । পর্ব ৯। শেষ পর্ব।

আকাইদ ও ফিকহ

দাখিল সপ্তম শ্রেণি

(২৮২/৯) পৃ. ৬৫ সৃজনশীল প্রশ্ন ...কুরআন হাদিসের গবেষণালব্ধ সমাধান আছে ইলমে ফিক্হের মধ্যে।

মন্তব্য : বরং কুরআন ও হাদীছেই সবকিছুর সমাধান রয়েছে (আন‘আম ৬/৩৮)

(২৮৩/১০) পৃ. ৬৮ নাজাসাতে গালিজার একটি তালিকা

...৩. মানুষ অথবা পশুর রক্ত। ৪. বমি (যে কোন বয়সের মানুষের হোক) ৫. ক্ষতস্থান থেকে নির্গত রক্ত বা অথবা অন্য যে কোন তরল পদার্থ।...

মন্তব্য : হায়েয, নিফাস ও ইস্তেহাযা ব্যতীত কম হৌক বা বেশী হৌক অন্য কোন রক্ত প্রবাহের কারণে ওযূ ভঙ্গ হওয়ার কোন ছহীহ দলীল নেই।[1]

(২৮৪/১১) পৃ. ৭৪ টয়লেট থেকে বের হওয়ার সময়...নিম্নোক্ত দোআ পড়া- اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِى أَذْهَبَ عَنِّى الأَذَى وَعَافَانِى-

মন্তব্য : হাদীছটি যঈফ (ইবনু মাজাহ হা/৩০১; মিশকাত হা/৩৭৪; ইরওয়া হা/৫৩)। বরং টয়লেট থেকে বের হওয়ার সময় বলতে হয় غُفْرَانَكَ ‘গুফরা-নাকা’ (হে আল্লাহ! আমি তোমার ক্ষমা প্রার্থনা করছি’)।[2]   

(২৮৫/১২) পৃ. ৭৪ পবিত্রতার জন্য মাটির ঢিলা ব্যবহার করা ভালো। আর যদি সম্ভব না হয় তাহলে টয়লেট পেপার।

মন্তব্য : পানি পেলে পবিত্রতার জন্য মাটির ঢেলা বা টয়লেট পেপারের প্রয়োজন নেই।[3]

(২৮৬/১৩) পৃ. ৭৫ اَلْإِسْتِجْمَارُ অর্থ কুলুখ ব্যবহার করা। ...পুরুষ শীতকালে প্রথমে সামনের দিক থেকে এরপর পেছনের দিক থেকে তারপর সামনের দিক থেকে ঢেলা ব্যবহার করবে। গ্রীষ্মকালে প্রথমে পেছন দিক থেকে তারপর সামনের দিক থেকে এরপর পিছনের দিক থেকে তারপর সামনের দিক থেকে ঢিলা ব্যবহার করতে হবে। মহিলাদের সবসময় প্রথমে সামনের দিক থেকে এরপর পেছনের দিক থেকে তারপর সামনের দিক থেকে ঢিলা ব্যবহার করতে হবে।

মন্তব্য : এগুলি স্রেফ বানোয়াট নিয়ম। শরী‘আতে যার কোন ভিত্তি নেই।  

(২৮৭/১৪) পৃ. ৭৮ তায়াম্মুমের ফরয

...৩. উভয় হাত পাক মাটিতে মেরে প্রথমে বাম হাত দ্বারা ডান হাত এবং ডান হাত দ্বারা বাম হাত কনুইসহ মাসেহ করা।

