ভূমিকা : সত্যবাদিতার বিপরীত হচ্ছে মিথ্যাচার। যে মিথ্যা বলে সে মিথ্যাবাদী। মিথ্যাবাদীকে কেউ বিশ্বাস করে না। মিথ্যার ফলে সমাজে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। মিথ্যা মানুষকে ইহকালে ঘৃণিত ও নিন্দিত করে এবং পাপের পথে পরিচালিত করে। আর পাপ তাদের জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত করে। তাই মিথ্যার ধ্বংসাত্মক প্রভাব সুদূর প্রসারী। আলোচ্য প্রবন্ধে আমরা মিথ্যার ধ্বংসাত্মক প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করা হ’ল।-
১. মিথ্যা হিদায়াতের পথ থেকে বিচ্যুত করে : মিথ্যা মানুষের কথা ও কাজের মধ্যে গড়মিল সৃষ্টি করে। ফলে মিথ্যাবাদীর আচরণে সততার অভাব ধরা পড়ে। সে সুবিধা আদায়ের জন্য এদিক-সেদিক দৌড়ে বেড়ায় এবং কোনটা হালাল, কোনটা হারাম তা বিচার করে না। সমাজের মানুষ তাকে বিপজ্জনক মনে করে। ঘৃণিত এই স্বভাবের কারণে সে ছিরাতে মুস্তাক্বীম থেকে ছিটকে পড়ে এবং আল্লাহর হিদায়াত থেকে বঞ্চিত হয়। মহান আল্লাহ বলেন, إِنَّ اللهَ لَا يَهْدِيْ مَنْ هُوَ مُسْرِفٌ كَذَّابٌ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালংঘনকারী ও মিথ্যাবাদীকে সুপথ প্রদর্শন করেন না’ (মুমিন/গাফের ৪০/২৮)।
২. প্রশান্তি বিলুপ্ত ও সন্দেহ সৃষ্টি করে : মিথ্যা
মানুষের মনে সন্দেহ ও অস্থিরতা সৃষ্টি করে। মিথ্যাবাদীর অন্তরে সর্বদা
অস্থিরতা বিরাজ করে এবং এটি তার মানসিক প্রশান্তি বিদূরিত করে। রাসূল (ছাঃ)
বলেন,دَعْ مَا يَرِيبُكَ إِلَى مَا لَا يَرِيبُكَ، فَإِنَّ الصِّدْقَ
طُمَأْنِينَةٌ، وَإِنَّ الكَذِبَ رِيبَةٌ ‘যে বিষয়ে তোমার সন্দেহ হয় তা
পরিত্যাগ করে যাতে সন্দেহ নেই তা গ্রহণ কর। কেননা সত্য হচ্ছে প্রশান্তি আর
মিথ্যা হচ্ছে সন্দেহ’।[1]
মিথ্যা মানুষের
অন্তরকে সংকুচিত করে ও সর্বদা চিন্তিত রাখে। এজন্য মিথ্যুক ব্যক্তি সর্বদা
পার্থিব জীবনে মানসিক অশান্তি নিয়ে দিনাতিপাত করে। ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ)
বলেন, ‘মানসিক প্রশান্তিই সবচেয়ে বড় প্রশান্তি এবং মানসিক শাস্তিই সবচেয়ে
বড় শাস্তি।[2]
৩. অন্তরকে পীড়িত করে : মিথ্যা মানুষের অন্তরে নিফাক বা কপটতার রোগ জন্ম দেয়। ফলে সমাজে দ্বিমুখী নীতির মানুষ সৃষ্টি হয়। এ ব্যাধি মানুষকে ইসলাম থেকে দূরে ঠেলে দেয়। এর ক্ষতিকর প্রভাব সুদূর প্রসারী। এটি মানুষের উত্তম গুণাবলী ছিনিয়ে নেয়। তাকে সৎ আমলসমূহ থেকে বঞ্চিত করে এবং তার উন্নত মূল্যবোধগুলো বিদূরিত করে। ফলে এ ধরনের মানুষ প্রকৃত মুমিন হ’তে পারে না। তাদের মিথ্যাচারিতার কারণে তাদের জন্য পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি নির্ধারিত রয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন,وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَقُولُ آمَنَّا بِاللهِ وَبِالْيَوْمِ الْآخِرِ وَمَا هُمْ بِمُؤْمِنِيْنَ، يُخَادِعُونَ اللهَ وَالَّذِيْنَ آمَنُوْا وَمَا يَخْدَعُونَ إِلَّا أَنْفُسَهُمْ وَمَا