উত্তর : মসজিদে ছালাত শেষে মুছল্লীদের জন্য মিষ্টি মুখ করা বা খাবারের ব্যবস্থা করা জায়েয। তবে নিয়মিত করা সমীচীন নয়। কারণ এতে মানুষ মসজিদকে খাবারের স্থান মনে করতে পারে (উছায়মীন, ফাতাওয়া নূরুন আলাদ-দারব ৮/২, টেপ নম্বর ৩৪৮)। সাহল ইবনু সা‘দ (রাঃ) বলেন, আমরা জুম‘আর দিনে আনন্দিত হ’তাম। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হ’ল, কেন? তিনি বললেন, আমাদের একজন বৃদ্ধা মহিলা ছিল। সে কোন একজনকে ‘বুযাআ’ নামক খেজুর বাগানে পাঠাত। সে বীট চিনির শিকড় আনত এবং তা একটি ডেগচিতে ফেলে তাতে কিছুটা যবের দানা ছড়িয়ে দিয়ে ঘুটত। ফলে তাতে এক প্রকার খাবার তৈরী হ’ত। এরপর আমরা যখন জুম‘আর ছালাত আদায় করে ফিরতাম, তখন আমরা ঐ মহিলাকে সালাম দিতাম। তখন সে আমাদের ঐ খাবার পরিবেশন করত। আমরা এজন্য খুশী হ’তাম। আমাদের অভ্যাস ছিল যে, আমরা জুম‘আর পরেই মধ্যাহ্ন ভোজন ও মধ্যাহ্ন বিশ্রাম করতাম’ (বুখারী হা/৬২৪৮; বায়হাক্বী হা/৫৯৪৯; শু‘আবুল ঈমান হা/৮৫০৪)। মসজিদের ভিতরেও এই খাবার খাওয়া জায়েয। আব্দুল্লাহ ইবনুল হারিছ ইবনে জাযই আয-যুবাইদী (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর যুগে মসজিদে বসে রুটি ও গোশত খেতাম (ইবনু মাজাহ হা/৩৩০০; ছহীহাহ হা/২১১৬-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য; তামামুল মিন্নাহ ১/২৯৫)। শায়খ বিন বায (রহঃ) বলেন, ই‘তিকাফকারী সহ যে কারো জন্য মসজিদে খাদ্য গ্রহণে দোষ নেই। আহলে ছুফফার সদস্যরা মসজিদে খাবার গ্রহণ করতেন। তবে মসজিদের পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৫/৪৩৯; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ৬/২৯০)। এক্ষণে মসজিদে দেওয়া তোহফা ধনী-গরীব সবাই গ্রহণ করতে পারে যদি দানকারীর নিয়ত সবাইকে খাওয়ানো হয়। কারণ সাধারণ ছাদাক্বা ধনী-গরীব সবার জন্য জায়েয। এ ব্যাপারে কোন মতপার্থক্য নেই (বায়হাক্বী হা/১২০৩৯; মা‘রিফাতুস সুনান ওয়াল আছার হা/১২৩৯০; নববী, আল-মাজমূ‘ ৬/২৩৮)। আর যদি মানতের খাদ্য হয় এবং কেবল গরীবদের খাওয়ানোর নিয়ত হয়, তাহ’লে তাতে ধনীরা অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন। আর যদি সবাইকে খাওয়ানো উদ্দেশ্য হয়, তাহ’লে তা ধনীরাও গ্রহণ করতে পারবেন (আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়া ৬/১১৭)।
প্রশ্নকারী : পলাশ, সাহাপুর, দারুসা, রাজশাহী।