মন্তব্য : কনুইসহ মাসাহ করার কোন দলীল নেই। (আলোচনা দ্র : ক্রমিক (৩০)।

(২৮৮/১৫) পৃ. ৭৮ তায়াম্মুমের সুন্নত...৭। চেহারা মাসেহ করার পর দাড়ি খিলাল করা।

মন্তব্য : ‘তায়াম্মুমে দাড়ি খিলাল করা’ কথাটি সম্পূর্ণ বানোয়াট।

(২৮৯/১৬) পৃ. ৮০ যেসব বস্ত্ত দ্বারা তায়াম্মুম বৈধ...পাথর, বিলাতি মাটি, চুনাপাথর, হরিতাল, সুরমা, গেরুমাটি ইত্যাদি।

মন্তব্য : ধুলা-মাটিহীন স্বচ্ছ পাথর, কাঠ, কয়লা, লোহা, মোজাইক, প্লাস্টার, টাইল্স, চুন ইত্যাদি দ্বারা ‘তায়াম্মুম’ জায়েয নয়।[4]

(২৯০/১৭) পৃ. ৮২ فَضْلُ الصَّلاَةِ الَّتِي يُسْتَاكُ لَهَا عَلَى الصَّلاَةِ الَّتِي لاَ يُسْتَاكُ لَهَا سَبْعِينَ ضِعْفًا- (মেসওয়াক করে যে ছালাত আদায় করা হয় সে সালাতে মেসওয়াকবিহীন সালাতের তুলনায় সত্তর গুণ বেশি ফযিলত রয়েছে)।

মন্তব্য : হাদীছটি যঈফ (বায়হাক্বী হা/১৬২; মিশকাত হা/৩৮৯)

(২৯১/১৮) পৃ. ৮৬ ইকামতের পরিচয়

ইকামতের মধ্যে এভাবেই ৮টি বাক্য ১৭ বার উচ্চারণ করতে হয়।

মন্তব্য : আব্দুল্লাহ বিন যায়েদ (রাঃ) প্রমুখাৎ আবুদাঊদে বর্ণিত পূর্বোক্ত হাদীছ অনুযায়ী এক্বামতের কালেমা বা বাক্য ১১টি।  দু’বার করে আযান ও একবার করে এক্বামত বিশিষ্ট বেলালী আযান ও এক্বামত-এর পদ্ধতিটি নিঃসন্দেহে অগ্রগণ্য, যা মুসলিম উম্মাহ কর্তৃক সকল যুগে সমাদৃত।

দু’বার এক্বামত-এর রাবী আবু মাহযূরাহ (রাঃ) নিজে ও তাঁর পুত্র বেলাল (রাঃ)-এর অনুসরণে একবার করে ‘এক্বামত’ দিতেন।[5]

(২৯২/১৯) পৃ. ৮৭ ইকামতের সুন্নত তরিকা قَدْ قَامَتِ الصَّلاَةُ এর জওয়াবে মুছল্লীদেরকে বলতে হয়,اَقَامَهَا اللهُ وَاَدَامَهَا مَا دَامَتِ السَّمَوَاتُ وَالْاَرْضُ.

মন্তব্য : اَقَامَهَا اللهُ وَاَدَامَهَا এই পর্যন্ত হাদীছটি যঈফ (আবুদাঊদ হা/৫২৮; মিশকাত হা/৬৭০)। আর শেষের অংশটিمَا دَامَتِ السَّمَوَاتُ وَالْاَرْضُ. এক্বামতের জওয়াব হিসাবে বানোয়াট। যার কোন ভিত্তি নেই।

(২৯৩/২০) পৃ. ৮৭ ইকামতে সালাতের জন্য দাঁড়াবার সঠিক সময়

ইকামতের জন্য মুয়াজ্জিন প্রথমে দাঁড়াবে। আর মুসল্লিগণ বসে থাকবেন। তিনি যখন حَيَّ عَلَي الْفَلاَحِ বলবেন, তখন মুক্তাদিগণ দঁড়াবেন। ...কিন্তু বহুস্থানে দেখা যায় মুয়াজ্জিন ইকামত শুরু করলেই মুসল্লিগণ দাঁড়িয়ে যান।...এটা সুন্নতের খেলাফ।

