পৃথিবী নামক এই গ্রহে হাযার বছরের
ইতিহাসে ঘটে গেছে অগণিত ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। লক্ষ লক্ষ মানুষ
হারিয়েছে প্রাণ। গাছপালা, পশু-পাখি কোন কিছুই রক্ষা পায়নি দুর্যোগের কবল
থেকে। আবহমান কাল থেকে মানুষ দুর্যোগের সাথে লড়াই করে আসছে। দুর্যোগ
মানুষকে করেছে স্বজনহারা, সম্বলহারা ও আশ্রয়হীন। কালের পরিক্রমায় মানুষ
আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আল্লাহ মানুষকে সেই ক্ষমতা দিয়েই সৃষ্টি করেছেন। ফণী
নিয়ে আলোচনা করার পূর্বে প্রলয়ংকরী কিছু ঝড়ে বিবরণ নিম্নে তুলে ধরা হ’ল।-
ইতিহাসে প্রলয়ঙ্করী কিছু ঘূর্ণিঝড় :
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিপুল ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন ঊপকূলীয় অঞ্চলের জনসাধারণ। বিগত কয়েক দশকে দেশের দুর্যোগ মোকাবেলার সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমেছে। এতদসত্ত্বেও এক যুগ আগে প্রলয়ঙ্করী সিডর-এর ধ্বংসযজ্ঞ এখনো মানুষের স্মৃতিতে জাগরুক হয়ে আছে। ২০০৭ সালের ১৫ই নভেম্বরে ঐ ঝড় ও তার প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে প্রাণ হারায় সাড়ে তিন হাযার মানুষ। অতি সম্প্রতি বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ফণীকে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় বলা হচ্ছে। ঘণ্টায় ১৭০-১৮০ কিলোমিটার গতিবেগে ২৬শে এপ্রিল শুক্রবার সকালে ভারতের উড়িষ্যা ঊপকূলে আঘাত হানে এ ঘূর্ণিঝড়। ঐদিন সন্ধ্যা থেকে সারারাত ধরে বাংলাদেশ অতিক্রম করবে বলে আশংকা ছিল। যার গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০-১২০ কিলোমিটার।
এখানে বিগত দেড়শ’ বছরে বাংলাদেশে সবচেয়ে প্রলয়ঙ্করী ঝড়গুলোতে প্রাণহানির চিত্র তুলে ধরা হ’ল।-
১৯৭০ সালের ১৩ই নভেম্বর বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে বয়ে যায় প্রলয়ঙ্করী গ্রেট ভোলা সাইক্লোন। এ ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২২২ কিলোমিটার। এতে চট্টগ্রাম, বরগুনা, খেপুপাড়া, পটুয়াখালী, ভোলার চর বোরহানুদ্দীনের উত্তর পাশ ও চর তজুমুদ্দীন এবং নোয়াখালীর মাইজদি ও হরিণঘাটার দক্ষিণপাশ সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই ঝড়ে প্রাণ হারায় প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মানুষ। ৪ লাখের মতো বসতভিটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এর আগে ১৮৭৬ সালের ২৯শে অক্টোবর বরিশালের বাকেরগঞ্জে মেঘনা নদীর মোহনার কাছ দিয়ে তীব্র ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায়। এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার। এর প্রভাবে ১২ মিটারের বেশী জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয় ঊপকূলীয় এলাকা। চট্টগ্রাম, বরিশাল ও নোয়াখালীর উপকূলে তান্ডব চালিয়ে যাওয়া এ ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ২ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।
এর আগে ১৭৬৭ সালে এই বাকেরগঞ্জেই ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণ হারায় ৩০ হাযার মানুষ। এরপর ১৮২২ সালের জুন মাসে সাইক্লোনে বরিশাল, হাতিয়া ও নোয়াখালীতে প্রায় ৫০ হাযার মানুষ মারা যায়।
১৮৩১ সালে বালেশ্বর-উড়িষ্যা উপকূল ঘেঁষে চলে যাওয়া তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে বরিশাল উপকূলের ২২ হাযার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ১৫৮৪ সালে পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী ঘূর্ণিঝড়ে পটুয়াখালী ও বরিশাল যেলার উপকূলের ২ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়।
১৮৯৭ সালের ২৪শে অক্টোবর চট্টগ্রাম অঞ্চলে আঘাত হানে এক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়। তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কুতুবদিয়া দ্বীপ। ঝড়ে প্রাণ হারায় পৌনে ২ লাখ মানুষ। ১৯০৯ সালের ১৬ই অক্টোবর খুলনা অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণ হারান ৬৯৮ জন। ১৯১৩ সালের অক্টোবরে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপযেলায় মৃত্যু হয় ৫০০ জনের। এর ৪ বছর পর খুলনায় ফের এক ঘূর্ণিঝড়ে ৪৩২ জন মারা যায়।
