উত্তর : উক্ত মর্মে বর্ণিত হাদীছটি ছহীহ। ছালাত মুসলিম ও অমুসলিমের মাঝে পার্থক্য করে। যেমন অন্য হাদীছে এসেছে, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘বান্দা ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে ছালাত ত্যাগ করা’ (আবুদাঊদ হা/৪৬৭৮; মিশকাত হা/৫৬৯)। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘আমাদের ও তাদের (কাফেরদের) মধ্যে পার্থক্য হ’ল ছালাত। অতএব যে ব্যক্তি ছালাত ছেড়ে দিল সে কুফরী করল’ (তিরমিযী হা/২৬২১; মিশকাত হা/৫৭৪; ছহীহুত তারগীব হা/৫৬৪)। তাবেঈ আব্দুল্লাহ বিন শাক্বীক্ব আল-উক্বায়লী বলেন, ‘ছাহাবায়ে কেরাম ছালাত ব্যতীত অন্য কোন আমল ছেড়ে দেওয়াকে কুফরী বলে মনে করতেন না’ (তিরমিযী হা/২৬২২; মিশকাত হা/৫৭৯; ছহীহুত তারগীব হা/৫৬৫)।
উল্লেখ্য যে, কিছু হাদীছে ছালাত ত্যাগকারীকে কুফরী আবার কিছু হাদীছে শিরক বলা হয়েছে। এর কারণ দু’টি হ’তে পারে- (১) ছালাত ত্যাগকারী প্রবৃত্তিপূজারী। আর যে প্রবৃত্তির পূজা করে সেতো মুশরিক। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তুমি কি তাকে দেখেছ, যে তার প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছে? তুমি কি তার যিম্মাদার হবে?’ (ফুরক্বান ২৫/৪৩)। (২) এখানে কুফর ও শিরক সমার্থক হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন কাফিরকে মুশরিকও বলা হয়। কারণ কাফিরেরাও মুশরিকদের মত শিরকে বিশ্বাস করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘নিঃসন্দেহে তারা কাফের হয়ে গেছে, যারা বলে আল্লাহ তিন উপাস্যের একজন। অথচ এক উপাস্য (আল্লাহ) ব্যতীত কোন উপাস্য নেই’ (মায়েদাহ ৫/৭৩)।
উল্লেখ্য যে, কুফরী করা ও কাফের হয়ে যাওয়া এক নয়। এক্ষণে কেউ যদি ছালাতকে অস্বীকার করে বা একেবারেই ছেড়ে দেয় তাহ’লে সে বিশ্বাসগতভাবে কাফের হয়ে যাবে। কিন্তু কেউ যদি অবহেলা বা অলসতাবশত ছালাত আদায় না করে এবং মাঝে-মধ্যে আদায় করে, তাহ’লে সে বিশ্বাসগত ভাবে কাফের হবে না; বরং কুফরী কর্মের কারণে কবীরা গুনাহগার হবে। তওবা না করলে তাকে জাহান্নামে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে (আলবানী, হুকমু তারিকিছ ছালাত ১/১০, ৫১; ওছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১২/৫৫-৫৬; ছহীহাহ হা/৩০৫৪-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য)।
-মুহাম্মাদ ওয়াহীদুযযামান, রাজশাহী।