মন্তব্য : মুছল্লীগণ এক্বামতের সূচনাতে বা মধ্যে বা শেষেও দাঁড়াতে পারেন। কেননা এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোন সময় বর্ণিত হয়নি। সুতরাং মুছল্লীগণ সুযোগমত যেকোন সময় দাঁড়িয়ে যাবেন (উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৮/১৩)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘যখন ছালাতের এক্বামত দেওয়া হবে, তখন আমাকে বের হয়ে আসতে না দেখে তোমরা দাঁড়াবে না’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৬৮৫)। অন্য একটি হাদীছে এসেছে, জাবের বিন সামুরা (রাঃ) বলেন, বিলাল আযান দেয়ার পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেন। যখন তিনি রাসূল (ছাঃ)-কে ছালাতের জন্য বের হয়ে আসতে দেখতেন তখন এক্বামত দিতেন (মুসলিম হা/৬০৬; তিরমিযী হা/২০২; আহমাদ হা/২০৮২৩)। হাদীছ দু’টির মধ্যে সমন্বয় করে ওলামায়ে কেরাম বলেন, বেলাল লক্ষ্য রাখতেন কখন রাসূল (ছাঃ) বের হন। যখনই তিনি রাসূল (ছাঃ)-কে বের হ’তে দেখতেন, তখনই তিনি এক্বামত শুরু করতেন। আর ছাহাবীগণ রাসূল (ছাঃ)-কে দেখে ছালাতের জন্য দাঁড়াতেন (ফাৎহুল বারী ২/১২০; মির‘আতুল মাফাতীহ ২/৩৮৮; তুহফাহ ৩/১৬৫)। অন্য একটি হাদীছে এসেছে, আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, একবার ছালাতের জন্য এক্বামত দেওয়া হ’ল। রাসূল (ছাঃ) এসে পেঁŠছার আগেই আমরা দাঁড়িয়ে কাতার সোজা করে নিলাম। এরপর রাসূল (ছাঃ) এসে ছালাতের স্থানে দাঁড়ালেন (বুখারী হা/৬৪০; মুসলিম হা/৬০৫)। উপরের হাদীছ সমূহে প্রমাণিত হয় যে, এক্বামত শুরু হ’লে যে কোন সময় ছালাতের জন্য দাঁড়ানো যায়।  

(২৯৪/২১) পৃ. ৯১ সালাতের ওয়াজিবসমূহ

...৯। দুই ইদের সালাতে অতিরিক্ত ছয় তাকবির বলা।

মন্তব্য : ঈদায়নের ছালাত সুন্নাতে মুওয়াক্কাদাহ। সে হিসাবে অতিরিক্ত তাকবীর সমূহ সুন্নাত, ওয়াজিব নয়। যা তরক করলে ছালাত বাতিল হয়। তাছাড়া অতিরিক্ত তাকবীর ৬টি নয়, বরং ১২টি। ৬ তাকবীরের স্পষ্ট কোন দলীল হাদীছে নেই।[6]   

(২৯৫/২২) পৃ. ৯৪ রুকু সেজদার নিয়ম ও দোআ

(ক) রুকু : স্ত্রীলোকের রুকু করার নিয়ম এই যে, বাম পায়ের টাখনু ডান পায়ের টাখনুর সাথে মিলিয়ে মাথা ঝুঁকিয়ে দুই হাতের আঙ্গুলগুলো যুক্ত অবস্থায় দুই হাঁটুর উপর স্থাপন করবে এবং হাতের বাজু ও কনুই শরীরের সাথে মিলিয়ে রাখবে।

