উত্তর :
প্রতি পরিবারের পক্ষ থেকে একটি পশু কুরবানী করাই সুন্নাতসম্মত। কেননা
প্রতি বছর ঈদুল আযহাতে একটি পশু কুরবানী করাই রাসূল (ছাঃ)-এর সাধারণ
নির্দেশনা (বুখারী হা/৭২১০; আবুদাঊদ হা/২৭৮৮ প্রভৃতি; মিশকাত হা/১৪৭৮; মির‘আত হা/১৪৯২, ৫/১১৪ পৃ.)।
শরীকানা কুরবানীর বিষয়টি মূলতঃ সফরের হাদীছগুলোতে পাওয়া যায়। যেমন হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে এক সফরে
ছিলাম। এমতাবস্থায় কুরবানীর ঈদ উপস্থিত হ’ল। তখন আমরা সাতজনে একটি গরু ও
দশজনে একটি উটে শরীক হ’লাম (তিরমিযী হা/৯০৫; নাসাঈ হা/৪৩৯২ প্রভৃতি; মিশকাত হা/১৪৬৯; মির‘আত হা/১৪৮৪, ৫/১০১-২ পৃ.)। হযরত জাবের (রাঃ) বলেন, আমরা (৬ষ্ঠ হিজরীতে) হোদায়বিয়ার সফরে প্রতি সাতজনে একটি উট ও গরু কুরবানী করি’ (মুসলিম হা/১৩১৮ (৩৫০)।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে হজ্জের সফরে ছিলাম। তখন তিনি
আমাদেরকে একটি গরু ও উটে সাতজন করে শরীক হওয়ার নির্দেশ দেন’ (মুসলিম হা/১৩১৮ (৩৫১)।
উপরোক্ত হাদীছ সমূহ থেকে বুঝা যায় যে, সফরে সাতজনে মিলে একটি উট বা গরু কুরবানী করা যায়। যাতে এইসব বড় পশু যবহ ও কুটাবাছা এবং গোশত বিতরণ সহজ হয়। যদিও জমহূর ওলামায়ে কেরাম হজ্জের সময় উট বা গরুতে শরীকানা কুরবানীর উপর ক্বিয়াস করে আম হাদীছের ভিত্তিতে বাড়ীতে ও সফরে সর্বাবস্থায় শরীকানা কুরবানী জায়েয বলেছেন, যেখানে বলা হয়েছে ‘একটি গরু বা উট সাতজনের পক্ষ হ’তে’ (আবুদাঊদ হা/২৮০৮; মিশকাত হা/১৪৫৮)। কিন্তু ইমাম মালেক (রহঃ) একে নাজায়েয বলেছেন (মির‘আত ৫/৮৫)। তাছাড়া অনেকে হাদীছে বর্ণিত ৭-এর বদলে ৩, ৫, ১০ ভাগে কুরবানী করেন, যা প্রমাণহীন। অনেকে পরিবারের পক্ষ থেকে একটি ছাগল দেন, আবার একটি গরুর ভাগা নেন। অনেকে বকরী বা খাসী না দিয়ে বড় গরুতে ভাগী হন, মূলতঃ গোশত বেশী পাবার জন্য। ‘নিয়ত’ যখন গোশত খাওয়া, তখন কুরবানীর নেকী তিনি কিভাবে পাবেন? অতএব একটি পরিবারের পক্ষ থেকে একটি পশু কুরবানী করা নিঃসন্দেহে সুন্নাতসম্মত।
প্রশ্নকারীঃ আব্দুল আউয়াল, গাযীপুর।