উত্তর : মুহিউদ্দীন ইবনুল আরাবী (৫৫৮-৬৩৮ হিঃ) একজন প্রসিদ্ধ ছূফী সাধক ও দার্শনিক ছিলেন। যিনি স্পেনে জন্মগ্রহণ করেন এবং দামেশকে মৃত্যুবরণ করেন। ছূফীদের নিকট তিনি ‘আশ-শায়খুল আকবার’ নামে খ্যাত। ইয়ামনের বিখ্যাত দানবীর হাতেম তাঈ তাঁর পূর্বপুরুষ হওয়ায় ‘আত-তাঈ’ উপনামেও তার প্রসিদ্ধি রয়েছে। তাঁর আক্বীদা ছিল কুফরীতে পূর্ণ। সেজন্য তৎকালীন বহু ওলামায়ে কেরাম তাকে ‘কাফের’ বলে ফৎওয়া দিয়েছেন। তিনি হুলূল ও ইত্তেহাদে বিশ্বাসী ছিলেন। অর্থাৎ বান্দার আত্মা আল্লাহর পরমাত্মার মধ্যে প্রবেশ করে। অতঃপর সেটি আল্লাহর অংশ হয়ে যায়। আর সেখান থেকেই চালু হয়েছে ‘যত কল্লা তত আল্লাহ’। এটাকে ‘ওয়াহদাতুল উজূদ’ বা অদ্বৈতবাদী দর্শন বলে। ‘হুলূল’-এর পরবর্তী পরিণতি হ’ল ‘ইত্তেহাদ’। যার অর্থ হ’ল আল্লাহর অস্তিত্বের মধ্যে বিলীন হয়ে যাওয়া। অতঃপর স্রষ্টা ও সৃষ্টি এক হয়ে যাওয়া। এই দর্শনমতে অস্তিত্ব জগতে যা কিছু দৃশ্যমান, সবই একক এলাহী সত্তার বহিঃপ্রকাশ মাত্র। এই আক্বীদার অনুসারী ছূফীরা স্রষ্টা ও সৃষ্টিতে কোন পার্থক্য করে না।

তাদের মতে সৃষ্টজীব সবই স্রষ্টার অংশ। নবুঅত অপেক্ষা বেলায়াত শ্রেষ্ঠ, যা তারা লাভ করে বলে বিশ্বাস করে। তারা মনে করে, মারেফতাপন্থীরা আল্লাহকে দেখতে পায়। অথচ স্বয়ং রাসূল (ছাঃ)ও আল্লাহকে দেখেননি। তারা মনে করে, আল্লাহর দর্শন নারীরা বেশী পায়। আর বিবাহের মাধ্যমে পূর্ণতা লাভ করে (নাঊযুবিল্লাহ)। এদের মতে, মূসা (আঃ)-এর সময়ে যারা বাছুর পূজা করেছিল, তারা মূলতঃ আল্লাহকে পূজা করেছিল। তাদের মতে, ফেরাঊন পূর্ণ ঈমানের উপর মৃত্যুবরণ করেছিল। কারণ তাদের দৃষ্টিতে সবই আল্লাহ। আল্লাহ আরশে নন, বরং সর্বত্র ও সবকিছুতে বিরাজমান। অতএব মানুষের মধ্যে মুমিন ও মুশরিক বলে কোন পার্থক্য নেই। যে ব্যক্তি মূর্তিপূজা করে বা গাছ, পাথর, মানুষ, তারকা ইত্যাদি পূজা করে, সে মূলতঃ আল্লাহকেই পূজা করে’ (দ্রঃ ইবনুল আরাবী রচিত আল-ফুতূহাতুল মাক্কিয়াহ ২/৬০৪; আল-ফুছূছুল হিকাম ১/৭৬-৭৭,৮৩, ১৯১-১৯৫, ২১৭; যাখায়েরুল আ‘লাক্ব শরহ তারমুজানুল আশওয়াক্ব ১/৩৮-৩৯)