মন্তব্য : উক্ত নিয়মের কোন ভিত্তি নেই। বরং পুরুষ ও মহিলাদের ছালাতে কোন পার্থক্য নেই। কেবল ইমামের ভুল হ’লে পুরুষ মুক্তাদী সরবে ‘সুবহা-নাল্লা-হ’ বলবে এবং মহিলা মুক্তাদী হাতের পিঠে হাত মেরে শব্দ করে ‘লোকমা’ দিবে (কুরতুবী; বুঃ মুঃ মিশকাত হা/৯৮৮)। আর ছালাতের সময় পুরুষের সতর হ’ল দুই কাঁধ ও নাভী হ’তে হাঁটু পর্যন্ত (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১২৫) এবং মহিলাদের সতর হ’ল সর্বাঙ্গ (আবু, তির, মিশকাত হা/৭৬২)

(২৯৬/২৩) পৃ. ৯৮ رُبَّ قَارِئٍ لِلْقُرْآنِ وَالْقُرْآنُ يَلْعَنُهُ অর্থ : অনেক কুরআন তেলাওয়াতকারী রয়েছে, যারা কুরআন তেলাওয়াত করে, আর কুরআন তাদেরকে লানত করে।

মন্তব্য : এটি ইমাম গাযালী (৪৫০-৫০৫ হি.) তার এহইয়াউ উলূমিদ্দীন গ্রন্থে হযরত আনাস (রাঃ)-এর নামে হাদীছ হিসাবে উল্লেখ করেছেন (১/২৭৪ পৃ.)। সেখানে قَارِئٍ -এর স্থলে تَالٍ রয়েছে। অর্থ একই। তবে এটি আদৌ কোন হাদীছ নয় (বিন বায, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২৬/৬১)। বরং ছহীহ হাদীছে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কষ্টের সাথে বারবার চেষ্টা করে কুরআন শিখে, তার জন্য দ্বিগুণ ছওয়াব রয়েছে’।[7]      

(২৯৭/২৪) পৃ. ৯৮ قِرَاءَةُ الإِمَامِ قِرَاءَةٌ لَّهُ ইমামের কিরাতই মুক্তাদির কিরাআত।

মন্তব্য : ইবনু হাজার আসক্বালানী বলেন, যতগুলি সূত্র থেকে হাদীছটি বর্ণিত হয়েছে সকল সূত্রই দোষযুক্ত। সেকারণ ‘হাদীছটি সকল বিদ্বানের নিকটে সর্বসম্মতভাবে যঈফ(إِنَّهُ ضَعِيْفٌ عِنْدَ جَمِيْعِ الْحُفَّاظِ)’।[8] অত্র হাদীছে ‘ক্বিরাআত’ কথাটি ‘আম’। কিন্তু সূরা ফাতিহা পাঠের নির্দেশটি ‘খাছ’। অতএব অন্য সব সূরা বাদ দিয়ে ইমাম ও মুক্তাদী সকলের জন্য ছালাতে কেবল সূরা ফাতিহা পাঠ করবে (মুসলিম হা/৩৯৫ (৩৮); মিশকাত হা/৮২৩)।  

(২৯৮/২৫) পৃ. ১০০ কাযা সালাতের নিয়তنَوَيْتُ اَنْ اَقْضِيَ للهِ تَعَالَي رَكْعَتَيْ صَلاَةِ الْفَجْرِ الْفَائِتَةِ فَرْضُ اللهِ تَعَالَي مُتَوَجِّهًا إِلَي جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ، اَللهُ أَكْبَرُ- অর্থ : আমি ফজর সালাতের ফরযের কাযা সালাত কিবলামুখী হয়ে আদায় করছি, আল্লাহু আকবার।

মন্তব্য : এরূপ কোন বিধান শরী‘আতে নেই। বরং ফরয হৌক বা নফল হৌক সকল ইবাদতের পূর্বে নিয়ত বা সংকল্প করা অপরিহার্য (বুখারী হা/১; মুসলিম হা/১৯০৭; মিশকাত হা/১)। কিন্তু মুখে নিয়ত পাঠ করা বিদ‘আত (আলোচনা দ্র : ক্রমিক (৩৪)।

(২৯৯/২৬) পৃ. ১০১ কাযা সালাতের কাফ্ফারা

প্রতি ফরয ও ওয়াজিব সালাতের পরিবর্তে সদকায়ে ফেতর বা ফেতরার সমপরিমাণ গম বা তার মূল্য ফিদয়া স্বরূপ দিতে হয়।...

