উত্তর : ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। রাজনীতি, অর্থনীতি সব ক্ষেত্রেই এটি পূর্ণাঙ্গ (বাক্বারাহ ২০৮; মায়েদাহ ৩)। কিন্তু মুসলিম রাষ্ট্রনেতাদের হাতেই এর রাজনীতি ও অর্থনীতি উপেক্ষিত। অথচ দু’টি পরস্পরে সম্পর্কিত।
ইসলামী অর্থনীতি এবং প্রচলিত ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা ভিন্ন বিষয়। কেবল মাসিক আত-তাহরীক-এর ফৎওয়া বোর্ড নয় বরং ইসলামী ব্যাংকের জনক বলে পরিচিত শেখ ছালেহ কামেল সহ সংশ্লিষ্টগণই এ ব্যাপারে স্বীকৃতি দিয়েছেন যে, প্রচলিত ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা বহু ক্ষেত্রেই সূদমুক্ত নয়। তাছাড়া প্রচলিত ব্যাংকিং-এর ধারণা পুঁজিবাদী অর্থনীতির উপজাত ও সহগামী; যা পুঁজি সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করে, পুঁজির প্রবাহ সৃষ্টি করে না। এতে ধনী ও গরীবের অস্বাভাবিক বৈষম্য সৃষ্টি হয়। সেজন্য এটি ইসলামী অর্থনীতির কল্যাণমুখী ধারণার সাথে তা মোটেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তবে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থার পরিশুদ্ধি কিংবা বিকল্প অনুসন্ধানের জন্য ইসলামী অর্থনীতিবীদগণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন (বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : প্রবন্ধ-ইসলামী ব্যাংকিং-এর অগ্রগতি : সমস্যা ও সম্ভাবনা, মাসিক আত-তাহরীক ডিসেম্বর’১২ ও জানুয়ারী’১৩ সংখ্যা)। আমরা আশাবাদী যে, অদূর ভবিষ্যতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় কোন তাক্বওয়াশীল নেতৃত্বের অধীনে এমন ‘বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান’সমূহ গড়ে উঠবে যা সম্পূর্ণ সূদমুক্তভাবে মুসলিম উম্মাহর চাহিদা পূরণে সক্ষম হবে। ততদিন পর্যন্ত আমাদের বিকল্পের অনুসন্ধানে থাকতে হবে। বিকল্প সমাধান না পাওয়ার অর্থ এটা নয় যে, সমস্যা এড়িয়ে যেতে হবে এবং প্রচলিত ব্যবস্থাকে শরী‘আত সম্মত বলতে হবে। বরং সমস্যা চিহ্নিত করার মধ্য দিয়েই সমাধান বেরিয়ে আসবে ইনশাআল্লাহ।