উত্তর : সম্মানিত
লেখক হয়তবা ইবনু ওমর (রাঃ) বর্ণিত উক্ত হাদীছটি সঠিকভাবে বুঝতে সক্ষম
হননি। কেননা হাদীছের শেষে বলা হয়েছে, ইবনু ওমর (রাঃ) বলছেন যে, আমি তখন ছোট
ছিলাম’ (আহমাদ, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৮১১ ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায় ‘বক্তৃতা ও কবিতা’ অনুচ্ছেদ-৯)।
অর্থাৎ তখন তাঁর উপর শরী‘আত বর্তিত হয়নি। এছাড়া ইমাম ত্বাবারী (রহঃ)-এর
নামে যে উদ্ধৃতি পেশ করে করা হয়েছে, সেটা ঠিক নয়। কেননা তিনি গানের
বিরুদ্ধে চূড়ান্ত মন্তব্য করে গেছেন এই বলে যে, قد أجمع علماء الأمصار على
كراهة الغناء والمنع منه ‘সমস্ত দেশের আলেমগণ গান অপসন্দনীয় হওয়া ও নিষিদ্ধ
হওয়ার প্রতি ঐক্যমত পোষণ করেছেন’ (তাফসীরে ফাৎহুল ক্বাদীর সূরা লোকমান ৬ নং আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রঃ)।
মূলকথা ইসলামে গান ও সবধরনের বাদ্যযন্ত্র হারাম। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বাদ্যযন্ত্রকে مِزْمَارُ الشَّيْطَانِ ‘শয়তানের বাদ্য’ বলেছেন (আবুদাঊদ হা/২৫৫৬)। নষ্ট গায়কদের সম্পর্কে তিনি বলেন, خذوا الشيطان او أمسكوا الشيطان ‘শয়তানকে ধরো বা শয়তানকে রুখো’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৮০৯)। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘যারা অজ্ঞতাবশে لَهْوَ الْحَدِيْثِ অর্থাৎ গান ক্রয় করে মানুষকে আল্লাহর পথ হ’তে বিভ্রান্ত করার জন্য এবং আল্লাহর পথকে বিদ্রূপ করে, তাদের জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি’ (লোকমান ৬)।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ, ইবনু আববাস, জাবের, ইকরিমা, সাঈদ ইবনু জুবায়ের, মুজাহিদ, মাকহূল এবং আমর বিন শু‘আইব সকলে উক্ত আয়াতের অর্থ ‘গান’ নিয়েছেন (ফাতাওয়া ইবনু বায, ৩/৩৯৩ পৃঃ)। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি আনুগত্যের দিকে এবং কল্যাণের দিকে আহবান করা ও শত্রুদের হাত থেকে স্বদেশ রক্ষা করার জন্য যে সমস্ত বাজনা বিহীন গান রয়েছে, সেগুলো বৈধ (ফাতাওয়া ইবনু বায, ৩/৪৩৭ পৃঃ)। তাছাড়া ছোট ছোট মেয়েরা দফ বাজিয়ে বিবাহ অনুষ্ঠান ও ঈদের দিন সহ বিশেষ দিনে আনন্দ করাও জায়েয (আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৩১৫৩)। অতএব কুরআন ও ছহীহ হাদীছের স্পষ্ট বক্তব্য মওজুদ থাকতে অন্য কারু কথার প্রতি দৃকপাত করা কোন মুসলমানের জন্য বৈধ নয়। ‘সৌভাগ্যের পরশমণি’ এবং ‘এহইয়াউ উলূমিদ্দীন’ বইগুলো নির্ভরযোগ্য নয়। এগুলো পড়া থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।