মন্তব্য : মৃতের ক্বাযা ছালাতের কাফফারা স্বরূপ টাকা-পয়সা দান করা সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন একটি বিদ‘আতী প্রথা মাত্র।[9] যেমন জানাযার ছালাতের প্রাক্কালে অনেক ইমাম আদায় করে থাকেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, একজনের ছিয়াম ও ছালাত অন্যজনে করতে পারেনা।[10] কারণ এগুলি দৈহিক ইবাদত, যা নিজেকেই করতে হয়। এগুলি জীবদ্দশায় যেমন অন্যের দ্বারা সম্ভব নয়, মৃত্যুর পরেও তেমনি সম্ভব নয় এবং এগুলির ছওয়াবও অন্যকে দেওয়া যায় না কেবলমাত্র দো‘আ, ছাদাক্বা ও হজ্জ ব্যতীত।[11] আল্লাহ বলেন,وَأَنْ لَّيْسَ لِلْإِنْسَانِ إِلاَّ مَا سَعَى-  ‘মানুষ সেটাই পায়, যার জন্য সে চেষ্টা করে’ (নাজম ৫৩/৩৯)

(৩০০/২৭) পৃ. ১০৫ اللَّهُمَّ إِنَّا نَسْتَعِينُكَ... হে আল্লাহ! আমরা আপনারই সাহায্য প্রার্থী...     

মন্তব্য : উপরোক্ত শব্দে বিতরে যে কুনূত পড়া হয়, সেটার হাদীছ ‘মুরসাল’ বা যঈফ।[12] (আলোচনা দ্র : ক্রমিক (২১৪/১৫)।

(৩০১/২৮) পৃ. ১০৯ মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়ার পদ্ধতি

একটি চওড়া তক্তা বা খাটের চতুর্দিকে ৩/৫/৭ বার লুবান অথবা আগরবাতি দিয়ে ধূঁয়া দিতে হবে।...

মন্তব্য : এগুলি ভিত্তিহীন ও কুসংস্কার মাত্র।  হিন্দু শাস্ত্র মতে, অগ্নি হ’ল দেবতা। আগুনের স্পর্শেই সবকিছু পুড়ে খাঁটি হয়। সকল শুভ কাজের শুরু হয় আগুন দিয়ে। একারণেই হিন্দুরা তাদের শবদেহ চিতায় স্থাপন করার পর তাকে তিনবার প্রদক্ষিণ করে পুত্র (প্রধানত জ্যেষ্ঠপুত্র) বা কোনো ঘনিষ্ঠ আত্মীয় মুখাগ্নি করে।  হিন্দু ব্যবসায়ীরা দোকান খুলেই আগুন দিয়ে ধূপ-ধুনা বা আগরবাতি জ্বালিয়ে দিন শুরু করে। একইভাবে তারা মঙ্গল প্রদীপ জ্বালায়। দুর্ভাগ্য এখন রাজনীতির নামে বহু নামধারী মুসলিম নেতা মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন।

(৩০২/২৯) পৃ. ১১০  মৃত স্ত্রীকে স্বামী স্পর্শ করতে পারবে না। তবে শুধু দেখা ও কাপড়ের উপর দিয়ে হাত লাগানো দুরস্ত আছে।

