উত্তর : নাহরাওয়ানের যুদ্ধে পরাজিত খারেজী শক্তি হযরত আলী (রাঃ)-কে হত্যার নিকৃষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করে। খারেজী নেতা আব্দুর রহমান ইবনু মুলজাম, হাজ্জাজ ও আমর ইবনু বকর মক্কায় মিলিত হয়ে যুদ্ধে নিহত খারেজীদের জন্য সমবেদনা প্রকাশ করে বলে যে, আমরা বেঁচে থেকে কি করব? যদি না আমরা ভ্রষ্ট নেতা আলীকে হত্যা করতে পারি ও লোকদেরকে তাদের অত্যাচার থেকে নিষ্কৃতি দিতে পারি! উল্লেখ্য, এদের তিনজনকে আলী (রাঃ) নাহরাওয়ানের যুদ্ধে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। অতঃপর তারা তিনজন আলী, মু‘আবিয়া ও আমর ইবনুল আছ (রাঃ)-কে হত্যা করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করল। তারা হত্যা করার দিন ধার্য করল ৪০ হিজরীর ১৭ই রামাযান। ইবনু মুলজাম কূফার শাবীব বিন বাজরাহ আশজাঈকে বলল, হে শাবীব! তুমি কি দুনিয়া ও আখেরাতে মর্যাদা চাও? তাহ’লে আলীকে হত্যা করার ব্যাপারে আমাকে সাহায্য কর’। সে বলল, তোমার ধ্বংস হৌক! কিভাবে তুমি এ কাজে সক্ষম হবে? সে বলল, তার কোন পাহারাদার নেই। তিনি একাকী ছালাতে বের হন। আমরা তার জন্য মসজিদে লুকিয়ে থাকব। অতঃপর যখন তিনি ছালাতে বের হবেন, আমরা তাঁকে হত্যা করব। যদি আমরা বেঁচে যাই তো ভালো, নইলে দুনিয়াতে আমাদের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়বে এবং আখেরাতে জান্নাত লাভ হবে’। অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘অন্যথায় শাহাদাত লাভ হবে’। সে বলল, ইসলামে তাঁর অগ্রগামিতা ও উচ্চ মর্যাদার কারণে তাঁকে হত্যা করতে আমার মন সায় দিচ্ছে না’। উত্তরে ইবনু মুলজাম বলল, তিনি কি নাহরাওয়ানের যুদ্ধে সৎ লোকদের হত্যা করেননি? তাদের রক্তের বদলায় আমি তাকে হত্যা করব। অতঃপর সে পূর্বপরিকল্পনা মতে মসজিদে আত্মগোপন করল এবং দরজার পাশে ওৎ পেতে রইল। ফজরের আযান হ’লে তিনি বাড়ী থেকে বেরিয়ে লোকদের ‘আছ-ছালাত’ ‘আছ-ছালাত’ বলে ছালাতের আহবান জানাতে থাকেন। এমতাবস্থায় শাবীব তরবারী নিয়ে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। তিনি দরজার নিকট পড়ে গেলে ইবনু মুলজাম তাঁর কানের উপরিভাগে মাথার শিংয়ের নিকট তরবারীর আঘাত করে বলতে লাগল, لَا حُكْمَ إِلَّا لله لَيْسَ لَكَ يَا عَلِيُّ وَلَا لِأَصْحَابِكَ ‘হে আলী! রাজত্ব আল্লাহর জন্য, তোমার জন্য নয় বা তোমার সাথীদের জন্যও নয়’। তখন সে পাঠ করছিল- وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْرِيْ نَفْسَهُ ابْتِغَاءَ مَرْضَاتِ اللهِ ‘লোকদের মধ্যে এমন লোক রয়েছে, যে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে’ (বাক্বারাহ ২/২০৭)। তখন আলী (রাঃ) বলে ওঠেন, فُزْتُ وَرَبِّ الْكَعْبَةِ ‘কা‘বার রবের কসম! আমি সফল হয়েছি’...। কেননা রাসূল (ছাঃ) তাঁর ব্যাপারে আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেছিলেন, ‘তোমাদেরকে কি আমি সর্বাপেক্ষা দুর্ভাগা দু’ব্যক্তি সম্পর্কে বলব না? তাদের একজন হ’ল উটকে হত্যাকারী কওমে ছামূদের উহাইমির। আর অপরজন হ’ল তোমাকে তোমার এ স্থানে (মাথার শিংয়ের নিকট) আঘাতকারী ব্যক্তি। হে আলী! এমনকি রক্তে তোমার দাড়ি ভিজে যাবে’ (আহমাদ হা/১৮৩৪৭; সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৭৪৩)।

আলী (রাঃ)-কে যখমী অবস্থায় বাড়িতে নিয়ে আসা হ’ল। ইবনু মুলজাম গ্রেপ্তার হ’লে তাকে আলী (রাঃ)-এর নিকট নিয়ে আসা হ’ল। তিনি তাকে বললেন, হে আল্লাহর দুশমন! আমি কি তোমাকে নাহরাওয়ানের যুদ্ধের দিন ক্ষমা করিনি? সে বলল, হ্যাঁ। তাহ’লে তোমাকে এ কাজে কে প্ররোচিত করল? সে বলল, আমি ৪০ দিন যাবৎ এ তারবারীতে ধার দিয়েছি আর আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করেছি যেন এর দ্বারা তাঁর নিকৃষ্ট সৃষ্টিকে হত্যা করতে পারি’ (شَرُّ خَلْقِ اللهِ)।

