উত্তর : জামাতা শ্বশুরের অন্যতম নিকটাত্মীয়। সুতরাং শ্বশুরের সামর্থ্য ও নিমন্ত্রণ সাপেক্ষে জামাতা শ্বশুর বাড়িতে যতদিন খুশি থাকতে বা খেতে পারবে। এতে কোন শারঈ বাধা নেই। উল্লেখ্য যে, একটি হাদীছে এসেছে, রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের উপর বিশ্বাস করে সে যেন তার মেহমানকে সম্মান দেখায় তার প্রাপ্যের বিষয়ে। জিজ্ঞেস করা হ’ল, হে আল্লাহর রাসূল মেহমানের প্রাপ্য কী? তিনি বললেন, একদিন একরাত ভালভাবে মেহমানদারী করা, আর তিন দিন হ’ল (সাধারণ) মেহমানদারী। আর তার চেয়েও অধিক হ’লে তা হ’ল তার প্রতি দয়া (বুখারী হা/৬০১৯; মিশকাত হা/৪২৪৪)। এই হাদীছের ভিত্তিতে কেউ কেউ ধারণা করেন যে, জামাই বা অনুরূপ নিকটাত্মীয়রাও এই নির্দেশনার অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু একথা সঠিক নয়। বরং হাদীছটি মূলতঃ সাধারণ আগন্তুক বা মুসাফির মেহমানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য (দ্র. ইবনু হাজার আসক্বালানী, ফাৎহুল বারী ১০/৫৩২-৩৩; মোল্লা আলী ক্বারী, মিরকাত ৭/২৭৩১; আযীমাবাদী, আওনুল মা‘বূদ ১০/১৫২)। ইসলামে মেহমানকে সম্মান করা গুরুত্বপূর্ণ ঈমানী দায়িত্ব। সেকারণে রাসূল (ছাঃ) মেহমানদারীকে অত্যধিক গুরুত্ব প্রদান করেছেন। এমনকি একে মেহমানের হক হিসাবে নির্ধারণ করে দিয়েছেন (বুখারী হা/৬০১৯)। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই মুসাফিরকে মেযবানের অর্থনৈতিক সামর্থ্যের বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ রাসূল (ছাঃ) বলেন, মেহমানদারী তিন দিন এবং উত্তমরূপে মেহমানদারী একদিন ও একরাত্রি। কোন মুসলিম ব্যক্তির জন্য বৈধ নয় যে সে তার ভাইয়ের নিকট অবস্থান করে তাকে পাপে নিপতিত করবে। তখন তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! কিভাবে সে তাকে পাপে নিপতিত করবে? তিনি বললেন, সে (মেহমান) তার নিকট (এমন দীর্ঘ সময়) অবস্থান করবে, অথচ তার (মেযবানের) নিকট এমন কিছু নেই, যা দ্বারা সে তার মেহমানদারী করবে’ (মুসলিম হা/৪৮; আহমাদ হা/২৭২০৯)।
প্রশ্নকারী : শফীকুল ইসলাম, মোহনপুর, রাজশাহী।