মন্তব্য : এটাও ভিত্তিহীন বক্তব্য। মৃত্যুর ফলে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক নষ্ট হয়না। বরং স্বামী তার স্ত্রীকে বা স্ত্রী তার স্বামীকে বিনা দ্বিধায় গোসল করাতে পারবেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) স্বীয় স্ত্রী আয়েশা (রাঃ)-কে বলেছিলেন, ‘যদি তুমি আমার পূর্বে মারা যাও, তাহ’লে আমি তোমাকে গোসল দেব, কাফন পরাব, জানাযা পড়াব ও দাফন করব’।[13] হযরত আবুবকর (রাঃ)-কে তাঁর স্ত্রী আসমা বিনতে উমাইস (রাঃ) এবং হযরত ফাতেমা (রাঃ)-কে তাঁর স্বামী হযরত আলী (রাঃ) গোসল দিয়েছিলেন।[14]

(৩০৩/৩০) পৃ. ১১০ আর মহিলাদের জন্য তিনখানা ছাড়া আরও ২ খানা অতিরিক্ত কাপড় লাগবে।

মন্তব্য : মহিলাদের জন্য প্রচলিত পাঁচটি কাপড়ের হাদীছ ‘যঈফ’।[15] বরং পুরুষ ও মহিলা সকল মাইয়েতের জন্য তিনটি কাপড় দিয়ে কাফন দিবে।[16]

(৩০৪/৩১) পৃ. ১১২ জানাজার সালাতের প্রথম তাকবির (তাকবিরে তাহরিমা)-এর পর সানা পড়তে হবে।سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبَحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ وَلاَ إِلَهَ غَيْرُكَ-

মন্তব্য : জানাযার ছালাতে ছানা পড়তে হয়না।[17] বরং প্রথম তাকবীরের পর আ‘ঊযুবিল্লাহ-বিসমিল্লাহ সহ সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা পড়তে হবে।[18]

(৩০৫/৩২) পৃ. ১১২ সানা পড়ার পর দ্বিতীয় তাকবির উচ্চারণ করে দুরুদে ইবরাহিমী পড়তে হয়।اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ... মন্তব্য : দরূদে ইব্রাহীমীতে سَيِّدِنَا শব্দ নেই। যা অত্র বইয়ে যোগ করা হয়েছে। سَيِّدِنَا অর্থ ‘আমাদের নেতা’। এটি ছালাতে পড়া জায়েয নয়। কারণ রাসূল (ছাঃ) এটি পড়েননি। আর অন্য সময় পড়াটাও অপসন্দনীয়। কেননা তিনি বলেছেন, তোমরা আমার প্রশংসায় বাড়াবাড়ি করোনা। যেমন খৃষ্টানরা ঈসাকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করেছে। বরং বল, ‘আমি আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল’ (বুঃ মুঃ মিশকাত হা/৪৮৯৭)। অতএব তিনি যে সব ক্ষেত্রে নিজের জন্য ‘সাইয়িদ’ শব্দ ব্যবহার করেছেন, কেবল সেখানে এটি ব্যবহার করা যাবে, অন্যত্র নয়।          [চলবে]


[1]. আলবানী, মিশকাত হা/৩৩৩-এর টীকা দ্র : দারাকুৎনী বর্ণিত ‘প্রত্যেক প্রবাহিত রক্তের জন্য ওযূ’ (الْوُضُوءُ مِنْ كُلِّ دَمٍ سَائِلٍ)-এর ব্যাখ্যায়; দ্র. ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ৪র্থ সংস্করণ ৬১ পৃ.।

[2]. তিরমিযী হা/৭; ইবনু মাজাহ হা/৩০০; মিশকাত হা/৩৫৯ ‘পবিত্রতা’ অধ্যায়-৩, ‘পেশাব-পায়খানার আদব’ অনুচ্ছেদ-২।

[3]. তিরমিযী হা/১৯; মির‘আত ২/৭২।

[4]. ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ৪র্থ সংস্করণ ৬৭ পৃ.।

[5]. ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ৭৪ পৃ.।

[6]. দ্র. ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ২১০-১১ পৃ.।

[7]. বুখারী হা/৪৯৩৭; মুসলিম হা/৭৯৮; মিশকাত হা/২১১২।

[8]. ফাৎহুল বারী ২/২৮৩ পৃ., হা/৭৫৬-এর আলোচনা দ্র’ব্য; ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ৯৩-৯৪ পৃ.।