يَشْعُرُوْنَ، فِيْ قُلُوْبِهِمْ مَرَضٌ فَزَادَهُمُ اللهُ مَرَضًا وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيْمٌ بِمَا كَانُوْا يَكْذِبُوْنَ- ‘আর লোকদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে, যারা বলে আমরা আল্লাহ ও বিচার দিবসের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অথচ তারা বিশ্বাসী নয়। তারা আল্লাহ ও ঈমানদারগণকে ধোঁকা দেয়। অথচ এর দ্বারা তারা কেবল নিজেদেরকেই ধোকা দেয়। কিন্তু তারা তা বুঝতে পারেনা। তাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে। অতঃপর আল্লাহ তাদের ব্যাধি আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে মর্মান্তিক শাস্তি তাদের মিথ্যাচারের কারণে’ (বাক্বারাহ ২/৮-১০)।
৪. রিযিক ও বরকতে ঘাটতি সৃষ্টি করে : মিথ্যা
এমন এক জঘন্য অপরাধ যা মানুষকে পাপের পথে পরিচালিত করে। মিথ্যা বলার
মাধ্যমে মানুষ সাময়িকভাবে লাভবান হ’তে চেষ্টা করে। কিন্তু এতে সে সাময়িক
কিছু অর্জন করতে পারলেও প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর রহমত হ’তে বঞ্চিত হয়।
অনুরূপভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মিথ্যা কথা ও কসম পণ্যের বিক্রি
বাড়ালেও তার বরকত কমে যায়। ফলে মিথ্যাবাদী প্রকৃত প্রস্তাবে ক্ষতির
সম্মুখীন হয়। এজন্য ইমাম বুখারী (রহঃ) ছহীহ বুখারীতে অধ্যায় রচনা করেছেন
بَابُ مَا يَمْحَقُ الكَذِبُ وَالكِتْمَانُ فِي البَيْعِ ‘মিথ্যা বলা ও
দোষ-ত্রুটি লুকিয়ে রাখায় ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত মুছে যায়’।[3]
নবী
করীম (ছাঃ) বলেছেন,البَيِّعَانِ بِالخِيَارِ مَا لَمْ يَتَفَرَّقَا، أَوْ
قَالَ: حَتَّى يَتَفَرَّقَا، فَإِنْ صَدَقَا وَبَيَّنَا بُورِكَ لَهُمَا
فِيْ بَيْعِهِمَا، وَإِنْ كَتَمَا وَكَذَبَا مُحِقَتْ بَرَكَةُ
بَيْعِهِمَا- ‘যতক্ষণ বিচ্ছিন্ন না হবে ততক্ষণ ক্রেতা-বিক্রেতার এখতিয়ার
থাকবে। যদি তারা সত্য বলে ও যথাযথ বর্ণনা করে তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত
হবে। আর যদি পণ্যের প্রকৃত অবস্থা গোপন করে ও মিথ্যা বলে তবে ক্রয়-বিক্রয়ে
বরকত চলে যাবে’।[4]
তিনি আরো বলেন, الحَلِفُ مُنَفِّقَةٌ لِلسِّلْعَةِ، مُمْحِقَةٌ لِلْبَرَكَة ‘মিথ্যা কসম পণ্যের কাটতি বাড়ায় কিন্তু বরকত কমিয়ে দেয়’।[5]
অন্যত্র তিনি বলেন, ‘তোমরা ক্রয়-বিক্রয়ে মিথ্যা কসম করা থেকে বিরত থাক।
কেননা এর কারণে (সাময়িক) পণ্য বেশী বিক্রি হ’লেও বরকত কমে যায়’।[6]
৫. মিথ্যা শপথকারী আল্লাহর ক্রোধের পাত্র : মানুষ যেসকল পাপের দ্বারা দু’জাহানে ক্ষতির অতল তলে নিমজ্জিত হয় তন্মধ্যে মিথ্যা শপথ অন্যতম। এটি কবীরা গুনাহ। এর মাধ্যমে মানুষ নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে ও অন্যের ক্ষতি করতে তৎপর হয়। এসব ব্যক্তিকে আল্লাহ পরকালে মুক্ত করবেন না। ফলে তারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির শিকার হবে।
রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেছেন,مَنْ حَلَفَ يَمِيْنَ صَبْرٍ لِيَقْتَطِعَ بِهَا مَالَ
امْرِئٍ مُسْلِمٍ، لَقِيَ اللهَ وَهْوَ عَلَيْهِ غَضْبَانُ ‘যে ব্যক্তি কোন
মুসলিম ব্যক্তির সম্পত্তি আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে ঠান্ডামাথায় মিথ্যা শপথ
করে, সে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে এমন অবস্থায় যে, আল্লাহ তার উপর
ক্রোধান্বিত থাকবেন’।[7]
আবু যার (রাঃ) হ’তে
বর্ণিত নবী করীম (ছাঃ) বলেন, তিন শ্রেণীর লোকের সাথে আল্লাহ তা‘আলা
ক্বিয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তাদের প্রতি (রহমতের) দৃষ্টি দিবেন না এবং
তাদেরকে (গুনাহ ক্ষমা করে) পবিত্র করবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে
যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। একথা শুনে আবু যার (রাঃ) বললেন, তাদের জন্য তো ধ্বংস ও
অধঃপতন হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! তারা কারা? তিনি বললেন, (১) যে ব্যক্তি
টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরে (২) যে দান করে খোঁটা দেয় (৩) যে ব্যক্তি
মিথ্যা কসম দ্বারা নিজের মাল বিক্রি করে।[8]
৬. মিথ্যা সাক্ষ্যদান কাবীরা গুনাহ : মিথ্যা সাক্ষ্যের মাধ্যমে সমাজে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। এর মাধ্যমে অনেক সময় মানুষ নিঃস্ব হয়ে যায়। বর্তমানে মিথ্যা সাক্ষ্যের মাধ্যমে কত হক্ব যে বিনষ্ট হচ্ছে, কত নির্দোষ-নিরপরাধ মানুষ যে যুলুম-নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, কত জমি-জায়গার মালিক যে অন্যায়ভাবে তা দখল করছে তার ইয়ত্তা নেই। মিথ্যা সাক্ষ্য থেকে নিষেধ করে মহান আল্লাহ বলেন,فَاجْتَنِبُوا الرِّجْسَ مِنَ الْأَوْثَانِ وَاجْتَنِبُوا قَوْلَ الزُّورِ، حُنَفَاءَ لِلَّهِ غَيْرَ مُشْرِكِيْنَ بِهِ، ‘অতএব তোমরা মূর্তিপূজার কলুষ এবং মিথ্যা কথা হ’তে দূরে থাক। আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠ হয়ে এবং তার সাথে কাউকে শরীক না করে’ (হজ্জ ২২/৩০-৩১)।
মুমিন বান্দা কখনো এ ধরনের কাজে জড়িত হ’তে পারে না। আল্লাহ মুমিনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনায় বলেন,وَالَّذِينَ لَا يَشْهَدُوْنَ الزُّورَ وَإِذَا مَرُّوْا بِاللَّغْوِ مَرُّوا كِرَامًا- ‘যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না এবং যখন অসার ক্রিয়াকর্মের সম্মুখীন হয় তখন ভদ্রভাবে সে স্থান অতিক্রম করে’ (ফুরকান ২৫/৭২)।
রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন,أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِأَكْبَرِ الكَبَائِرِ؟ ثَلاَثًا،
قَالُوا: بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ، قَالَ: الإِشْرَاكُ بِاللهِ، وَعُقُوقُ
الوَالِدَيْنِ، وَجَلَسَ وَكَانَ مُتَّكِئًا فَقَالَ أَلاَ وَقَوْلُ
الزُّورِ، ‘আমি কি তোমাদেরকে বৃহত্তম কবীরা গুনাহ সম্পর্কে অবহিত করব না?