অতঃপর তিনদিন জীবিত থাকার পর ৪০ হিজরী ২১শে রামাযান রাতে ৬৩ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। (তারীখে ইবনু খালদূন ২/৬৪৫-২৪৬; আল-ইস্তি‘আব ৩/১১২৩-২৬; আল-বিদায়াহ ৭/৩২৫-৩২৯; ইবনু সা‘দ, ত্বাবাক্বাতুল কুবরা ৩/২৫-২৭)। উপরোক্ত আলোচনায় প্রমাণিত হয় যে, আলী (রাঃ)-কে হত্যার জন্য খারেজীদের চরমপন্থী আক্বীদাই ছিল মূলতঃ দায়ী। অতএব আক্বীদার পরিবর্তন ব্যতীত ইসলামের নামে চরমপন্থী আন্দোলন প্রতিহত করা সম্ভব নয়।







প্রশ্ন (৩০/৩৫০) : আমাদের মসজিদের ইমাম জুম‘আর খুৎবার শেষে মিম্বারে থাকা অবস্থায় ছালাতের আগে মুছল্লীদের নিয়ে দু’হাত তুলে সম্মিলিত দো‘আ করেন। এভাবে দো‘আ করা কি জায়েয? - -মেহেদী হাসান, কানসাট, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
প্রশ্ন (২১/১০১) : প্রচলিত আছে যে, ১৯২৯ সালে জাবির বিন আব্দুল্লাহ এবং হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ) ইরাকের তৎকালীন বাদশাহ ফয়ছালকে স্বপ্নযোগে তাদের লাশ স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। অতঃপর সারা বিশ্বের লাখো মানুষের উপস্থিতিতে তাদের অবিকৃত লাশ স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনার সত্যতা জানতে চাই। - -কাওছার আলম, আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা।
প্রশ্ন (১৪/২১৪) : কোন মুছল্লী জেহরী ছালাতের কিছু অংশ পাওয়ার পর বাকী অংশে সরবে না নীরবে ক্বিরাআত করবে? - একরামুল হক, গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা।
প্রশ্ন (১০/১৭০) : কেউ কারো মাধ্যমে উপকৃত হ’লে তার প্রশংসায় বলে, ‘আকাশে আল্লাহ আছেন আর তুমি যমীনে’- এমন ভাষায় কারো উপকারের প্রশংসায় বলা যাবে কি?
প্রশ্ন (২৭/৪৬৭) : ‘যে জ্ঞানীকে সম্মান করে না সে আমাকে সম্মান করে না’ কথাটি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত কি?
প্রশ্ন (১৪/১৭৪) : রাসূল (ছাঃ) মি‘রাজে কতকাল ছিলেন? কেউ কেউ বলেন, তিনি ২৭ বছর ছিলেন। এ সময় দুনিয়ার সবকিছু স্থির করে দেয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে দলীলসহ জবাব দিলে উপকৃত হব। - -মুহাম্মাদ যিল্লুর রহমান, যশোর।
প্রশ্ন (২/২০২) : জানাযার ছালাতে সূরা ফাতেহা পড়তে বলা হয়; কিন্তু সূরা ফাতেহার সাথে অন্য সূরা পড়া হয় না কেন?
প্রশ্ন (১২/৩৩২) : জনৈক ব্যক্তি নির্দিষ্ট কোন মাদরাসার নাম উল্লেখ না করে বলেছেন, মাদরাসার নামে এই জমি দান করলাম। বর্তমানে ঐ ব্যক্তি বেঁচে নেই। এখন তার ওয়ারিছগণ উক্ত জমিতে ঈদগাহ বানাতে চায়। এটা শরী‘আত সম্মত হবে কি?
প্রশ্ন (১৬/১৩৬) : বিবাহের সম্মতি জ্ঞাপন করতে গিয়ে অনেকে কবূল না বলে আলহামদুলিল্লাহ বলেন। এটা সঠিক হবে কি? - -আলাল বিন কায়েসবদরগঞ্জ, রংপুর।
প্রশ্ন (১/২৪১) : বিদ‘আতীদের কবরস্থানে হকপন্থীদের লাশ দাফন করার শারঈ বিধান কি?
প্রশ্ন (৩৭/১৯৭) : নিজ পরিবারের নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ যথাযথভাবে বহন করলে কোন নেকী অর্জিত হয় কি? - -যহীরুল ইসলামবাগমারা, রাজশাহী।
প্রশ্ন (২৯/৩৪৯) কোন অমুসলিম যদি তার বৈধ উপার্জন থেকে রামাযান মাসে কোন মুসলমানের ইফতারের ব্যবস্থা করে, তবে তা খাওয়া জায়েয হবে কি?
আরও
আরও
.