[9]. দ্র. ছালাতুর রাসূল (ছঃ) ২৪৫ পৃ.।

[10]. عَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ...وَلاَ يُصَلِّي أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍ- বায়হাক্বী ৪/২৫৪, সনদ ছহীহ, আলবানী, হেদায়াতুর রুওয়াত ২/৩৩৬; যঈফাহ ১০ (১)/৬২ পৃ.; মুওয়াত্ত্বা হা/১০৬৯, মিশকাত হা/২০৩৫, ‘ছওম’ অধ্যায়-৭, ‘ক্বাযা ছিয়াম’ অনুচ্ছেদ-৫।

[11]. আবুদাঊদ হা/২৮৮৩; মিশকাত হা/৩০৭৭; বায়হাক্বী, শু‘আব; মির‘আত হা/১৭৩১-এর আলোচনা দ্র’ব্য ৫/৪৫৩ পৃ.; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৩১০; তালখীছ ৭৬ পৃ.।

[12]. মারাসীলে আবুদাঊদ হা/৮৯; বায়হাক্বী ২/২১০; মিরক্বাত ৩/১৭৩-  ৭৪; মির‘আত ৪/২৮৫।

[13]. ইবনু মাজাহ হা/১৪৬৫।

[14]. বায়হাক্বী ৩/৩৯৭; দারাকুৎনী হা/১৮৩৩, সনদ হাসান।

[15]. আবুদাঊদ হা/৩১৫৭; সিলসিলা যঈফাহ হা/৫৮৪৪।

[16]. বুখারী হা/১২৬৪, ১২৭২-৭৩; মুসলিম হা/৯৪১ (৪৫); মির‘আত ৫/৩৪৩-৪৫।

[17]. শারহুল মুনতাহা ৩/৬০ পৃ.; তালখীছ ১০১ পৃ.; দ্র. ছালাতুর রাসূল (ছঃ) ২১৫ পৃ.।

[18]. বুখারী ১/১৭৮, হা/১৩৩৫, ‘জানায়েয’ অধ্যায়-২৩, অনুচ্ছেদ ৬৫; মিশকাত হা/১৬৫৪; নাসাঈ হা/১৯৮৭, ৮৯; তালখীছ, ৫৪ পৃ.।





মুসলিম সমাজে মসজিদের গুরুত্ব (৬ষ্ঠ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
বিতর্কের ক্ষেত্রে করণীয়-বর্জনীয় (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - আসাদুল্লাহ আল-গালিব
সীমালংঘন - রফীক আহমাদ - বিরামপুর, দিনাজপুর
তাহরীকে জিহাদ : আহলেহাদীছ ও আহনাফ (শেষ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
পবিত্র কুরআনের ১৩৭০ বছর আগের কয়েকটি পৃষ্ঠা উদ্ধার
ইসলামে তাক্বলীদের বিধান (প্রথম কিস্তি) - আহমাদুল্লাহ - সৈয়দপুর, নীলফামারী
লজ্জাশীলতা উত্তম চরিত্রের ভূষণ - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
শারঈ মানদন্ডে ঈদে মীলাদুন্নবী - মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম মাদানী
ছিয়ামের ফাযায়েল ও মাসায়েল - আত-তাহরীক ডেস্ক
মিথ্যার ধ্বংসাত্মক প্রভাব - ড. মুহাম্মাদ আব্দুল হালীম
জান্নাত লাভের কতিপয় উপায় (২য় কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
হজ্জ ও ওমরাহ সংশ্লিষ্ট ভুল-ত্রুটি সমূহ - কামারুযযামান বিন আব্দুল বারী
আরও
আরও
.