উত্তর : ‘ছয়দিনে’ কথাটি কুরআনে সাত স্থানে এসেছে। যার প্রথম হ’ল সূরা আ‘রাফের ৫৪ নং আয়াত। অত্র আয়াতে ‘দিন’ অর্থ সময়কাল। যার দৈর্ঘ্য হ’ল আখেরাতের হিসাবে হাযার বছর (সাজদাহ ৩২/৫) অথবা পঞ্চাশ হাযার বছরের সমান (মা‘আরেজ ৭০/৪)। কেননা তখন সূর্য ছিল না। তাই দুনিয়াবী ২৪ ঘণ্টার হিসাব অচল। আর সবই হয়েছে আল্লাহর ইচ্ছায়। এতে বান্দার কোন হাত নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল এবং এ দু’য়ের মধ্যেকার সবকিছুকে সৃষ্টি করেছি ছয় দিনে। অথচ এতে আমাদের কোনরূপ ক্লান্তি স্পর্শ করেনি’ (ক্বা-ফ ৫০/৩৮)। আর এই ছয়দিন হ’ল রবি, সোম, মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার। শুক্রবারে আছরের পূর্বেই সবকিছু শেষ করেন। অতঃপর আছর থেকে দিনের শেষ মুহূর্তে আল্লাহ আদমকে সৃষ্টি করেন (মুসলিম হা/২৭৮৯; মিশকাত হা/৫৭৩৪)। আব্দুল্লাহ বিন সালাম (রাঃ) বলেন, আল্লাহ রবিবার ও সোমবারে পৃথিবী সৃষ্টি করেন। মঙ্গলবার ও বুধবারে আকাশ সমূহ সৃষ্টি করেন। বুধবার ও বৃহস্পতিবারে খাদ্য সমূহ এবং পৃথিবীর অন্যান্য বস্ত্ত সমূহ সৃষ্টি করেন। শুক্রবারে আছরের পূর্বেই সবকিছু শেষ করেন (বায়হাক্বী হা/১৮১৬১, ৯/৩ পৃ.; কুরতুবী, তাফসীর সূরা আন‘আম ১ আয়াত)। এই ছয় দিনের তাৎপর্য সম্পর্কে এতটুকুই বলা যায় যে, আল্লাহ তা‘আলা চাইলে এক নিমিষেই সবকিছু ‘হও’ বলে সৃষ্টি করতে পারতেন। তবে বিশেষ হিকমতের কারণে তিনি তা করেননি। বরং প্রকৃতির সবকিছুকে ধারাবাহিক ও নিয়মবদ্ধভাবে করেছেন, যাতে তা মানুষের জন্য শিক্ষণীয় হয়। তাছাড়া আল্লাহর নিকট প্রত্যেকটি বস্ত্তর একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে (কুরতুবী, তাফসীর সূরা আ‘রাফ ৫৪ আয়াত)।
প্রশ্নকারী : আব্দুল কাদের, কাকনহাট, রাজশাহী।