কথাটি তিনি তিনবার বললেন, ছাহাবীগণ বললেন, অবশ্যই বলবেন, হে আল্লাহর রাসূল
(ছাঃ)! (উত্তরে) তিনি বললেন, আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য
হওয়া। তিনি হেলান দেওয়া অবস্থায় কথাগুলি বলছিলেন। অতঃপর সোজা হয়ে বসে
বললেন, শুনে রাখ! আর মিথ্যা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া’।[9]
৭. মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনাকারীর শাস্তি : মানুষ
বিভিন্নভাবে নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। তন্মধ্যে মিথ্যা স্বপ্ন
অন্যতম। উচ্চ মর্যাদা পেতে, আর্থিক সুযোগ-সুবিধা লাভ করতে, নিজেকে ডাক্তার,
কবিরাজ বা ভবিষ্যদ্বক্তা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত কিংবা শত্রুকে ভীতচকিত করার
মানসে অনেকে মিথ্যা স্বপ্ন বলে বেড়ায়। অনেকেই তাদের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত
হয়, অর্থ-সম্পদ ও ইয্যত-সম্মান হারায়। এ সমস্ত মিথ্যা স্বপ্ন যারা বলে
বেড়ায় পরকালে তাদের জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,إِنَّ
مِنْ أَعْظَمِ الفِرَى أَنْ يَدَّعِيَ الرَّجُلُ إِلَى غَيْرِ أَبِيهِ،
أَوْ يُرِيَ عَيْنَهُ مَا لَمْ تَرَ، أَوْ يَقُولُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا لَمْ يَقُل ‘সবচেয়ে বড় মনগড়া বা
মিথ্যার মধ্যে রয়েছে ঐ ব্যক্তি, যে নিজেকে স্বীয় পিতা ব্যতীত অন্যের সন্তান
হিসাবে আখ্যায়িত করে, যে স্বপ্ন সে দেখেনি তা দেখার দাবী করে এবং
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যা বলেননি তাঁর নামে তা বলে’।[10]
তিনি
আরও বলেন,مَنْ تَحَلَّمَ بِحُلْمٍ لَمْ يَرَهُ كُلِّفَ أَنْ يَعْقِدَ
بَيْنَ شَعِيرَتَيْنِ، وَلَنْ يَفْعَلَ ‘যে ব্যক্তি স্বপ্নে যা দেখেনি তা
দেখার ভান বা দাবী করে তাকে দু’টি চুলে গিরা দিতে বাধ্য করা হবে। কিন্তু সে
তা কখনোই করতে পারবে না’।[11]
৮. মিথ্যা পাপ ও জাহান্নামের পথে পরিচালিত করে : মিথ্যা
মানুষকে পাপ ও অন্যায়ের পথে পরিচালিত করে। আর পাপ তাকে জাহান্নামে
নিক্ষিপ্ত করে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, وَإِيَّاكُمْ وَالْكَذِبَ فَإِنَّ
الْكَذِبَ يَهْدِي إِلَى الْفُجُورِ وَإِنَّ الْفُجُورَ يَهْدِي إِلَى
النَّارِ وَمَا يَزَالُ الرَّجُلُ يَكْذِبُ وَيَتَحَرَّى الْكَذِبَ حَتَّى
يُكْتَبَ عِنْدَ اللهِ كَذَّابًا- ‘আর তোমরা মিথ্যা থেকে বেঁচে থাক। কেননা
মিথ্যা পাপাচারের পথ বাতলিয়ে দেয়। আর পাপাচার জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়।
যে ব্যক্তি সর্বদা মিথ্যা কথা বলে এবং মিথ্যা বলতে চেষ্টা করে আল্লাহ
তা‘আলার দরবারে তাকে কাযযাব (চরম মিথ্যুক) বলে লিপিবদ্ধ করা হয়।[12]
তিনি আরো বলেন,وَإِيَّاكُمْ وَالْكَذِبَ، فَإِنَّهُ مَعَ الْفُجُورِ، وَهُمَا فِي النَّارِ ‘তোমরা সত্যবাদিতা অবলম্বন কর। কেননা সত্য নেকীর সাথে রয়েছে। আর উভয়টি জান্নাতে যাবে। আর মিথ্যা থেকে বেঁচে থাক। কেননা মিথ্যা পাপের সাথে রয়েছে।
আর উভয়টি জাহান্নামে যাবে’।[13]
৯. মিথ্যা বলা মুনাফিকী : মিথ্যা
বলা মুনাফিকের পরিচায়ক। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,آيَةُ المُنَافِقِ
ثَلاَثٌ: إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ، وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ، وَإِذَا
اؤْتُمِنَ خَانَ ‘মুনাফিকের আলামত তিনটি। (১) যখন সে কথা বলে মিথ্যা বলে
(২) ওয়াদা করলে ভঙ্গ করে (৩) আমানত রাখা হ’লে খেয়ানত করে।[14]
অন্যত্র
তিনি বলেন,أَرْبَعٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ كَانَ مُنَافِقًا خَالِصًا، وَمَنْ
كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنْهُنَّ كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنَ النِّفَاقِ
حَتَّى يَدَعَهَا: إِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ، وَإِذَا حَدَّثَ كَذَبَ، وَإِذَا
عَاهَدَ غَدَرَ، وَإِذَا خَاصَمَ فَجَر ‘যার মধ্যে চারটি স্বভাব পাওয়া
যাবে সে খাঁটি মুনাফিক এবং যার মধ্যে তার একটি দেখা যাবে তার মধ্যে
মুনাফিকের একটি স্বভাব রয়েছে। যতক্ষণ না সে তা পরিত্যাগ করে। (১) তার নিকট
আমানত রাখা হ’লে তা খিয়ানত করে (২) কথা বললে মিথ্যা বলে (৩) ওয়াদা করলে
ভঙ্গ করে (৪) ঝগড়া করলে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে’।[15]
১০. মিথ্যাবাদীর মর্মান্তিক শাস্তি : মিথ্যাবাদীর মিথ্যা কথা, কাজ ও আচরণের ফলে সমাজে বহু ঝগড়া বিবাদ ও দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়। আবার মিথ্যার কারণে যুলুম, নির্যাতন ও অত্যাচারের অনেক লোমহর্ষক কাহিনী চাপা পড়ে থাকে। তাই মহান আল্লাহ মিথ্যাবাদীর জন্য মর্মান্তিক শাস্তি নির্ধারণ করেছেন। সামুরাহ বিন জুনদুব (রাঃ) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ছালাত শেষে আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বসতেন। একদিন তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে আজ কেউ স্বপ্ন দেখেছ কি? কেননা আমাদের কেউ এরূপ স্বপ্ন দেখে থাকলে তা বর্ণনা করত এবং তিনি আল্লাহ যা চাইতেন সে অনুযায়ী ব্যাখ্যা করে দিতেন।
যথারীতি একদিন (ফজর ছালাত শেষে) তিনি আমাদের
জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের কেউ আজ কোন স্বপ্ন দেখেছ কি? আমরা বললাম, না। তিনি
বললেন, কিন্তু আমি দেখেছি যে, দু’জন ব্যক্তি আমার নিকটে আসল। অতঃপর তারা
আমাকে পবিত্র ভূমির (শাম বা বায়তুল মুক্বাদ্দাসের) দিকে নিয়ে গেল। সেখানে
গিয়ে দেখলাম, এক ব্যক্তি বসে আছে এবং অপর ব্যক্তি একমুখ বাঁকানো ধারালো
লোহার সাঁড়াশী হাতে দাঁড়িয়ে আছে। সে উক্ত বসা ব্যক্তির গালের এক পাশ দিয়ে
ওটা ঢুকিয়ে দিয়ে ঘাড়ের পিছন পর্যন্ত চিরে দিচ্ছে। অতঃপর গালের অপর পার্শ্ব
দিয়ে ঢুকিয়ে দিয়ে ঘাড়ের পিছন পর্যন্ত চিরে দিচ্ছে। ইতিমধ্যে গালের
