আল্লাহ ক্ষমাশীল। তিনি ক্ষমা করাকে পসন্দ করেন। তিনি বান্দাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘হে আমার বান্দারা! যারা নিজেদের ওপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। অবশ্যই আল্লাহ সকল পাপ ক্ষমা করেন। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’ (যুমার ৩৯/৫৩)। বনী ইসরাঈলের জনৈক ব্যক্তি একশ’ ব্যক্তিকে হত্যা করে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন (বুখারী হা/৩৪৭০; মুসলিম হা/২৭৬৬; মিশকাত হা/২৩২৭)। নিম্নে আল্লাহর ক্ষমার একটি ঘটনা বর্ণনা করা হ’ল।-

যমযম বিন জাওস আল-ইয়ামামী হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা আবু হুরায়রা (রাঃ) আমাকে বললেন, হে ইয়ামামী! তুমি অবশ্যই কোন লোককে বলবে না যে, আল্লাহর কসম! আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করবেন না বা আল্লাহ তোমাকে কখনো জান্নাতে প্রবেশ করাবেন না। আমি বললাম, হে আবু হুরায়রা! যখন আমাদের কেউ রাগান্বিত হয়, তখন সে তার ভাই বা সাথীকে এরূপ কথা বলে থাকে। আবু হুরায়রা (রাঃ) তাকে বললেন, তুমি এমন কথা বলবে না। কারণ আমি রাসূল (ছাঃ(-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, বনী ইসরাঈলে দু’জন লোক ছিল। তাদের একজন অত্যন্ত ইবাদতগুযার ছিল। অন্যজন ছিল নিজের প্রতি যুলুম করে পাপে লিপ্ত। কিন্তু তাদের একে অপরের মধে গভীর সম্পর্ক ছিল। ইবাদতগুযার ব্যক্তি তার অপর সাথীকে সর্বদা অপকর্মে লিপ্ত থাকতে দেখে বলত, তুমি পাপ কাজ থেকে বিরত থাকো। উত্তরে সে বলত, আমাকে আমার প্রভুর উপর ছেড়ে দাও। তোমাকে কি আমার উপর পাহারাদার হিসাবে পাঠানো হয়েছে?

ইবাদতগুযার ব্যক্তি একদিন তাকে এমন গোনাহে লিপ্ত হতে দেখল যা তার কাছে বড় গোনাহ মনে হল। তখন সে তাকে বলল, তোমার জন্য আফসোস! তুমি পাপ কাজ থেকে বিরত থাকো। উত্তরে সে বলল, আমাকে আমার প্রভুর উপর ছেড়ে দাও। তোমাকে কি আমার উপর পাহারাদার হিসাবে পাঠানো হয়েছে? তখন সে বলল, আল্লাহর কসম! আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ তোমাকে কখনো জান্নাতে প্রবেশ করাবেন না। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদের উভয়ের নিকটে ফেরেশতা পাঠিয়ে তাদের জান কবয করার ব্যবস্থা করলেন। এরপর তাঁর নিকট তাদের একত্রিত করে ইবাদতগুযার ব্যক্তিকে বললেন, তুমি কি আমার রহমত সম্পর্কে জানতে? কিংবা তুমি কি জানতে আমার হাতে কি পরিমাণ ক্ষমতা রয়েছে? এরপর ফেরেশতাদের সম্বোধন করে বললেন, একে তোমরা জাহান্নামে নিয়ে যাও। আর পাপীকে বললেন, তুমি যাও এবং আমার রহমতের বরকতে জান্নাতে প্রবেশ কর। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, যার হাতে আমার প্রাণ তার কসম, সে এমন কিছু  উক্তি করেছে, যার মাধ্যমে সে তার দুনিয়া ও আখিরাত উভয় বরবাদ করেছে’ (আহমাদ হা/৮২৭৫; আবুদাঊদ হা/৪৯৭৫; ছহীহুল জামে‘ হা/৪৪৫৫)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘আমার ক্রোধের উপর আমার রহমত বিজয়ী হয়েছে’ (বুখারী হা/৭৫৫৩; মুসলিম হা/২৭৫১)

শিক্ষা : আল্লাহর ক্ষমার ব্যাপারে কাউকে হতাশাব্যঞ্জক কথা বলা যাবে না। কারণ আল্লাহ তাঁর রহমতের বারিধারায় কাকে সিক্ত করবেন এবং কার আমল তাঁর নিকট গৃহীত হবে তা তিনিই ভাল জানেন। আল্লাহর রহমত ব্যতীত কেবল স্বীয় আমল দ্বারা কেউ জান্নাতে যেতে পারবে না। এজন্য সর্বাস্থায় আল্লাহর রহমতের আশা নিয়ে সৎকর্ম করে যেতে হবে। কখনো নিরাশ হওয়া যাবে না (বুখারী হা/৫৬৭৩; মুসলিম হা/২৮১৬; মিশকাত হা/২৩৭১)






দাজ্জাল ও ইয়াজূজ-মাজূজের নৃশংসতা - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
উপকারীকে প্রতিদান দেওয়া - মুসাম্মাৎ শারমিন আখতার
তাক্বদীরের উপর বিশ্বাস - মুসাম্মাৎ শারমিন আখতার
রাসূল (ছাঃ)-এর দাওয়াতী কৌশল - আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ
গীবতের ভয়াবহতা
উমাইয়া বিন খালাফের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ভবিষ্যদ্বাণী - মুসাম্মাৎ শারমিন আখতার
সৌন্দর্যই মর্যাদার মাপকাঠি নয় - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
আমর ইবনু আবাসা (রাঃ)-এর ইসলাম গ্রহণ - মুসাম্মাৎ শারমিন আখতার
জুম‘আর দিনে দো‘আ কবুলের সময় - মুসাম্মাৎ শারমিন আখতার
রাসূল (ছাঃ) ও মুজাহিদদের সম্পদে বরকত - মুসাম্মাৎ শারমিন আখতার
আব্দুল্লাহ ইবনু সালামের ইসলাম গ্রহণ
আসমা বিনতু আবী বকর (রাঃ)-এর সীমাহীন দৃঢ়তা - মুসাম্মাৎ শারমিন আখতার
আরও
আরও
.