বস্ত্ততঃ এই আক্বীদার সাথে হিন্দুদের ‘সর্বেশ্বরবাদ’ আক্বীদার তেমন কোন পার্থক্য নেই। তৃতীয় শতাব্দী হিজরী থেকে চালু হওয়া এই সকল কুফরী আক্বীদার অন্যতম প্রচারক হ’লেন মুহিউদ্দীন ইবনুল আরাবী। বর্তমানে এই আক্বীদাই মা‘রেফাতপন্থী ছূফীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচলিত। এদের দর্শন হ’ল, প্রেমিক ও প্রেমাষ্পদের মধ্যকার সম্পর্ক এমন হ’তে হবে যেন উভয়ের অস্তিত্বের মধ্যে কোন ফারাক না থাকে।

ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ, হাফেয যাহাবী, আবু যুর‘আ ইরাক্বী,  ইবনু খালদূন, আলাউদ্দীন বুখারী, ইয্যুদ্দীন আব্দুস সালাম, তাক্বীউদ্দীন সুবক্বী, তাক্বীউদ্দীন ফাসী, আবু হাইয়ান আন্দালুসী, হাফেয ইবনু হাজার আসক্বালানী, সিরাজুদ্দীন বালক্বীনী, সাখাভী, তাফতাযানী, জুরজানী, মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী সহ বহু বিদ্বান তার ‘ফুছূছুল হিকাম’ ও ‘ফুতূহাতে মাক্কীয়াহ’ বইয়ে লিখিত কুফরী আক্বীদা সমূহের কারণে তাকে কাফির, পথভ্রষ্ট, মূর্খ, মুসলিম মিল্লাত থেকে বহিষ্কৃত, চিরস্থায়ী জাহান্নামী ইত্যাদি বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন’ (দ্র. তাক্বীউদ্দীন আল-ফাসী, আক্বীদাতু ইবনে ‘আরাবী ওয়া হায়াতুহ; সাখাভী, আল-ক্বাউলুল মুনাববী আন তারজুমাতে ইবনুল আরাবী প্রভৃতি)

বস্ত্ততঃ ইসলামী আক্বীদার সাথে মা‘রেফাতের নামে প্রচলিত ছূফীবাদী আক্বীদার কোন সম্পর্ক নেই। ইসলাম ও প্রচলিত ছূফীদর্শন সরাসরি সাংঘর্ষিক। ছূফীবাদের ভিত্তি হ’ল কথিত আউলিয়াদের স্বপ্ন, কাশ্ফ, মুরশিদের ধ্যান ও ফয়েয ইত্যাদির উপর। পক্ষান্তরে ইসলামের ভিত্তি হ’ল আল্লাহ প্রেরিত ‘অহি’ পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের উপর। ছূফীদের আবিষ্কৃত তরীকা সমূহ তাদের কপোলকল্পিত। এর সাথে কুরআন, হাদীছ, ইজমায়ে ছাহাবা, ক্বিয়াসে ছহীহ কোন কিছুরই দূরতম সম্পর্ক নেই। ছূফীদের ইমারত খৃষ্টানদের বৈরাগ্যবাদের উপরে দন্ডায়মান। ইসলাম যাকে প্রথমেই দূরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে (হাদীদ ২৭; দ্র. দরসে কুরআন, মা‘রেফতে দ্বীন, ২য় বর্ষ ৪র্থ সংখ্যা, জানুয়ারী ১৯৯৯)

সুতরাং ছূফীদের মধ্যে যারা হুলূল ও ইত্তেহাদ তথা কুফরীর পর্যায়ভুক্ত অদ্বৈতবাদী ও সর্বেশ্বরবাদী আক্বীদা পোষণ করে এবং সেমতে আমল করে- সেসব ইমামের পিছনে জেনেশুনে ছালাত আদায় করা সিদ্ধ হবে না।






প্রশ্ন (১৬/২৯৬) : মৃত্যুর কতদিনের মধ্যে ওয়ারিছদের মাঝে সম্পদ বণ্টন করতে হয়? এতে কেউ গড়িমসি করলে কোন পাপ হবে কি? - মোর্শেদ মা‘ছূম, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
প্রশ্ন (১৫/২৯৫) : কলম, প্লাস্টিক ইত্যাদি ফ্যাক্টরীর মালিকেরা যদি সূদের উপর ঋণ নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালায়, সেসব প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করা যাবে কি?
প্রশ্ন (১৮/১৮) : ফেরেশতাগণের নামে সন্তানের নাম রাখা যাবে কি? - -মেহেদী হাসানকানসাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
প্রশ্ন (৩৪/৭৪) : জাতীয় দিবস হিসাবে আমাদের দেশে যে সমস্ত দিন পালন করা হয়, সেগুলো সমর্থন করা ও সেখানে সহযোগিতা করা, অংশগ্রহণ করা কি শরী‘আত সম্মত?
প্রশ্ন (৭/৩৬৭) : আমার এক বোন নাবালেগ অবস্থা থেকেই ধর্মান্তরিত হিন্দু। কিন্তু আমি ও আমার পিতা জন্মগতভাবে মুসলিম। কিছুদিন পূর্বে পিতা মারা গেছেন। এক্ষণে আমার বোন কি পিতার সম্পদের অংশ পাবে? তার সাথে আমার কেমন ব্যবহার করা উচিৎ?
প্রশ্ন (২৯/১০৯) : নিয়ামুল কুরআন ও মকছূদুল মুমিনীন বই দু’টিতে কি নির্ভরযোগ্য? এগুলি পড়ে আমল করা যাবে কি? - -ইউসুফ, কামারপাড়া, মাগুরা।
প্রশ্ন (৩৩/২৩৩) : চাকুরী বা অন্য কোন কাজে সুফারিশকারী ব্যক্তিকে গিফ্ট বা উপঢৌকন দেওয়া যাবে কি? পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে জানিয়ে বাধিত করবেন। - নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, সিঙ্গাপুর।
প্রশ্ন (২১/৩০১) : আমার মেয়ের একটি কানের লতি জন্মগতভাবে কাটা। সেকারণে তাকে বিভিন্নভাবে বিব্রত হতে হয়। এক্ষণে প্লাস্টিক সার্জারীর মাধ্যমে ঠিক করা হলে তাতে কোন বাধা আছে কি? না এটা আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন হিসাবে গুনাহগার হতে হবে? - মাসঊদ, রিয়াদ, সঊদী আরব।
প্রশ্ন (৩/৩২৩) : জমি বিক্রয়ের বায়নাচুক্তির পর জমি না দিয়ে কয়েক বছর পর উক্ত বায়নামূল্য ফিরিয়ে দিতে চাইলে, ক্রেতা তা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। ক্রেতার জীবদ্দশায় তার সন্তানরা তা ফিরিয়ে নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছে। এক্ষণে ক্রেতার অস্বীকৃতি সত্ত্বেও সন্তানরা তা নিলে বিক্রেতা কি তার পাপ থেকে মুক্তি লাভ করবে?
প্রশ্ন (১৭/৪১৭) : আশূরার দিনের করণীয় সম্পর্কে জানতে চাই। - -আব্দুল আহাদ, মধ্য নওদাপাড়া, রাজশাহী।
প্রশ্ন (৯/৯) : আমাদের এলাকায় প্রতিযোগিতামূলক খেলা হয়, যেখানে সকল দলের নিকট থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হয়। সে টাকা দিয়ে আয়োজনের খরচ এবং পুরস্কার ক্রয় করা হয়। এরূপ আয়োজনে অংশগ্রহণ করা জায়েয হবে কি?
প্রশ্ন (২০/৪২০) : মেয়ের পিতা বিদেশে থাকেন। অন্য নিকটাত্মীয় তেমন কেউ বিবাহে উপস্থিত থাকবেন না। এক্ষণে পিতা প্রশ্নকারী : পরিচিত কাউকে ফোনে ওলীর দায়িত্ব দিলে বিবাহ শুদ্ধ হবে কি?
আরও
আরও
.