১৯৪৮ সালে ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণ হারায় চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী অঞ্চলের ১ হাযার ২০০ বাসিন্দা। ১৯৫৮ সালে বরিশাল ও নোয়াখালীতে ঝড়ে মৃত্যু হয় ৮৭০ জনের। ১৯৬০ সালে অক্টোবরে ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার গতির প্রবল ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, বাকেরগঞ্জ, ফরিদপুর, পটুয়াখালী ও পূর্ব মেঘনা মোহনায়। ঝড়ের প্রভাবে ৪.৫-৬.১ মিটার উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়। এতে মারা যায় ঊপকূলের প্রায় ১০ হাযার অধিবাসী। পরের বছর ১৯৬১ সালের ৯ই মে তীব্র ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে বাগেরহাট ও খুলনা অঞ্চলে। বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬১ কিলোমিটার। এ ঝড়ে প্রায় সাড়ে ১১ হাযার মানুষ মারা যায়।
১৯৬২ সালে ২৬শে অক্টোবর ফেনীতে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ১০০০ মানুষের মৃত্যু হয়। ১৯৬৩ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত হয় চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কক্সবাজার এবং সন্দ্বীপ, কুতুবদিয়া, হাতিয়া ও মহেশখালী উপকূলীয় অঞ্চল। এ ঝড়ে প্রাণ হারায় ১১ হাযার ৫২০ জন।
১৯৬৫ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড়ে বারিশাল ও বাকেরগঞ্জে প্রাণ হারায় ১৯ হাযার ২৭৯ জন। ঐ বছর ডিসেম্বরে আরেক ঘূর্ণিঝড়ে কক্সবাজারে মৃত্যু হয় ৮৭৩ জনের। পরের বছর অক্টোবরে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে সন্দ্বীপ, বাকেরগঞ্জ, খুলনা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও কুমিল্লায়। এতে মারা যায় ৮৫০ জন।
১৯৭১ সালের নভেম্বরে, ১৯৭৩ সালের ডিসেম্বরে, ১৯৭৪ সালের আগস্টে ও নভেম্বরে, ১৯৭৫ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে উপকূলীয় এলাকায়। ১৯৮৩ সালের অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে দু’টি ঘূর্ণিঝড়ে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও নোয়াখালী যেলার উপকূলীয় এলাকা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রাণ যায় অনেকের।
১৯৮৫ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড হয় সন্দ্বীপ, হাতিয়া ও উড়িরচর এলাকা। এই ঝড়ে প্রাণ হারান ঊপকূলের ১১ হাযার ৬৯ জন বাসিন্দা। ১৯৮৮ সালের নভেম্বরে ঘূর্ণিঝড় লন্ডভন্ড করে দিয়ে যায় যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর এবং বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলের উপকূলীয় এলাকা। গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬২ কিলোমিটার। এতে ৫ হাযার ৭০৮ জন প্রাণ হারায়।
১৯৯১ সালের ৩০শে এপ্রিল বয়ে যায় আরেক প্রলয়ঙ্করী ঝড়। ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার গতিবেগ নিয়ে আছড়ে পড়ে চট্টগ্রাম ও বরিশালের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে। এতে প্রায় দেড় লাখ লোকের প্রাণহানি ঘটে। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালের মে মাসে এবং পরের বছর নভেম্বরে কক্সবাজারে, ১৯৯৭ সালের মে মাসে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী ও ভোলা যেলায় ঘূর্ণিঝড়ে অনেক প্রাণহানি ঘটে।
২০০৭ সালের ১৫ই নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে বিধ্বস্ত হয় দেশের দক্ষিণ উপকূল। উত্তর ভারত মহাসাগরে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে সৃষ্ট এ ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৬০ থেকে ৩০৫ কিলোমিটার। এতে ৩ হাযারের বেশী মানুষ মারা যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৩২টি যেলার ২০ লাখ মানুষ। উপকূলীয় এলাকায় প্রায় ৬ লাখ টন ধান নষ্ট হয়। সুন্দরবনের প্রাণীর পাশাপাশি ব্যাপক গবাদিপশু মারা যায়।
২০০৯ সালের ২১শে মে ভারত মহাসাগরে সৃষ্টি হয় ঘূর্ণিঝড় আইলা। এর অবস্থান ছিল কলকাতা থেকে ৯৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে। চার দিনের মাথায় ২৫শে মে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশ ও ভারতের দক্ষিণ-পূর্বাংশে আঘাত হানে এই ঝড়। এতে ভারতের ১৪৯ জন ও বাংলাদেশের ১৯৩ জনের প্রাণ কেড়ে নেয়। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে উপকূলে প্রায় ৩ লাখ মানুষ বাস্ত্তভিটা হারায়। ঐ বছরের ১৯শে এপ্রিল বিজলী ঝড় আঘাত হানে।
২০০৮ সালের অক্টোবরে ঘণ্টায় ৮৫ কিলোমিটার বেগের বাতাস নিয়ে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় রেশমিতেও প্রাণহানি ঘটে। ২০১৩ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় মহাসেন-এ প্রাণ হারান ১৭ জন। এরপর ২০১৬ সালে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে মারা যান চট্টগ্রামের ২৬ জন বাসিন্দা। তারপর ২০১৮ সালে ১১ই অক্টোবর তিতলি ঝড় আঘাত হানে।
ফণী আতঙ্ক!