প্রথমাংশটি ভাল হয়ে যায়। তখন আবার সে তাই করে (এভাবে একবার এ গাল, একবার
ওগাল চিরতে থাকে)। ... অতঃপর তারা আমাকে ব্যাখ্যা বলে দিল যে, যাকে সাঁড়াশী
দিয়ে গাল চেরা হচ্ছিল সে হ’ল মিথ্যাবাদী। তার কাছ থেকে মিথ্যা রটনা করা
হ’ত। এমনকি তা সর্বত্র ছড়িয়ে যেত। ফলে তার সাথে ক্বিয়ামত পর্যন্ত (কবরে)
ঐরূপ আচরণ করা হবে।[16]
যেসব ক্ষেত্রে মিথ্যা বলা যায় :
ইসলাম আল্লাহ প্রদত্ত সার্বজনীন কল্যাণকর জীবন বিধান। ইসলামী শরী‘আতে
মিথ্যা বলা সর্বসম্মতভাবে হারাম। তবে কিছু অবস্থা, সময় ও ক্ষেত্র রয়েছে
সেখানে মিথ্যা বলার অনুমতি রয়েছে। অবস্থার প্রেক্ষিতে কাজটি জায়েয হ’লে ও
অন্যের ক্ষতি না হ’লে এবং মিথ্যা ব্যতীত কাজটি অর্জিত না হ’লে মিথ্যা বলা
য়ায়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষের মধ্যে আপোষ-মীমাংসা করে
দেয় সে মিথ্যাবাদী নয়। মূলতঃ সে ভাল কথা বলে এবং উত্তম কথাই আদান-প্রদান
করে’।[17]
অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তিনটি
ক্ষেত্রে চতুরতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন। (১) যুদ্ধে কৌশল অবলম্বনের
ব্যাপারে (২) লোকের বিবাদ মিটিয়ে সন্ধি স্থাপনে (৩) স্বামী-স্ত্রীর পরস্পর
কথোপকথনে।[18]
মিথ্যা থেকে বাঁচার উপায়
মানুষের মধ্যে কিছু বদ ও খারাপ অভ্যাস আছে যেগুলো বাদ দিলে মিথ্যার হাত থেকে বাঁচা যাবে। যেমন-
১. শ্রুত বিষয় যাচাইবিহীন প্রচার না করা : মানুষের
মধ্যে একটি স্বাভাবিক প্রবণতা আছে যে, অন্যের নিকট থেকে শোনা বিষয়
যাচাই-বাছাই ছাড়াই প্রচার করা। অথচ এটি মিথ্যাবাদী হওয়ার অন্যতম কারণ।
কেননা মানুষের কাছ থেকে শোনা কথা সত্য নাও হ’তে পারে। তাই মিথ্যা থেকে
বাঁচতে হ’লে শোনা কথা যাচাই না করে প্রচার করা যাবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
বলেন,كَفَى بِالْمَرْءِ كَذِبًا أَنْ يُحَدِّثَ بِكُلِّ مَا سَمِع ‘কোন
লোকের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনে (যাচাই না করে)
তাই বলে বেড়ায়’।[19]
২. মন্দ ধারণা না করা : কোন বিষয়ে সঠিক কিছু না জেনে শুধু ধারণা ও অনুমানের ভিত্তিতে কথা ও কাজের কারণে সমাজে হিংসা-বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়। ফলে অনেক পরিবারে ও সংসারে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। তাই মহান আল্লাহ বলেন,يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوْا كَثِيْرًا مِنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ- ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা অধিক ধারণা হ’তে বিরত থাক। নিশ্চয়ই কিছু কিছু ধারণা পাপ’ (হুজুরাত ৪৯/১৩)।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, إِيَّاكُمْ
وَالظَّنَّ، فَإِنَّ الظَّنَّ أَكْذَبُ الحَدِيثِ ‘তোমরা কারো সম্পর্কে
(মন্দ) ধারণা থেকে বেঁচে থাক। কেননা আনুমানিক ধারণা বড় ধরনের মিথ্যা’।[20]
