গত ২৮শে ডিসেম্বর’১৬ দেশের ৬১টি যেলায় অনুষ্ঠিত যেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত অনেক প্রার্থী এখন বাড়ি বাড়ি ধরণা দিচ্ছে ভোটারদের প্রদত্ত টাকা ফেরৎ পাওয়ার জন্য। টাকা না পেয়ে ভোটারদের হুমকি দিচ্ছেন কেউ কেউ। বগুড়ার ধুনটে একজন পরাজিত প্রার্থী ইতিমধ্যে ১৮ জনের কাছ থেকে ভোটার প্রতি ১০ হাযার টাকা হিসাবে ১ লাখ ৮০ হাযার টাকা ফেরত পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে একজন সদস্য পদপ্রার্থী আট জন ভোটারের কাছ থেকে মাথা প্রতি ২০ হাযার টাকা হিসাবে মোট ১ লাখ ৬০ হাযার টাকা ফেরত নেন। সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে আড়াই লাখ টাকা এবং পোস্টার, এজেন্টের ফরমসহ এক ব্যক্তি ধরা পড়েন।
পরাজিত প্রার্থীদের অভিযোগ, ভোটাররা ভোট দেওয়ার কথা বলে ২০ থেকে ৩০ হাযার টাকা করে নিয়েছেন। কিন্তু তারা ভোট দেননি। তবে অনেক ভোটারের অভিযোগ, অনেক প্রার্থী জোর করে সম্মানী হিসাবে টাকা দিয়েছেন। ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নেওয়া হয়নি। এখন তাঁরা ভোটে পরাজিত হয়ে টাকা ফেরতের জন্য বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন। মুঠোফোনে হুমকি দিচ্ছেন। গোপালনগর ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, প্রার্থী সাতজন। আমি কাকে ভোট দেব? ভোট দেওয়ার কথা মুখে স্বীকার করলেও সে কথায় কেউ বিশ্বাস করে না। তাই সম্মানী ভাতা হিসেবে নগদ টাকা নেওয়া হয়েছে। এখন তাঁরা ভোটে হেরে গিয়ে আমার বাড়িতে এসে টাকা ফেরত চাচ্ছেন।
পঞ্চগড় যেলা পরিষদ নির্বাচনে ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য পদপ্রার্থী ছিলেন আব্দুল কুদ্দূস প্রামাণিক। তিনি ২৫ জনকে ২০ হাযার করে টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু আরেক ধনাঢ্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তার চেয়েও বেশী টাকা দিয়েছেন। তাই তার প্রাপ্তির ঝুলিতে মাত্র ১টি ভোট। এখন তিনি টাকা ফেরত চাইছেন সবার কাছে। একজন ভোটার বললেন, ভোটের আগের দিন আমাকে জোর করে কুদ্দূস ভাই টাকা দেন। কিন্তু আমি তাঁকে ভোট দেইনি। তাই টাকা ফেরত দিলাম।
মথুরাপুর ইউপির আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাসঊদুর রহমান অনুযোগ করে বলেন, টাকা ফেরত পেতে আমি এখন কালেরপাড়া ইউনিয়নের আড়িকাঠিয়া গ্রামে আছি। আমাকে ৯৬ জন ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১০ হাযার টাকা করে ৯ লাখ ৬০ হাযার নিয়েছেন। এর মধ্যে ১১ জন আমাকে ভোট দিয়েছেন। বাকি ৮৫ জন আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তাই যারা আমাকে ভোট দেয়নি, তাদের চিহ্নিত করে বাড়ি বাড়ি ঘুরছি। এ পর্যন্ত ১৮ জন আমাকে ১০ হাযার করে ১ লাখ ৮০ হাযার টাকা ফেরত দিয়েছেন। আরেক পরাজিত প্রার্থী কাওছার হামীদ রুবেল বলেন, আমি শুধু মোবাইল ফোনে টাকাগুলি ফেরত চাচ্ছি। কাউকে কোন হুমকি দেইনি।
পঞ্চগড় পৌরসভার প্যানেল মেয়র আশরাফুল আলম বলেন, ‘ভোটের পর যে চিত্র প্রকাশিত হয়েছে, তাতে জনপ্রতিনিধিদের মান-সম্মান বলে আর কিছু থাকল না।
[মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। অতএব সর্বত্র পরামর্শ ভিত্তিক অথবা দল ও প্রার্থী বিহীন ইসলামী নির্বাচন প্রথা চালু করুন (স.স.)]