উত্তর : যিনি দাঁড়িয়ে ছালাত আদায় করতে সক্ষম, কিন্তু বসতে অক্ষম, তিনি দাঁড়িয়েই ছালাত আদায় করবেন। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে বিনীতভাবে দন্ডায়মান হও’ (বাক্বারাহ ২/২৩৮)। তিনি রুকূ ও সিজদা দাঁড়ানো অবস্থাতেই ইশারায় আদায় করবেন। রুকূতে সামান্য মাথা নোয়াবেন এবং সিজদাতে কিছু বেশী মাথা নোয়াবেন (ইবনু কুদামাহ, মুগনী ২/১০৭)। কেননা ‘আল্লাহ কোন ব্যক্তিকে তার সাধ্যের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেন না’ (বাক্বারাহ ২/২৮৫)। আর দাঁড়াতে অক্ষম হ’লে, বসেই ছালাত আদায় করবেন। মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘যখন রাসূল (ছাঃ) ভারী হয়ে গেলেন, তখন তিনি অধিকাংশ (নফল) ছালাত বসে পড়তেন’ (বুঃ মুঃ মিশকাত হা/১১৯৮)।
উল্লেখ্য যে, সাময়িক অক্ষমতা, ক্ষতি বৃদ্ধির আশংকা, অতি কষ্টসাধ্য হওয়া সবই অক্ষমতার পর্যায়ভুক্ত (নববী, রওযাতুত ত্বলিবীন ১/২৩৪; ইবনু কুদামাহ, আল-মুগনী ২/১০৬)। যেমন রাসূল (ছাঃ) একদা ঘোড়ায় চড়েন। ফলে তার ডান পাঁজরে আঁচড় লাগে। আনাস বলেন, এ সময় তিনি কোন এক ছালাত আমাদের নিয়ে (ব্যথার কারণে) বসে আদায় করেন। আমরাও তাঁর পিছনে বসে আদায় করি (বুখারী হা/৭৩২)। এই হাদীছে সুস্পষ্ট যে, তিনি দাঁড়াতে অক্ষম ছিলেন না। কিন্তু দাঁড়ানো কষ্টসাধ্য হওয়ায় তিনি বসে ছালাত আদায় করেন। অন্য হাদীছে এসেছে, রাসূল (ছাঃ) একদা ইমরান বিন হুছায়েনকে বলেন, তুমি দাঁড়িয়ে ছালাত আদায় কর। যদি না পার, বসে আদায় কর। যদি তা-ও না পার তবে শুয়ে আদায় কর (বুখারী হা/১১১৭; মিশকাত হা/১২৪৮)।
অন্য হাদীছে এসেছে রাসূল (ছাঃ) তাঁর এক অসুস্থ ছাহাবীকে দেখতে গেলেন। এমতাবস্থায় আমি তাঁর সাথে ছিলাম। তিনি তার কাছে প্রবেশ করে দেখলেন যে, তিনি কাঠের উপর কপাল রেখে ছালাত আদায় করছেন (কাঠের উপর সিজদা করছেন)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ইশারা করলে তিনি কাঠটি ছুঁড়ে ফেলে একটি বালিশ নিলেন। তখন রাসূল (ছাঃ) তাকে বললেন, তুমি বালিশ সরিয়ে দাও এবং যদি পার মাটিতে সিজদা কর; অন্যথায় ইশারা করে আদায় কর। আর রুকূর তুলনায় সিজদায় মাথা কিছুটা বেশী নীচু কর’ (ত্বাবারাণী কাবীর হা/১৩০৮২; ছহীহাহ হা/৩২৩)। সুতরাং শারীরিক অসুস্থতার কারণে ছালাতের যে কোন রুকন সাধ্য মোতাবেক দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে কিংবা ইশারায় আদায় করা যাবে। এতে কোন বাধা নেই।
প্রশ্নকারী : রাক্বীবুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ।