উত্তর : ‘হায়াতুন্নবী’ সম্পর্কিত বিশুদ্ধ আক্বীদা হ’ল, রাসূল (ছাঃ) সহ সকল নবী মৃত্যুবরণ করেছেন। তাঁদের রূহ ‘আলমে বারযাখে’ জীবিত আছে। যা দুনিয়াবী জীবন থেকে পৃথক। যে জগত সম্পর্কে আল্লাহ ব্যতীত কেউ অবগত নন (আলবানী, ছহীহাহ হা/৬২১-এর আলোচনা)। আল্লাহ বলেন, ‘আর তাদের (মৃতদের) সামনে পর্দা থাকবে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত’ (মুমিনূন ২৩/১০০)। আর উক্ত পর্দা ভেদ করে দুনিয়াবী জীবনের সাথে সম্পর্ক করা কোন মৃতের পক্ষে সম্ভব নয়।
অতঃপর এ বিষয়ে শিরকী আক্বীদা হ’ল, রাসূল (ছাঃ) কবরে দুনিয়াবী জীবনের ন্যায় বেঁচে আছেন এবং তিনি মানুষের প্রার্থনা শোনেন ও ভাল-মন্দ করেন বলে ধারণা করা।
রাসূল (ছাঃ) বলেন, কেউ আমাকে সালাম দিলে আল্লাহ তা‘আলা আমার দেহে রূহ ফেরত দেন। অতঃপর আমি উক্ত সালামের উত্তর দেই (আবুদাউদ হা/২০৪১; মিশকাত হা/৯২৫; ছহীহাহ হা/২২৬৬)। ছহীহ বুখারীর ভাষ্যকার হাফেয ইবনু হাজার (রহঃ) বলেন,لِأَنَّهُ بَعْدَ مَوْتِهِ وَإِنْ كَانَ حَيًّا فَهِيَ حَيَاةٌ أُخْرَوِيَّةٌ لاَ تُشْبِهُ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا ‘রাসূল (ছাঃ) মৃত্যুর পরে যদিও জীবিত আছেন, তবুও সেটি পরকালীন জীবন। দুনিয়াবী জীবনের সাথে যা সামঞ্জস্যশীল নয়’। নবীগণ তাদের প্রভুর নিকটে জীবিত আছেন শহীদদের ন্যায়’ (ফাৎহুল বারী হা/৪০৪২-এর ব্যাখ্যা, ৭/৩৪৯ পৃ.)। অতএব বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে বারযাখী জীবনের অন্তর্ভুক্ত। যেখানে মানুষের হায়াত বা মঊত বলে কিছু নেই। তাই রূহ ফেরত দেওয়ার অর্থ তাঁকে অবহিত করানো এবং তিনি তা বুঝতে পারেন। আর সেটাই হ’ল তাঁর উত্তর দেওয়া’ (মির‘আত হা/৯৩১-এর ব্যাখ্যা, ৪/২৬২-৭৪)।
অতএব তিনি শুনছেন এরূপ ধারণায় তাঁর কবরের পাশে গিয়ে দরূদ পাঠ করা সুস্পষ্টভাবে শিরক। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই তুমি শুনাতে পারো না কোন মৃত ব্যক্তিকে’ (নামল ২৭/৮০)। আর ‘তুমি শুনাতে পারো না কোন কবরবাসীকে’ (ফাত্বির ৩৫/২২)। এছাড়া ‘যে ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর কবরে গিয়ে দরূদ পাঠ করবে, তিনি তার জন্য সাক্ষী হবেন ও সুফারিশকারী হবেন’, ‘যে ব্যক্তি আমার কবর যেয়ারত করবে, তার জন্য আমার শাফা‘আত ওয়াজিব হবে’, ‘আমি তার জন্য ক্বিয়ামতের দিন সাক্ষী হব’ ইত্যাদি মর্মে যেসব হাদীছ বলা হয়ে থাকে, সবগুলিই জাল (আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/৪৭, ২০৩, ১০২১; ইরওয়াউল গালীল হা/১১২৭-২৮ প্রভৃতি)।