ফণী সাপের ফনার মতো, ইংরেজীতে (Fani) বলা হ’লেও বাংলাতে উচ্চারণ ফণী হয়। ফণী নামটি বাংলাদেশ থেকে প্রস্তাবিত, অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রস্তাব অনুসারে ঝড়টির নামকরণ করা হয়েছে ফণী। ভারতের ওডিশা রাজ্যে গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়টির উৎপত্তি হয়। ২৬শে এপ্রিল ভারতীয় মহাসাগরে সুমাত্রার পশ্চিমে ক্রান্তীয় নিম্নচাপ হয়। অতঃপর ৩০শে এপ্রিল নিম্নচাপটি তীব্রতর হয়, ওডিশায় উৎপন্ন ফণী ঝড়ের গতিবেগ ছিল প্রতি ঘন্টায় ১৭৫ কিলোমিটার হ’তে ১৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। ২রা মে ফণী ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। ঠিক তার পরের দিন ফণী দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে পড়ে। ৪ঠা মে শনিবার সকাল ৬-টায় সাতক্ষীরা, যশোর, খুলনা অঞ্চলে অবস্থান করে। সকাল ৯-টার দিকে ঢাকার মধ্যাঞ্চলে ঢাকা ও ফরিদপুরে ফণী অপেক্ষাকৃত দুর্বল হয়ে প্রতি ঘন্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার বেগে বয়ে যায়। সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি ও বজ্রপাত লক্ষ্য করা যায়।
পূর্বাভাস ও সতর্কতা : আবহাওয়া অফিস পূর্ব থেকেই সতর্কতা মূলক দিকনির্দেশনা দিচ্ছিল। উপকূলীয় যেলাসমূহ যেমন চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর দ্বীপ ও চর অঞ্চলের দুই থেকে চার ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হ’তে পারে। উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে প্রশাসন প্রায় ১২ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার ব্যবস্থা করেছিল। মংলা ও পায়রা বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছিল। সেই সাথে মংলা ও পায়রা বন্দর সংশ্লিষ্ট যেলাসমূহকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছিল। অপরদিকে চট্টগ্রাম বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছিল এবং চট্টগ্রামের আওতাধীন নোয়াখালী ও চাঁদপুর যেলায় ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছিল। কক্সবাজার ও তার আশেপাশে ৪ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছিল।
ক্ষয়ক্ষতি :
ফণীর আঘাতে দেশের ৩৫টি যেলার মোট ৬৩ হাযার ৬৩ হেক্টর ফসলি জমিতে ৩৮ কোটি ৫৪ লাখ ২ হাযার ৫০০ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এতে ১৩ হাযার ৬৩১ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাযযাক। আক্রান্ত ফসলি জমির মধ্যে বোরো ধান ৫৫ হাযার ৬০৯ হেক্টর, সবজি ৩ হাযার ৬৬০ হেক্টর, ভুট্টা ৬৭৭ হেক্টর, পাট ২ হাযার ৩৮২ হেক্টর, পান ৭৩৫ হেক্টর।
পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, এর মধ্যে বোরো ৫৫৬০৯ হেক্টর ক্ষতির পরিমাণ ১৬২৯.৪২০ লাখ টাকা, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ৭৩১২ জন। সবজিতে ৩৬৬০ হেক্টর ক্ষতির পরিমাণ ১৫৫৭.১৮০ লাখ টাকা, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ৪৪৩১ জন; ভুট্টায় ৬৭৭ হেক্টর ক্ষতির পরিমাণ ১৩৯.০৫০ লাখ টাকা, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ৭২১ জন; পাটে ২৩৮২ হেক্টর জমিতে ক্ষতির পরিমাণ ৯১.৫৭৫ লাখ টাকা, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ৭৭৭ জন এবং পানের ৭৩৫ হেক্টর জমিতে ক্ষতি হয়েছে ৪৩৬.৮০০ লাখ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত ১৩ হাযার ৬৩১ জন কৃষকের মধ্যে প্রণোদনা হিসাবে সরকার ৩৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা দেবে বলে মন্ত্রী জানান।
ফণী ঝড়ে ও বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। আহতের সংখ্যা অর্ধ শতাধিক।
ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, সূর্যের প্রখর তাপদাহ, কনকনে শীত সবকিছু নিয়েই আমাদের জীবন। প্রযুক্তির উৎকর্ষতার কল্যাণে বিশেষভাবে মিডিয়ার কল্যাণে, মানুষ দুর্যোগের আগাম বার্তা পাচ্ছে। তারপরেও যদি ফণী বড় রকমের আঘাত হানত তাহ’লে আমাদের কতটুকু সক্ষমতা ছিল দুর্যোগ মোকাবেলা করার কিংবা দুর্যোগের পরবর্তী পুনর্বাসন পদক্ষেপ গ্রহণ করার? প্রকৃতপক্ষে দুর্যোগ প্রতিহত করা কিংবা বন্ধ করা মানুষের পক্ষে অসম্ভব। সুতরাং দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য মানুষকে সতর্ক-সাবধান করতে হবে এবং আল্লাহর কাছে দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য প্রার্থনা করতে হবে। আল্লাহ আমাদের হেফাযত করুন-আমীন!