৩. মিথ্যাবাদীকে নেতা হিসাবে গ্রণ না করা : মিথ্যাবাদীকে নেতা হিসাবে গ্রহণ করলে তার প্রভাব অনুসারীদের উপর পড়বে। ফলে অনুসারীরাও মিথ্যায় অভ্যস্ত হবে। মহান আল্লাহ বলেন, فَلَا تُطِعِ الْمُكَذِّبِيْنَ ‘সুতরাং তুমি মিথ্যাবাদীদের অনুসরণ করো না’ (ক্বালাম ৬৮/৮)।
রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন,لَا تَقُولُوا لِلْمُنَافِقِ سَيِّدٌ، فَإِنَّهُ إِنْ يَكُ
سَيِّدًا فَقَدْ أَسْخَطْتُمْ رَبَّكُمْ عَزَّ وَجَلّ ‘তোমরা মুনাফিককে
নেতা হিসাবে গ্রহণ কর না। কেননা মুনাফিক যদি নেতা হয়, তাহ’লে তোমরা তোমাদের
প্রতিপালককে অসন্তুষ্ট করলে’।[21]
৪. ওয়াদা পালন করা ও আমানত রক্ষা করা : ওয়াদা রক্ষা করা ও আমানত পূর্ণ করা মিথ্যা থেকে বাঁচার অন্যতম মাধ্যম। এর দ্বারা মানুষ ধ্বংসাত্মক পরিণতি থেকে বাঁচতে পারে। মহান আল্লাহ বলেন,وَأَوْفُوا بِالْعَهْدِ إِنَّ الْعَهْدَ كَانَ مَسْئُولًا ‘তোমরা ওয়াদা পূর্ণ করো। কেননা ওয়াদা সম্পর্কে তোমরা জিজ্ঞাসিত হবে (বনী ইসরাঈল ১৭/৩৪)।
৫. শিশুকে ধোঁকা না দেওয়া :
পিতা-মাতা বা অন্য কেউ শিশুদেরকে সান্ত্বনা দেওয়ার উদ্দেশ্যে কোন কিছু
দেওয়ার আশ্বাস দিলে অবশ্যই তাকে তা দিতে হবে। অন্যথা সে মিথ্যুকদের
অন্তর্ভুক্ত হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,مَنْ قَالَ لِصَبِيٍّ: تَعَالَ
هَاكَ، ثُمَّ لَمْ يُعْطِهِ فَهِيَ كَذْبَةٌ ‘যে ব্যক্তি তার বাচ্চাকে বলল,
এসো, নাও। অতঃপর তাকে তা দিল না তবে সে মিথ্যুক হবে’।[22]
৬. অধিক ওয়াদা করা হ’তে বিরত থাকা :
ওয়াদা পালন না করা মুনাফিকের আলামত। তাই অধিক পরিমাণে ওয়াদা করার অভ্যাস
পরিহার করা উচিত। তাহ’লে মিথ্যা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব হবে। ‘আল-আদাবুশ
শারঈয়্যাহ’ গ্রন্থে বলা হয়েছে,مَنْ خَافَ الْكَذِبَ أَقَلَّ الْمَوَاعِيدَ،
أَمْرَانِ لَا يَسْلَمَانِ مِنْ الْكَذِبِ كَثْرَةُ الْمَوَاعِيدِ،
وَشِدَّةُ الِاعْتِذَار ‘যে মিথ্যাকে ভয় করে সে ওয়াদা কম করে। দু’টি কাজ
মিথ্যা থেকে নিরাপদ থাকতে পারে না। অধিক পরিমাণে ওয়াদা করা ও বেশী বেশী ওযর
পেশ করা’।[23]
৭. ঠাট্টা ও কৌতুক বর্জন করা : ইসলামী শরী‘আতে নির্দোষ কৌতুক নিষিদ্ধ নয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সত্য কথা ও বাস্তব বিষয় নিয়ে কৌতুক ও রসিকতা করেছেন।[24]
কিন্তু মিথ্যা, ঘৃণ্য বা তিরস্কারমূলক ঠাট্টা ও কৌতুক হারাম। অনেকে
মানুষকে হাসানোর জন্য মিথ্যা হাস্যকর কথা বলে থাকে। মিথ্যা থেকে দূরে থাকতে
ওগুলো সর্বোতভাবে বর্জন করা আবশ্যক। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,وَيْلٌ
لِلَّذِي يُحَدِّثُ بِالحَدِيثِ لِيُضْحِكَ بِهِ القَوْمَ فَيَكْذِبُ،
وَيْلٌ لَهُ وَيْلٌ لَه ‘সেই ব্যক্তির জন্য ধ্বংস নিশ্চিত যে মানুষকে
হাসানোর জন্য মিথ্যা কথা বলে। তার জন্য ধ্বংস, তার জন্য ধ্বংস’।[25]
তিনি
আরো বলেন, أَنَا زَعِيمٌ بِبَيْتٍ فِي رَبَضِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ
الْمِرَاءَ وَإِنْ كَانَ مُحِقًّا، وَبِبَيْتٍ فِي وَسَطِ الْجَنَّةِ
لِمَنْ تَرَكَ الْكَذِبَ وَإِنْ كَانَ مَازِحًا وَبِبَيْتٍ فِي أَعْلَى
الْجَنَّةِ لِمَنْ حَسَّنَ خُلُقَهُ ‘আমি তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নিয়ে
দিতে যামিন, যে তর্ক পরিহার করে হক্ব হ’লেও। আর একটি ঘর জান্নাতের
মাঝামাঝিতে নিয়ে দিতে যামিন, যে মিথ্যা পরিহার করে কৌতুক করে হ’লেও এবং আরো
একটি ঘর জান্নাতের সর্বোচ্চে নিয়ে দিতে যামিন, যে তার চরিত্রকে সুন্দর
করবে’।[26]
৮. স্বল্পভাষী হওয়া :
মিথ্যা থেকে বাঁচার অন্যতম পথ হচ্ছে অপ্রয়োজনীয় কথা ত্যাগ করা।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَاليَوْمِ الآخِرِ
فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি
বিশ্বাস রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে অন্যথা চুপ থাকে’।[27]
উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, মিথ্যাই সকল অধঃপতন, অশান্তি ও অধঃগতির মূল। ইহকাল ও পরকালে মিথ্যা মানুষকে ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত করে। বর্তমানে মিথ্যার সয়লাব চলছে। দিশেহারা জাতি অধঃপতনের অতল তলে তলিয়ে যাচ্ছে। জাতির উত্তরণের জন্য সর্বস্তরে সততা ও সত্যবাদিতার চর্চা হওয়া যরূরী। আর সার্বিক জীবনে অহি-র বিধান অনুসরণই এ পথ অবলম্বনের মাধ্যম। আল্লাহ আমাদেরকে সত্যবাদিতা অবলম্বন করার এবং মিথ্যার ধ্বংসাত্মক প্রভাব থেকে বেঁচে থাকার তাওফীক্ব দান করুন-আমীন!!
[1]. তিরমিযী হা/২৫১৮; মিশকাত হা/২৭৭৩; ইরওয়াউল গালীল হা/১২।
[2]. আল-জাওয়াবুল কাফী, পৃঃ ১০৬।
[3]. বুখারী, ‘ক্রয়-বিক্রয় অধ্যায়’ অনুচ্ছেদ-২২।
[4]. বুখারী হা/২০৮২।
[5]. বুখারী হা/২০৮৭; মিশকাত হা/২৭৯৪।
[6]. মুসলিম হা/১৫৬০; মিশকাত হা/২৭৯৩।
[7]. বুখারী হা/৪৫৪৯; মিশকাত হা/৩৭৫৯।
[8]. মুসলিম হা/১০৬; মিশকাত হা/২৭৯৫।
[9]. বুখারী হা/২৬৫৪, ৫৯৭৬; মুসলিম হা/৮৭।
[10]. বুখারী হা/৩৫০৯।
[11]. বুখারী হা/৭০৪২; মিশকাত হা/৪৪৯৯।
[12]. মুসলিম হা/২৬০৭; মিশকাত হা/৪৮২৪।
[13]. ছহীহ আদাবুল মুফরাদ হা/৭২৪।
[14]. বুখারী হা/৩৩।
[15]. বুখারী হা/৩৪; মুসলিম হা/৫৮৩; মিশকাত হা/৫৬।
[16]. বুখারী হা/১৩৮৬; মিশকাত হা/৪৬২১।
[17]. বুখারী হা/২৬৯২; মুসলিম হা/২৬০৫; মিশকাত হা/৪৮২৫।
[18]. মুসলিম হা/২৬০৫; মিশকাত হা/৫০৩১।
[19]. মুসলিম, ভূমিকা ১/১০; আবূদাঊদ হা/৪৯৯২; মিশকাত হা/১৫৬।
[20]. বুখারী হা/৫১৪৩; মুসলিম হা/২৫৬৩; মিশকাত হা/৫০২৮।
[21]. আবুদাঊদ হা/৪৯৭৭; মিশকাত হা/৪৭৮০, হাদীছ ছহীহ।
[22]. আহমাদ হা/৯৮৩৫; ছহীহাহ হা/৭৪৮।
[23]. আল-আদাবুশ শারঈয়্যাহ, ১/৬৯; গৃহীতঃ মাসিক আত-তাহরীক ১১/৩ ডিসেম্বর ২০০৭, পৃ. ৩১।
[24]. বুখারী হা/৬১২৯; মুসলিম হা/২১৫০; মিশকাত হা/৪৮৮৪।
[25]. তিরমিযী হা/২৩১৫; মিশকাত হা/৩৮৩৪; গায়াতুল মারাম হা/৩৭৬, হাদীছ হাসান।
[26]. আবূদাঊদ হা/৪৮০০; ছহীহাহ হা/২৭৩।
[27]. বুখারী হা/৬০১৮; মুসলিম হা/৪৭; তিরমিযী হা/১৯৬৭।